নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৩ পিএম, ০৪ জুন, ২০১৮
গত সাত বছরে বাজেটে আকার যেমন বড় হচ্ছে, তেমনি বড় আকারের তার বাস্তবায়ন ব্যর্থতাও দেখা যাচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এই হার ছিল ৭৮ শতাংশ, যা তার আগের বছর ছিল ৮০ শতাংশ্ সর্বোচ্চ ৯৭ শতাংশ ছিল ২০১০-১১ অর্থ বছরে।
আগামী অর্থবছরে ৪ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এটি বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এটিকে অনেকেই দেখছে অতিরঞ্জিত বাজেট হিসেবে। মূল বিষয় হলো, বাজেট বাস্তবায়নের হার ক্রমশই কমে আসছে। ২০১১-১২ অর্থবছরের যে বাজেট দেওয়া হয়েছে, এর সংশোধিত বাজেটের ৯৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করা গেছে। এরপর প্রতিবছর বাস্তবায়নের হার ধারাবাহিকভাবে কমেছে। তাই আগামী অর্থবছরের জন্য যে বাজেট দেওয়া হচ্ছে, তা বাস্তবতা ও ব্যয়ের সক্ষমতার নিরিখে তা অবাস্তবায়নযোগ্য বলেই ভাবা হচ্ছে।
প্রতিবছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নেও একই চিত্র দেখা যায়। কোনো বছরই পুরো এডিপি বাস্তবায়িত হয়নি। সেখানেও প্রতিবছর এডিপি বাস্তবায়নের হার কমে যাচ্ছে। চিরন্তন যেটা দেখা যায়, সংশোধিত এডিপি মূল এডিপি থেকে কমে যায়। মূল এডিপির অনুপাতে ৭০-৮০ শতাংশের বেশি এডিপি বাস্তবায়িত হয় না। প্রতিবছরই দেখা যায়, প্রথম ৯ মাসে ৪০-৪৫ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়িত হয়। শেষের দিকের দুই মাসে বাকি ৩০-৩৫ শতাংশ টাকা খরচ হয়। এতে কাজের গুণগত মান থাকে না। বড় আকারের এডিপি হওয়ার কারণে অগ্রাধিকার বিবেচনা না করেই অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়। এতে সব প্রকল্পেই বিক্ষিপ্তভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর ফলে সব প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল বাড়ে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে খরচের মাত্রা বাড়ে। এসব কারণে আমাদের দেশে কোনো প্রকল্পই শুরুতে যে মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল, সেই সময়ে শেষ করা যায়নি। এতে চার, পাঁচ, ছয় বছর সময় বেশি লাগে। সে কারণে প্রকল্পের খরচ তিন-চার গুণ বেড়ে যায়।
রাজস্ব খাতের পরিস্থিতিও খুব ভালো নয়। মোট রাজস্বের ৮০ শতাংশের মতো আসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে। গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সময়ে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ে ১৮-১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। চলতি অর্থবছরে একই সময়ে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি কমে ১৪-১৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এ বছরও রাজস্ব আদায়ে বড় মাত্রায় ঘাটতি হবে। তবে এটি উদ্বেগের বিষয় নয়। কেননা কাঙ্ক্ষিত হারে খরচও (এডিপি বাস্তবায়ন) করতে পারছি না।
এদিকে, প্রতিবারের মতো এবারও মোট বাজেটের চার ভাগের এক ভাগ টাকাই অর্থমন্ত্রীকে ধার করতে হবে। আসন্ন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, এর মধ্যে ধার করতে হবে তাঁকে ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকার মতো। আগামী বাজেটে ঘাটতি পূরণের জন্য বড় উৎস হিসেবে ভাবা হচ্ছে ব্যাংক ব্যবস্থাকে। আর কমিয়ে আনা হচ্ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও বিদেশি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা।
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ৫৯ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
চলতি অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী বিদেশ থেকে অনুদান ও ঋণ মিলিয়ে মোট ৫১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিলেন। আগামী অর্থবছরে বিদেশি উৎস থেকে অনুদান গ্রহণের লক্ষ্য বাড়িয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। আর বিদেশি ঋণের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৪২ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে অর্থ সংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা আগামী বাজেটে কমানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আগামী অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ২৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ব্যাংকগুলোর পিছু ছাড়ছে না তারল্য সংকট। দৈনন্দিন কার্যক্রম মেটাতেও
এখন ধার করতে হচ্ছে। গেল বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক দিনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ধার করেছে
২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে বিশেষ তারল্য সহায়তার আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে
ধার করেছে ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা।
কলমানি মার্কেট ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে বিভিন্ন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি
ধার করেছে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক ব্যাংক আরেক ব্যাংক
থেকে ধার করেছে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।
সূত্র জানায়, ঈদের আগে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের বাড়তি চাহিদা ছিল
টাকা তোলার। এ কারণে ওই সময়ে তারল্য সংকট বেড়েছিল। ঈদের পর গ্রাহকদের চাপ কমে গেছে।
তারপরও ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক একীভূত করার ঘোষণা দেওয়ায় দুর্বল ব্যাংক
থেকে গ্রাহকরা নগদ টাকা তুলে নিচ্ছেন। এমনকি দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়ী প্রকল্পে জমা রাখা
অর্থও তুলে নিচ্ছেন। এতে করে কিছু দুর্বল ব্যাংকে তারল্য সংকট বেড়েছে। ওইসব ব্যাংক
এখন ধারের প্রবণতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) কলমানি মার্কেট থেকে কিছু দুর্বল ব্যাংক
৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ধার করেছে। এতে সর্বোচ্চ সুদ ছিল সাড়ে ৯ শতাংশ। সর্বনিম্ন সুদ
ছিল ৮ শতাংশ। এ সুদহার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানাভাবে মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে একটি সীমার
মধ্যে রেখে দিয়েছে। এছাড়া স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ধার করেছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এতে
সুদহার ছিল ১০ থেকে প্রায় ১২ শতাংশ।
এর আগে, ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক দিনে সর্বোচ্চ ২৬
হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ধার করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকগুলো আমদানি ব্যয়
মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার কেনায় মোটা অঙ্কের অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আটকে
গেছে। এছাড়া বিভিন্ন ট্রেজারি বিল ও বন্ডেও বিনিয়োগ করেছে। ট্রেজারি বিল পুনরায় কিনে
নেওয়ার চুক্তি বা রেপোর আওতায় ওইসব অর্থ ব্যাংকগুলোকে স্বল্পমেয়াদে ধার দিচ্ছে।
এদিকে, ব্যাংকগুলোতে এখনো আমানত বাড়ার চেয়ে ঋণ বাড়ছে বেশি হারে।
ঋণ হিসাবে বিতরণ করা অর্থ আদায় হচ্ছেও কম। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট বেড়েছে।
এছাড়া বাজারে নিত্যপণ্যের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় মানুষের
সঞ্চয় করার মতো সক্ষমতা কমে গেছে। এমনকি আগের সঞ্চয় ভেঙে জীবিকা নির্বাহ করছে।
এতে করেও ব্যাংকে সঞ্চয় প্রবণতা বাড়ছে না। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলোতে নানা সংকটের কারণে গ্রাহকদের মধ্যে নানা ধরনের বিভ্রান্তিও তৈরি হয়েছে।
তারল্য সংকট ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
দাম কমানোর একদিন পরই আবারও ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯ হাজার টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল দুই দিনের ব্যবধানে ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৪টা থেকে কার্যকর হয়েছিল।
আর গত ২১ এপ্রিল একদিনের ব্যবধানে ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।
এছাড়া গত ২০ এপ্রিল সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ ৮৪০ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। আর ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ১৯৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথম চার মাসেই দেশের বাজারে ১২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৭ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ৫ বার। এর মধ্যে এপ্রিলেই দাম সমন্বয় হয়েছে ৭ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।
স্বর্ণ বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বাজুস
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বিসিএস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন বাজুস
মন্তব্য করুন
দাম কমানোর একদিন পরই আবারও ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর করা হয়েছে।