ক্লাব ইনসাইড

ইবিতে র‌্যাগিং কাণ্ড: তদন্তে সত্যতা মিললেও ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি


Thumbnail

তিনমাস আগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলে এক নবীন ছাত্রকে বিবস্ত্র করে র‌্যাগিং ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে হল কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি করা হয়।

তদন্তে ঘটনার সত্যতা পায় কমিটি। গত এপ্রিলে কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তারা। একইসঙ্গে শাস্তির সুপারিশও করা হয়। তবে প্রতিবেদন জমা দেয়ার চার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ঘটনা ধামাচাপা দিতে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তে ঢিলেমি করছে বলে অভিযোগ সচেতন শিক্ষার্থীদের।

সূত্র মতে, চলতি বছরের ৭ই ফেব্রুয়ারি লালন শাহ হলের গণরুমে (১৩৬ নম্বর কক্ষে) নবীন ছাত্রকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠে। ভুক্তভোগী আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ওইদিন রাত সাড়ে ১২ টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় তার উপর নির্যাতন চালানো হয় এবং ভয় দেখিয়ে বার বার বেড-পত্র বাইরে ফেলে দেয়া হয় বলে জানায় ভুক্তভোগী। নির্যাতনের সময় উলঙ্গ করে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা, বারংবার রড দিয়ে আঘাত, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও নাকে খত দেয়া হয় বলেও অভিযোগ করে সে।

ঘটনা প্রকাশ্যে এলে ১৩ই ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ। পরে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় কোনো প্রত্যক্ষদর্শী থাকলে মৌখিক বা লিখিতভাবে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য পৃথকভাবে গণবিজ্ঞপ্তি দেয় তদন্ত কমিটি। বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য দাতার নাম ও পরিচয় শতভাগ গোপন রাখা হবে বলেও জানানো হয়। পরে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনে তদন্ত কমিটি।

সব তথ্য যাচাই বাছাই শেষে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে প্রশাসনের তদন্ত কমিটি ও ২২শে এপ্রিল হল কর্তৃপক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তের প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় বলে জানায় সূত্র। ফলে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল। দ্রুত বিষয়টির সুরাহা করার দাবি তাদের। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় গুরুতর অভিযুক্ত হিসেবে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের মুদাচ্ছির খান কাফী ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মোহাম্মদ সাগরের নাম উঠে আসে। এছাড়া ইতিহাস বিভাগের উজ্জ্বল হোসেনের কম সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে জানা যায়। তারা সবাই ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী।

এই বিষয়ে প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, গত ঈদের ছুটির আগেই আমরা ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিয়েছি। সিদ্ধান্তের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ নানাবিধ ব্যস্ততায় বিষয়টা একটু পিছিয়ে গেছে। তবে হয়তো খুব দ্রুত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, এখনও ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়নি। কিছুদিনের মধ্যে শৃঙ্খলা কমিটির সভা ডাকা হবে। সেখানে তদন্ত রিপোর্টের আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।


র‌্যাগিং   তদন্তে গড়িমসি   ইবি  


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

ইবিতে গণরুমে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় বহিষ্কার ৩ শিক্ষার্থী


Thumbnail

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন হলে নবীন শিক্ষার্থীকে রাতভর র‌্যাগিংয়ের ঘটনার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তিন শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত আরও ২ জনকে সতর্ক করা হয়।

রোববার (০২ মে) রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়।

বহিস্কৃতরা হলেন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সাগর প্রমানিক ও উজ্জল হোসাইন এবং একই শিক্ষাবর্ষের শারিরীক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের মুদাচ্ছির খান কাফি। এছাড়াও ঘটনায় অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাসিম আহমেদ মাসুম ও আইসিটি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিসনো আল আসনাওয়ীকে সতর্ক করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, র‍্যাগিং সংক্রান্ত ঘটনার যাচাই-বাছাই পরবর্তী তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও ছাত্র শৃঙখলা কমিটির ১৩তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ বহিস্কার আদেশ। এবং কেন আপনার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে মর্মে আগামী ০৭(সাত) কার্যদিবসের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনপূর্বক নিম্নস্বাক্ষরকারী বরাবর লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার জন্য বলা হলো।

জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে পরিচয় পর্বের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থী।

উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে রাতভর দফায় দফায় নির্যাতন চালানো হয় নবীন শিক্ষার্থী অপু মিয়াকে। এ সময় তাকে রড দিয়ে আঘাত করা, বিবস্ত্র করে টেবিলের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা ও নাকে খত দেওয়ানোসহ নানাভাবে নির্যাতনর অভিযোগ ওঠে।


ইবি   র‌্যাগিং   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

ইবিতে ‘জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে শুদ্ধাচারের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালা


Thumbnail ইবিতে ‘জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে শুদ্ধাচারের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি ২০২৩-২৪ বাস্তবায়ন এবং বিভাগ অফিস সমূহে জবাবদিহিতা স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে শুদ্ধাচারের ভূমিকাশীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (০২ জুন) সকাল ১১ টায় প্রশাসন ভবনের ৩য় তলার সভাকক্ষে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর . শেখ আবদুস সালাম। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এপিএ টিমের আহবায়ক প্রফেসর . মো: মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ. এম. আলী হাসান। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন উপ-রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) এপিএ ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা চন্দন কুমার দাস। এছাড়াও কর্মশালায় বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি এবং অফিস প্রধানরা অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় বক্তারা সকলকে নিজেদের দায়িত্ব সুষ্ঠু সুচারুরূপে সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন।


ইবি   কর্মশালা   জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা  


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

জাবিতে গাছ কেটে ভবন নির্মান, প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশ: ০৩:২৬ পিএম, ০২ জুন, ২০২৪


Thumbnail জাবিতে কোন মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া কাটা হয়েছে শতাধিক গাছ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নতুন কলা ভবনের বর্ধিতাংশ ও চারুকলা বিভাগের ভবন নির্মাণের জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে প্রায় দুই শতাধিক গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একাংশ। 

 

রোববার (২ জুন) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন সংলগ্ন গাছ কাটার স্থানে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।  

 

মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমনের সঞ্চালনায় বর্তমান প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা, ব্যর্থতা ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে গাছ কাটার প্রতিবাদ জানান ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।

 

মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সহ-সভাপতি মুক্তারুল ইসলাম অর্ক বলেন, ঢাকায় বৃক্ষ নিধনের ফলে সেখানে তাপমাত্রা অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ঢাকার মতো প্রবলেম যেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে না হয় এজন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা জরুরি। এই প্রসাশন দেখায় যে তারা প্ল্যান করে বিল্ডিং তৈরি করছে, তাহলে প্রতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি চলাকালীন কেন গাছ কাটা হয়? নাকি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ভয়ে পেয়ে। অথচ পুরাতন বিল্ডিং ভেঙে, নতুন বিল্ডিং করার কথা তাদের মাথায় আসে না। তাদের কোনো পরিকল্পনাই নেই এ বিষয়ে।

 

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোকে ঘাস চাষের জন্য লিজ দেওয়া হচ্ছে, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কী টাকার অভাব রয়েছে? বাংলাদেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে লিজ দিয়ে ঘাস চাষের ইতিহাস নেই। 

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ছাড়া ভবন নির্মাণ কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কখনো শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে না। তাই তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য অপরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ নিধন করছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই। সকল শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানাই যেন আমাদের এ আন্দোলনে তারা যোগদান করেন। 

উল্লেখ্য, এসময় মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আলিফ মাহমুদ সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 


জাবি   গাছ কাটা   মানববন্ধন  


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

রাবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানীরা

প্রকাশ: ০৩:১২ পিএম, ০১ জুন, ২০২৪


Thumbnail সাম্প্রতিক ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মাদার বখ্শ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল সংলগ্ন দোকানীরা। সংঘর্ষের দিনে চেয়ার-টেবিল এবং দোকানগুলোর বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করাসহ নগদ ক্যাশও লুট করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

দোকানীরা বলছে, আমরা নিজেরা কষ্ট করে উপার্জন করি, আমাদের জীবন এভাবেই চলে। সংঘর্ষে তারা (ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা) আত্মরক্ষায় আমাদের জিনিসপত্র ব্যবহার করে নষ্ট করেছে, কিন্তু আমাদের চলার খরচ দিবে কে?

অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতারা বলছে, তারা বিষয়ে জানেন না। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

এবিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল সংলগ্ন দোকানদার মানিক মিয়া বলেন, ঘটনার দিন রাতে আমার দোকান বন্ধই ছিল কিন্তু বাহিরে থাকা ফ্রিজ ক্যাজ প্রান-আপের কাচের বোতল ভেঙে ফেলা হয়। ফ্রিজে থাকা মালামালগুলো আমি আর খুজে পায়নি। সেই সাথে বাহিরে থাকা কাঠের টেবিলগুলোও ভেঙে ফেলা হয়। সব মিলিয়ে আমার প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।

ময়না হোটেলের মালিক জানান, সংঘর্ষের দিন আমাদের ৪টি বালতি ৩টি গামলা -১০টি প্লেট, ১০টি গ্লাস, একটি বড় ধরনের পাতিল ভেঙে ফেলা হয়। সেইসাথে ক্যাশে থাকা নগদ প্রায় হাজার টাকা তারা লুট করে নিয়ে যায়। আসলে আমাদের দেখার মত কেউ নেই। আমরা নিজেরা কষ্ট করে উপার্জন করি এবং আমাদের জীবন এভাবেই চলে। তাদের আত্মরক্ষায় আমাদের ড্রামের ঢাকনা ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু আমাদের চলার খরচ দিবে কে?

চা বিক্রেতা বেলাল মিয়া বলেন, ১১ মে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে তার ৩টি কাঠের টেবিল, ৪টি প্লাস্টিকের টুল, ২টি কাচের বিস্কিটের বক্স ৪টি চায়ের কাপ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতে সবমিলিয়ে তার প্রায় ৪হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আরেক দোকানদার শরিফুল ইসলাম জানান, সেদিন আমার দোকান বন্ধ ছিল, কিন্তু বাহিরে রাখা তিন হাজার টাকা দামের একটি টেবিল তারা ভেঙে ফেলে। আমাদের দায়ভার নেওয়ার মতো কেউ নেই। আমরা এখন ক্ষতিপূরণ কার কাছে চাইবো? এছাড়াও আশেপাশে থাকা আরও তিন-চারটি দোকানের কয়েকটি কাঠের চেয়ার, টেবিল টুল ভেঙে ফেলা হয় বলে দোকানীদের সঙ্গ কথা বলে জানা গেছে।

বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব জানান, আমি তো সেখানে কয়েকদিন গেছি। আমাকে বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি, অভিযোগও করেনি। কেউ যদি এমন অভিযোগ করে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর পেপসির বোতলগুলো নিয়াজরা (শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) নিয়ে গেছে।

যদিও সংঘর্ষের দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কমিটির সভাপতি সম্পাদকের বিপক্ষ অবস্থান নেয়া ছাত্রলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ তার অনুসারীদের দোকান সংলগ্ন জায়গাগুলোতে অবস্থান নিতে দেখা যায়নি। এই পক্ষটি সেদিন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের অভ্যন্তরে অবস্থান নিয়েছিল।

জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু জানান, আমি বিষয়ে জানিনা। দোকানদারদের পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তারা যদি অভিযোগ করে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এই বিষয়টি অবশ্যই দেখব।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের অতিথি কক্ষে বসাকে কেন্দ্র করে গত ১১ মে রাবি শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষেও মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ দফায় দফায় রামদা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়ানো ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ হলো- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (বহিষ্কৃত) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ।

ঘটনায় ১৪ মে রাতে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহিনুল সরকার ডন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু সাংগঠনিক সম্পাদক কাবিরুজ্জামান রুহুলকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বহিষ্কৃতরা সবাই বর্তমান কমিটির বিপরীত পক্ষ হয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলেন।


রাবি   ছাত্রলীগ   সংঘর্ষ   ক্ষতিগ্রস্ত  


মন্তব্য করুন


ক্লাব ইনসাইড

ইবি ক্যাম্পাসে মাসে বিক্রি লাখ টাকার সিগারেট


Thumbnail

ধূমপানের কালো মেঘে ছেয়ে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাস। নিয়মিত ধূমপানে আসক্ত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ভয়াবহ হারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটা বড় অংশও নিয়মিত ধূমপান করেন। প্রতি মাসে ক্যাম্পাসে ২৮ লাখ টাকারও বেশি সিগারেট বিক্রি হচ্ছে, যা দিনে প্রায় এক লাখ টাকা।

এটা শুধু আর্থিক ক্ষতি নয় বরং শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। সিগারেটের ক্ষতিকর নিকোটিনের প্রভাবে তাদের মধ্যে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। তারা মনে করেন, ক্যাম্পাসে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এই সংকটের সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অপরিসীম ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বড় একটি অংশ ধূমপানে আসক্ত। এছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্ররা ধূমপানে বেশি আসক্ত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রীদের একটি অংশও ধূমপানে জড়িয়ে পড়ছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া নতুন ব্যাচ যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের অনেকে ধূমপান থেকে অন্যান্য মাদকে আসক্ত হচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

কয়েকটি বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বিভাগে প্রায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী ধূমপানের সঙ্গে জড়িত। এরমধ্যে ৩০-৩৫ শতাংশ নিয়মিত ধূমপান করেন। ক্যাম্পাসে একাডেমিক ও আবাসিক এলাকার দোকানগুলো থেকে এসব সিগারেট সংগ্রহ করেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের দোকানগুলোতে দুটি কোম্পানির প্রতিনিধিরা সিগারেট সরবরাহ করেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি ছয় ব্র্যান্ডের ১৪ ধরনের এবং জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল তিন ব্র্যান্ডের সাত ধরনের সিগারেট বিক্রি করে থাকেন বলে জানিয়েছে সূত্র।

এসব কোম্পানির বিপণন কর্মকর্তা ও ক্যাম্পাসের মুদি দোকানিদের সঙ্গে কথা হলে তারা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তারা জানান, দুই কোম্পানি ক্যাম্পাসের অন্তত ২২টি দোকানে প্রতিমাসে গড়ে ২৪ লাখ টাকার সিগারেট সরবরাহ করে। যার খুচরা বিক্রয় মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা। স্বাভাবিক দিনগুলোতে গড়ে পৌনে এক লাখ টাকার সিগারেট বিক্রি হয়। বিশেষ দিনে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার সিগারেট বিক্রি হয় বলে জানান তারা।

দোকানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাসে গড়ে প্রায় আড়াই লাখ শলাকা সিগারেট সরবরাহ করে কোম্পানি দুটি। সময়ের সঙ্গে বাড়ছে বিক্রির পরিমাণ। মুদি দোকানগুলোতে অন্যান্য পণ্যের তুলনায় সিগারেট বেশি বিক্রি হয় বলে জানা গেছে। এসব দোকানে দৈনিক মোট বিক্রির ৫৫-৬০ শতাংশই আসে সিগারেট থেকে। সিগারেট ক্রেতাদের মধ্যে বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে জানান দোকানিরা।

সূত্র বলছে, ক্যাম্পাসের আবাসিক হলের ডাইনিং ও অভ্যন্তরের খাবারের হোটেলগুলো মিলিয়ে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকার খাবার বিক্রি হয়। ফলে হিসাব অনুযায়ী খাবারের তুলনায় অর্ধেক ব্যয় হয় ধূমপানে।

ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ের এক মুদিদোকানি বলেন, আমার দোকানে প্রতিদিন গড়ে আট হাজার টাকার সিগারেট বিক্রি হয়। অন্য সব পণ্য মিলে বিক্রি হয় পাঁচ হাজার টাকার মতো। এরমধ্যে খাবার পণ্য বিক্রি হয় সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় হাজার টাকার। গত কয়েক বছরের তুলনায় এখন দুই থেকে তিনগুণ বিক্রি বেড়েছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই ধূমপানে আসক্ত হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর। এটিকে ‘আধুনিকতা’হিসেবে নিয়ে এবং বন্ধু ও বড়ভাইদের দেখে ধূমপানে জড়াচ্ছেন নবীন শিক্ষার্থীরা। অনেকে শিক্ষকদের দেখেও অনুপ্রাণিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

নিয়মিত ধূমপানের ফলে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় পড়ছেন বলে জানা গেছে। ধূমপান ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের রোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ফলে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বাঁচতে এখনই সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ফুসফুস ক্যানসারের ৮০-৯০ শতাংশের ক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে ধূমপান। শিক্ষার্থীদের এই ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সচেতনতামূলক প্রচারণাসহ ক্যাম্পাসে সিগারেট বিক্রির ক্ষেত্র সীমিত করা প্রয়োজন।

ধূমপান শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি অপরাধপ্রবণ করে তুলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শিক্ষাজীবনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে ধূমপান। শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধূমপান বড় প্রভাবক। ফলে ওষুধও সঠিকভাবে কাজ করে না। যারা ধূমপায়ীদের আশপাশে থাকেন তাদেরও একই ক্ষতি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইচ্ছে করলে ক্যাম্পাসে এর বিক্রি বন্ধ করতে পারে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ধূমপানে আসক্তি আসলে পারিবারিক ও প্রতিবেশগত শিক্ষার বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে মূলত ‘হিরোইজম’-এর চিন্তা ও বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে ধূমপানে যুক্ত হয় শিক্ষার্থীরা। তবে সবচেয়ে কষ্ট লাগে যখন শুনি শিক্ষকরাও ধূমপান করেন। আমরা আগামীতে মাদকবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে ধূমপানকেও যুক্ত করবো।


ইবি   সিগারেট   রমরমা বানিজ্য   স্বাস্থ্য ঝুঁকি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন