কালার ইনসাইড

শেখ হাসিনার গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:৪৬ পিএম, ১৪ নভেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

‘হাসিনা- এ ডটার’স টেল’ শিরোনামের ডকু- ফিল্মটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১৬ নভেম্বর। ছবিটি এরইমধ্যে আলোচনা তৈরি করেছে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আদর্শ নয় বরং তার নিতান্তই ব্যক্তি জীবনের গল্প ফুটে উঠেছে যেখানে। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণের অভিজ্ঞতা জানালেন নির্মাতা রেজাউর রহমান খান পিপলু

শুরুটা কীভাবে?

আমি সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর অনেকজনকে পার্সোনালি চিনতাম। আমি যেহেতু বিজ্ঞাপন বানাই। ওনাদের সঙ্গে কাজ করতাম অনেকদিন থেকেই। এটা একটা ইনসিডেন্টাল অকুপেশনের মধ্যে পড়ে যাওয়ার অবস্থা। এমন না যে প্ল্যান করে আমাকে ডাকলো। আমাকে প্রপোজাল দিলো বা আমার রিকমেন্ডশন বললাম। ব্যাপারটি মোটেও এমন ছিল না। ওনাদের দিক থেকেও খুব একটা অর্গানিক প্রসেস ছিল না। ওনাদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল এভাবেই একদিন ভাবনায় আসলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যকলাপ কিছু ডকুমেন্টশন করে রাখি। এটা ফ্যামিলি লেভেলের জন্য। কোন অফিশিয়াল ব্যাপার নয়। এরকম একটা আমেজে আমরা তাঁর কিছু ইন্টারভিউ নেয়া শুরু করলাম। ইন্টারভিউটা একটু পেছনের গল্প থেকে শুরু করি। ওইটা যে একটা ছবি হবে। সেটা কখনোই ভাবনায় ছিল না। এইটা প্রায় বছর দুয়েক কিছু সময় অন কিছু সময় অফ রাখা হলো। বছর দুয়েক যাওয়ার পর আমরা বুঝতে পারলাম এটার একটা সম্ভাবনা আছে। তখন থেকেই আসলে আমরা এটাকে স্টোরিক্যাল ওয়েতে সাজাতে শুরু করলাম। আমাদের জার্নিটা শুরু হয়েছে ২০১৩ সালে।

পাঁচ বছর! দীর্ঘ সময়…

এমন না যে এটার পাঁচ বছর ধরে কাজ চলছে। সেটা বললে ডিরেক্টরের জন্য অনেক ভারী হয়ে যাবে। দৈর্ঘ্য মাত্র ৭০ মিনিট। তার জন্য এত সময় কেন লাগলো! ব্যাপারটি মোটেও এমন কিছু নয়। ব্যাপারটি ছিল প্রসেসিংয়ের। এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে নিয়ে কাজ করা। তার সময় , আমাদের সবার সময়। তার সঙ্গে ডেট মেলানো। ডকুমেন্টশন যোগাড় করা। অনেক প্রসেসিং ছিল। অনেক আর্কাইভাল ছিল। যেগুলো সংগ্রহ করা সহজ ছিল না। অনেক পুরনো ফুটেজ ডকুমেন্টশনের জন্য পত্রিকা অফিস থেকে শুরু করে নানা জায়গায় যেতে হয়েছে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর কিছু পুরনো ফুটেজ। বিভিন্ন ছবি। পুরো ব্যাপারটি আবার এত স্লো। এ জন্য আসলে আমাদের এই সময়টা লাগলো।

ক্যামেরার সামনে প্রধানমন্ত্রীকে ডিরেকশন দেয়ার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

আসলে ডিরেকশন দেয়ার কোন টোনই ছিল না। আমাদের প্ল্যান ছিল। উনি আমাদের নক দিতেন। আজকে অফিসে থাকবো। বা গণভবনে রেস্টে থাকবো। তোমরা আসতে পারো। এটা এমন না যে এমন সেট করতে হয়েছে। এখানে আসতে হবে বসতে হবে। এই এক্সপ্রেশন দিতে হবে। এমন কিছু হয়নি। খুবই বৈঠকী ঢংয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি। সেগুলোই আমরা ক্যামেরায় ধারণ করেছি। অনেক সময় কোন একটা কাজ করছেন। কিছু লিখছেন সেটাও হয়তো ক্যাপচার করলাম। খুবই সিম্পেল ওয়েতে আমরা এগিয়েছি। আমরা কখনো রোল ক্যামেরা অ্যাকশন বলিনি একজন অ্যাকটরের মতো। ওনার সঙ্গে সময় কাটানোর যখনই সুযোগ পেয়েছি। সেটাই শ্যুট করার চেষ্টা করেছি। সেখান থেকে যতটুকু মনে হয়েছে আমি রাখতে পারি। সেটা রেখেছি।

কোন গল্প হয়েছে?

অবশ্যই এটা একটা স্টোরি টেলিং। এই গল্পটা দাড় করানোর জন্যই আমাদের পাঁচ বছর সময় লাগলো। প্রতিটি গল্পই যে সিনেম্যাটিক হবে এরকম নয়। তবে আমরা একটা সংযোগ রাখার চেষ্টা করেছি। যার জন্য ওনার বোনের ন্যারেশন থেকে শুরু করে, যত আর্কাইভ ছিল ওনাকে নিয়ে। সবকিছুই কালেক্ট করার চেষ্টা করেছি। ওনার জার্নিটাকে আসলে নিয়ে আসবে। অনেক অনেক তথ্য আছে। যা এলোমেলোভাবে হয়তো জেনেছি আমরা। অন্যের মুখ থেকে কিংবা ভাবনা থেকে মানুষ জেনেছে। সেটা আমরা একটা গল্পের মতো সাজিয়েছি।

তাঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা?

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে গেলে যে এক্সাইটমেন্ট থাকবে। সেটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ওনার জীবনে এত এত কষ্ট আছে। উঠা নামা আছে। সেগুলোর সঙ্গে যখন পরিচয় হয়েছে। গায়ের লোম দাড়িয়ে গেছে। যারা দেখবে তাদের কি অবস্থা হয় আমার জানা নেই। যেটা বলতে হয়। আর উনি খুব ক্যাজুয়ালি সবকিছু নিতে পারেন। উনি একজন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে উনি আমার মা বা আমার বড় বোন। তার সঙ্গে যেমন সম্মানবোধ রেখে কথা বলি। যেমন আবদার করি। তেমনটা করার জায়গা উনি দিয়েছেন বলে পুরো কাজটি সম্ভব হয়েছে। ওনার জন্য কোন প্রটোকল রাখারও প্ল্যান করতে হয় না। যেমন উনি হাটছেন, ক্যামেরাম্যান ওনাকে ক্যামেরা নিয়ে ফলো করছেন। উনি সিড়ি দিয়ে উঠতেছেন। আগেই কিনা বলে এই ছেলে, সিড়ি দেখে উঠো। কিনা হালকা পড়ে যেতে গেল। উনি দৌড়ে এসে ধরেন। ধমক দেন। আরে এভাবে করো। ওনার চারপাশটাকে কিভাবে যেন উনি খুব সহজে বুঝতে পারেন। ধরুন আমাদের টিমে যারা আছেন। একদিন দেখলো আমরা কি করছি। পরেরদিন তিনি বলে দিতে পারবে কে কি করি। কিনা দেখা গেল আমার জুতার ফিতাটা খোলা। এত ঝামেলার মধ্যে কিনা হঠাৎ করে বলবে এই পিপলু তুমি জুতার ফিতা বাধো। পড়ে যাবে তো। এই যে ছোট ছোট জিনিস। এগুলো খুব সারপ্রাইজিং ছিল। তিনি খেতে যাবে। আমাদের জিজ্ঞেস করতে ভুলে না যে খেয়েছো কিনা। পাঁচ বছর তার সঙ্গে কাটিয়েছি। কতশত এক্সপেরিয়েন্স আছে।

কোথায় কোথায় শুটিং করা হয়েছে?

আপাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তো আমি সবচেয়ে বেশি পেয়েছি গণভবন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। এ ছাড়াও অনেক সময় সরকারি কিছু অনুষ্ঠানে দৃশ্য ধারণ করেছি। ছবিতে আমরা দেখব, বাবার (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) মৃত্যুর পর আপা জার্মানি, ব্রাসেলস থেকে শুরু করে দিল্লি—যেখানেই গেছেন সেখানে আমাদের যেতে হয়েছে। আমি তথ্যচিত্রটাকে এমনভাবে পরিকল্পনা করেছি, তাঁর সঙ্গে শুটিংয়ের ব্যাপারটা দেশেই রেখেছি। বাকি জায়গাগুলোতে তাঁর যাওয়ার দরকার পড়েনি।

১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা দিল্লীতে ছিলেন। এই সময়টা তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল বলা চলে। পরিবারকে হারিয়ে তিনি পরবসী। এই সিনেমায় দিল্লীর গল্পও বলেছেন। ডকু-ড্রামাটির জন্য দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী যাননি। তবে আমি ও আমার টিম দিল্লীর সেসব জায়গা তুলে ধরেছি। পানডারা রোডের বাড়ি ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধীর রেসকোর্স রোডের বাড়ি যেখানটা এখন তার নামে জাদুঘর হয়েছে। সেসবও উঠে এসেছে। ইন্ধিরা গান্ধীর অথিতেয়তার কথাও বলা হয়েছে।


প্রতিবন্ধকতা কোন?

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ওনার ‘ডেট’। ওনার সিকুয়েরিটি। অনেক টাইম নিয়ে ধৈর্য্য ধরে শ্যুট করতে হয়। সেই সময়টা পাওয়া তো বেশ কষ্টসাধ্য ছিলই। আর আমাদের হিস্টোরির আর্কাইভাল তো অনেক দুর্বল। আমরা অনেক জায়গায় অনেক কিছু চাইলেও সহজে পাইনি। সেটার জন্য আমরা এসোসিয়েট প্রেস- এপি, আইপি, বিবিসির মতো সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।

শেখ রেহানা ছিলেন…

দুইবোন হরিহর আত্মা। খুবই আত্মিক সম্পর্ক। গল্প বলতে গেলে একে অন্যের ছাড়া যেন কিছুই সম্ভব নয়। শেখ হাসিনার অন্য পিঠ শেখ রেহানা। একটা কমপ্লিমেন্টিং অংশে ওনাকে দেখা যাবে। ওনার পরিবারের প্রায় সবাই এসেছেন এর মধ্যে। যেমন আপনার বাড়ি আমি বেড়াতে গেলাম। সেখানে তো আপনার পরিবারের মানুষের সঙ্গে আমার দেখা হবেই। তেমনভাবে পরিবারের মানুষজনও ছিলেন। তবে প্ল্যান করে কেউ আসেনি।

এর বাইরে শোবিজ নিয়ে কোন কথা হয়েছে?

আমি আসলে আমার কাজটা জানতাম। এই কাজটির বাইরে অন্য কিছু নিয়ে কথা বলাই হয়নি। ওনাকে ডাইভার্টও করতে চাইনি। আমি তো জানতাম আমার স্ট্রাকচার কি। আমার ওইটাই ফোকাস ছিল।

প্রধানমন্ত্রী দেখেছেন?

এটা একটা রোবটিক সিনেমা। ওনার কোন মন্তব্য আমরা আশাও করিনি। দেখতে চাননি। বলেছেন অনেক কথা বলেছি। আশা করি সেটা ভালোভাবেই করেছ। আমরা জোর করেছি, আপা আপনার দেখতেই হবে। ওনার অনুভুতিতা অনেক ভাড়ি ছিল। এটা যতক্ষন না পর্যন্ত কেউ না দেখবে। আমি বোঝাতে পারবো না প্রধানমন্ত্রীর অনুভুতি কি হতে পারে। আমাদের কাজ দিয়ে আমার মনে হয়েছে ওনার অনুভুতিতা ছুঁতে পেরেছি। কোনো কারেকশান দেননি যে এটা এরকম করো, এটা বদলে দিও। তিনি কেবল মজা করেছেন তার মেকাপ নিয়ে। বলছিলেন, ‘বয়স হয়েছে। মেকাপ যেন বেশি না লাগে।’ সেটা আমরা এডিটিংয়ের সময় মাথায় রেখেছিলাম।

মাত্র চারটি হলে কেন?

ছবিটির মধ্যে অনেক সরলতা আছে। অনেক ট্রাজেডি আছে। সব সত্য আছে। এটা আপনাকে এন্টারটেইন করবে। এটা আপনাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাবে। একটা ডকু ড্রামা হলে রিলিজ করেছি। এটাই তো অনেক। তবে এটা তো একসপ্তাহে শেষ হয়ে যাওয়ার কোন ব্যাপার নেই। এটা যুগ যুগ বেচে থাকার মতো একটা বিষয়। যেটা আজকে চারটি হলে রিলিজ দিয়েছে। কালকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। এখান থেকে কোন ব্যাবসা বা অন্য কিছু নয়। এটা আমি সাধারণ দর্শক হিসেবে দেখবো আপনি দেখবেন। বাংলাদেশের মানুষ সবাই দেখবেন বলে আশা করি। ছবিটি দেশের চারটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। ঢাকায় বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্স, যমুনা ব্লকবাস্টার ও মধুমিতায় ছবিটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আর রাজধানীর বাইরে ছবিটি চট্টগ্রামের মিনিপ্লেক্সে দেখানো হবে।

কি দেখবো?

আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনীতির মঞ্চে বহুবার দেখেছি। তাকে হাসতে দেখেছি, কাঁদতে দেখেছি। রাজনীতির মঞ্চে মরতে মরতে বাঁচতে দেখেছি। মানুষের পাশে তাকে দেখেছি, মানুষকে তার পাশে দেখেছি। দেখেছি স্লোগানে বক্তৃতায় রাজপথে ভাষণে, দেখেছি গোটা জাতিকে মায়ের আঁচলে আগলে রাখা শাসনে। কিন্তু কখনো দেখেনি একান্ত নিভৃত্তে একা মানুষটাকে, একটি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনাকে।

পাঁচ বছর! দীর্ঘ সময়। কেমন সম্পর্ক হলো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে?

আমরা যখন কাজটি হাতে নেই তখন ২০১৩ সাল। মানে রানিং প্রধানমন্ত্রীর সাথে কাজ! বিষয়টা সহজ ছিলো না। আমিও ভাবলাম এমন একটা কাজ করতে হলে প্রধানমন্ত্রীর থেকে দূরে দূরে থাকলে হবে না। আমি বুদ্ধি করে উনাকে বললাম, আপনাকে আমি আপা বলে ডাকবো। মাঝে মধ্যে একটু আধটু বিরক্ত করবো। প্রথমে তিনি আমাকে ‘এই ছেলে’ বলে ডাকতেন, এরপর আসতে আসতে আমাকে বললেন ‘এই পিপলু’। এভাবেই আমার কাজটা করতেও সহজ হয়ে যায়। মনে আছে প্রথম সাক্ষাতের সময় আলাপে আলাপে প্রধানমন্ত্রী বলছিলেন ‘এই জানো, আমি রেহানা একে অন্যের শাড়ি ভুল করে পরে ফেলি।’ তাঁর মুখে এই রসাত্মক কথাটা শুনতে শুনতে আমার মনে হয়েছিলো এই মানুষটির সঙ্গে ডাল চাল নিয়ে কথা বলা যায়। তিনি একদমই ঘরের মা-বোনের মতো আচরণ করেছেন। আর সেটাই আমাদের দরকার ছিলো।

আসন্ন নির্বাচনের আগে তথ্যচিত্রটি প্রভাব ফেলবে?

আমাদের এই ধরনের উদ্দেশ্য ছিল না। তথ্যচিত্রটি নির্বাচনে বা রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, তা নিয়ে আমরা অতটা ভাবিনি। আমরা শুধু একজন সাধারণ কন্যার গল্প বলার চেষ্টা করেছি। আমি চেষ্টা করেছি সাদামাটা একটা উপস্থাপনের। আমার মাথায় ছিলেন ব্যক্তি শেখ হাসিনা। তিনি কী পছন্দ করেন, কী খেতে ভালোবাসেন, কী ধরনের শাড়ি তিনি পছন্দ করেন? ছেলেমেয়ে ও নাতিদের সঙ্গে কীভাবে সময় কাটান, তার বোনের সঙ্গে রসায়নটা কেমন, কেমন তার জীবনযাপন? স্বজন হারানোর ভাবনা তাকে কীভাবে প্রভাবিত করে, কীভাবে কেটেছে তার নির্বাসিত জীবনের দিনগুলো- এইসব জানতে চেয়েছিলাম।

বাঙালি জানে ঠাকুর বাড়িতে কী রান্না হতো, ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা কীভাবে শাড়ি পড়তো, কেমন করে পড়তো। সেইসব নিয়ে পত্রিকায় নানারকম লেখা ও ফিচার দেখি। কিন্তু বাঙালি কোনোদিন জানতে চায়নি বঙ্গবন্ধুর পরিবারে কী রান্না হতো? সুলতানা কামাল চমৎকার শাড়ি পড়তেন, ফ্যাশনেবল ছিলেন। সেগুলো কিন্তু আমাদের মেয়েদের কাছে জনপ্রিয়তা পায়নি।

কেন? যে পরিবারটি এ দেশের রাজনীতির সঙ্গে এত গভীরভাবে জড়িত, দেশের মুক্তির সঙ্গে যে পরিবারের এত ত্যাগ রয়ে গেছে সেই পরিবারটির সঙ্গে আমাদের এত দূরত্ব কেন? কারণ নানা রিউমার ও গল্প ঘৃণার জন্ম দিয়ে একটা দেয়াল তৈরি করা হয়েছে।

কাজটি করতে গিয়ে ব্যাক্তিজীবনকে কতটা প্রভাবিত করেছে?

আমরা যারা আশির দশকে বেড়ে ওঠেছি দেখেছি তখন জয় বাংলা বলা যেত না। কোথাও বঙ্গবন্ধুর নাম নিশানা ছিলো না। ওসব প্রায় নিষিদ্ধ ছিলো। বাঙালি জাতিসত্ত্বার গুরুত্ব ছিলো না। বলা হতো দেশটা মুসলিমদের। কিন্তু যখন নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন হলো তখন বুঝলাম দেশের ইতিহাস নিয়ে এতদিন একটা ফাঁকি দেয়া হয়েছিলো আমাদের। আমি নিজে এমন একটি পরিবারে বড় হয়েছি যেখানে আমিও অনেক জানতে পারিনি। ইতিহাস সম্পর্কে, বঙ্গবন্ধুর পরিবার সম্পর্কে। আসলে আমার বাবা বৃটিশ আমলের মানুষ। তিনি বৃটিশদের দেখেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছেন। পাকিস্তান ভাগ হতে দেখেছেন। সেখানেও কন্ট্রিবিউশন ছিলো। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্যও কাজ করেছেন। তার কাছে মুক্তিযুদ্ধের পরে আর তেমন করে দেশপ্রেমের আবেগ কাজ করেনি। এতগুলো জাতিসত্ত্বার ভেতর দিয়ে যাতায়াত করে তার জাতীয়তার বড়াইটা আর ছিলো না।

কিন্তু আমি তো সেই বড়াটা করতে চেয়েছি। আমি কেন জানবো না আমার জাতির জনকের পরিবারের কথা। বঙ্গবন্ধু তার স্ত্রীকে রেনু বলে ডাকতেন। এটা আমার ছেলে কেন জানবে না। আমার এটা মনে হয়েছে। এবং সেটা জানার ও জানানোর চেষ্টা করতেই এই ছবিটি বানিয়েছি। যে দেয়ালটা তৈরি করা হয়েছিলো সেই দেয়ালটা ভাঙতে চেয়েছি।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ 

 



মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

বুবলীর উপযুক্ত চিকিৎসার দরকার, বললেন অপু বিশ্বাস

প্রকাশ: ০৬:১৮ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ঢালিউড প্রাঙ্গণের সুপারস্টার খ্যাত শাকিব খানের সাথে শবনম বুবলী ও অপু বিশ্বাসের গভীর সম্পর্কের কথা এখন সবার মুখে মুখে। দুজনই ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের সাবেক ঘরনি ও অভিনেতার দুই সন্তানের মা। ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করলেও মাঝেমধ্যেই অপু-শাকিব-বুবলী এই ত্রয়ীর সমীকরণ নিয়ে চর্চা উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। খবরের শিরোনাম হন তারা।
 
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে শাকিব খানের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা কথা বলেছেন বুবলী।  বলছেন, 'আইনগতভাবে আমি এখনো শাকিব খানের বৈধ স্ত্রী। তার সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম পার করি, আমাদের সন্তান অনেক সময় সে সুযোগটাও করে দেয়।'

বুবলীর বক্তব্য প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে হেসে দেন অপু বিশ্বাস। হাসতে হাসতে তিনি বলেন, ‘শাকিবকে নিয়ে তার এত এত মন্তব্যে আমি ভাষা হারাচ্ছি, আবেগাপ্লুত হচ্ছি। আমি কী বলব, বুঝতে পারছি না।’

সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন নারী হিসেবে বলব, উনি যথার্থ সম্মানীয় মানুষ। প্রতিটি মানুষের তার নিজের কাছে সম্মানের জায়গা খোঁজেন। তিনিও এতটা সময় ধরে তার ক্যারিয়ারের ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তবে আমার মনে হয় নিজের প্রচারের স্বার্থে অন্যকে ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিত্ব বিলিয়ে দেয়াটা বুদ্ধিমানের লক্ষণ নয়। আর যদি এটাই সে মনে করে, তাহলে তার উপযুক্ত চিকিৎসার দরকার।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘এই যে উনি শাকিবের একের পর এক হাঁড়ির খবর দিচ্ছেন, কিন্তু আমি কোনো হাঁড়ি খুঁজে পাচ্ছি না। কিন্তু মজার মজার খবর পাচ্ছি তার মুখ থেকে। এ ব্যাপারে আর কি-ই-বা বলব। ওনার মনে হয় ডাক্তার দেখানো উচিত।’
 
সবশেষে অপু বলেন, ‘এখন আমরা একটা পর্যায়ে আছি। আমাদের কথাবার্তা যেন যথাযথ হয়, খেয়াল রাখা উচিত। এখন এসব কথা হাস্যকর মনে হয়। অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ। আমি মনে করি ওনার সুস্থ থাকা দরকার।’


অপু বিশ্বাস   শবনম বুবলী   শাকিব খান  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

তামান্না ভাটিয়াকে ভারতীয় সাইবার সেলে তলব

প্রকাশ: ০৪:০৪ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির আলোচিত অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া এখন বলিউডেরও পরিচিত মুখ। বেশ দাপুটের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। ক্যারিয়ারে দুর্দান্ত সময় পার করছেন। কিন্তু এরই মধ্যে বিপাকে পড়লেন এ তারকা। তাকে তলব করেছে ভারতের মহারাষ্ট্র সাইবার সেল।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সাইবার সেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহাদেব অনলাইন গেমিং এবং বেটিং অ্যাপ্লিকেশনের একটি সহায়ক অ্যাপে আইপিএল ম্যাচ দেখার জন্য কথিত প্রচারের জন্য তলব করা হয়েছে তামান্নাকে।

দক্ষিণী এই নায়িকাকে আগামী ২৯ এপ্রিল মহারাষ্ট্র সাইবার সেলে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সেখাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। 

এর আগে, গত বছরও কিছু আইপিএল ম্যাচ অ্যাপে অবৈধভাবে স্ট্রিম করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে একটি অভিযোগও রয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেই মামলায় সাক্ষী হিসেবে তার বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য ডাকা হয়েছে।

ইতোমধ্যে এ মামলায় মহারাষ্ট্র সাইবার সেল গায়ক বাদশা, অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ও জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের ম্যানেজারদের বক্তব্য নিয়েছে। আর মহাদেব অ্যাপটি অবৈথ অর্থ লেনদেন এবং বাজি ধরার জন্য বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার মনিটরিংয়ে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, তামান্না ভাটিয়া ‘বাহুবলী’ এবং নেটফ্লিক্স অ্যান্থলজি ‘লাস্ট স্টোরিজ-২’ এর জন্য দর্শকমহলে বহুল পরিচিত।


তামান্না ভাটিয়া   ভারতীয় সাইবার সেল   বলিউড  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

বাংলাদেশের 'নীল জোছনা' সিনেমায় পাওলি দাম

প্রকাশ: ১০:২২ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের সরকারি অনুদানের 'নীল জোছনা' সিনেমায় অভিনয় করবেন ভারতের অভিনেত্রী পাওলি দাম। 

মোশতাক আহমেদের প্যারাসাইকোলজি বিষয়ক উপন্যাস 'নীল জোছনার জীবন' অবলম্বনে নির্মিত হবে সিনেমাটি।

সিনেমার প্রধান নারী চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী পাওলি দামকে। তার বিপরীতে কে থাকছেন সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। 

গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) পাওলির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেন নির্মাতা ফাখরুল আরেফীন খান।

তিনি বলেন, 'প্রায় ৬ বছর আগে 'নীল জোছনা' সিনেমার কাজ শুরু করেছিলাম। এরপর ২০১৯ সালে করোনা এবং আমার আরেকটি সিনেমার কারণে কাজটি বন্ধ ছিল।

এরপর আবার গত বছরের শুরু থেকে কাজ শুরু করি। সিনেমার দৃশ্যধারণ শুরু হবে মে মাসের শেষ দিকে।' 


পাওলি দাম   নীল জোছনা  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসির সামনে মানববন্ধন

প্রকাশ: ১০:২৪ এএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের উপর নারকীয় হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে সাংবাদিকরা।

গতকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে বিএফডিসি'র টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (টিসিএ) উদ্যোগে বিএফডিসি'র সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন বক্তৃতা রাখেন বিএফইউজে'র সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজের নব-নির্বাচিত অন্যতম সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু, সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রব, বাচসাস'র সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।

এসময় বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা নানাক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করে তাদের আমরা মননশীল করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন নারকীয় এই হামলার নেতৃত্ব দেওয়া জয় চৌধুরী শিবা শানু, ও আলেকজান্ডার বো'সহ জড়িত সবাইকে শিল্পী সমিতি থেকে সদস্যপদ বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান মানববন্ধন থেকে বক্তারা।

মানববন্ধনে আরও অংশ নেয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন বিটের সাংবাদিকরা।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিকালে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বো'র নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৪ জন। এ ঘটনার প্রতিবাদে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিনোদন সাংবাদিকসহ নানা বিটে কর্মরত সাংবাদিকরা।

এদিকে, ঘটনার তদন্তের জন্য ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচজন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান। দশ জনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয়, আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল, রত্না।


সাংবাদিকদের ওপর হামলা   এফডিসি   মানববন্ধন  


মন্তব্য করুন


কালার ইনসাইড

এবার বিয়ে ও বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন জয়া

প্রকাশ: ০৯:৪৯ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। ইতোমধ্যে ঢালিউড-টালিউড মাতিয়ে অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন বলিউডেও। পর্দায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে ফুটিয়ে তোলেন এই নায়িকা। সাবলীল অঙ্গভঙ্গি আর অভিনয় দক্ষতায় বরাবরই দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যান তিনি।

কাজের পাশাপাশি এই অভিনেত্রীর ঘরের খবর পেতেও মুখিয়ে থাকেন দর্শক। কবে বিয়ে করছেন, কেন একা থাকেন এসব জানার খুব শখ তাদের। বরাবরই তিনি মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। তবে এবার সবকিছু নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে জয়া কথা বলেছেন বিয়ে ও বিচ্ছেদ নিয়ে।

বিয়ে নিয়ে জয়া বলেন, বর্তমান জীবন খুবই এনজয় করছি। দেখুন, পরিবার তো শুধু স্বামী-স্ত্রীকেই ঘিরে নয়, অথবা পার্টনার হলেই হয় না, পরিবারে আরও অনেকেই আছে। পরিবারে মা-বাবা আছেন, আমার বাড়িতে যেসব লোক কাজ করেন, তারা আছেন। আমি খুবই এনজয় করি।

একাকী জীবনযাপন নিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, আমি তো কোনোকিছু পরিকল্পনা করি না। যদি মনে করি যে সিঙ্গেল থেকে ডাবল হতে চাই, দরকার আছে, তখনই হবো। তবে এই মুহূর্তে আমার কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ, আমি খুবই ভালো আছি, শান্তিতে আছি চারদিকে। আমার আপাতত কোনো প্ল্যান নেই।

এদিকে প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিজে কাজ করতে যাচ্ছেন জয়া। এটি নির্মাণ করবেন মহানগর খ্যাত নির্মাতা আশফাক নিপুণ।


জয়া আহসান  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন