নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ৩১ মার্চ, ২০২০
ইন্টারনেট সেবার অগ্রগতির সাথে সাথে এর মাধ্যমে যত প্রকারের গ্রাহক ও নাগরিক সুবিধা দেয়া যায় সেসবের উদ্ভাবনী কর্মকান্ড পৃথিবী জুড়ে হইচই ফেলে দেয়। এখন থেকে গত কুড়ি বছরের মধ্যে এইসব ডিজিটাল পদ্ধতির সেবা সুবিধা গোটা পৃথিবীর বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকর্ম ও শিক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য সেবাখাতে নাগরিকের জন্যে উন্মুক্ত হ’তে থাকে নানারকম বিচিত্র সুবিধা। এখনকার পৃথিবীর যাদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছর তারা ভাবতেই পারবেনা ডিজিটাল সেবাযুগের আগে পৃথিবীটা কীরকম ছিল! ফেসবুক তো দূরের কথা কারও হাতে তখন মোবাইল ফোনই ছিল না, ত্বরিত কেউ বিনা পয়সায় ভিডিওতে অপরের সাথে কথা বলবে সেটা ছিল রূপকথার গল্পের মতো। যদিও এখনকার প্রজন্ম ‘রূপকথা’ শব্দটির সাথেও তেমন পরিচিত নয়। প্রযুক্তির নিত্যদিনের পরিবর্তনের সাথে সাথে যুগের এই পালাবদল এখন আমাদের মেনে নিতেই হচ্ছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে ইন্টারনেট যুক্ত করে যেসব সুবিধা আমরা পাই তার কয়েকটি যেমন ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ ও ‘ভিডিও কলিং’ নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে আলাপ করেছি। আজ যে বিষয়টি আমরা পাঠকের গোচরে এনেছি তা হলো ‘ই-শপিং’ বা বাসায় বসে বাজার করা। আমরা নিজে বাজারে যেয়ে সরাসরি দোকান থেকে যেসব পণ্য কিনি ঠিক সেরকম কেনাকাটার জন্যেই এই ‘ই-শপিং’ ব্যবস্থা। একটি নির্ধারিত ওয়েব সাইটে দোকানী সব পণ্যের তালিকা, মূল্য, ছবি-সহ সাজিয়ে রাখবেন আর ক্রেতা সেই সাইটে ক্যাটেগরি আনুযায়ী সব পণ্যের বিবরণ পাবেন। এসব পণ্যের মধ্যে মাছ-মাংস-মুরগী থেকে সাধারণ গৃহস্থালি, কাপড়-চোপড়, আসবাব-পত্র ছাড়াও তেল-দুধ-ডিম ও চাল-ডাল সবই পাওয়া যায়। যেসব খাবারের পণ্য সেগুলোর মেয়াদকাল উল্লেখ ছাড়াও এসবের পুষ্টিমান দেয়া থাকে যাতে সহজেই ক্রেতা তার সম্ভাব্য সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যান। সে অনুযায়ী ক্রেতা পণ্য বাছাই করে তার জন্যে রাখা ভার্চুয়াল কার্ট বা ঝুড়িতে তুলে রাখতে পারেন যেভাবে দোকানে যেয়ে একটি ঝুড়িতে বা শপিং মলে ট্রলিতে করে সব কিছু তুলে নেয়া হয়।
অনলাইনে কেনাটার জন্যে যে খরচ তা কিন্তু আপনাকে ডিজিটাল মাধ্যমেই পরিশোধ করতে হবে। ফলে আপনার একটি ব্যাঙ্ক কার্ড (সঞ্চয় হিসাবের ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড) থাকতে হবে। আজকাল অনেক অনলাইন শপিং স্টোর নিজেরাই নানা অঙ্কের ডিজিটাল স্টোর কার্ড বা ভাউচার বিক্রয় করে যাতে সেটা প্রয়োগ করেও ক্রেতা তার পছন্দের পণ্যের মূল্য পরিশোধ করতে পারেন। তবে আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হলো ব্যাঙ্কের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড যা দিয়ে খুব সহজে ও নিরাপদে অনলাইনে কেনাকাটা করা যায়।
বাংলাদেশে বিভিন্ন কোম্পানী নানা রকম ই-শপিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে। গ্রোসারী বা বাসার কাঁচাবাজারের জন্যে মীনাবাজার ‘মীনা ক্লিক’ নামে একটি ব্যবস্থা চালু করেছে যার মাধ্যমে কেউ কেনাকাটা করলে ওই কোম্পানীর লোক বাসার ঠিকানায় মালামাল পৌঁছে দেয়। এছাড়া ‘চালডাল ডট কম’, ‘স্বপ্ন ডট কম’, ‘অথবা ডট কম’, ‘খাসফুড ডট কম’, ‘শাকসবজি ডট কম’ যাদের প্রত্যেকেরই ওয়েব সাইট আছে ও অনলাইনে কেনাকাটার ব্যবস্থার সাথে বাসায় মালামাল পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা চালু করেছে। এই ব্যবস্থাটি পৃথিবীর সর্বত্র ‘হোম ডেলিভারি’ বলে পরিচিত। বাংলাদেশে যেসব পণ্য অনলাইনে বা ইলেকট্রনিক বাজারে বিক্রি হয় প্রায় সকলেই এই ‘হোম ডেলিভারি’ দিয়ে থাকে। তবে এই ব্যবসায় নতুন বলে ও নানারকম কোম্পানী এসব সেবা চালু করেছে বিধায় বাসায় ডেলিভারি নেবার সময় পণ্যের গুণাগুণ যথাযথ আছে কিনা তা পরখ করে ও কেনা দ্রব্যের তালিকা মিলিয়ে দেখে নেয়া জরুরী। একসময় উন্নত দেশগুলোর মতো আমাদের দেশে যখন কোন ই-শপ জনগণের পুরোপুরি বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে পারবে তখন এই সেবার সম্প্রসারণ যেমন হবে তেমন মানুষও আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠে এই সেবার প্রতি আরও আকৃষ্ট হবে।
বর্তমান করোনা সঙ্কটের সময়ে দেশের মানুষকে বিশেষ করে শহরের মানুষকে ঘরে বন্দী থাকতে হচ্ছে। সম্ভাব্য সঙ্ক্রমণ থেকে নিজের ও অন্যের ক্ষতি এড়াতে যেহেতু বাড়ির বাইরে না যাওয়া ভালো ফলে ঘরে বসে ই-শপ থেকে কেনাকাটা করা ভালো ও নিরাপদ।
--
লেখকঃ পরিচালক, আমাদের গ্রাম
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন