ইনসাইড বাংলাদেশ

লাশ নিয়ে টানাটানি, ঠাঁই হলো হিমঘরে

প্রকাশ: ০১:৪৬ পিএম, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

দুই বছর আগে পরিবারের অগোচরে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন আহমাদ। ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তার নাম ছিল ‘রতন দাশ’। তবে ধর্ম পরিবর্তনের পর থেকে নিয়মিত নামাজ-রোজা পালনের পাশাপাশি মুখে দাঁড়ি রাখাও শুরু করেন আহমাদ। পরিবারের আড়ালে ইসলাম ধর্মের সব রীতিনীতি মেনে চলতো। এছাড়া বিভিন্ন হুজুরের সঙ্গে দেখা করতেন আর তাদের বয়ানও শুনতেন।

তবে এতো সবকিছু ঠিকভাবে পালন করে এলেও রবিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর লাশ হস্তান্তরের সময় সামনে আসে কোন ধর্মীয় রীতিতে তার দাফন হবে বিষয়টি। 

আহমাদ ওরফে রতন দাশের পরিবারের দাবি- তাদের সন্তান মুসলমান হননি। বন্ধুরা এসব সাজিয়েছে। ভুয়া কাগজ দেখিয়ে তারা তাদের ছেলেকে আলাদা করছে। তাই তাদের ছেলেকে সনাতন ধর্মের রীতিতেই শেষকৃত্য করবে। 

এদিকে বন্ধুরা জানায়- দুই বছর আগেই হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন আহমাদ। তাই তাকে ইসলাম ধর্মের রীতি অনুযায়ী দাফন করবে।

এদিকে লাশ হস্তান্তর নিয়ে পরিবার ও বন্ধুদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় ওই যুবকের মা পটিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। পরে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।  

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের বিচারক বিশ্বেস্বর সিংহ জানিয়েছেন, নিহত ওই যুবকের ধর্ম পরিচয় শনাক্ত হয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত লাশটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) হাসপাতালের হিমঘরে থাকবে। আর সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতের রায়ের পর কথা হয় নিহত যুবকের মা সন্ধ্যা রানী দাশের সঙ্গে। তিনি  বলেন, ‘না, আমি কিছু জানি না। আমার ছেলে ধর্ম পরিবর্তন হওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কালকে সকালেও আমার ছেলে ঘরে পূজা দিয়েছে। পরশু দিনও আমার ছেলে পূজা দিয়েছিল। আমার ছেলে মুসলিম হওয়ার বিষয়টি তারা (বন্ধুরা) সাজিয়েছে।

মুখে দাঁড়ি থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে একটা প্রতিজ্ঞা করেছিল। আমি তাকে বিয়ের কথা বলেছিলাম। সে বলেছিল, যতদিন সে প্রতিষ্ঠিত হবে না ততদিন দাঁড়ি কাটবে না। আর যতদিন প্রতিষ্ঠিত হবে না ততদনি বিয়েও করবে না। আমি দাঁড়ি ফেলবো না।

এদিকে বন্ধুরা জানিয়েছেন, আহমাদ মুসলমান হওয়ার পর থেকে ইসলামে ধর্মের রীতিনীতি অনুসরণ করতো এবং সবকিছু মেনে চলতো। এরপর থেকে সে কোনো পূজামণ্ডপেও যেত না। আহমাদ প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তো  আর সে বের হলে তার মা জানতো। এছাড়া মসজিদ থেকে জুতা চুরি হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও তার মাকে সে জানিয়েছিল।

শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় তিনি জানতেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে আহমাদের মা সন্ধ্যা রানী দাশ  বলেন, না, আমি কখনও দেখিনি। গত শুক্রবারও আমার ছেলে বিকেল ৪টা বাজে ঘুম থেকে ওঠেছে। এর আগের শুক্রবারও বিকেল ৫টার দিকে ঘুম থেকে ওঠছে। এরপর তার বন্ধুরা তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। আমার ছেলেকে তারা (বন্ধুরা) ফোনে বিরক্ত করতো। ওদের ফোনের জন্য আমার ছেলে ঘুমাতে পারতো না।

মসজিদ থেকে জুতো চুরি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতেন কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, না সেই জুতো চুরির বিষয়টি মসজিদে না। আমার ছেলে একটি গার্মেন্টসে কাজ করতো। সেখানে তার জুতো চুরি হয়েছে। সেই বিষয়টি সে আমাকে বলেছে।

আহমাদ ওরফে রতন দাশের চার বছর বয়সের সময় থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন মা সন্ধ্যা রানী দাশ। এসময় মাসিক ৩শ’ টাকা বেতনে চাকরি করে ৫০ টাকা দিয়ে ছেলের জন্য শিক্ষক রেখেছেন। ছেলেকে এতবড় করেছেন গার্মেন্টসে চাকরি করেই। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘তার যখন ৪ বছর বয়স। তখন থেকে আমি গার্মেন্টসে কাজ করতাম। মাসিক বেতন ছিল মাত্র ৩শ’ টাকা। সে টাকার মধ্যে ছেলের জন্য ৫০ টাকা খরচ করতাম তার পড়ালেখার জন্য। এখনও আমি গার্মেন্টসে কাজ করি।

আদালত রায়ের কথা সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আদালত কি রায় দিবে জানি না। আপাতত এখন আমার ছেলের লাশ চমেকের হাসপাতালের হিমঘরে রাখতে বলেছে। কিন্তু আমি চাই  আমার ছেলের লাশ আমার কাছে হস্তান্তর করুক। এবং আমার ছেলে শেষকৃত্য আমাদের ধর্মের রীতিতেই হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের লাশ যদি আমাকে হস্তান্তর না করে তাহলে তার বন্ধুদের কাছেও হস্তান্তর করতে পারবে না। আমি যদি আমার ছেলের লাশ না পাই, তাহলে তার বন্ধুরাও পাবে না। তার লাশ দরকার হলে নদীতে ভাসিয়ে দিবে। তারপরও আমি আমার ছেলের লাশ তার বন্ধুদের কাছে হস্তান্তর করুক সেটা চাই না।

অপরদিকে আহমাদ ওরফে রতন দাশের বন্ধুরা জানিয়েছেন, তারা বন্ধুর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সব প্রমাণ রয়েছে। এসব কাগজপত্র আদালতের সামনে উপস্থাপন করে ইসলাম ধর্মীয় রীতিতে বন্ধু আহমাদকে দাফন করবেন। তবে অবশ্যই সেটা কখন নিষ্পত্তি হবে সে বিষয়ে কেউ নিশ্চিত নন।

এদিকে আহমাদ পুরোপুরিভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নিয়মিত তা পালন করতেন বলে জানিয়েছেন এডভোকেট সাইফুল ইসলাম। তিনি  বলেন, ‘আহমাদ দুই বছর আগে কওমী আকিদার এক মাওলানার কাছে কালেমা পড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে আমার কাছে আসেন এফিডেভিট (হলফনামা) করতে। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমার জানামতে, আহমাদ ইসলাম ধর্মের রীতি অনুযায়ী চলতো। তিনি ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়েই ধর্ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

এডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, আজ আদালত এ বিষয়ে রায় দিয়েছেন। আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত আহমাদের লাশ চমেকের হিমঘরে থাকবে। পটিয়া থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আদেশ দিয়েছেন এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে। এরপরই সিদ্ধান্ত দেবেন আদালত। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ‘আদালত রায় দিয়েছেন আপাতত লাশ চমেক হাসপাতালের হিমঘরে রাখার জন্য। এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদনে দেওয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি শুধু জানি লাশ আপাতত হাসপাতালের হিমঘরে থাকবে।

উল্লেখ্য, রবিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রামের পটিয়া বাদামতল মোড়ে তেলবাহী লরির চাপায় পিষ্ট হয়ে মোটরসাইকেল আরোহী আহমাদ ওরফে রতন দাশের মৃত্যু হয়। এসময় হাসান নামে তার এক সহকর্মীও আহত হয়েছেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

এরপর থেকে তার লাশ দাফন নিয়ে পরিবারের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বন্ধুদের। বন্ধুদের দাবি- দুই বছর আগে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন আহমাদ। ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তার নাম ছিল ‘রতন দাশ’। তবে পরিবারের সদস্যরা বলছেন, এটা ওনাদের ছেলে। তাই তাদের ধর্ম রীতিতে তার শেষকৃত্য করবে। ধর্মান্তরিত হওয়ার ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না।

অন্যদিকে বন্ধুরা চান- সে যেহেতু মারা যাওয়ার আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে  সেহেতু তাকে মুসলিম রীতিতেই দাফন করা হবে।

নিহত আহমাদ চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার আবু তোরাব বাজার এলাকার মৃত মনো দাশের ছেলে। বর্তমানে মায়ের সঙ্গে নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। দুই বছর আগে অর্থাৎ ২০২০ সালে ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এরপর থেকে তিনি বন্ধুদের বলেছিলেন, তার মৃত্যুর পর যেন তাকে ইসলাম ধর্মের রীতিতে লাশ দাফন করা হয়।

এদিকে পটিয়া-ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) স্নেহাংশু বিকাশ সরকার  বলেছিলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুনলাম তিনি ধর্ম পরিবর্তন করেছেন। তবে এই বিষয়টি তার পরিবার জানতেন না। তাই পরিবারের দাবি- হিন্দুরীতি তাঁর শেষকৃত্য করবে। আর বন্ধুরা চান- সে যেহেতু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। তাই তাকে ইসলাম ধর্মের নিয়ম মেনেই দাফন করবে।

ওই যুবক মুসলিম হওয়ার এফিডেভিট (হলফনামা) থাকার কথা জানালে তিনি বলেন, সেটার এখনও সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেরকম কোনো ডকুমেন্ট নেই। এফিডেভিট তো আদালতে যায়নি। শুধু নোটারি পাবলিকের কাছে গেছে। নোটারি পাবলিকের সঙ্গে কথা হয়েছে জানালো তারা (আহমাদ) আদালতে যাওয়ার কথা ছিল যায়নি। আদালতে না গেলে তো এফিডেবিট হয় না।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

চেয়ারম্যান-মেম্বারকে ধরিয়ে দিলে পুরস্কার ঘোষণা ফরিদপুর ডিসির

প্রকাশ: ০৯:৪৯ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. আসাদুজ্জামান তপন এবং সদস্য অজিত বিশ্বাসকে ধরিয়ে দিলে উপযুক্ত পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মধুখালীর পঞ্চপল্লীর ঘটনাপরবর্তী সামগ্রিক বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হলরুমে প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার এ ঘোষণা দেন। পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততার যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়ায় এ ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, ‘চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন একজন হেভিচ্যুয়াল অফেন্ডার অর্থাৎ স্বভাবগত অপরাধী। কোথায় কখন কীভাবে লুকিয়ে থাকতে হয় সেটি তিনি ভালো জানেন। তিনি আত্মগোপনে যাওয়ার আগে মোবাইল ফোন রেখে গেছেন। এর আগে মাগুরায় তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। সেখানে অভিযান পরিচালনার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি পালিয়ে যান। চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের দ্বৈত ভূমিকার কারণে তাকে প্রথমদিকে সেভাবে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়নি। তবে যখন ভিডিও ফুটেজে তার সম্পৃক্ততা দেখা যায় তারপর থেকেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান। চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক। জড়িতদের অবস্থান বা ধরিয়ে দিতে বা গ্রেপ্তারে সহযোগিতা করলে তাদের উপযুক্ত পুরস্কার দেয়া হবে।

কামরুল আহসান বলেন, চেয়ারম্যান তপন এবং দুই মেম্বারকে গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করার জন্য এয়ারপোর্ট-বন্দর এবং বর্ডারে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইউপি চেয়ারম্যান ইতিপূর্বে একাধিক অন্যায় করেছে। ইউএনও’র ওপর হামলা ও টিসিবি কার্ড আত্মসাতের দায়ে তাকে দুই বার বরখাস্তও করা হয়। পরে উচ্চ আদালতের আদেশে পদে ফেরেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পত্র দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, এঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সিদ্দিকীকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইয়াসিন কবির, রামানন্দ পাল প্রমুখ। 

উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি মন্দিরের প্রতিমায় আগুনের খবর পেয়ে জড়ো হন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় পঞ্চপল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণে কাজ করা ৭ শ্রমিককে সন্দেহ করেন তারা। পরে স্কুলে গিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করে মারধর করা হয়। এতে গুরুতর আহত হলেও শ্রেণিকক্ষে আটকে রাখা হয়। প্রথমে থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হন।

পরে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের অতিরিক্ত সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আশরাফুল ও এরশাদুল নামে দুই ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। নিহত আশরাফুল ও এরশাদুল মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে।

এদিকে ওই ভিডিও প্রকাশের পর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ও মেম্বার অজিত বিশ্বাস গা ঢাকা দিয়েছেন।

ফরিদপুর   মধুখালী   পঞ্চপল্লী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে তিন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই রাষ্ট্রের তিনজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। রাষ্ট্রের তিন এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার বিপরীতে কারা নিয়োগ পাবেন- এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা জল্পনা কল্পনা আলাপ আলোচনা চলছে।

যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন কর্মকর্তাদের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ ২০২১ সালের ২৪ জুন সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেনাবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিন বছরের জন্য তিনি সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। সাধারণত সেনাপ্রধানের পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের নীতি খুবই কম। সেনাবাহিনীতে পেশাদারিত্ব বজায় রাখা হয় এবং নানা রকম বিষয় বিবেচনা করে নতুন সেনাপ্রধানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কোন ব্যতিক্রম না হলে ২৪ জুনের মধ্যেই বাংলাদেশ নতুন একজন সেনাপ্রধান পাবেন।

বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর প্রধান বা আইজিপি যাকে বলা হয় ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ। তার চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১১ জুলাই। তিনি এখন দেড় বছরের চুক্তিতে আছেন। তার দেড় বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ১২ জুলাই। কাজেই ১১ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন একজন পুলিশ প্রধান নিয়োগ দিতে হবে সরকারকে।

গত বছরের ১২ জানুয়ারি বর্তমান পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এরপর সরকার তাকে দেড় বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়। পুলিশেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ঘটনা ব্যতিক্রমী ঘটনা। এক্ষেত্রে নির্বাচন এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছিল। নতুন করে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। নতুন আইজিপি কে হবেন তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানামুখী আলোচনা চলছে। এর মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) কামরুল আহসান এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি গ্রেড-১ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের নাম আলোচনায় রয়েছে। তবে এটি সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকার যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই এই পদে নিয়োগ দেবে। 

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৪ জুলাই। তিনিও এক বছরের চুক্তিতে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার মেয়াদ শেষ হলে তাকে পুনরায় এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় এবং এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সময়সীমা আগামী ৫ জুলাই শেষ হয়ে যাবে বলে জানা গেছে। নতুন কোনো মুখ্যসচিব দেওয়া হবে কিনা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকে আবার চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে- এ নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। 

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব হিসেবে যদি তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকে আবার চুক্তিতে নিয়োগ না দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে জেষ্ঠ্যতার নীতি অনুসরণ করা হতে পারে বলে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করেন। এক্ষেত্রে যে দুজন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের মধ্যে একজন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল। অন্যজন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব নিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু জেষ্ঠ্যতম বিষয়টি অনুসরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব হিসেবে প্রধানমন্ত্রী স্বীয় বিবেচনায় যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই নিয়োগ করবেন। এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কারা আসেন সেটির অপেক্ষায় আছে গোটা দেশবাসী।

এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ   সেনাপ্রধান   মুখ্যসচিব   তোফাজ্জল হোসেন মিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া: ভারতের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েনের শঙ্কা

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আগামী মে মাসে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ সামরিক মহড়া হতে পারে বলে চীনা গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। আগামী মে মাসে এই মহড়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া ও পিপলস ডেইলি। এরকম একটি সামরিক মহড়া এই অঞ্চলে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া ফেলবে তা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে।

চীনের তথ্য অনুযায়ী, দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতেই চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এর একটি কন্টিনজেন্ট যৌথ মহড়ায় যোগ দিতে আগামী মে মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশে আসবে। আর এই বিষয়ে গতকাল দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়ালকে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি বলেন যে, প্রতিবেশী দেশ কিংবা উন্নত এই ধরনের মহড়ার ওপর ভারত সবসময়ই দৃষ্টি রাখে।

গত কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ নিয়ে চীনের অতি আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটে সহায়তা করার জন্য যেমন তারা আশ্বাস দিচ্ছে, তেমনই নানা ধরনের প্রকল্প প্রস্তাব নিয়েও চীন আগ্রহ দেখাচ্ছে।

চীনের সঙ্গে ভূরাজনীতিতে ভারতের কৌশলগত বিরোধ রয়েছে। এমন এক সময়ে চীন বাংলাদেশে এই যৌথ সামরিক মহড়া করতে যাচ্ছে যে সময় ভারতের নির্বাচন হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে এখন ভারতের নীতি নির্ধারক এবং সকলের দৃষ্টি নির্বাচনের দিকে। আর একারণেই এখন চীনের এই সামরিক মহড়ার যৌক্তিকতা এবং এর প্রভাব এই উপমহাদেশের শান্তি এবং নিরাপত্তায় কীভাবে পড়বে তা নিয়ে নানা রকম আলাপ আলোচনা চলছে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, মালদ্বীপ হারানোর পর ভারতের এই অঞ্চলে কৌশলগত একমাত্র মিত্র হল বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে নানা বাস্তবতার দিক থেকে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। বিশেষ করে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন এবং সেভেন সিস্টারে শান্তি ও অখণ্ডতা সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশের সহযোগিতা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতও বাংলাদেশকে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করেছে। গত নির্বাচনে ভারতের সহযোগিতার কথা আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন। আর দুই দেশের সম্পর্ক ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর যখন নতুন মাত্রায় উত্তীর্ণ হবে ভাবা হচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে এই যৌথ সামরিক মহড়ার বিষয়টি সামনে এসেছে।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন যে, তিনি প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে যাবেন ভারতে। আবার প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরেও ভারতে যাওয়ার কথা। নির্বাচনের পরপর এরকম একটি সফর হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানানও হয়েছে। কিন্তু যখন দুই দেশের সম্পর্ক একটি নতুন মাত্রা স্পর্শ করছে তখন ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের চীনপ্রীতি এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ অমূলক নয় বলে মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে ভারত, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তিনটি প্রধান দেশেরই আগ্রহ রয়েছে।

বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের পর চীনকে অনেক আগ্রাসী কূটনীতিতে দেখা যাচ্ছে। চীনের রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। এমনকি যে সমস্ত মন্ত্রীরা ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত, তাদের সাথেও চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে চীনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ নগদ অর্থ বা ঋণ এর দায় মেটানোর জন্য চীনের কাছে হাত পাততে পারে এমন গুঞ্জনও রয়েছে।

সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ যে এতদিন ধরে ভারসাম্যের কূটনীতি রক্ষা করেছিল সেটি কতটা রক্ষা করতে পারবে সেটি এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। আর চীনের সাথে এই যৌথ সামরিক মহড়ার ফলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কোনদিকে যায় সেটাও দেখার বিষয় বলে অনেকে মনে করছেন।


বাংলাদেশ   ভারত   চীন   ভূরাজনীতি   সামরিক মহড়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ: ০৫:২৮ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশে হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এদিন দ্বিপক্ষীয় ও একান্ত বৈঠকের পর পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি ছাড়াও একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র (এলওআই) স্বাক্ষরিত হয়।

বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসা কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা সুবিধায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করার প্রস্তাবও দিয়েছিলাম।

বাংলাদেশ একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের। দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।

এদিন বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সেই সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান আয়তন বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেন এবং শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাই প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহজিকরণ এবং ব্যবসা সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। সরকারপ্রধান বলেন, আমি থাই পক্ষকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে, বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি।

এদিন বৈঠকে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক কাঠামোর অধীনে আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি ও আয়োজক হিসেবে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, বিমসটেক মোট ১.৮ বিলিয়ন জনসংখ্যার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান অর্জনের জন্য বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছে।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সরকারপ্রধান দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে থাই প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   থাইল্যান্ড   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রেমিকার আত্মহত্যার শোকে পৃথিবী থেকে বিদায় প্রেমিক

প্রকাশ: ০৩:৫৪ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নরসিংদীর শিবপুরে প্রেমিকার আত্মহত্যার শোক সইতে না পেরে প্রেমিক সিফাত (১৯) নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। প্রেমিকার মৃত্যুর ১৯ দিন পর ফেসবুক‌ স্ট্যাটাস দিয়ে প্রেমিক সিফাত পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিফাত ওই গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে। তিনি শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আত্মহত্যা করে প্রমাণ করে গেল আমারে কতটা ভালোবাসে। আমিও প্রমাণ করে দিমু তানহারে আমি কতটা ভালোবাসি। কারও সঙ্গে ভুল করে থাকলে মাফ করে দিও। আর দেখা হবে না সবাই দোয়া কইরো শান্তিতে থাকি কিংবা অশান্তিতে দুজন যেন একসঙ্গে থাকতে পারি। আমার শেষ ইচ্ছা তানহার কবরের পাশে আমাকে কবর দেওয়া হোক।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি পরিস্থিতির শিকার। আর আমার কোনো কিছুর জন্য তানহার পরিবার বা আমার পরিবার দায়ী না, এমনকি আমার কোনো ভাই-ব্রাদার বা বন্ধুও দায়ী না। যা হবে আমার নিজের ইচ্ছেতে হবে। সত্যি বলতে আমার আর বাঁচার ইচ্ছে নাই। আমাকে যদি কেউ বাঁচিয়েও নেয় আমি পুনরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করব। প্লিজ আমাকে কেউ বাঁচানোর চেষ্টা কইরো না। বেঁচে থেকে আর কি হবে, যার জন্য বাঁচার কথা ছিল সে তো আর নেই।’

সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আমারে কথা দিছিলো যদি বাঁচি তো একসঙ্গে বাঁচমু আর যদি মরতে হয় তো একসঙ্গে মরমু। আমি তানহারে এই কথাটাই দিছিলাম। কিন্তু একটা চরিত্রহীন জানোয়ার আমাদের সুখে থাকতে দিল না। ওদের অত্যাচারে তানহা আত্মহত্যা করল। এক প্রকার তারা তানহারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করল। জানোয়ারের পরিবারকেই আমি খুনি বলে দাবি করি। আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে জানোয়ারের পরিবার স্বাধীনভাবে চলবে, ওদের কোনো সাজা হবে না। আর অন্যদিকে আমার তানহা শেষ, আমি অর্ধেক শেষ আমার পরিবারও শেষ। আমি আর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না (প্রমাণ হয়ে যাক দুজন দুজনকে কতটা ভালোবাসতাম) আর আমি চরিত্রহীন জানোয়ারের পরিবারের সঠিক বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এমন সাজা দেওয়া হোক অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে যেন এমন না হয়। আর যেন কারও প্রাণ না ঝরে। কেউ যেন ব্ল‍্যাকমেইলের শিকার না হয়। আমার শেষ একটাই ইচ্ছে- আমরা দুজনে সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিলাম, বাস্তবে তা হলো না। তাই আমার মৃত্যুর পর তানহার কবরের পাশে যেন আমার কবর দেওয়া হয়। আমি আঙ্গুররে মারছি শুধু একটা কারণে, হেয় তানহার হাতে ধরছিল। তানহারে খারাপ প্রস্তাব দিছিল। আমি সহ্য করতে পারি নাই। তাই হেরে কোবাইছি। আমরা প্রেম করছি এটাই কি অপরাধ ছিল। আমাদের জীবন শেষ করে দিল। ভালো থাকুক আঙ্গুর আর আঙ্গুরের পরিবার।

এদিকে সিফাতের বাবা ইব্রাহিম জানান, প্রতিবেশী চাচাতো বোন খলিলের মেয়ে তানহার (১৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমার ছেলে সিফাতের। গত ৩ এপ্রিল দিবাগত রাত ২টার সময় তানহা ঘরের ভেতর থেকে আর সিফাত জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় দেখে ফেলে একই এলাকার রাজুর ছেলে আঙ্গুর (২৫)।

এ সময় আঙ্গুর তানহাকে কুপ্রস্তাব দেয়। সিফাত এতে নিষেধ করে। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আঙ্গুর সিফাতকে মারধর করে টাকা দাবি করে। পরে সে উত্তেজিত হয়ে আঙ্গুরকে কুপিয়ে আহত করে। মারামারির বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে। লোকলজ্জায় গত ৬ এপ্রিল রাতে তানহা নিজ ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

এসব বিষয়ে গ্রামীণ সালিস দরবার হওয়ার কথা ছিল। সালিস দরবারে আমাকে ও আমার ছেলেকে এটা করবে ওটা করবে বলে বিভিন্নভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো। দরবারে গেলে জমির দলিল নিয়ে যেতে বলতো। এসব মানসিক চাপ সইতে না পেরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ছেলে সিফাত। আমি এর বিচার দাবি করছি।

শিবপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।


আত্মহত্যা   প্রেমিক-প্রেমিকা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন