গাজীপুর গণতন্ত্র সিটি নির্বাচন
মন্তব্য করুন
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করুক বা না করুক- সরকার নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করতে বদ্ধপরিকর। বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য আওয়ামী লীগ আগবাড়িয়ে যেমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, তেমনি বিএনপি ছাড়া নির্বাচনে যেন কোনো রকমের অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে- নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়- সেটি নিশ্চিত করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই দলকে এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এই বার্তাটি সুস্পষ্টভাবে দিয়েছেন যে, আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ,সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং এই নির্বাচনে কারচুপি, ভোট জালিয়াতি বা অন্য কোনো হস্তক্ষেপকে বরদাশত করা হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর এই দৃঢ় অবস্থানের পর আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে এক ধরনের নিরপেক্ষতার আবহ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তার প্রমাণও পাওয়া গেছে। ওই নির্বাচনে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষপাতের কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার একটি ১০ দফা রূপ পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এই ১০ দফা রূপ পরিকল্পনার ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন। এই রূপরেখাগুলোর মধ্যে রয়েছে:-
১. নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা এবং স্বাতন্ত্র: নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। তাদেরকে কোনো চাপ দেওয়া হবে না অথবা তারা কোনো চাপের কাছে নতিও স্বীকার করবে না। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন আইন সংশোধীত হয়ে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। এই আইন চূড়ান্ত হলে, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা অনেক বেশি বেড়ে যাবে। যদি কোনো কেন্দ্রের ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট না হয়, তাহলে সেই কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দিতে পারবে, ভোট বাতিলও করে দিতে পারবে। নির্বাচন কমিশন প্রশাসনের পক্ষপাত বা অন্য কোনো অভিযোগ পেলে- তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। সরকার নির্বাচন কমিশনের এই স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করছে এবং সরকারের নীতি নির্ধারকরা চান যে, নির্বাচন কমিশন স্বাতন্ত্র অবস্থান নিয়ে নিরপেক্ষ থেকে আগামী নির্বাচন পরিচালনা করুক।
২. নির্বাচনকালীন সরকার: নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টিও সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী একটি সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনকালীন সরকারের একটি ধারণা গণমাধ্যমের কাছে উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন যে, সংসদে যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো আছে- তাদের মধ্যে থেকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। সরকার নির্বাচনকালীন সময়ে একটি ছোট মন্ত্রিসভার সরকার গঠন করতে চাইছে- যে মন্ত্রিসভায় সংসদে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব থাকবে। যে মন্ত্রিসভা রুটিন কাজের মাধ্যমে তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ করবে। কোনো নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না।
৩. প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক নির্বাচন: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন কোনো অবস্থাতেই ২০১৪’র নির্বাচনের মতো না হয়, সেজন্য সরকার একটি প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ নির্বাচন করতে চায়। এই কারণেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি অংশগ্রহণ না করে, তাহলে আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ কোনো নির্বাচন করবে না। বরং প্রত্যেকটি দল আলাদা আলাদাভাবে যেন নির্বাচন করে- সেই পথ উন্মুক্ত করে দেবে। ফলে নির্বাচনে একটি প্রতিদ্বন্দ্বীতার আবহ তৈরি হবে।
৪. বিনা ভোটকে নিরুৎসাহিত করা: ২০১৪ সালের নির্বাচনে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের অনেক নেতারাই বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার জন্য তৎপর ছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদেরকে বসিয়ে দেওয়ার একটি ভয়াবহ প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। আগামী সংসদ নির্বাচনে যেন এ ধরনের কোনো কিছু না হয়- সে ব্যাপারে সরকার এখন থেকেই সতর্ক রয়েছে।
৫. প্রশাসনের নিরপেক্ষতা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকায় দেখতে চায় সরকার। আর এ কারণেই প্রশাসনের একটি বড় ধরনের রদবদল হবে। এমন কাঠামো বিন্যাস করা হবে, যেন নিরপেক্ষ এবং যোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচনকালীন সময়ে বিভিন্ন দায়িত্বে থাকেন।
৬. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা: আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষ অবস্থানে রাখা হবে এবং প্রশাসন কোনো অবস্থাতেই এ ব্যাপারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না।
৭. নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বিদেশি কূটনীতিকদেরকে আমন্ত্রণ জানাবে সরকার এবং বিদেশি কূটনীতিকরা যেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন- সে ব্যাপারে উৎসাহিত করা হবে। বিভিন্ন দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য।
৮. বিভিন্ন এমপি এবং মন্ত্রীদের সীমাবদ্ধতা: নির্বাচনকালীন সময়ে মন্ত্রী-এমপিদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। তারা যেন নির্বাচনের উপর কোনো রকম প্রভাব বিস্তার না করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
৯. ভালো প্রার্থীদের উৎসাহিত করা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগও তার প্রার্থীদের পরিবর্তন করবে। সৎ, যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থীদের সামনে নিয়ে আসা হবে। অন্তত ১শ’ থেকে দেড়শ’ আসনে আওয়ামী লীগ তার প্রার্থী পরিবর্তন করবে। জনপ্রিয় ব্যক্তিদেরকে প্রার্থী করা হলে জনগণের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়বে।
১০. ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের নিয়ে আসা: আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একটি পরিকল্পনা হলো, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ করা- যেন ভোটকেন্দ্রে জনগণ আসে, সে রকম একটি পরিবেশ, পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় আওয়ামী লীগ। আর সে জন্য নেতাকর্মীদেরকেও নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
মন্তব্য করুন
২০০৭ সাল। জাতিসংঘে বাংলাদেশস্থ আবাসিক প্রতিনিধি রেনাটা লক একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই চিঠিটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং এই চিঠির প্রেক্ষিতেই সেনাবাহিনীর তৎকালীন সময়ে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং নির্বাচন বিরোধী একটি শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে, যার প্রেক্ষাপটে এক-এগারো এসেছিল।
পরবর্তীতে দেখা যায়, রেনাটা লক'র যে চিঠিটি প্রকাশিত হয়েছিল এবং যে চিঠি নিয়ে এক-এগারো’র সরকার আসার পথ তৈরি হয়েছিল, সেই চিঠিটি আসলে জাল করা এবং বিকৃত করা চিঠি। বান কি মুন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে অব্যাহত রাখার পক্ষে এবং সংঘাত, সহিংসতা পরিহার করার জন্য একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠিতে সেনাবাহিনীর বিষয়টিকে জালিয়াতি করে উপস্থাপন করা হয়েছিল এবং যার ফলে এক-এগারো আনা হয়েছিল। বাংলাদেশে এখন যখন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা- তখন বাংলাদেশ একটি গুজবের ফ্যাক্টরিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা রকম গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এ সমস্ত গুজব কেউ কেউ ইদানিং বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। এরকম একটি গুজব হচ্ছে যে, শেষ পর্যন্ত যদি বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হয়- তাহলে যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করতে পারে। আর এই রকম গুজবটি নতুন ভিসা নীতির পর ডালপালা মেলতে শুরু করেছে।
কিন্তু এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রম এবং এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলেছে, কথা বলে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
উল্লেখ্য যে, ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্য শান্তি মিশন গঠন করেছিল। শান্তি মিশন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এখন সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী শান্তি মিশনের বিভিন্ন দেশে ৮১ হাজার ৮শ’ ২৪ জন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের সদস্য সংখ্যা ৭ হাজার ২শ’ ৩৭ জন। বিশ্বে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণকারী দেশ। আর ১৯৮৮ সাল থেকে বাংলাদেশ যে শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করছে, শান্তিরক্ষা বাহিনীতে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি সদস্যরা সবচেয়ে চৌকষ এবং ভালো কর্মী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। এই জন্য বাংলাদেশ একাধিক পুরস্কারও পেয়েছে।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শান্তিরক্ষা মিশনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু জাতিসংঘের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশনে কোনো দেশকে নিষিদ্ধ করতে পারে না। এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো নজির নেই। এমনকি যে নাইজেরিয়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- এখন বাংলাদেশের মতো ভিসানীতি আরোপ করেছে, সেই নাইজেরিয়ার সেনা এবং অন্যান্য কর্মকর্তারাও শান্তিরক্ষা মিশনে আছে।
শান্তিরক্ষা মিশনে কোন কোন দেশের সদস্যরা অংশগ্রহণ করতে পারে?
শান্তিরক্ষা মিশনের চার্টারে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত যে কোন দেশ এটিতে অংশগ্রহণ করতে পারে। আর এই শান্তিরক্ষা মিশনের কোন দেশে সৈন্য বাহিনী প্রেরণ করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সাধারণ পরিষদে অথবা নিরাপত্তা পরিষদে। অনেক সময় সাধারণ পরিষদে যদি শান্তিরক্ষা মিশনের কোনো দেশে শান্তিরক্ষা মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, সেটা নিরাপত্তা পরিষদে চূড়ান্তভাবে আলোচনা হয় এবং নিরাপত্তা পরিষদে যদি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়, তাহলে শান্তিরক্ষা মিশন সেখানে যায়। আবার কোন দেশ থেকে শান্তিরক্ষা মিশনের বাহিনী নেওয়া হবে, সেটিও নির্ধারিত হয় নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে।
নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি দেশ স্থায়ী সদস্য। তাদের ভেটো পাওয়ার রয়েছে। তাদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও রাশিয়া এবং চীন অন্যতম। আর এখন পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কোনো দেশের অংশগ্রহণ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে কখনো আলোচনা হয়নি বা এ নিয়ে কখনোই কোন দেশের উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উত্থাপিত হয়নি। বরং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি জাতিসংঘের প্রচলিত নীতির সঙ্গে সংঘর্ষিক। কারণ জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত একটি দেশকে শান্তিরক্ষা মিশনে অন্তর্ভুক্তি থেকে বারিত করে না, করতে পারে না। এটি জাতিসংঘের সার্বজনীন নীতির পরিপন্থী। তাই যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে শুধু বাংলাদেশ নয়, কোনো দেশেরই শান্তিরক্ষা মিশনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে না। এই এখতিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের নাই। এরকম যদি কোনো প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র আনেও সেটি নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা হতে হবে এবং নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতভাবে যদি গৃহীত হয়, তাহলেই সে রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিন্তু বৈশ্বিক বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনলে রাশিয়া এবং চীন যে চুপচাপ বসে থাকবে না বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি স্রেফ গুজব এবং আতঙ্ক ছড়ানোর অপকৌশল। এ রকম অনেক গুজবই এখন ছড়ানো হচ্ছে, যেন সরকারকে কোণঠাসা করা হয়। জনমনে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি এবং আতঙ্ক তৈরি করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এর কোনো আইনগত বা নিয়মতান্ত্রিক ভিত্তি নেই।
যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশন বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও বৈশ্বিক পরিস্থিতির যে অবস্থা, সেই বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান ভালো বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। শুক্রবার (২ জুন) বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজের মত তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের দিকে তাকালে দেখতে পারবেন বৈশ্বিক অবস্থাটা কী, আর আমাদের অবস্থাটা কী। প্রধানমন্ত্রী সাশ্রয়ী হওয়ার কথা বলেছেন। আমরা মানুষের এই অবস্থা দেখে এক কোটি পরিবারকে খাদ্যশস্য সহায়তা দিয়ে আসছি।
তিনি বলেন, বিশ্ব বাজারে যদি দাম বেশি হয়, তাহলে তার প্রভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। আমরা লক্ষ্য রাখছি স্থানীয় হোক, আর আমদানি পণ্য হোক, আমরা চেষ্টা করছি যাতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। আমরা সমস্যা রাতারাতি শেষ করতে পারছি, তা কিন্তু নয়। কোথাও কোথাও সমস্যা আছে। কিছু মধ্যস্বত্বভোগী সুবিধা নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে, আমরা এক কোটি পরিবারকে সেগুলো দেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে করে পাঁচ কোটি মানুষ উপকার পাচ্ছে। বিভিন্নভাবে আমরা চেষ্টা করছি। বৈশ্বিক পরিস্থিতির যে অবস্থা, তা বিবেচনা করলে আমাদের অবস্থান ভালো আছে বলে মনে করি।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা।
মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে। আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাজেট নিত্যপণ্য মূল্য
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রাম-১০ আসন এমপি ডা. আফছারুল আমীন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ১৪ বছরে দেশে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি বলে দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। শুক্রবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার সবসময় দরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে বাজেট দেয়। এবারো এর ব্যাতিক্রম হয়নি। গত ১৪ বছরে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। এর আগে আমরা পত্রপত্রিকায় প্রায় দেখতাম মঙ্গাকবলিত এলাকায় মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচনে আমাদের সরকার এবারের বাজেটেও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। এ বছরও দারিদ্র্য বিমোচনে ১ কোটি পরিবারকে ১৫ টাকা দরে চাল দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয় টিসিবির মাধ্যমে ১ কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য দেওয়া হচ্ছে।’
এছাড়া কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবসময় আমরা মানুষের কথা চিন্তা করেই দিই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত রয়েছেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা।
মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে। আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বাজেট
মন্তব্য করুন
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করুক বা না করুক- সরকার নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করতে বদ্ধপরিকর। বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য আওয়ামী লীগ আগবাড়িয়ে যেমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, তেমনি বিএনপি ছাড়া নির্বাচনে যেন কোনো রকমের অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে- নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়- সেটি নিশ্চিত করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই দলকে এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এই বার্তাটি সুস্পষ্টভাবে দিয়েছেন যে, আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ,সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং এই নির্বাচনে কারচুপি, ভোট জালিয়াতি বা অন্য কোনো হস্তক্ষেপকে বরদাশত করা হবে না।
২০০৭ সাল। জাতিসংঘে বাংলাদেশস্থ আবাসিক প্রতিনিধি রেনাটা লক একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই চিঠিটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং এই চিঠির প্রেক্ষিতেই সেনাবাহিনীর তৎকালীন সময়ে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং নির্বাচন বিরোধী একটি শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে, যার প্রেক্ষাপটে এক-এগারো এসেছিল।