ব্যাংক থেকে ৭ লাখ টাকা ঋণ তুলে না দেয়ায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়নের কুমিরগোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ আইরিন পারভীনকে (৪২) গলা টিপে ও মাছ কাটা বটি দা দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছে তার অর্থলোভী পাষন্ড স্বামী আজিজুর রহমান বিদ্যুৎ (৪৪)। এছাড়া প্রায় ১ মাস ধরে ৫ বছরের মেয়ে আবিদা আনজুমকে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ছেচানিয়া আফতাব নগর নাছিমা পারভীন বিনা (৪৭) নামের বোন ও তার স্বামী আল আমিনের বাড়িতে আটকে রেখেছে। এরপর থেকে মায়ের জন্য রাতদিন কান্নাকাটি করে ৫ বছরের অবুঝ শিশু আবিদা আনজুম অসুস্থ্য হয়ে পড়লেও তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছে না।
অর্থলোভী আজিজুর রহমান বিদ্যুৎ সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের লাইব্রেরিয়ান ও চর বেলতৈল গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে শাহজাদপুর চৌকি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শিক্ষিকা আইরিন পারভীন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ জেলহক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শাহজাদপুর চৌকি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানি বাদীর লিখিত আবেদনটি আমলে নিয়ে আগামী ৭ মে আসামীদের সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষিকা আইরিন পারভীন জানান, প্রতারণার মাধ্যমে নিজেকে ঢাকার উত্তরার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ২০১২ সালের ১১ মে আজিজুর রহমান বিদ্যুৎ তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই তাকে মারপিট ও নির্মম নির্যাতন করে বেতনের সমুদয় টাকা হাতিয়ে নিতেন। এরপর ঢাকার উত্তরায় জায়গা কেনার কথা বলে প্রতি মাসে বেতনের ১৮ হাজার টাকা করে ৫ বছরে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
এরপর ওই জায়গা দেখতে চাইলে বিদ্যুৎ ওই জায়গা দেখাতে পারেননি। ফলে তাকে টাকা দেয়া বন্ধ করা হয়। এছাড়া সোস্যাল ইসলামি ব্যাংক থেকে ডিপিএসের ১ লাখ ৭২ হাজার ৯৬৫ টাকা , জনতা ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও রূপপুরের বাড়িতে এক তলা পাকা বিল্ডিং নির্মাণের সময় স্বর্ণের গহণা বিক্রির টাকা ও সোনালি ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ তুলে নিয়েছেন। সোনালি ব্যাংকের ঋণের কিস্তি বাবদ প্রতি মাসে এখনও ১১ হাজার ৪০০ টাকা করে বেতন থেকে কেটে নেওয়া অব্যহত থাকা অবস্থায় আবারও চর বেলতৈল গ্রামে জমি কেনার কথা বলে সোনালি ব্যাংক থেকে ৭ লাখ টাকা ঋণ তুলে দিতে চাপ দেয়।
এতে রাজি না হওয়ায় গত ২৮ মার্চ ভোরে আজিজুর রহমান বিদ্যুৎ তাকে বেধরক মারপিট করে। এছাড়া গলাটিপে ও মাছকাটা বটি দা দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করে। এরপর বেধরক মারপিট ও নির্যাতন করে ছেলে আবু বকর সিদ্দিক (৯) ও মেয়ে আবিদা আনজুম (৫)কে আটকে রেখে তাকে শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের রূপপুর পুরান পাড়ার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। নিরুপায় হয়ে তিনি ওইদিন সকালে শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের চুনিয়াখালিপাড়া মহল্লার বাবা আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। এর ৭ দিন পর অসুস্থ হয়ে ছেলে আবু বকর সিদ্দিক কৌশলে পালিয়ে মায়ের কাছে চলে আসে।
অপরদিকে মেয়ে আবিদা আনজুমকে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ছেচানিয়া আফতাব নগর গ্রামের বোন নাছিমা পারভীন বিনা ও তার স্বামী আল আমিনের বাড়িতে আটকে রেখে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে না দিলে একাধিক লোক মারফত ও মোবাইল ফোনে মেয়েকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, এ হুমকির ফলে আমি ও আমার পরিবার চরম আতংকের মধ্যে রয়েছি। তিনি তার ৫ বছরের শিশু কন্যা আবিদা আনজুমকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
তিনি আরও জানান, এ মামলা দায়েরের পর সোমবার রাতে দূর্বৃত্তরা আমার বাবার চুনিয়াখালি পাড়ার বাসভবনের নিচতলায় হামলা চালিয়ে একটি কক্ষের জানালার গ্লাস ভাংচুর করে ১০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। এ হামলা ভাংচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে শাহজাদপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আজিজুর রহমান বিদ্যুৎ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, মারপিট, গলাটিপে ও বটি দা দিয়ে মারতে যাওয়ার ঘটনা দেড় বছর আগের। ২/১ মাসের মধ্যে এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া মেয়েকে আটকে রাখার ঘটনাও সত্য নয়। চুনিয়াখালি পাড়ার বাড়িতে হামলা জানালার গ্লাস ভাংচুরের সাথেও আমি জড়িত নই।
হত্যা চেষ্টা স্কুল শিক্ষিকা অর্থ লোভী
মন্তব্য করুন
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানার ওসি
মো. মুজাহিদুল ইসলামসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (৫ মে) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ জেলা
ও দায়রা জজ আদালতে পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতনের
শিকার আব্দুল বারেক।
মামলা দায়ের করা আব্দুল বারেক সিরাজদিখান
উপজেলার বড়বর্তা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হোসেন মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জেলা
ও দায়রা জজ কাজী আব্দুল হান্নান মামলার ঘটনার সত্যতা যাচাই-পূর্বক তদন্ত করে প্রতিবেদন
দেওয়ার জন্য পিবিআই পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
একইসঙ্গে বাদী তথা ভুক্তভোগীদের জখমের
বিষয়ে সিভিল সার্জনকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. জামাল
হোসাইন জানান, গত ১৮ এপ্রিল জেলার সিরাজদিখান থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। ২৪ এপ্রিল
ওই মামলায় এজাহার নামীয় আসামি দেখিয়ে উপজেলার কুচিয়ামোড়া গ্রামের আব্দুল বারেকসহ ১১
জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর ওই দিন রাতে গ্রেপ্তারকৃতদের থানা
পুলিশের হেফাজতে নির্যাতন করা হয়। পরদিন গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে
পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, জেল হাজতে থেকে আব্দুল
বারেক বাদী হয়ে সিরাজদীখান থানার ওসি ও অন্যান্য আরো ৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশের
হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছেন আদালতে।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান
সার্কেল) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুনেছি আদালতে একটি পিটিশন মামলা হয়েছে। তবে ওই
ঘটনার সময় আমি ট্রেনিংয়ে ছিলাম।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিমানবন্দর বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী জাতীয় সংসদ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন