একটা সময় ছিল সমাজে শৃঙ্খলা রক্ষায়
পরিবার ও স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের ভূমিকা থাকতো। সেই সময় এসব সচেতন মানুষ কিশোরদের
উচ্ছৃঙ্খল আচরণে প্রশ্রয় দিতেন না। বিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশক থেকেই তৎকালীন পূর্ববঙ্গে
কিশোর অপরাধ সংঘটিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেলেও নব্বইয়ের দশক থেকে শিল্পায়ন ও নগরায়নের
গতি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে দেশে কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। দিন দিন ভয়াবহ মাত্রায় বৃদ্ধি
পাচ্ছে কিশোর গ্যাং তৈরির প্রবণতা। বিভিন্ন নামে এলাকাভিত্তিক নতুন নতুন সন্ত্রাসী
গ্রুপ গড়ে তুলছে কিশোর গ্যাং।
ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে
কিশোর-কিশোরীদের সংখ্যা ৩ কোটি ৬০ লাখ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ। আর বাংলাদেশ
পুলিশের সাম্প্রতিক তথ্যা অনুযায়ী ঢাকা শহরে যারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে তাদের ৪০
শতাংশই কিশোর।
জাতীয় দৈনিকের তথ্য মতে, বর্তমানে দেশের
৬৪ জেলা, উপজেলা ও মহানগর এলাকায় অন্তত ৫ শতাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয়। শুধু রাজধানী
ঢাকাতেই সক্রিয় ৭০টিরও বেশি কিশোর গ্যাং। র্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার বিভিন্ন
এলাকায় ৭০টি কিশোর গ্যাং সক্রিয়।
এই কিশোররাই বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তুলছে
গ্যাং। একটা সময় ছিল, কিশোররা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারিতে লিপ্ত হতো,
কিন্তু পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে বর্তমানে তারা ধর্ষণ, খুন, ছিনতাই, মাদকবাণিজ্য,
চাঁদাবাজির মতো ভয়াবহ অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এতে করে পরবর্তি প্রজন্ম পড়ছে মারাত্মক হুমকিতে।
আজকের কিশোররাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আগামীতে নেতৃত্ব দিবে আজকের প্রজন্ম। তাহলে সেই
প্রজন্ম অপরাধ জগতের গ্যাং, কিশোর গ্যাংয়ে যদি পরিণত হয়, তবে জাতির ভবিষ্যৎ ও সুশিল
সমাজ গঠণ এবং উন্নত জাতি পরিণত করা হতে পারে দূর্বিসহ।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছে, আপনার সন্তান
কী করছে? কার সঙ্গে মিশছে, তা জানা যেমন জরুরি, তেমনি সন্তানকে সময় দেওয়াও জরুরি।
তার সঙ্গে গল্প করা, তার মনের অবস্থা বোঝা, তার কাছে বাবা-মার অবস্থান তুলে ধরা। সহজ
করে বললে অভিভাবকদের সঙ্গে সন্তানদের বন্ধন খুবই জরুরি। এই বন্ধন যত শিথিল হয়, সন্তান
তত বাইরের জগতে ছুটবে, তখন তাকে ফেরানোর কোনো রাস্তা থাকবে না।
যেকোনো সামাজিক সমস্যায় পরিবার, সমাজ
ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব আছে। এখন তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের যুগ। এই সময়ে শিশু-কিশোরাও
অনলাইনে অনেক কিছু দেখে, যার ভেতর নেতিবাচকতা বেশি এবং তারা সহজেই সংগঠিত হয়। শহরগুলোতে
পর্যাপ্ত খেলার মাঠ নেই, সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। শরীরচর্চা, খেলাধুলার সঙ্গে
সংস্কৃতিচর্চা থাকলে কিশোর-তরুণরা অপরাধ ও মাদক থেকে দূরে থাকে। সেই ব্যবস্থা নেওয়াটা
জরুরি। শিক্ষাব্যবস্থায় এ ধরনের বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন। পথশিশু
ও অভিভাবকহীনদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় এনে সুশিক্ষিত করতে প্রয়োজনী পদক্ষেপ নিলে সুফল
মিলবে। কারণ ভালো নাগরিক হতে তাদের শিক্ষা ও ভালো পরিবেশ দরকার।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে পাঁচ বছর বয়সী শিশু মুজাহিদ পাঁচশ’ টাকার একটি নোট নিয়ে বাড়ির পাশে এক দোকানে কিছু কিনতে যাচ্ছিল। এসময় তার কাছ থেকে টাকা কেড়ে নিতে কৌশলে এক কিশোর ব্রহ্মপুত্রের কাছে টাকা কেড়ে নিয়ে শিশুটিকে নদে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর থেকে নিখোঁজ শিশু মুজাহিদ। দুইদিনেও তার খোঁজ মেলেনি।
আজ রোববার (১২ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস।
এর আগে, শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে উপজেলার সানন্দবাড়ী এলাকার পাটাধোয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ শামিম হোসেনকে (১৫) আটক করে পুলিশ। ইতোমধ্যে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে ওই কিশোর।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে মুজাহিদ তার বাবা-মায়ের অগোচরে ঘর থেকে ৫০০ টাকার একটি নোট নিয়ে পাশের এক দোকানে যায়। এসময় শামীম টাকার লোভে শিশু মুজাহিদের পিছু নেয় এবং টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য বেড়ানোর কথা বলে তাকে বাড়ির নিকটবর্তী ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে মুজাহিদের কাছ থেকে কৌশলে টাকা নিতে না পেরে শামীম জোরপূর্বক ৫শ’ টাকা কেড়ে নিয়ে তাকে সানন্দবাড়ি ব্রহ্মপুত্র নদে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এ ঘটনার পর থেকে ভয়ে শামিম গা ঢাকা দেয়। পরে নিখোঁজ মুজাহিদের স্বজনরা শামিমকে সন্দেহ করে পুলিশকে জানালে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে তাকে আটক করা হয়।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, শামিমকে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে আটক করা হয়েছে। শনিবার ঘটনাস্থলে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে মুজাহিদকে নদে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করেছে। ছোট ছেলে মুজাহিদ, সাঁতার জানে না। ধারণা করা হচ্ছে, মুজাহিদের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হলে আদালতে প্রেরণ করা হয় শামিমকে।
ব্রহ্মপুত্র নদ ৫শ’টাকার লোভ শিশু কিশোর
মন্তব্য করুন
ভারতের হাইকমিশনার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মন্তব্য করুন
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে পাঁচ বছর বয়সী শিশু মুজাহিদ পাঁচশ’ টাকার একটি নোট নিয়ে বাড়ির পাশে এক দোকানে কিছু কিনতে যাচ্ছিল। এসময় তার কাছ থেকে টাকা কেড়ে নিতে কৌশলে এক কিশোর ব্রহ্মপুত্রের কাছে টাকা কেড়ে নিয়ে শিশুটিকে নদে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর থেকে নিখোঁজ শিশু মুজাহিদ। দুইদিনেও তার খোঁজ মেলেনি।