ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীর ৯০ শতাংশ এলাকা তীব্র তাপপ্রবাহের ঝুঁকিতে

প্রকাশ: ০১:৫৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ এখন কামরাঙ্গীরচর ও আদাবর এলাকা। এ ছাড়া ধানমন্ডি এলাকায়ও উষ্ণতার মাত্রা তীব্র হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৯০ শতাংশ এলাকা তীব্র তাপপ্রবাহের বিপদে রয়েছে। আবার দেখা যাচ্ছে, রাজধানীর শাহবাগ, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসকারীরা এই গ্রীষ্মে তুলনামূলক কম বিপদে আছেন। কারণ, ঢাকার মধ্যে এসব এলাকায় উষ্ণতার মাত্রা সবচেয়ে কম।

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে ২৪ এপ্রিল প্রকাশ করা ‘তাপপ্রবাহ: বাংলাদেশ, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রচণ্ড দাবদাহের এ পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষের বিপদগুলো চিহ্নিত করতে এই সমীক্ষা প্রতিবেদন ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে সংস্থাটি।

কোন এলাকায় তাপমাত্রা কেমন, তা চিহ্নিত করার পাশাপাশি মূলত চারটি সূচক আমলে নিয়ে একটি মানচিত্র তৈরি করেছে সংস্থাটি। উষ্ণতার মানচিত্রটি রোববার ( ২৮ এপ্রিল ) হালনাগাদ করা হয়েছে। তাপমাত্রা, জনসংখ্যার ঘনত্ব, দরিদ্র মানুষের উপস্থিতি এবং ঘনবসতির পরিমাণ ও বস্তির সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রাকৃতিক কারণেই বেশি গরম থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কয়েক বছর ধরে রাজধানীসহ সারা দেশে তীব্র উষ্ণতা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনকে বাধাগ্রস্ত করছে। নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, কমছে কর্মক্ষমতা। তিনি বলেন, ‘সাধারণ নাগরিকেরা বিশেষ করে দরিদ্র মানুষ কী ধরনের গরমের ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তা চিহ্নিত করতে আমরা সমীক্ষাটি করেছি।’

নগরবিদ ও পরিবেশবিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ৯০ শতাংশ এলাকা গ্রীষ্মকালের প্রায় পুরোটা সময় উষ্ণ বা তাপীয় দ্বীপে পরিণত হচ্ছে। ঢাকার পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা উত্তরা, মিরপুর ও ধানমন্ডিতেও একই ধরনের উষ্ণতার বিপদ তৈরি হয়েছে। অল্প জায়গায় বিপুলসংখ্যক মানুষের বসতি, অতিমাত্রায় শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার, গাছপালা ও জলাভূমি না থাকা এবং রাজধানী শহরের বেশির বাভ জায়গা কংক্রিটের স্থাপনা দিয়ে আচ্ছাদিত হয়ে যাওয়ার কারণে অতি উষ্ণতার ঝুঁকি বছর বছর বাড়ছে।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, কামরাঙ্গীরচর ও আদাবরের তাপমাত্রা এতটাই বেশি যে সেখানে ঘরের বাইরে বের হয়ে অল্প সময় অবস্থান করলেই নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এসব এলাকার রিকশাচালক, ভ্যানচালক, হকার, নির্মাণশ্রমিক ও নিম্নআয়ের মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। তাঁরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম কাজ করতে পারছেন। দাবদাহের কারণে রোগবালাই বেড়ে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকার মধ্যে মতিঝিল, ফার্মগেট, মহাখালী, কারওয়ান বাজার ও গুলশান এলাকায় উষ্ণতা মাত্রাতিরিক্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। কিন্তু এসব এলাকার বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহারের কারণে ভেতরে অবস্থান করা মানুষ কম ঝুঁকিতে আছেন। তবে ভবনগুলোর বাইরে বা সড়ক এবং উন্মুক্ত স্থানে উষ্ণতা আরও বেড়ে যাচ্ছে এসব ভবনের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কারণে।

যে সব এলাকায় বিপদ বেশি

গত বছরের অতি উষ্ণ পরিস্থিতির পর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং ক্লাইমেট সেন্টার যৌথভাবে ঢাকা শহরের উষ্ণতার বিপদ নিয়ে এই সমীক্ষা করে।

সমীক্ষা অনুযায়ী, উষ্ণতার বিপদে থাকা এলাকাগুলো হচ্ছে কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, গাবতলী, গোড়ান, বাসাবো, টঙ্গী, শহীদনগর, বাবুবাজার, জুরাইন, হাজারীবাগ, পোস্তগোলা, যাত্রাবাড়ী, তেজকুনীপাড়া, নাখালপাড়া, সায়েদাবাদ, কুর্মিটোলা, আজমপুর, কামারপাড়া, মোহাম্মদপুর, আদাবর ও মহাখালী। গ্রীষ্মের পুরো সময়জুড়ে এসব এলাকা তাপপ্রবাহের বিপদে থাকছে।

তবে শাহবাগ, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় উষ্ণতার বিপদ কম। এমন কম ঝুঁকির অন্য এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরখান, খিলক্ষেত ও ডেমরা। এসব এলাকার অনেক জায়গায় এখনো ঘনবসতি তৈরি হয়নি। এ ছাড়া এসব এলাকায় এখনো কিছু গাছপালা ও জলাভূমি রয়েছে।

সমীক্ষা দলের অন্যতম প্রধান ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সহকারী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে অন্যান্য দুর্যোগের মতো তাপপ্রবাহ বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি তৈরি শুরু করেছে। এমনি মানুষের মৃত্যুও ঘটছে। ফলে এই বিপদকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উচিত গরমে কষ্টে ভোগা মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

উষ্ণতার বিপদে কারা

ঢাকার উষ্ণতা নিয়ে গত বছর একই গবেষক দল আরেকটি সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে। এতে বলা হয়েছে, শহরে জমে থাকা ২ দশমিক ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রাকৃতিক তাপমাত্রার সঙ্গে যোগ হয়। সবচেয়ে বেশি উষ্ণ সময় থাকছে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত। এই সময়টাতে শ্রমজীবী মানুষেরা কাজ কমিয়ে দিতে বাধ্য হন। বিশেষ করে ভ্যান ও রিকশাচালকেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

সমীক্ষায় দেখা যায়, ওই সময়ে খাওয়ার স্যালাইনের বিক্রি সাধারণ সময়ের চেয়ে তিন গুণ বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে গরমে মাথা ঘোরা, বমি ও ঠান্ডা-কাশির সমস্যা বেড়ে যায়। ডায়রিয়া ও কলেরার প্রাদুর্ভাবও বেড়ে যায়। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে জুনের মধ্যে করা ওই জরিপে প্রায় ৮৭ শতাংশ উত্তরদাতা এর আগের বছরের চেয়ে বেশি গরম অনুভব করছেন বলে জানিয়েছেন। একজন রিকশাচালক স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এই সময়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রিকশা কম চালান। এর ফলে তাঁর আয়ও কমে যায়।

এ পরিস্থিতিতে মানুষের কষ্ট লাঘবে করণীয় জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা উষ্ণ এলাকাগুলোতে পানি ছিটিয়ে কিছুটা স্বস্তি আনার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে দরিদ্র মানুষদের ছাতা ও পানির বোতল দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। আর দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে গাছ লাগানো শুরু করেছি।’

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সমীক্ষায় আরও বলা হয়, গ্রীষ্মকালে গরম ও অসুস্থতার কারণে রিকশাচালকেরা মাসে গড়ে ছয় দিনের বেশি সময় কাজে যেতে পারেন না। এ ছাড়া প্রতিদিন গড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা কম কাজ করতে পারেন। ৮৩ শতাংশ রিকশাচালক জানিয়েছেন, গরমের সময়ে তাঁদের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় অন্য সময়ের তুলনায় মাসে ৫৩৫ টাকা বেড়ে যায়। একইভাবে হকার, নির্মাণশ্রমিক, দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষেরা কম কাজ করতে পারছেন। এতে তাঁদের আয় কমে যাচ্ছে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, ‘ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে গ্রামের তুলনায় গরম অনেক বেশি। এ পরিস্থিতিতে শিশুদের স্কুল বন্ধ রাখা উচিত ছিল। ছোটবেলায় আমরা এই গরমে গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেতাম। আর এখন এই গরমের ঝুঁকির মধ্যে শিশুদের ঠেলে দেওয়া অন্যায় হচ্ছে।’

সিটি করপোরেশনের রাস্তায় পানি ছিটানো ও গাছ লাগানোর প্রসঙ্গে এই পরিবেশ ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞ বলেন, এগুলো না করে উচিত ছিল সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিটি রাস্তার মোড়ে খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করা, মানুষ যাতে টানা আধা ঘণ্টার বেশি তপ্ত রোদের নিচে না থাকেন, সেই পরামর্শ দেওয়া, রিকশাচালক বা শ্রমজীবী মানুষের জন্য ছায়ার ব্যবস্থা করা। তা না করে যেসব করা হচ্ছে, তা লোকদেখানো। এতে সাধারণ মানুষের কষ্ট কমছে না।


তীব্র তাপপ্রবাহ   ঝুঁকি   রাজধানী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কেন চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করা উচিত নয়?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের চাকরির বাজারের প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হওয়ার জনপ্রিয়তা সবচাইতে বেশি। চাকরিপ্রত্যাশীদের মতে সরকারি চাকরির মত পেশাগত নিরাপত্তা আর কোথাও নেই। আর সেজন্যই অনেক দেশে বেশি বয়সে সরকারি চাকরির আবেদনের সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশে এর সীমাবদ্ধতা ৩০ বছরে রয়েছে। সরকারি চাকরির কোন কোন ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষতার দরকার হয়। সেই দক্ষতা অর্জনের জন্য বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া চাকরির আবেদনের বয়স যতই থাকুক না কেন, পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ অনির্দিষ্ট হয় না। একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ৫ বা ৭ বার সিভিল সার্ভিসের জন্য আবেদন করতে পারেন। আমাদের দেশেও যেকোন যুক্তিতে বয়স বাড়াতে গেলে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত।

চাকরিপ্রত্যাশী অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশে পড়াশোনা বিশেষ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা উচ্চশিক্ষা শেষ করে বের হন তাদের সেশন জটের কারণে ২৬-২৭ বছর লেগে যায়। সেক্ষেত্রে ৩০ বছরের বয়সসীমা তাদের জন্য অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় বৈষম্যমূলক। বিশ্বের অনেক দেশেই চাকরির বয়সসীমা নেই। বাংলাদেশে বয়সসীমার বাধাটিও বৈষম্যেরই সামিল। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি নেই। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণত চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের বয়স একটু বেশি থাকে তারাই আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর আন্দোলন করে থাকেন। দুই দশক ধরে এ রকম আন্দোলন নিয়মিতভাবে সংবাদমাধ্যমে আসতে দেখা যায়। আন্দোলনকারীদের যুক্তি-বিভিন্ন দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত দেখা যায়। সুতরাং, বাংলাদেশের গ্র্যাজুয়েটরা কেন এই সুযোগ পাবেন না? তাদের মতে, বয়স নয়, যোগ্যতাই হতে পারে একজন প্রার্থী বাছাইয়ের প্রধান বিবেচ্য। তাছাড়া মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারটিও তারা উল্লেখ করেন।

সম্প্রতি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনা করবেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আপাতত বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। গত ১৫ বছরে সরকার অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চাকরির বয়স ছিল ২৭ বছর সেখান থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য সেটা ৩২ বছর করা হয়েছে। চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে। আমরা সবসময় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে জনবল কাঠামো ও নিয়োগ প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করে থাকি। যুগের সাথে সম্পর্ক রেখে আমরা পরিবর্তনও করে থাকি।

সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের বয়স বেশি বাড়ানোর প্রধান অসুবিধা হিসেবে ওপরে সরকারি চাকরিতে তারুণ্যের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেটি ছাড়াও একটি সামাজিক সমস্যা রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পদবিন্যাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো খোলা (ওপেন) বা পরিবর্তনশীল (ডাইনামিক) নয়; এখানকার পদবিন্যাস প্রায় স্থির। বয়োজ্যেষ্ঠদের অবসরে যাওয়ার ফলে এখানে অপেক্ষাকৃত তরুণ চাকরিজীবীদের পদপ্রাপ্তি তথা পদোন্নতির সুযোগ তৈরি হয়। বয়োজ্যেষ্ঠরা দীর্ঘদিন পদ ধরে রাখলে তরুণেরা আরও বেশি দিন পদোন্নতিবঞ্চিত থাকবেন। এতে বয়োজ্যেষ্ঠরা ঘটনাক্রমে বয়ঃকনিষ্ঠদের বিরক্তির কারণ হতে পারেন।

বাংলাদেশে চাকরির বয়সসীমা ৩০ কেন উপযুক্ত বয়স? কারণ, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে তরুণদের কাজে লাগাতে চায় কর্তৃপক্ষ। তরুণরা যাতে তাদের মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারে। এমনকি চাকরিতে প্রবেশের একটা মানসিক বয়সও রয়েছে। সাধরণত সামরিক বাহিনীতে চাকরির ক্ষেত্রে যেমন শারীরিক সক্ষমতার বিষয় থাকে, বেসামরিক চাকরিতে সেটা না থাকলেও মানসিক সক্ষমতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চাকরিতে প্রবেশের পর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় পিক-আপ (গ্রহণ) করা এবং সে অনুযায়ী সার্ভিস বা সেবাদান ঠিক রাখতে হলে একটা নির্দিষ্ট বয়স দরকার হয়। এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বিষয়টি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হতে পারে। চাকরিতে ‘কন্ট্রিবিউট’ করা বা অবদান রাখতে হলেও একটা নির্দিষ্ট বয়সের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ সে যাতে অবদান রাখতে পারে তার জন্যও পর্যাপ্ত সময় দরকার হয়।

বাংলাদেশে সাধারতণ চাকরির ক্ষেত্রে বর্তমানে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর। দেরীতে চাকরিতে প্রবেশ করলে অবদান রাখার সময়ও কমে আসতে পারে। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি বাংলাদেশে কর্ম কমিশন (বিসিএস) এর আওতাধীন নিয়োগ পরীক্ষাসমূহ। এই পরীক্ষার মাধ্যমে একজন চাকরিপ্রত্যাশীর সম্পূর্ণ নিয়োগ পেতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগে। ৩০ বছর বয়সে কেউ এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া পেরিয়ে চাকরি শুরু করতে হলে তার বয়স অন্তত ৩৩-৩৪ বছর হয়ে যায়। ফলে তার অবদান রাখার সময়সীমা এমনিতেই কমে যায়। এতে করে যেই সেক্টরে একজন ব্যক্তি চাকরি করেন সেখানে চাকরিতে তার সম্পূর্ণটা দিতে সক্ষম হন না। ফলে দেশের একাংশ ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। 

বিবেচনা করলে দেখা যায়, কোন ব্যক্তি ২৫ বছর বয়সে চাকরিতে যোগদান করলে তার পিক-আপ করার সক্ষমতা যত থাকবে, ৩৪ বছর বয়সী একজনের সেই সক্ষমতা একই হবে না, এসব বিষয় মাথায় রেখেই বয়স নির্ধারণ করা হয় হতে পারে। একজন ব্যক্তি ২৫ বছরে চাকরিতে প্রবেশ করলে সে অপেক্ষাকৃত তরুণ থাকে এবং প্রশিক্ষণসহ নানা ধরণের কর্মসূচীতে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে তার কোন পিছুটান থাকে না। কিন্তু বয়স বেশি হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিয়ে, অন্য চাকরির মতো পিছুটান তৈরি হয় যা নতুন চাকরি, প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য কর্মসূচীতে বাধার সৃষ্টি করতে পারে।

এছাড়া কর্মক্ষেত্রে যারা সহকর্মী হিসেবে কাজ করবেন সেখানেও, বয়সের পার্থক্য খুব বেশি যাতে না হয় বা একটা নির্দিষ্ট বয়সের ধারা বজায় রাখার প্রতিও নজর দেয়া হয় বলে মনে করেন সমাজের বিশিষ্টজনরা। এমনকি বাংলাদেশে চাকরির সংকটের কারণগুলোও বিবেচনা করা কে তা বিশেষ ভাবে পর্যালোচনা করে সংকট মোকাবিলায় কাজ করা হয়।

দেশের তরুণদের চাকরির সংকটের নানা কারণে হতে পারে বিশষে করে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতার অভাব। ২০১৯ সালে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, বিআইজিডি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা-জরিপ প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতায় মারাত্মকভাবে পিছিয়ে আছেন বাংলাদেশের তরুণেরা। বিশ্ববিদ্যালয় পাস করেও তাঁরা কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন না। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার চাকরির নিয়োগের সময়ে এই ব্যাপারটি দেখা যায়। তাই তরুণদের দক্ষ ও যোগ্য করে তোলার জন্য বাজারের চাহিদার দিকে নজর রেখে নানা ধরনের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া যায়।

সুতরাং সব দিক ভেবে যুবসম্প্রদায়ের প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র ও সময় প্রসারিত করার উদ্দেশ্যে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ এবং অবসরের বয়সের একটি সাম্যতা দরকার। আর একই সঙ্গে বয়োজ্যেষ্ঠদের সেবা একটি যৌক্তিক বয়স পর্যন্ত পেতে এবং নতুন প্রজন্মের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে চাকরি থেকে অবসরের বয়স এক বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করাই বাঞ্ছনীয়।

কিন্তু চাকরি থেকে অবসরের দিক থেকে যদি দেখা হয়, সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও অবসর গ্রহণের সময়সীমা সক্রিয়ভাবে নির্ধারন করা হয়েছে। বিচারকদের অবসর গ্রহণের বয়স ৬৭ বছর এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ রাখা হয়েছে। এমনকি একজন ডাক্তারও বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগদান করে তাকে ৫৯ বছর বয়সে অবসরগ্রহণ করতে হয়। কিন্তু একই ডাক্তার যদি কোন মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসরের চাকরি করেন তাহলে তাকে ৬৫ বছরে অবসরে যেতে হয়। তাহলে সাম্যতা কোথায়? যদি চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে বয়সের সিমাবদ্ধতা দরকার হয় তাহলে চাকরি থেকে অবসরের সময়ও নির্দিষ্ট সিমাবদ্ধতা দরকার।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ডের জন্য বাংলাদেশিদের আবেদনের আহ্বান

প্রকাশ: ০৮:৫৫ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজাদ ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া এবং আই পার্টনার-ইন্ডিয়া যৌথভাবে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করবে। জেন্ডার সমতা নিয়ে কর্মরত দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসকারী যে কেউ এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারেন। আগামী ৭ জুনের মধ্যে এই আবেদন করতে হবে।

বুধবার (১৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সকল তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন নিজেরা করির নির্বাহী পরিচালক মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির। এ সময় আরও বক্তৃতা করেন পুরস্কার কমিটির সদস্য ও আজাদ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী দোলন গাঙ্গুলী, সাংগাত বাংলাদেশের কান্ট্রি কোর গ্রুপের সদস্য অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা প্রমুখ।

মূল বক্তব্যে খুশী কবির বলেন, ‘‘দক্ষিণ এশিয়ার নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ কমলা ভাসিন ছিলেন শান্তি আন্দোলনের অগ্রণী নেত্রী, লেখক, কবি, শিশু সাহিত্যিক ও সমাজবিজ্ঞানী।

২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুর পর জেন্ডার সমতার উদ্দেশে তার কাজকে এগিয়ে নিতে ‘কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ডস-ফর ড্রাইভিং জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যাক্রস সাউথ এশিয়া’ চালু করা হয়। এই পুরস্কারের বিচারকমণ্ডলীতে আছেন দক্ষিণ এশিয়ার স্বনামখ্যাত নারী অধিকার ও মানবাধিকার কর্মী, সমাজসেবী, সাংবাদিকসহ প্রথিতযশা ব্যক্তিবর্গ। আগামী ৩০ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লির হ্যাবিট্যাট সেন্টারে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি বছর দুটি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হবে।

প্রথা-বহির্ভূত বা অপ্রচলিত পেশায় সফলভাবে কর্মরত নারী (সিস অথবা ট্রান্স) ও জেন্ডার সাম্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে কাজ করেন এমন পুরুষ (সিস অথবা ট্রান্স) এই পুরস্কার পাবেন। প্রতিটি পুরস্কারের মূল্য ভারতীয় মুদ্রায় এক লক্ষ টাকা। অর্থমূল্য ছাড়াও পুরস্কৃত ব্যক্তি দক্ষিণ এশিয়ার সমাজকর্মীদের নেটওয়ার্কে সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবেন।’

পুরস্কার কমিটির সদস্য দোলন গাঙ্গুলী বলেন, ‘২০২২ ও ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আবেদনকারী আবেদন করলেও বাংলাদেশ থেকে ২০২৩ সালে কোনো আবেদন জমা পড়েনি। কমলা ভাসিন সত্যিকার অর্থেই নিজেকে একজন দক্ষিণ এশীয় ভাবতেন। তাই এই পুরস্কারের দক্ষিণ এশীয় প্রকৃতি বজয় রাখতে বাংলাদেশ থেকেও অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।’ বাংলাদেশের যোগ্য ব্যক্তিবর্গদের এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কমলা ভাসিন পুরস্কার বিষয়ে গত মঙ্গলবার ঢাকার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একাট অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মহিলা পরিষদ, নারীপক্ষ, একশন এইড, অক্সফাম, বাদাবন সঙ্ঘ, জাগো ফাউণ্ডেশন, সাংগাত বাংলাদেশ, ক্যাম্পি, ডিয়াকোনিয়া, অস্তিত্ব বাংলাদেশ, কর্মজীবী নারী, বন্ধু ফাউণ্ডেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ড   খুশী কবির  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এই সব সুশীলদের এখন কী হবে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশে সুশীল সমাজের কিছু প্রতিনিধি আছেন যাদেরকে মনে করা হয় তারা মার্কিনপন্থী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে তারা গর্ব অনুভব করেন। কথায় কথায় মার্কিন দূতাবাসে যান। সেখানে প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, নৈশভোজে মিলিত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা বলে তারা তার চেয়ে তিন ধাপ গলা উঁচিয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের কোন ভালবাসা নেই, প্রেম নেই, আগ্রহ নাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নীতি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করাই যেন তাদের প্রধান লক্ষ্য। এই সমস্ত সুশীলদেরকে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোফোন। 

গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই ধরনের সুশীলের প্রভাব প্রতিপত্তি বাংলাদেশে ব্যাপক লক্ষ্য করা গিয়েছিল। মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফোরামে তারা যেন ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কণ্ঠস্বর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি, তখন এই সমস্ত সুশীলরা বাহবা দিয়েছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সিদ্ধান্ত সঠিক বলেই বিভিন্ন টকশোতে, বিভিন্ন লেখালেখিতে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সময়ও সুশীলদের দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কথা বলতে। এতে যে দেশের ক্ষতি সেটি অনুভব করার সামর্থ্য তাদের নেই। আবার ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি ঘোষণা করল তখন এই সমস্ত সুশীলরা ভিসা নীতি নিয়ে যেন মার্কিন কূটনীতিকের ভূমিকা অবতীর্ণ হয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যখনই কোনো প্রতিনিধিরা আসতেন তখন এই সমস্ত সুশীলদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করতেন এবং এতেই বাজারে তাদের কদর বাড়ত। বিভিন্নভাবে তারা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতেন। আর এই সমস্ত সুশীলদের খুঁটির জোর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন কথাটা সর্বত্র চাউর ছিল। কিন্তু সেই সুশীলরাই এখন অপাংক্তেয় হয়ে গেলেন। তারা এখন হতাশার সাগরে নিমজ্জিত। 

ডোনাল্ড লুর সফরে এবার চায়ের দাওয়াত পাননি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। ডোনাল্ড লুর সঙ্গে তাদের দেখা সাক্ষাৎও হয়নি। এ নিয়ে তাদের ভীষণ মন খারাপ। বিশেষ করে হেফাজতের তাণ্ডবের সময়ে যিনি হেফাজতের কর্মীদের মৃত্যু আবিষ্কার করেছিলেন, মানবাধিকারের নামে যিনি সরকারবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত সেই আদিলুর রহমান খান প্রতিবারই মার্কিন দূতাবাসে দাওয়াত পেতেন। কিন্তু এবার তাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এই বিতর্কিত তথাকথিত মানবাধিকার কর্মী বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক ধরনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে লিপ্ত। 

জিল্লুর রহমান তৃতীয় মাত্রা উপস্থাপক। পিটার হাস রাষ্ট্রদূত হওয়ার পরপরই লাইমলাইটে আসেন জিল্লুর রহমান। তার সঙ্গে পিটার হাসের সখ্যতার কথা তিনি নিজেই বিভিন্ন জায়গায় বলে বেরিয়েছেন। ডোনাল্ড লু যখন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তখন ডোনাল্ড লুর সঙ্গে তিনি এক সাক্ষাৎকারেও আয়োজন করেছিলেন। একদা খুনি রশিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া এই বিতর্কিত উপস্থাপক মার্কিন অর্থায়নে এবং মার্কিন আর্থিক সহায়তায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। কিন্তু এবার তিনিও অপাংক্তেয় ছিলেন। 

স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের প্রধান কাজ হল সরকারকে নানাভাবে সমালোচনা করা। সরকারের লক্ষ্য ত্রুটি বিচ্যুতি বের করাই যেন তাঁর একমাত্র মিশন। সেই রিজওয়ানা হাসানকেও এবার দাওয়াত দেয়নি মার্কিন দূতাবাস। আর এই সমস্ত ব্যক্তিদেরকে দাওয়াত না দেওয়া ফলে প্রশ্ন উঠেছে। 

তবে বিস্ময়কর ব্যাপার ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক দম নিজস্ব ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত বদিউল আলম মজুমদারের অনুপস্থিতি। বদিউল আলম মজুমদার প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন। কারণ তাকে মনে করা হত তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে মূত্রপাত্র। এমন কী মার্সিয়া বার্নিকাটকে বিদায়ের আগে তাঁর বাসায় নৈশ্যভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই বদিউল আলম মজুমদারের মার্কিন দূতাবাসে চায়ের দাওয়াত না পাওয়াটা বিস্ময়কর। প্রশ্ন হচ্ছে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি নিয়ে যে সব সুশীলরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদলেহন করেছেন তাদের এখন কী হবে?

সুশীল   ডোনাল্ড লু   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান   বদিউল আলম মজুমদার   আদিলুর রহমান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

‘ফিলিস্তিনের গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একমত’

প্রকাশ: ০৭:১৩ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও একমত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (১৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, “গাজায় শান্তি স্থাপন করার বিষয়টি আমরা আলোচনা করেছি। তিনি (ডোনাল্ড লু) বলেছেন, ইউএস অত্যন্ত টায়ারডলেসলি (অক্লান্তভাবে) কাজ করছে যাতে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তিনি আমাকে যেটুকু বলেছেন- ‘তারা আশাবাদী’।”

‘আমরা বলেছি, গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, নিরীহ নারী ও শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এটি আসলে মেনে নেয়া যায় না। আমি বলেছি, টেলিভিশনে যখন এগুলো দেখি, তখন টেলিভিশন দেখা কন্টিনিউ করতে পারি না। সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনিও একমত যে, সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য টায়ারলেসলি কাজ করছেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। আমাদের বহুমাত্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে। একইসাথে গত ৫৩ বছরের আমাদের অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যে কারণে ডোনাল্ড লুকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।’

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। তিনি সম্পর্ককে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন। সেই অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।’

‘আমাদের আলোচনা সেই লক্ষ্যেই হয়েছে। একক দেশ হিসেবে আমাদের রফতানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশও যুক্তরাষ্ট্র। আমি ডোনাল্ড লু’কে অনুরোধ জানিয়েছি, বাংলাদেশে ৪০টি আইটি ভিলেজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে যাতে যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ বাড়ায়। যদিও কিছু বিনিয়োগ তারা এরইমধ্যে করেছে।’


হাসান মাহমুদ   ডোনাল্ড লু   ফিলিস্তিন   গাজা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না দেওয়ার নির্দেশ

প্রকাশ: ০৬:১১ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানী ঢাকায় যেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।  বুধবার (১৫ মে) বনানীতে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে আয়োজিত সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি (তিন চাকার) যেন ঢাকা সিটিতে না চলে। আমরা ২২টি মহাসড়কে নিষিদ্ধ করেছি। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর আগে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঢাকার মধ্যে অটোরিকশা বন্ধে সম্মতি জানান।

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ভয়াবহ ব্যাপার যখন রিকশাচালকরা দুই পা ওপরে উঠিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। অনেক প্রতিবন্ধী আছেন যারা চোখে কিছুটা কম দেখেন তারাও এই রিকশা নিয়ে নেমে পড়েন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সিদ্ধান্তে আসা দরকার যে ঢাকায় ইজি বা অটোরিকশা চলবে না। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

সভায় বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


রাজধানী   ওবায়দুল কাদের   অটোরিকশা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন