তীব্র দাবদাহে অসহনীয় গরমে পুড়ছে পুরো দেশ। কখনও তীব্র আবার কখনো অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে। এই গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন পার করছে জনগণ। নাভিশ্বাস হয়ে পড়েছে জীবনব্যবস্থা। এপ্রিলের পুরো মাস জুড়েই ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ, যা ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। এবংকি চলতি মে মাসেও দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অফিস।
দেশের তাপমাত্রায় যখন এমন দূর্বিসহ দিন যাচ্ছে তখন বসে নেই সরকার।
জনগণকে এই তীব্র গরম থেকে স্বস্তি দিতে সরকার নিচ্ছে একের পর এক পদক্ষেপ, করছে কার্যকর।
শুধু সরকারের পদক্ষেপেই কি মিলবে স্বস্তি নাকি দেশের জনগণকে নিজেদেরে সচেতন হয়ে দাবদাহ
মোকাবিলা নিতে হবে নানান ব্যবস্থা। দেশপ্রেমের স্থান থেকেও সরকারকে সহযোগিতা করে তীব্রগরমেও
আনতে হবে স্বস্তি।
সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। পানি ছিটানো হচ্ছে
ফুটপাত ও সড়ক বিভাজকে থাকা গাছপালাতেও। তপ্ত গরমের মধ্যেও যারা জীবিকার তাগিদে ঘরের
বাইরে বের হচ্ছেন তাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে সরকারের পক্ষ থেকে এ উদ্যেগ নেওয়া হয়ে।
বসে নেই আবহওয়া অধদপ্তরও। স্বস্তিবোধের খবর দিতে কাজ করে যাচ্ছে
অনায়েসে। ক্রমাগত ভাবে আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে খবর দিয়ে যাচ্ছে দেশবাসিকে।
দফায় দফায় হিট অ্যালার্ট জারি করে জনগণকে সচেতন করছে সংস্থাটি।
অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রনালয় তৎপরতার সহিত তীব্র তাপদাহের মধ্যে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান আবারও বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করছে। শিক্ষার্থীদের কল্যানে যাতে করে এই তাপপ্রবাহ
শিক্ষাখাতে কোন প্রভাব না আনতে পারে সে জন্য নিচ্ছেন নানান ব্যবস্থা।
তবে কি শুধু সরকার এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করলেই মিলবে গরমের স্বস্তি?
নাকি জনগেণেরও নিজেরা উদ্যেগ গ্রহন করে সামাজি ও পারিবারিকভাবে সচেতন হওয়া উচিৎ?
বসতবাড়িতে তীব্র তাপপ্রবাহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যক্তিগত
এয়ার কন্ডিশনার, ফ্যান, বা অন্যান্য কুলিং সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারেন। ঘরের নকশা
যত্ন যাথে করে তাপমাত্রা কমানো যায়। যা কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। অতিরিক্ত গরমে দেহ
থেকে পানি হারিয়ে যায়। তাপমাত্রা কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ।
এতে করে পানিশূণ্যতাযনিত রোগ থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া যাবে তেমনি গরমে কিছুটা স্বস্তি
পেতে পারে। শুধু পানি পান করা নয় , তীব্র গরমে জীবন চলার পথে উষ্ণতাও বন্ধ করা উচিত।
অতিরিক্ত গরমে সারি, জামা, ও অন্যান্য সংগ্রহশালা এবং কুলিং বাস্ত্র পরিহার করা উচিত
যাতে দেহ ঠাণ্ডা রাখা জরুরী।
আর এতে করে মিলতে পারে ব্যক্তিগত স্বস্তি। যা নিজের অবস্থান সুস্থ্যতাকে
ভালো ফলশ্রুত দিতে পারে। দাবদাহে চলার পথে শুষ্ক এবং শীতল স্থানে সময় ব্যয় করা উচিত।
যেমন বাড়ির ভিতর থাকা, জলস্থল বা বারি পর্যবেক্ষণ করা। গাছের ছায়ার নিচে থাকা। এক
কথায় শরীরের জন্য যত্ন নেওয়া জরুরি যেন হার্মনিক হয়। এটি উষ্ণতা রেগুলেশন, উষ্ণতা
ব্যবহার এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করে। সরকারের নির্দেশনা মানতে হবে। চলমান
দাবদাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জণগনের কল্যানে বিভিন্নভাবে সতর্ক করছে। এমনকি স্বাস্থ্য
মন্ত্রী নিজেই গ্রামীন পরিবেশে গিয়ে জণগনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করছে।
এই তীব্র গরমের মধ্যেও বিভিন্ন গ্রামে তৃণমূল গ্রামে ঘুরে হাসপাতালগুলোর সার্বিক অবস্থা ও জণগনের স্বাস্থ সংক্রান্ত বিষয়ে খবর নিচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেছেনে, ‘আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন করতেছি। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছি। স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন করে দেশের সব প্রাইভেট হাসপাতালে রোগনির্ণয় পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হবে’।
এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্ত দিয়েছে ৪ নির্দেশনা..
১। তীব্র গরম থেকে দূরে থাকুন, মাঝে মাঝে ছায়ায় বিশ্রাম নিন।
২। প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করুন। হেপাটাইটিস এ, ই, ডায়রিয়াসহ প্রাণঘাতি পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে রাস্তায় তৈরি পানীয় ও খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে একাধিকবার গোসল করুন।
৩। গরম আবহাওয়ায় ঢিলেঢালা পাতলা ও হালকা রঙের পোশাক পরুন, সম্ভব হলে গাঢ় রঙিন পোশাক এড়িয়ে চলুন।
৪। গরম আবহাওয়ায় যদি ঘাম বন্ধ হয়ে যায়, বমি বমি ভাব দেখা দেয়, তীব্র মাথাব্যথা হয়, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, প্রস্রাব কমে যায়, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়, খিঁচুনি ও অজ্ঞান হওয়ার মতো কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শের জন্য প্রয়োজনে ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ নম্বরে
যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও, সরকারের সকল নির্দেশ মেনে চলা এবং নির্দেশাবলী মানতে সমাজ
ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব স্থান থেকে একে অপরে পাশে থেকে সহযোগিতা করা উচিৎ। কেননা প্রতিটি
সামাজ দেশ ও জাতির প্রতিটি মানুষই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিটি জনগণকে
সচেতন হয়ে দাবদাহ মোকাবিলা করতে হবে।
তীব্র তাপপ্রবাহ ডিএনসিসি জনসচেতনতা আবহাওয়া অধিদপ্তর
মন্তব্য করুন
হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে গত ৯ মে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৪ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। কিন্তু ৫২৩ জন যাত্রীর টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে আল রিসান ট্রাভেলস ও দিয়া ইন্টারন্যাশনাল নামের দুই এজেন্সি। এরমধ্যে আল রিসান ট্রাভেলসের ৪৪৮ জন এবং দিয়া ইন্টারন্যাশনালের ৭৫ জনের টাকা নিয়ে পালিয়েছে। ফলে এ দুই এজেন্সির মাধ্যমে নিবন্ধন করা হজযাত্রীদের হজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এর প্রেক্ষিতে ওই ২ হজ এজেন্সির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ওই চিঠি পেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেশের সকল ইমিগ্রেশনকে চিঠি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আবু তাহেরের সই করা পৃথক দুটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের হজ মৌসুমে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হজ লাইসেন্স নম্বর ০৬৭২) এর অধীনে ৪৪৮ জন হজযাত্রীর নিবন্ধন হয়েছে। এ এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে অদ্যাবধি কোনও ভিসা করা হয়নি। এ অবস্থায় এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এতে এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং তাদের এ বছর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হতে পারে। এ অবস্থায় আল রিসান ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে এবং একইসাথে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ভিসা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে এজেন্সির মালিক গা ঢাকা দেয়। অফিসে যোগাযোগ করলে তাদের ভিসা আবেদন করা হয়েছে এমন তথ্য জানানো হয় হাজীদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একজনেরও ভিসা হয়নি এমন তথ্য জানার পর হাজীরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে এজেন্সির মালিককে গ্রেফতার ও তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এদিকে রংপুরে দিয়া ইন্টারন্যাশনাল নামে আরেকটি হজ এজেন্সির ৭৫ জন যাত্রীর হজযাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ এজেন্সির মালিক ‘লিড’ এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় না করে ৭৫ জন যাত্রীর তিন কোটি টাকা নিজেদের নামে করা এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে নিয়েছেন। ফলে এ হজযাত্রীদেরও হজযাত্রা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
এর প্রেক্ষিতে ওই হজ এজেন্সির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য করুন
গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লেগেছে। বৃহস্পতিবার
(১৬ মে) রাত পৌঁনে ১১টার দিকে টঙ্গীর সিলমুন মোল্লার গ্যারেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা
আবু মোহাম্মদ সাজেদুল কবির জোয়ার্দার বলেন, কারখানাটিতে প্লাস্টিকের দানা তৈরি করা
হতো। আগুনের খবর পেয়ে প্রায় এক ঘণ্টা যাবত আমাদের তিনটি ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে
আনতে কাজ করে।
প্রায় এক ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে।
আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন
কোরবানির ঈদের মাসখানেক বাকি। ইতিমধ্যে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম প্রতি কেজি ৮০-১০০ থেকে বেড়ে ১৫০-১৬০ টাকা হয়েছে। গত কোরবানির সময়ে ঢাকায় কাঁচা মরিচের কেজি ৭০০ টাকায় উঠেছিল।
বছরের এই সময়ে দেশে কাঁচা মরিচের কিছুটা সংকট থাকে। তাতে আমদানি করে প্রয়োজন মেটাতে হয়। এবার দাম বাড়তে থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বাজারে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে মরিচের সরবরাহ কমেছে। এতে বাড়ছে দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা বেড়েছে। এদিকে বাজারে গ্রীষ্মকালীন মরিচের গাছ এখন শুকিয়ে এসেছে। ফলনও আগের তুলনায় কমে এসেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সঙ্গনিরোধ শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বাইরে থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি (আইপি) দেওয়া হয়নি। তবে বাজার পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েই চলছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) চলতি মাসে বাংলাদেশের খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, খানা জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের খাবার কেনার খরচ ছিল প্রতি মাসে মাথাপিছু ১ হাজার ৮৫১ টাকা। গত দুই বছরে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাথাপিছু খাবার কেনার খরচ বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৯২৩ টাকা; যা দুই বছর আগের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।
সরকারি ও বেসরকারি সব হিসাব বলছে, গত দুই বছরে দেশের মানুষের আয় বাড়লেও এই সময়ে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে থেকেছে। সামগ্রিকভাবে দেশের প্রধান খাদ্যগুলোর দাম বেড়েছে। বিশেষ করে চাল, আটা ও আমিষের প্রধান উৎস মুরগির মাংস, ডিম, মাছ ও সবজির দাম বাড়তির দিকে। বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, আদা, কাঁচা মরিচ ও ফলের দামও।
ডব্লিউএফপি গত মাসে (এপ্রিল) বাংলাদেশের খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ মানুষ খাদ্যঝুঁকিতে ছিল; যা এর আগের মাসের তুলনায় ২ শতাংশ বেড়েছে। দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। আর ৪৩ শতাংশ মানুষ বাকিতে খাবার কিনছে। ২২ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বাবদ খরচ কমিয়েছে। আর ১৩ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় ভাঙছে। খাদ্যঝুঁকিতে থাকা মাত্র ২১ শতাংশ মানুষ বাইরে থেকে সহায়তা পাচ্ছে।
ডব্লিউএফপির চলতি মাসের বাজার তদারকি প্রতিবেদন বলছে, মাথাপিছু খাদ্যের দাম দেশের একেক বিভাগে একেকভাবে বেড়েছে। চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেটে জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি বেড়েছে। রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহে তুলনামূলকভাবে কম বেড়েছে। বাকি এলাকাগুলোতে দাম অপরিবর্তিত আছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ছয় মাস ধরে গমের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। ফলে বাংলাদেশেও গমের আমদানি বেড়েছে। তবে আমদানির তুলনায় গমের দাম কমেনি। মার্চে আটার খুচরা মূল্য প্রতি কেজি প্রায় ৫৭ টাকায় পৌঁছেছে; যা এর আগের মাসের তুলনায় সামান্য বেশি। দেশে গমের চাহিদার ৮৫ শতাংশ আমদানি করা হয়।
টানা চতুর্থ মাসের মতো ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে দেশে চালের দাম বেড়েছে। আমনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও দাম বেড়েছে। উৎপাদন বেশি হওয়া সত্ত্বেও চালের দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে চালকল মালিকেরা উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।
ডব্লিউএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে সরকারি খাদ্য মজুত কমতির দিকে ছিল। সাধারণত বছরের এই সময়ে খাদ্যের মজুত কম থাকে। কিন্তু এবার মজুতের পরিমাণ আগের থেকে কম। ফেব্রুয়ারিতে সরকারি খাদ্য মজুত ছিল ১৫ লাখ ৬০ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ১৩ লাখ ৩০ হাজার টন, যা আগের এক বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ কম।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে সরকারি মজুত গত দুই মাসে আরও কমেছে। গত ১৫ মে গুদামে চাল, গম ও ধান মিলিয়ে মোট মজুত ছিল ১১ লাখ ১২ হাজার ৪২০ টন। এর মধ্যে চাল ৭ লাখ ৫১ হাজার ৩২৫ টন আর গম ৩ লাখ ৫১ হাজার টন। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে চাল ও গমের সরবরাহ বাড়িয়ে দেওয়ায় মজুত কমছে। তবে আগামী জুন থেকে বোরো সংগ্রহ শুরু হলে মজুত বাড়তে শুরু করবে বলে মনে করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
ডব্লিউএফপি চলতি মাসে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদনে ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত খাদ্য পরিস্থিতির পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, সংকটের সময় বাংলাদেশে খাদ্য ব্যবস্থাপনা বহুমুখী সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে। কোভিড-১৯ সংকটের পর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে খাদ্য আমদানি কমে আসে। এর আগে ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এ ছাড়া ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গবাদিপশুর উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গণমাধ্যকে বলেন, ‘আমাদের খাদ্য উৎপাদন যথেষ্ট ভালো। আর সার, জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ফলে চালের দাম আরও কমাতে গেলে কৃষক উৎপাদন কমিয়ে দেবেন। তখন চালের জন্য আমাদের আবারও আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করতে হবে।’
ডব্লিউএফপির হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ সালে খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ৮ শতাংশে পৌঁছায়। এর আগে ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২৩ সাল থেকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দ্রুত বাড়তে থাকে। ওই বছরের অক্টোবরে তা ১৩ শতাংশে পৌঁছায়।
সংকট শুরু হওয়ার পর অর্থাৎ ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে খাদ্যের দাম ৭৫ শতাংশ বেড়ে যায়। এর মধ্যে শক্তি জোগায় এমন খাদ্যগুলোর দাম ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। চাল ও গমের মতো দানাদার খাদ্য, চিনি, ভোজ্যতেল, মাছ, মাংস ও মুরগির মতো প্রাণিজ আমিষ ও সবজি, দুধ ও ডিমের মতো পুষ্টিকর খাবারের দামও বেড়ে যায়।
মন্তব্য করুন
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরের আবাসনবাজার বেশ রমরমা। বিভিন্ন দেশের সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে সন্দেহভাজন অপরাধীরাও এখানে বিনিয়োগ করছে। কিনছে বাড়ি ও ফ্ল্যাট। এই তালিকায় পিছিয়ে নেই বাংলাদেশিরাও।
ইইউ
ট্যাক্স অবজারভেটরির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ৫৩২ জন বাংলাদেশি সেখানে
বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন। যার মূল্য ৩৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।
ফাঁস
হওয়া সম্পদ কেনার ঘটনার সঙ্গে ট্যাক্স অবজারভেটরি নিজেদের আনুমানিক হিসাবও দিয়েছে।
যেখানে ফাঁস হওয়া ঘটনার সঙ্গে ফাঁস না হওয়া ঘটনাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তবে কারা এসব
সম্পদ কিনেছেন, সেই তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
তবে প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, ২০২২ সালে দুবাইয়ের শতভাগ রেডিমেড (প্রস্তুত) আবাসন সম্পদ কিনেছেন বা অপ্রস্তুত
আবাসন সম্পদ কেনার জন্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন এমন কিছু ব্যক্তির তালিকা ফাঁস হয়েছে।
তালিকায়
৩৯৪ জন বাংলাদেশির নাম এসেছে। ওই বছর তারা মোট ২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের সম্পদ কিনেছেন।
সেবার বাংলাদেশিরা মোট ৬৪১টি সম্পদ কিনেছিলেন। তবে অবজারভেটরির মতে, ওই বছর সর্বমোট
৫৩২ জন বাংলাদেশি সেখানে বাড়ি-ফ্ল্যাট কিনেছেন।
ব্যাংক
লুট করে বিসমিল্লাহ গ্রুপের খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ অন্তত ২০ জন ঋণখেলাপির সম্পদ
এখন দুবাইয়ে। তালিকায় আরও রয়েছে সাবেক মন্ত্রী, রাজনীতিক, অপরাধী, অর্থ পাচারকারীদের
নাম।
ওয়ান-ইলেভেনের
প্রভাবশালী সাবেক সেনা কর্মকর্তারা সেখানেই অবস্থান করছেন। তাদের রয়েছে বাড়ি, দোকানসহ
নানা ধরনের ব্যবসা। আমলাদের অনেকেই তাঁদের বিত্তের ঘাঁটি গড়েছেন দুবাইয়ে। তাঁদের একাধিক
বাড়ি আর বিশাল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সদ্যবিদায়ী মন্ত্রিসভার একজন মন্ত্রী এবং তাঁর
মেয়ের নাম উঠে এসেছে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ার তালিকায়।
গত
মঙ্গলবার একটি বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রকল্প ‘দুবাই আনলকড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে
বিশ্বের সম্পদশালীদের গোপন সম্পদের তথ্য ফাঁস করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুবাইয়ের
আবাসন খাতে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। তাদের
তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশি নাগরিকও। ৩৯৪ বাংলাদেশির ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৬৪১টি
সম্পত্তি রয়েছে দুবাইয়ে। সম্পত্তির মালিকের এ তালিকায় আরও রয়েছেন বিভিন্ন দেশের বড়
ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এমনকি বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি,
অর্থ পাচারকারী ও অপরাধীরাও সেখানে বিপুল সম্পদের মালিক।
প্রতিবেদনে
ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানির পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির
পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে। তালিকায় দেখা গেছে, দুবাইয়ে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে
ভারতীয়দের। সেখানে ৩৫ হাজার প্রপার্টির মালিক ২৯ হাজার ৭০০ ভারতীয়। এ তালিকায় দ্বিতীয়
স্থানে রয়েছেন পাকিস্তানিরা। দেশটির ১৭ হাজার নাগরিকের দুবাইয়ে ২৩ হাজার প্রপার্টি
রয়েছে। এর মূল্য ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার।
মন্তব্য করুন
হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে গত ৯ মে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৪ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। কিন্তু ৫২৩ জন যাত্রীর টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে আল রিসান ট্রাভেলস ও দিয়া ইন্টারন্যাশনাল নামের দুই এজেন্সি। এরমধ্যে আল রিসান ট্রাভেলসের ৪৪৮ জন এবং দিয়া ইন্টারন্যাশনালের ৭৫ জনের টাকা নিয়ে পালিয়েছে। ফলে এ দুই এজেন্সির মাধ্যমে নিবন্ধন করা হজযাত্রীদের হজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েই চলছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) চলতি মাসে বাংলাদেশের খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, খানা জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের খাবার কেনার খরচ ছিল প্রতি মাসে মাথাপিছু ১ হাজার ৮৫১ টাকা। গত দুই বছরে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাথাপিছু খাবার কেনার খরচ বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৯২৩ টাকা; যা দুই বছর আগের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।