ইনসাইড বাংলাদেশ

সিকদারের মৃত্যুর তিন বছরেই সব হারাচ্ছেন দুই ছেলে!

প্রকাশ: ০৩:৩৯ পিএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

দেশেরে অন্যতম সফল ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদার। একাধারে তিনি যেমন উদ্যোক্তা ছিলেন তেমনি দেশেরে সম্পদশালীদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম একজন ব্যবসাসফল মানুষ। আর সেকারণেই দেশের প্রভাবশালী অনেক ব্যবসায়ী গুরু মানতেন তাকে। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারের ওপরও ছিল তার বিপুল প্রভাব। তার আশীর্বাদের জন্য তার কাছে ধরনাও দিতেন।

জয়নুল হক সিকদারের হাতে গড়ে ওঠা সিকদার গ্রুপের ব্যবসা সম্প্রসারিত হয় ব্যাংক, বীমা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন, নির্মাণ, হোটেল, পর্যটন, এভিয়েশনসহ নানা খাতে। কিন্তু তার মৃত্যুর তিন বছর না পেরোতেই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পুরো সিকদার গ্রুপ।

প্রয়াত ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদারের আট সন্তানের মধ্যে দুজন বাংলাদেশে তার ব্যবসার হাল ধরেছিলেন। তারা হলেন রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদার। বেপরোয়া জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে বারবার আলোচনায় এসেছেন এ দুই সহোদর। পিতার জীবদ্দশায় যখন যা পেতে চেয়েছেন, সেটিই পেয়েছেন। এমনকি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িয়েছেন বহুবার।

ন্যাশনাল ব্যাংক কর্মকর্তাদের ওপর তাদের কর্তৃত্ব ছিল প্রভুসুলভ। পিতার প্রভাব কাজে লাগিয়ে দেশের অন্যান্য ব্যাংক থেকেও ঋণ নিয়েছেন খেয়াল খুশিমতো। কিন্তু পিতার অবর্তমানে সে সাম্রাজ্যও এখন ভেঙে পড়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংক পর্ষদ থেকে ছিটকে পড়ার পর অন্য ব্যবসাগুলোও হাতছাড়া হচ্ছে তাদের।


চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়। ওই সময় ব্যাংকটির পর্ষদ থেকে রন-রিকের পাশাপাশি তাদের মা মনোয়ারা সিকদারও ছিটকে পড়েন। পর্ষদ থেকে বাদ পড়লেও ব্যাংকটির শেয়ারের মালিকানায় ছিলেন তারা। কিন্তু গত দুই দিনে সে মালিকানাও হাতছাড়া হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে গত দুই দিনে ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৮ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার ৪০০টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে গত ৬ মে ১২ কোটি ২৫ লাখ ২০ হাজার ৪০০টি শেয়ার ৮৩ কোটি ৭ লাখ টাকায় লেনদেন হয়। আর গতকাল ৪২ কোটি ৫১ লাখ টাকায় লেনদেন হয় আরো ৬ কোটি ৪৫ লাখ শেয়ার। ব্লক মার্কেটে শেয়ারের ক্রেতা-বিক্রেতা আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের তথ্যমতে, এ দুই দিনে সিকদার পরিবারের সদস্যরা তাদের মালিকানাধীন শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এর মধ্যে রন-রিকের শেয়ারের পাশাপাশি তাদের মায়ের শেয়ারও রয়েছে। এসব শেয়ার কিনে নিয়েছে দেশের প্রভাবশালী একটি শিল্প গ্রুপ। সে গ্রুপটির প্রতিনিধিরা ব্যাংকটির পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদে স্থান পেয়েছেন।

আগামী কয়েক দিনে সিকদার পরিবারের আরো কয়েক কোটি শেয়ার হস্তান্তর হবে। শুধু ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার নয়, রন-রিকের মালিকানায় থাকা বিভিন্ন কোম্পানির সম্পদও হাতছাড়া হতে চলেছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুন পর্যন্ত দেশের ব্যাংকগুলোয় রন-রিকের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। এসব ঋণের সিংহভাগই ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। খেলাপি হওয়া থেকে বাঁচতে তারা ঋণের ওপর উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে রেখেছেন। তবে একাধিক ব্যাংকে তাদের ঋণ এরই মধ্যে খেলাপি করে দেয়া হয়েছে।

তবে গুঞ্জন উঠেছে, সম্পদের তুলনায় দায়দেনা বেশি হওয়ায় রন-রিক তাদের সব সম্পদ দেশের একটি প্রভাবশালী শিল্প গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করে দিচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এরই মধ্যে তাদের সব কোম্পানি হস্তান্তরের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। এর মধ্যে জেডএইচ সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালও রয়েছে। 

তবে বিষয়টিকে গুজব বলে দাবি করেছেন প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের কন্যা পারভীন হক সিকদার। তিনি বলেন, ‘জেডএইচ সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল আমার পিতার নামে। তিনি প্রয়াত হওয়ার পর উত্তরাধিকারী হিসেবে আমাদের মধ্যে এ সম্পদ বণ্টন হয়নি। সে হিসেবে আমার ভাইরা চাইলেও এটি বিক্রি করতে পারার কথা নয়। তাছাড়া আমি ন্যাশনাল ব্যাংকের কোনো শেয়ার এখনো বিক্রি করিনি।’

পারভীন হক সিকদার বলেন, ‘একটি পক্ষ গুজব ও আতঙ্ক ছড়িয়ে আমাদের সম্পদ দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে। তারা সিকদার পরিবারকে ধ্বংস করে দিতে চায়। আমি সব সময় সত্যের পথে চলেছি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এ কারণেই ভাইদের সঙ্গে আমার বিরোধ। কন্যা হিসেবে জয়নুল হক সিকদারের রক্ত আমার শরীরে প্রবহমান। আমি এখনো ব্যর্থ হয়ে যাইনি। আশা করছি, ব্যর্থ হবও না। দ্রুতই আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’ তবে এ বিষয়ে চেষ্টা করেও রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড।  প্রতিষ্ঠানটি বেশ সুনামের সঙ্গেই প্রায় তিন দশক পার করেছিল। কিন্তু ২০১০ সালের পর ব্যাংকটি পথ হারায়। এক যুগের বেশি সময় ধরে সিকদার পরিবারের একচ্ছত্র কর্তৃত্বে পরিচালিত হয়েছে ব্যাংকটি। প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের হাত ধরে সৃষ্টি হওয়া সে কর্তৃত্বের অবসান হয় গত বছরের শেষের দিকে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সাত সদস্যের পর্ষদ গঠন করে দেয়া হয়। 

ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দেয়ায় প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে ছিটকে যান। একই সঙ্গে পরিচালক পদ হারান জয়নুল হক সিকদারের ছেলে রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার। ওই পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে নতুন পর্ষদে স্থান পান কেবল পারভীন হক সিকদার। কিন্তু গত রোববার ব্যাংকটির পর্ষদ আরেক দফায় পুনর্গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন পর্ষদ থেকে পারভীন হক সিকদারও ছিটকে পড়েছেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। ব্যাংকটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩২১ কোটি ৯৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭০। এর মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার সিকদার পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে। পরিবারটির মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে আরো ৬-৭ শতাংশ শেয়ার।

প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের আট সন্তানের মধ্যে কেবল রন-রিকই বাংলাদেশে ব্যবসা বিস্তৃত করেছেন। এ দুই সহোদরের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর মধ্যে পাওয়ার প্যাক মতিয়ারা কেরানীগঞ্জ পাওয়ার প্লান্ট লিমিটেডের নামে ১ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা, পাওয়ার প্যাক মতিয়ারা জামালপুর পাওয়ার প্লান্ট লিমিটেডের নামে ১ হাজার ১১৯ কোটি, সিকদার রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের নামে ৬৭২ কোটি, বিইএল কনস্ট্রাকশন এসডিএন বিএইচডি লিমিটেডের নামে ৬২২ কোটি, মাল্টিপ্লেক্স হোল্ডিংস লিমিটেডের নামে ২১৪ কোটি, আর অ্যান্ড আর এভিয়েশন লিমিটেডের নামে ২৯ কোটি, পাওয়ার প্যাক মতিয়ারা খুলনা পাওয়ার প্লান্ট লিমিটেডের নামে ২৭ কোটি, পাওয়ার প্যাকের নামে ১২ কোটি এবং পাওয়ার প্যাক হোল্ডিংস লিমিটেডের নামে ৭ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। এছাড়া রন হক সিকদারের নামে ৩৫৩ কোটি ও রিক হক সিকদারের নামে ১৯৫ কোটি টাকার ব্যক্তিগত ঋণও রয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ব্যাংকটি থেকেও নামে-বেনামে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন রন ও রিক। এসব ঋণ অনেক আগেই অনিয়মিত ও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। শুধু ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেই এ দুই ভাই বিদেশে খরচ করেছেন ৭১ কোটি টাকার বেশি। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী দেশের ব্যাংকগুলোর কোনো ক্রেডিট কার্ডের অনুকূলে জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা ও জামানতসহ সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার ঋণসীমার সুযোগ রয়েছে। এ নিয়ে গত মাসের শুরুতে এ দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বিদেশে ৭১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। এতে রন-রিক ছাড়াও বেসরকারি ব্যাংকটির সাবেক তিন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) পাঁচ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। দুদকের পরিচালক মো. বেনজীর আহম্মদ বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও ন্যাশনাল ব্যাংকের হিসাব থেকে থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার হয়েছে বলে দুদকের মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) অনুসন্ধান প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, থাইল্যান্ডে রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারের নিজ নামে এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে অন্তত ২০টি ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হচ্ছে। এসব ব্যাংক হিসাবে বিভিন্ন সময়ে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে। আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড, চীন, ভিয়েনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন ও রাশিয়া থেকে হিসাবগুলোয় অর্থ স্থানান্তরের প্রমাণ পাওয়া গেছে।


জয়নুল হক সিকদার   বাংলাদেশ ব্যাংক   ন্যাশনাল ব্যাংক   পরিচালনা পর্ষদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রীর লড়াই

প্রকাশ: ১০:১১ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২৯ মে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা যেন কোন প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে না যায় বা না সমর্থন করে এমন নির্দেশনা থাকলেও চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রীর লড়াই চলছে।

জানা গেছে, আনোয়ারায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন প্রার্থী। তবে এর মধ্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান কাজী মোজাম্মেল হককে (আনারস) ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এম এ মান্নান চৌধুরীকে (মোটরসাইকেল) সমর্থন দিচ্ছেন। ভোট ছাপিয়ে উপজেলা নির্বাচন পরিণত হয়েছে সাবেক ও বর্তমান দুই মন্ত্রীর লড়াইয়ের মঞ্চ। তবে দুই নেতার বাইরে আলাদাভাবে প্রচারণা এগিয়ে নিচ্ছেন দুবারের চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী (দোয়াত কলম)।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১ মে সন্ধ্যায় আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা ডেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বটতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণা করে। ওই সভায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী তাকে সমর্থন দেন। একই দিন রাতে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক প্রার্থী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আনোয়ারার চাতরী চৌমুহনীসহ বিভিন্ন জায়গায় আনন্দ মিছিল করেন ওয়াসিকার অনুসারীরা। 

তবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী কাজী মোজাম্মেল হক উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনী পরিবেশের মোড় ঘুরে যায়। মোজাম্মেলের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেকে থাকায় জমে উঠেছে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী আমেজ।

উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ঘিরে আনোয়ারায় তিন পক্ষ একে অপরের মুখোমুখি অবস্থানে আছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রীর প্রার্থী এম এ মান্নানকে জেতাতে ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এককাট্টা হলেও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা মাঠে নেমেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হককে জেতাতে। ওই দুই প্রার্থীর বাইরে জেলা-উপজেলার বেশ কিছু নেতাকে নিয়ে মাঠে আছেন তৌহিদুল হক চৌধুরী।

উল্লেখ্য, আনোয়ারা উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ৭৪টি ভোটকেন্দ্র আছে। তার মধ্যে স্থায়ী ভোটকক্ষ ৪৮৪টি এবং অস্থায়ী ভোটকক্ষ ৫০টি। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৮ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯ হাজার ২২১ জন।

উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এমপিপুত্রের দাপটে অন্যরা কোণঠাসা

প্রকাশ: ০৯:৩৬ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সেনবাগ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের ছেলে সাইফুল আলম দিপুর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য প্রার্থীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে নিজেদের সুবিধামতো ব্যবহার করার ফলে অন্য প্রার্থীরা তাদের শঙ্কার কথা জানিয়েছে।

প্রার্থীদের অভিযোগ, দিপু বাবার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তার সমর্থকরা পদে পদে হয়রানি করছে অন্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের। প্রশাসনকে নিজেদের কাজে লাগানো, অন্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের হুমকি, প্রচারণায় বাধাসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ড করছেন ভোটের মাঠে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তার বাবা মোরশেদ আলম। সম্মেলনের মাধ্যমে লায়ন জাহাঙ্গীর আলম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। কিন্তু গত সংসদ নির্বাচন আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকের পক্ষে ভোট করার দায়ে লায়ন জাহাঙ্গীরকে পদ থেকে বহিষ্কার করেন এমপি মোরশেদ। এরপর নিজের পছন্দের বাহার উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করেন তিনি। এ ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন মোরশেদ। কোনো সম্মেলন ছাড়াই তিনি এসব কমিটি দিচ্ছেন। সব মিলেয়ে সেনবাগে রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্বাভাবিক করে তুলেছে এমপি পরিবার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটিগুলোও তাদের দখলে।

জানা গেছে, নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই অন্য প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি এবং দলীয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার হুমকি দিচ্ছেন সাইফুল আলম দিপু ও তার অনুসারীরা। নির্বাচনে ১, ৬,৭ ও ৮ নং ইউনিয়নসহ অন্য ইউনিয়নেও অন্য প্রার্থীর এজেন্ট প্রবেশ না করার জন্যও প্রতিনিয়ত চাপ ও হুমকি দিচ্ছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলীয় নেতা জানান, তার বিপক্ষে গিয়ে অন্য প্রার্থীর ভোট করায় তাদের সরকারি বরাদ্দ টিআর, কাবিখা এবং দলীয় পদপদবি না দেওয়ার চাপ দিচ্ছেন দিপু। এজন্য প্রশাসন দিয়েও নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। মামলারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আগামী মঙ্গলবার (২১ মে) দেশের ১৫৭টি উপজেলায় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের ২য় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২য় ধাপে সেনবাগসহ নোয়াখালীতে মোট ৩টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সেনবাগ উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়াই করছেন মোট ১৫ জন প্রার্থী৷ তারা সবাই ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

স্থানীয় সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের ছেলে আনারস প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল আলম দিপু ছাড়াও চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন সেনবাগ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. আবু জাফর টিপু, বর্তমান চেয়ারম্যান হেলিকপ্টার প্রতীকের প্রার্থী জাফর আহাম্মদ চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী হাসান মঞ্জুর, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সদস্য মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী এ কে এম জাকির হোসেন জুয়েল ও টেলিফোন প্রতীকের প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর আলম মানিক।

উপজেলা নির্বাচন   নোয়াখালী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বান্দরবানে সেনা অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত

প্রকাশ: ০৭:৪৬ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলা সীমান্তে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তিন সদস্য নিহত হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র, কার্তুজ, সামরিক পোশাক ও অন্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। 

রোববার (১৯ মে) দুপুরে রুমা উপজেলায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডেবাছড়ার গভীর অরণ্যে কেএনএফ আস্তানা গেড়েছে- এমন খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ঘণ্টা ব্যাপী গুলি বিনিময়ের পর সেখান থেকে কেএনএফের দু’জন সদস্যের লাশ ও একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তিনিও মারা যান। নিহতদের এখনো কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি।

বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রুমা উপজেলার রনিন পাড়ার কাছে ডেবাছড়া এলাকায় কেএনএফের একটি আস্তানায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তিনজন নিহত হয়েছে। ঘটনার পর মরদেহ উদ্ধারের জন্য পুলিশ সেখানে গিয়েছে।

উল্লেখ্য, বান্দরবানে গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় মামলায় অভিযুক্ত ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগে বান্দরবানজুড়ে যৌথ বাহিনীর চিরুনি অভিযান চলমান রয়েছে।

বান্দরবান   কেএনএফ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য নিয়ে মতবিনিময় সভা

প্রকাশ: ০৭:৩৯ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সিরাজগঞ্জে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নিয়ে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য নারী পক্ষ নামে একটি সংগঠন সিরাজগঞ্জ ও পাবনার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

রবিবার (১৯ মে') দুপুরে শহরের এস. এস রোডস্থ নর্থ টাউন রেস্তোরাঁয় প্রোগ্রাম ফর উইম্যান ডেভোলপমেন্ট (পি ডাব্লিউডি) সার্বিক সহযোগিতা ও নারীপক্ষ আয়োজনে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য দিনব্যাপী মতবিনিময় সভার শুভ উদ্বোধন করেন নারীপক্ষ চেয়ার পারসন গীতা দাস। 

 

মতবিনময় সভায় নারীপক্ষ চেয়ারপার্সন গীতা দাস বলেন, মানুষ কোনো ভালো কর্ম করলে তাকে বিশেষায়িত করা যায়। কিন্তু নারীরা নির্যাতিত হলেও তাদেরকে বিশেষায়িত করা হয়। যেমন ধর্ষণের শিকার হলে তাকে ধর্ষিতা, নির্যাতনের শিকার হলে নির্যাতিতা বলা হয়। অথচ ধর্ষণের শিকার, নির্যাতনের শিকার লিখলেও হয়।’ একজন নারীকে মানুষ হিসেবে দেখলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

 

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কামরুন নাহার, ফেরদৌসী আখতার, পিডাব্লিউডি নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা জলি।

এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি চ্যানেল টুয়েন্টিফর সিনিয়র রিপোর্টার সাংবাদিক হীরুকগুণ, এনটিভি জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম ইন্না, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজন সরকার, বৈশাখী টেলিভিশন সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজিত সরকার, দীপ্ত টিভির সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি শিশির, দীপ্ত টিভি পাবনা জেলা প্রতিনিধি শামসুল আলম সহ অনেকে।


ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য   মতবিনিময়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা, চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

প্রকাশ: ০৭:২৯ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের শিবপুর বাজার এলাকা থেকে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেন চেয়ারম্যার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল।

 
রোববার (১৯ মে) মোটরসাইলে প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

 

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

 
অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের শিবপুর বাজার এলাকা থেকে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা ও মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে প্রচার কাজ চালিয়েছেন। যা নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঙ্ঘন।

 

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যার প্রার্থী তানভীর ইসলাম বলেন, সাইফুল ইসলাম কামালের গুন্ডা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত আমার কর্মী, সমর্থক, ভোটারদের ভয়ভীতি, হুমকী, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধি সাইফুল ইসলাম কামাল বারবার লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করছেন।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘ঘোড়া নিয়ে প্রচার প্রচারণা করিনি। তবে আমি ঘেড়ার গাড়ি নিয়ে প্রচার প্রচারণা করেছি। এটাও যদি বিধি নিষেধ থাকে তাহলে এটাও পরিহার করবো।’

পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় চেয়ারম্যান প্রার্থী এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।


উপজেলা নির্বাচন   আচরণ বিধি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন