ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের ‌‌‌'মাইম্যানরা' ধরাশায়ী

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনগুলোর ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থীরা অর্থাৎ তাদের 'মাইম্যানরা' এবার নির্বাচনে বিপুলভাবে পরাজিত হচ্ছেন। সারা দেশে আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী, এমপি এবং হেভিওয়েট নেতাদের পছন্দের প্রার্থীদেরকে হারিয়ে দেওয়ার উত্সব শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। 

ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের পছন্দের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। এই পরাজয়ের সূত্র ধরে এলাকায় বেশ কয়েকদিন উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল।

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের ছোট ভাই উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। বরিশালে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ পছন্দের দুই প্রার্থী উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী এবং কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের এমপি আ হ ম মোস্তফা কামাল কামালের ছোট ভাই কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলায় শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা নির্বাচনে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন। 

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত ফারুক খানের পছন্দের প্রার্থী আবুল কাসেম রাজু পরাজিত হয়েছেন। এই নির্বাচনের জন্য তিনি ব্যাপকভাবে প্রচার প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এভাবে সারা দেশে যেখানে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপিরা তাদের স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, সেখানেই মন্ত্রী, এমপিদের স্বজনদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগের তৃণমূল শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। 

শরীয়তপুর সদরের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর চাচাত ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া, গাইবান্ধা সদর উপজেলার সংসদ সদস্য  শাহ সারোয়ার কবিরের প্রার্থী মোহাম্মদ ইফতেকুর রহমান, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি সমর্থিত প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ পরাজিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলছেন, এই পরাজয় হল তৃণমূলের ক্ষোভ এবং অভিমানে স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ। যেখানে মন্ত্রী, এমপিরা তাদের নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বা তৃণমূলের মতামতের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন, সেখানেই প্রতিবাদ হয়েছে, প্রতিরোধ হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন, যেখানে তৃণমূলের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সংসদ সদস্যরা
প্রার্থী দিয়েছেন সেখানে কোন সমস্যা হয়নি। আওয়ামী লীগের ঐক্যমতের প্রার্থী নির্বাচনে ইতিবাচক ফলাফল করেছে। কিন্তু যেখানে যেখানে দলের তৃণমূলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে মন্ত্রী, এমপিরা জোর করে তাদের পছন্দের প্রাথী চাপিয়ে দিয়েছেন সেখানেই ঘটেছে বিপর্যয়। যেমন ড. আব্দুর রাজ্জাকের ভাইকে যেন প্রার্থী না করা হয় এজন্য তৃণমূল একাটাট্টা হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্জাক তার ভাইকে মনোনয়ন থেকে সরিয়ে দেননি। যার ফলে দেখা গেছে যে, ড. রাজ্জাকের পছন্দের প্রার্থী সেখানে ধরাশায়ী হয়েছে। 

একই রকম ঘটনা ঘটেছে সর্বত্র। এটি আওয়ামী লীগের তৃণমূলের শক্তির জয় বলে অনেকে মনে করছেন। অনেকে মনে করছেন যে, এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় ধরনের বার্তাও বটে।

উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে শূন্যপদে কারা আসছে

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম শূন্যপদ পূরণ নিয়ে নানামুখী আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত দুজনকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, তাদের পদোন্নতি হচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের পদ নিয়ে এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন করে আলাপ আলোচনা চলছে। আগামী ২৩ জুন দলটির ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আর এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পরপরই আওয়ামী লীগ তাদের সাংগঠনিক বিষয়ে মনোযোগ দেবে। দলের ভেতর নতুন করে শুদ্ধি অভিযান শুরু হবে। যারা দলের ভেতর বিভক্তির সৃষ্টি করছে, কোন্দল তৈরি করছে  তাদেরকে শেষবারের মতো সতর্ক করা হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্যপদ পূরণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম শূন্যপদে কারা আসছেন—এ নিয়ে বিভিন্ন রকমের আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা অতীতে বিভিন্ন সময়ে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, এবার নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন তাদের কাউকে কাউকে প্রেসিডিয়ামে আনার বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেলের নাম আলোচনায় আছে। 


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত দুদিন তার নিয়মিত ব্রিফিংয়ের আগে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বলেছেন যে, বিএম মোজাম্মেলের পদোন্নতি হচ্ছে। তবে কী পদোন্নতি হচ্ছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি। এখান থেকেই ধারণা করা হচ্ছে যে, প্রেসিডিয়ামে শূন্যপদে হয়তো তাকে আনা হতে পারে। 


তবে এ ব্যাপারে ভিন্নমতও রয়েছে, যেহেতু আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এবার কোন কিছুই পাননি। হুইপ, মন্ত্রিত্ব কিংবা সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবেও তাকে রাখা হয়নি। সাতবারের নির্বাচিত এই এমপির এই অপাংক্তেয় অবস্থায় থাকাটাকে অনেকে বিস্ময়কর মনে করছে। এজন্য অনেকের ধারণা আওয়ামী লীগের এই ত্যাগী এবং পরীক্ষিত নেতাকে হয়তো প্রেসিডিয়ামে আনা হতে পারে। তবে কারও কারও মতে, দুর্দিনে আওয়ামী লীগের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সাথী বিশেষ করে আওয়ামী লীগের কঠিন সময়ে দলের জন্য অবদান রাখা নেতা আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাসিম প্রেসিডিয়ামে আসতে পারেন। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন। এবার ফেনীর একটি আসন থেকে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রেসিডিয়ামে আসার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে নোয়াখালী অঞ্চলে যে রাজনৈতিক বিভক্তি অনৈক্য এবং কোন্দল তার প্রেক্ষিতে আলাউদ্দিন নাসিমকে প্রেসিডিয়ামে আনার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। কারণ ওই অঞ্চলে তার একটা আলাদা গ্রহণযোগ্যতা আছে। 

আবার গত নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে মহিলা কোটায় সংসদ সদস্য হওয়া মুন্নুজান সুফিয়ানের নাম নিয়েও কথাবার্তা বলা হচ্ছে। তবে অনেকের ধারণা মুন্নুজান সুফিয়ান যেহেতু বয়সে প্রবীণ এবং তার অতীত অবদানের কথা বিবেচনা করে তাকে প্রেসিডিয়ামে আনা হতে পারে। 


আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, প্রেসিডিয়ামে বা মন্ত্রিসভায় কে আসবে না আসবে ইত্যাদি সিদ্ধান্তগুলো একান্তই আওয়ামী লীগ সভাপতির নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহীর বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তাকেই দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, এর আগে কাউন্সিলের বাইরে অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখনও প্রেসিডিয়ামে দুটি পদ শূন্য রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ   মির্জা আজম   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক তাণ্ডবে বিভক্ত বিএনপি, হতাশ খালেদা

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

তারেক জিয়া এখন বিএনপিতে রীতিমতো তাণ্ডব শুরু করেছেন। দলের ভেতর এখন চলছে একধরনের অজানা আতঙ্ক। কে কখন দল থেকে বাদ পড়বেন, কোন কমিটি কখন বিলুপ্ত হবে—এ নিয়ে দলের ভেতর তীব্র অস্থিরতা বিরাজ করছে। আর এই অস্থিরতায় বিএনপির নেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। 

বিএনপির কোন নেতা মনে করছেন যে, তারেক জিয়া যেটা করেছেন এটা দরকার ছিল। বিএনপিকে গোছানো এবং আন্দোলনের গতি আনার জন্য এর কোন বিকল্প নেই। তবে অন্য নেতারা মনে করছেন, এটি সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক অন্যায় এবং এভাবে দলে স্বৈরচারী কায়দায় রদবদল করলে বা কমিটি বাতিল করলে দলের অস্তিত্ব সঙ্কটের মধ্যে পড়বে। এ নিয়ে বিএনপি এখন স্পষ্টতই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। দলের ভেতর স্থায়ী কমিটির সিংহভাগ সদস্যই তারেক জিয়ার এই তাণ্ডবের বিরুদ্ধে। 


তবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ কয়েকজন নেতা এই সিদ্ধান্তের পক্ষে। তারা মনে করছেন যে, যারা দলের জন্য কাজ করছে, যারা দলের জন্য সময় দিচ্ছে তাদেরকে নেতৃত্বে আনা উচিত। তবে সকলে একমত যে যথাযথ প্রক্রিয়ায় এটি হচ্ছে না। 

গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বেগম খালেদা জিয়াও তারেক জিয়ার এই স্বৈরচারী আচরণে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি নিরুপায় বলেও উল্লেখ করেছেন। বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন যে, এই বিষয়গুলো সকলের সাথে আলাপ আলোচনা করে করা উচিত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কারো সাথে আলাপ আলোচনা না করে এটি করা নিয়ে তার মধ্যে এক ধরনের দীর্ঘশ্বাস আছে। তবে কোন প্রতিবাদ নেই। 


বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে দল করছেন, দলের ভেতরে রকম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কখনও দেখেননি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস এবং নজরুল ইসলাম খান এ ধরনের সিদ্ধান্তের ঘোরতর বিরোধী। তারা মনে করছেন যে, এটির ফলে দলে একটি নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে, দলে আতঙ্ক বিরাজ করবে এবং কেউই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে উৎসাহী হবে না। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলছেন, টকশো দেখে দেখে যদি কমিটি করা হয় তাহলে সংগঠন টিকবে না। মজার ব্যাপার হল, এবার যারা কমিটিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে দু ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একটি হল যারা নিয়মিত বিভিন্ন টকশোতে উপস্থিত থাকেন তারা। অন্যটি হল যারা এক এগারোর সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। 


জহিরউদ্দিন স্বপন বাম রাজনীতি থেকে আসা। তিনি এক এগারো সময় সংস্কারপন্থিই শুধু ছিলেন না, বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার জন্য যে গ্রুপটি সক্রিয় ছিল সেই গ্রুপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি এক এগারোর পর বিএনপি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত হয়েছিলেন কিন্তু এখন তিনি তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসেবে জায়গা পেয়েছেন এবং এবার তিনি পদোন্নতি পেয়েছেন।


একই অবস্থা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের। তিনি একজন সংস্কারপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করার জন্য বিএনপির মধ্যে যে সংঘবদ্ধ চক্র সে চক্রের অন্যতম অংশীদার ছিলেন। এমরান সালেহ প্রিন্স আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে বিএনপিতে পরিচিত। তাকেও পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, এক এগারোর সময় যারা সংস্কারপন্থি ছিলেন, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছিল তারাই এখন ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছেন। এই বিষয়গুলো নিয়ে বিএনপিতে এখন তোলপাড় চলছে। কার্যত বিএনপি বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আর এর ফলাফল কি হয় সেটা বুঝা যাবে অদূর ভবিষ্যতে।

তারেক জিয়া   রুহুল কবির রিজভী   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   জহিরউদ্দিন স্বপন   সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উচ্চমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তরাও কোরবানির সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছেন: রিজভী

প্রকাশ: ০৪:০৬ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, উচ্চমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তরাও এখন পশু কোরবানি করার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছেন। সরকার মানুষের ঈদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। তাই গরুর হাটে লোক নেই। এরপরে যারাও আছেন, হাটে গরু কিনছেন তাদের বেশির ভাগ সরকারের দুর্নীতিবাজ লোক।

রোববার (১৬ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় কোরবানির বাজারে পশুসহ নানা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য সরকারকে দায়ী করেন রিজভী।

রিজভী বলেন, দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই চরম অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শেয়ারবাজার থেকে আরম্ভ করে পাড়া-মহল্লার কাঁচাবাজার পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অসহায় সাধারণ জনগণ। বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা, এলাচির কেজি চার হাজার টাকা, লবঙ্গের কেজি প্রায় দুই হাজার, দারুচিনির কেজি প্রায় ৬০০ টাকা, তেজপাতার কেজি ৩০০ টাকা। জনগণ যেন খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির এক আগ্নেয়গিরির ওপর বসে আছে।

তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে ব্যাংকগুলো শূন্য হয়ে গেছে। তারল্য সংকটে সাধারণ গ্রাহকরা টাকা তুলতে পারছে না। বুথে টাকা নেই। ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছেন না। উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা বিদেশে যেতে পারছেন না। ব্যাংকগুলোকে অনিরাপদ করে তোলা হয়েছে।

মিয়ানমার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন সীমান্তে মিয়ানমার যা করছে তা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। সরকার এহেন কাণ্ডে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে।

আজিজ-বেনজীরদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে সরকারি আরও দুর্নীতিবাজদের তথ্য বের হয়ে আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


বিএনপি   রিজভি   কোরবানি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘সেন্টমার্টিন নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে বিএনপি-জামায়াত’

প্রকাশ: ০৩:৩২ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার কখনো নতজানু আচরণ করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না। সেন্টমার্টিন ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিব দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখছেন। ‘কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দখল হয়ে যাচ্ছে এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। বিএনপি-জামায়াত এসব গুজব ছড়াচ্ছে,' বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রোববার (১৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা ইস্যু নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রেখেছেন। তিনি কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও কৌশলের বাইরে গিয়ে এমন কথা বলেছেন যা শুনে মনে হয় পরিস্থিতি নিয়ে তাদের ন্যূনতম ধারণা নেই। 

মির্জা ফখরুল ইসলামের বলার আগেই আমি বলেছি সরকার এখানে নিষ্ক্রিয় নয়। আক্রান্ত হলে পাল্টা আক্রমণে প্রস্তুত আছে সরকার। সেখান থেকে যুদ্ধজাহাজ এরইমধ্যে প্রত্যাহার হয়েছে। যান চলাচল নিয়মিত হয়ে গেছে, লোকজন যাওয়া আসা করছে। আমরা গায়ে পড়ে ঝগড়া করব না। মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই এখানে উসকানি দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধাব? সারা বিশ্ব রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। যেকোনো সমস্যা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চায় সরকার। 

রোহিঙ্গারা যখন দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছিল ওইদিক থেকে তখনও কিছু উসকানি ছিল, আমরা উসকানিতে পা দেইনি। গায়ে পড়ে যুদ্ধ বাঁধানোর ইচ্ছে নেই। আলাপ আলোচনার দরজা এখনও খোলা আছে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আগ্রহী শেখ হাসিনার সরকার। ভিশনারি লিডার শেখ হাসিনা জানেন কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। 

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকদিন আগে মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে বিএনপি বেহুদা মন্তব্য করেছিল। এখনো তারা সেটাই করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনীসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা সতর্ক আছে। সেন্টমার্টিন সীমান্তে গোলাগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে আমরা সতর্ক আছি। সেন্টমার্টিনে গুলিটা আরাকানরা করেছে, মিয়ানমার সরকার করেনি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের উপর বোঝা হয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের প্রথম বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়েছিল বিএনপি সরকার। রোহিঙ্গাদের জঙ্গি কাজে ব্যবহার করেছে। রোহিঙ্গারা বোঝা হয়ে আছে তাদের ফিরে যেতেই হবে। সে প্রয়াস অব্যাহত আছে। আমরা নতজানু আচরণ কখনো করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। 

মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।


ওবায়দুল কাদের   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

হস্তক্ষেপ চাইলেন ফখরুল: খালেদা নিরুপায়

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির গঠনতন্ত্রের একটি কপি নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে রাত টার দিকে ফিরোজায় প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাকে উদ্বিগ্ন, বিমর্ষ এবং ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল। আগে থেকেই বেগম জিয়ার সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করা ছিল তার। বেগম খালেদা জিয়ার একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে তিনি জানিয়েছিলেন যে, অত্যন্ত জরুরি তাকে আসতেই হবে। বেগম জিয়াও সম্মতি জানান। রাত টার দিকে তাকে আসতে বলেন।

রাতের খাবার শেষে বেগম খালেদা জিয়া শুয়ে ছিলেন। শোবার আগে তার চিকিৎসা প্রক্রিয়াগুলো চলছিল। একজন নার্স বেগম জিয়ার প্রেশার মাপ ছিলেন। তার জ্বর, ব্লাড সুগার সহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছিল। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন। এরপর হুইল চেয়ারে করে বসার ঘরে আসেন বেগম খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়াকে দেখে দাঁড়িয়ে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার পর তাদের মধ্যে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে দলের সর্বশেষ সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। কিন্তু এই আলোচনায় কোন ফলাফল হয়নি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র তথ্য নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য যে, গত দুদিনে তারেক জিয়ার তাণ্ডব চলছে বিএনপিতে। বিএনপিতে তিনি ইচ্ছামতো কমিটিগুলো বাতিল করছেন, নতুন করে কমিটি করছেন, অনেকে পদোন্নতি দিচ্ছেন। আবার কাউকে বাদ দিচ্ছেন। সবচেয়ে মজার ব্যপার হল যে, এই সমস্ত কর্মকাণ্ডে তিনি দলের মহাসচিবকে রাখছেন অন্ধকারে। মহাসচিবের কোন ক্ষমতা নেই। মহাসচিব সংবাদপত্রের পাতায় দেখছেন যে, কাকে পদোন্নতি দেওয়া হল, কাকে বাদ দেওয়া হল কিংবা কোন কমিটি বাতিল হল। লন্ডন থেকে রুহুল কবির রিজভীর ব্যক্তিগত -মেইল পাঠানো হচ্ছে এসব কমিটির সংবাদ। তারপর রিজভীর কাছে ফোন আসছে। ভাইয়া, এই কমিটি এখনই ঘোষণা করতে বলেছেন।

রুহুল কবির রিজভীর নির্ঘুম রাত কাটছে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে দলীয় প্যাডে এই নির্দেশনামা টাইপ করছেন এবং সংবাদপত্র দিচ্ছেন। রুহুল কবির রিজভীর কাছে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোন অবস্থাতেই যেন এটি গণমাধ্যমে যাওয়ার আগে ফাঁস না হয়ে যায়। কারণ ফাঁস হলে অন্যরা ব্যবস্থা নেবে। অন্যরা দেনদরবার তদবির করবে, এটি নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ হতে পারে বা লন্ডনে ফোন যেতে পারে। আর এই কারণেই একেবারে গোপনে হচ্ছে এই সমস্ত রদবদলের কাজ। সামনের দিনগুলোতে আরও রদবদল হবে।

রুহুল কবির রিজভী বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। কিন্তু দলের মহাসচিবকেও তিনি কোন কিছু জানানোর প্রয়োজন মনে করছেন না। রিজভী ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এটি ভাইয়ার নির্দেশ, যেন কেউ ঘুণাক্ষরেও কোন কিছু না জানতে পারে। আর এই পুরো প্রক্রিয়াটাই যে গঠনতন্ত্রবিরোধী এটি বলার জন্যই বেগম জিয়ার কাছে গতকাল গিয়েছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন যে, এভাবে একটি দল চলতে পারে না। একটি দলের কমিটি পরিবর্তন বা কমিটি বাতিল স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা করতে হয়। আর দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলে কোনো পদ নেই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ধরনের কর্মকাণ্ড করতেই পারে না। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।তিনি বলেন যে, বিএনপিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে গেলে খালেদা জিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

খালেদা জিয়া ধীর স্থিরভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সব কথাই শোনেন। তারপর তিনি বলেন যে, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারম্যান আমি, এটা সত্যি কথা। কিন্তু চেয়ারম্যানের সব ক্ষমতা আমি লিখিতভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দিয়েছি অর্থাৎ তারেক জিয়াকে দিয়েছি। তাই এখন আমার কিছু করার নেই। তবে তিনি মনে করেন, যেভাবে কমিটিগুলো হচ্ছে তা সঠিকভাবে হচ্ছে না। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হওয়া উচিত।

দুজনের এই আলাপ-আলোচনায় কোন ইতিবাচক ফলাফল হয়নি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই বিষয় নিয়ে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার সঙ্গে আলাপ করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে তার অসুস্থতার কথা এবং অক্ষমতার কথা জানান। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ধৈর্য্য ধরার অনুরোধ জানান।


খালেদা জিয়া   মির্জা ফখরুল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন