নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৭ এএম, ১৮ নভেম্বর, ২০২১
অর্থঋণ ও অন্যান্য আদালতে এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৭ হাজার ৪৩২টি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এসব মামলার বিপরীতে আটকে আছে ১০ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা, যা প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট খেলাপি ঋণের চেয়েও বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা পরিচালকদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নামে বেনামে দেওয়া এসব উদ্যোক্তা পরিচালকদের ঋণ এখন ফেরত আসছে না। অন্যদিকে অর্থ ফেরত পেতে বাধ্য হয়েই মামলার আশ্রয় নিচ্ছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ষাণ্মাসিক প্রতিবেদন থেকে মামলা ও অর্থের পরিমাণ এমন তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আর্থিক খাতের মামলার সংখ্যা এবং মামলার কারণে আটকে থাকা অর্থের পরিমাণ তুলে ধরা হয়েছে। সাধারণত যেসব খেলাপি ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা কম সেগুলো আদায়ের জন্যই ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতে মামলা করে থাকে।
দেশে খেলাপি ঋণ আদায়ে মামলার নিষ্পত্তি তেমন নেই। এ কারণে মামলা ঝুলে আছে বছরের পর বছর। মামলা থাকলেও ব্যবসা ও রাজনীতিতে দাপট রয়েছে তাদের। খেলাপিদের অনেকেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (চেয়ারম্যান, পরিচালক) নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এতে সংকট বাড়ছে। তবে এ ধারা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে সংকট মহামারি আকার ধারণ করবে বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, যেসব খেলাপি ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা কম থাকে, সেগুলো আদায়ের জন্যই বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন আদালতে মামলা করে। গত এক দশকে ঋণখেলাপিদের জন্য একাধিক বিশেষ সুবিধা দেওয়া হলেও তারা ঋণ পরিশোধ করছে না। এতে ক্রমাগতভাবে বেড়েছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ।
অন্যদিকে দু-একটি ঘটনা ছাড়া ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদাহরণও তেমন চোখে পড়ছে না। এমন পরিস্থিতিতে মামলাজট কমাতে স্পেশাল কোর্ট (বিশেষ আদালত) চালুর পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ আদায়ে সাধারণত চার ধরনের আদালতে গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। আদালতগুলো হলো- অর্থঋণ, দেউলিয়া, সার্টিফিকেট ও দেওয়ানি আদালত। এর মধ্যে অর্থঋণ আদালতেই বেশির ভাগ মামলা দায়ের হয়। এ আদালতেই এনবিএফআইয়ের অধিকাংশ অর্থ আটকা আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ব্যাংক বীমাসহ পুরো আর্থিক খাতের লাখ লাখ মামলা একই কোর্টে পরিচালিত হচ্ছে। মামলা নিষ্পত্তির জন্য সময় বেধে দেওয়া হলেও বেশি হওয়ায় তা অনিষ্পত্তিই থেকে যায়। এতে দীর্ঘসূত্রিতায় মামলা ঝুঁলে নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় বিচারক রায় দিতে পারেন না। সমস্যা সমাধানে স্পেশাল কোর্ট চালু হলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত অর্থঋণ আদালত ও অন্যান্য আদালতে দায়ের করা মামলার সংখ্যা (ক্রম পুঞ্জিভূত) ২৮ হাজার ২০৭টি। এসব মামলার বিপরীতে অর্থের পরিমাণ ১২ হাজার ৮৯০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
এরমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৫টি মামলা। যেখানে অর্থের পরিমাণ দুই হাজার ২৫৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। জুন শেষে বিচারাধীন মামলা রয়েছে ১৭ হাজার ৪৩২টি। এসব মামলার বিপরীতে অর্থের পরিমাণ ১০ হাজার ৬৩২ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
ব্যাংকবহির্ভূত ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৬৭ হাজার ১১৪ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এরমধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ১০ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অর্থঋণ আদালতে দায়ের করা মোট মামলার সংখ্যা দুই লাখ এক হাজার ৫৮৬টি। এসব মামলার সঙ্গে জড়িত অর্থের পরিমাণ এক লাখ ৯৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। তবে জুন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়েছে এমন মামলার সংখ্যা এক লাখ ৩৬ হাজার। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে মোট ১৯ হাজার ৭৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে জুন শেষে অর্থঋণ আদালতে আটকা এক লাখ ৭৬ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা।
মন্তব্য করুন
সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার জন্য আগামী ২ জুলাই (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যাংকের শাখা খোলা রাখার অনুরোধ জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৯ জুন) মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি দেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখার উপ-সচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন।
চিঠিতে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে রাজকীয় সৌদি সরকার বাংলাদেশ থেকে নির্ধারিত হজ কোটার পাশাপাশি অতিরিক্ত ২৪১৫ জনকে বহনের অনুমতি দিয়েছে। সেসব হাজিদের অর্থ সৌদিতে পাঠানোর কাজ চলমান আছে। আগামী ২ জুলাই ছুটির দিনেও টাকা পাঠানোর কাজ চলবে।
চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ২ জুলাই হজ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখাগুলো খোলা রাখার নির্দেশনা জারি করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার জন্য আগামী ২ জুলাই (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যাংকের শাখা খোলা রাখার অনুরোধ জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বুধবার (২৯ জুন) মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি দেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখার উপ-সচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন।
চলতি অর্থবছর শেষ হতে বাকি আর দুদিন। অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসেই (জুলাই-মে) দেশ থেকে পণ্য রফতানি হয়েছে ৪৭ বিলিয়ন (৪ হাজার ৭০০ কোটি) ডলারেরও বেশি মূল্যের। চলতি মাসের প্রথম ২৫ দিনে শুধু পোশাক রফতানিই হয়েছে ৩২০ কোটি ডলারের। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরেই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৫০ বিলিয়ন (৫ হাজার কোটি) ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে বাংলাদেশের রফতানি।