দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। নতুন এ ধরন বারবার জিনগত রূপ বদলাতে সক্ষম। ধরনটির কারণে বিশ্বে নতুন করে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। জারি হচ্ছে বিধিনিষেধ ও ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা।
ঝুঁকিপূর্ণ বলা হচ্ছে কেন?
প্রাথমিকভাবে করোনার নতুন এ ধরনটির বৈজ্ঞানিক নাম বি.১.১.৫২৯। তবে গতকাল শুক্রবার এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ওমিক্রন’। এ নাম দিয়েই ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। উদ্বেগজনক বলার কারণ হিসেবে সংস্থাটি এ ধরনটির বারবার জিনগত রূপ বদল এবং আগেও করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত ব্যক্তিদের আবার এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির বিষয়টিকেই সামনে তুলে এনেছে।
বিজ্ঞানীরা এতটা উদ্বিগ্ন কেন?
এ ধরনটির স্পাইক প্রোটিনে ৩০টির বেশি মিউটেশন রয়েছে। অতি সংক্রামক ডেলটার তুলনায় সংখ্যাটা দ্বিগুণেরও বেশি। আমাদের দেহকোষে ঢুকে পড়ার জন্য ভাইরাস মূলত এটাকে ব্যবহার করে থাকে। এমন নাটকীয় পরিবর্তনের কারণে এ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে এর আগে সংক্রমিত হওয়ার কারণে শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি অথবা করোনার টিকা ধরনটির সঙ্গে আর মানিয়ে নিতে পারবে না। জিনগত রূপ বদলের বিষয়টির ওপর ভিত্তি করেই বিজ্ঞানীদের পূর্বানুমান, এ ধরনটি আরও বেশি মাত্রায় সংক্রমণ ঘটাবে এবং এর আগে অন্য ধরনের কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা তৈরি হয়েছে তারা পুনরায় আক্রান্ত হতে পারেন।
বিদ্যমান টিকা এর বিরুদ্ধে কাজ করবে?
নতুন ধরনের জিনগত রূপ বদল নিয়ে বিজ্ঞানীরা সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। তাদের উদ্বেগের কারণ নতুন ধরনের কিছু কিছু মিউটেশন যে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম তা ইতিমধ্যে জানা গেছে। যদিও এগুলো তাত্ত্বিক জায়গা থেকে বিজ্ঞানীদের পূর্বানুমান। অ্যান্টিবডিগুলো কীভাবে কার্যকরভাবে নতুন এ ধরনের সংক্রমণ রুখে দিতে পারে, তা পরীক্ষার জন্য জোর গতিতে গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে এ ধরনটির কারণে সত্যিকার অর্থে বিশ্বজুড়ে পুনরায় করোনায় সংক্রমিত হওয়ার হারের তথ্য-উপাত্ত আসতে শুরু করলে হয়তো মানুষের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন ঘটবে কি না, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। বিদ্যমান অ্যান্টবডিগুলো নতুন ধরনটিকে একেবারেই শনাক্ত করতে পারবে না, এমনটা অবশ্য মনে করছেন না বিজ্ঞানীরা। যেটা হতে পারে যে এখন করোনার যেসব টিকা আছে সেগুলো নতুন ধরনে কম সুরক্ষা দেবে। এ জন্য ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে তৃতীয় ডোজসহ টিকাদানের হার বৃদ্ধি করাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কতটা?
এখন পর্যন্ত ধরনটিতে আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষ দক্ষিণ আফ্রিকার। এ ছাড়া বতসোয়ানা ও হংকংয়ে এ ধরনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলেও একজনের এ ধরনে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেছে। ওই ব্যক্তি সম্প্রতি মালাউই থেকে ফিরেছেন। দেশটিতে আরও দুজন এ ধরনটিতে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া গতকাল বেলজিয়ামে একজন এ ধরনে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই ব্যক্তি সম্প্রতি মিসর এবং তুরস্কে সফরে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় গোষ্ঠী পর্যায়ে এ ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। যদি এ ধরনের সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি হয়ে থাকে, তাহলে ধরে নেওয়া যায় যে ইতিমধ্যে অন্যান্য দেশেও এর বিস্তার ঘটেছে।
মন্তব্য করুন
দেশে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে এখনও কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে। এগুলো দূর করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি’র আলোকে আইনটিকে সংশোধন করা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন: গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা’-শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলোজি অ্যান্ড রিসার্চের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান আটটি কারণের ছয়টির সাথেই তামাক জড়িত। তামাকের এই সর্বগ্রাসী ক্ষতি প্রতিরোধে ২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকার জনস্বাস্থ্যের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ প্রণয়ন করে। ২০১৩ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনে। তারপরও আইনটিতে বেশকিছু দুর্বলতা রয়েছে গেছে। তাই দ্রুত আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সাংবাদিক অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন।’
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার (ক্লিনিকাল রিসার্চ) ডা. শেখ মো. মাহবুবুস সোবহান। তিনি বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধি এবং অন্যান্য অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে। যতো দ্রুত আইনটি সংশোধন করা হবে ততো বেশি মানুষের জীবন বাাঁচানো সম্ভব হবে।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ তামাকবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে ছয়টি দুর্বলতা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এগুলো সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো- সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যে কোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেটের মতো ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টগুলো পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা। বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা।
এদিকে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ১৭ জন সাংবাদিককে এনসিডি (নন-কমিউনিকেবল ডিজিস) মিডিয়া ফেলোশিপ আওয়ার্ড ২০২২ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ১১ জন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, তিনজন করে অনলাইন ও টিভিতে কর্মরত। বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন।
এ সময় তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সরকারকে অবশ্যই জনস্বাস্থ্যকে অত্যাধিক গুরুত্ব দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে। তা না হলে এসডিজি-গোল পূরণ করা সম্ভব হবে না। এ জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা জোরালো ভূমিকা রাখতে পারেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব.) অধ্যাপক ডা, ইউনুছুর রহমান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফজিলাতুন নেসা মালিক, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মো. রাশেদ রাব্বি, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড্স বাংলাদেশের ম্যানেজার (অ্যাডভোকেসি) আতাউর রহমান মাসুদ প্রমুখ।
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দুর্বলতা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল
মন্তব্য করুন
দেশের প্রতিটি জেলায় ৩০-৫০ বেডের আলাদা করে মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রোববার (১৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর মহাখালীর জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) অডিটরিয়াম হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দেশের মা ও শিশুদের জন্য আলাদা করে সেবা দেয়ার জন্য। দেশের কয়েক শ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইতোমধ্যে প্রসূতি মায়ের জন্য ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খুব দ্রুতই দেশের প্রতিটি জেলায় ৩০-৫০ বেডের আলাদা করে মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। এটি করা গেলে দেশের মায়েদের প্রসবকালীন যে সমস্যা ও অর্থ ব্যয় হয় তা অনেকখানি কমে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা মাত্র সাড়ে ৩ বছর দেশের দায়িত্ব পরিচালনায় ছিলেন। এই অল্প সময়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, বিসিপিএস, বিএমআরসি প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদাসহ স্বাস্থ্যখাতের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর সূচনা করে বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন আমাদেরকে এখন আর কী কী কাজ করতে হবে। শেখ হাসিনা রাজনীতি করেন দেশের মানুষের উন্নতির জন্য, দেশের মানুষের স্বস্তিতে থাকার জন্য।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের প্রায় ৩২ রকমের ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করছেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন করে ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ৩৭টি মেডিক্যাল কলেজ, ২২টি চিকিৎসা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছেন শেখ হাসিনা। প্রতিটি জেলায় বেড সংখ্যা দ্বিগুন করেছেন। জেলা হাসপাতালগুলোতে অতি জরুরি ১০টি করে ডায়ালাইসিস সেন্টার করেছেন। উপজেলা হাসপাতালে বেড বৃদ্ধি করা হয়েছে। চিকিৎসাখাতে আগামীর সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ক্যান্সার, কিডনী, লিভার-চিৎিসাখাতে মানুষ যাতে ঢাকায় না এসে নিজ বিভাগেই নিতে পারে সেজন্য দেশের ৮ বিভাগেই ৮টি অতি উন্নত ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ১৫ তলা বিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে চলেছে।’
শিশু দিবস উপলক্ষে শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের অনেক দোকানে, কল-কারখানায় শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শিশুদের বয়সে শিশুরা খেলাধূলা করবে, আনন্দ করবে। সেখানে শিশুদেরকে যেভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে তা অমানবিক। অন্যদিকে, বাল্যবিয়ে ঠেকাতে সরকার নানারকম প্রচারণা ও উদ্যোগ নিলেও বাল্যবিয়ে অহরহ ঘটছে।
‘বাল্যবিয়ে মানে একজন অপ্রাপ্ত বয়সের ছেলেমেয়ের বিয়ে। এই বয়সে বিয়ে হলে তারা যেখানে নিজেরাই শিশু থাকে, সেই শিশুদের মধ্যে আরেক শিশুর জন্ম হয়। এতে মা ও শিশুর মৃত্যুঝুকি অনেকখানি বেড়ে যায়। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আগামীর বাংলাদেশে সুস্থ-সবল বুদ্ধিমান শিশু হতে হবে। সে পরিকল্পনা নিয়ে আমরা স্বাস্থ্যসেবার কাজ করছি। এখন শিশুশ্রম ও বাল্য বিয়ে সব জায়গাতেই বন্ধ করতে হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক মা ও শিশু হাসপাতাল
মন্তব্য করুন
এডিস
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আক্রান্ত হন লাখ লাখ
মানুষ, মৃত্যু হয় হাজার হাজার
জনের। প্রাণঘাতী এই রোগটি ঠেকাতে
একটি কার্যকর টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা করছে ওষুধ ও প্রসাধন সামগ্রী
প্রস্তুতকারী কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের ইউরোপীয় শাখা জ্যানসেন।
সম্প্রতি ইঁদুর ও বানরের ওপর সেই টিকার ট্রায়াল করা হয়েছে এবং তাতে সাফল্যও মিলেছে বলে দাবি করেছেন জ্যানেসেনের ইমার্জিং প্যাথোজেন বিভাগের প্রধান নির্বাহী মার্নিক্স ভ্যান লুক।
ভাইরাসজনিত এই রোগটির প্রধান উপসর্গগুলো হলো তীব্র জ্বর, মাথাব্যাথা, পেশি ও হাড়ের গ্রন্থীতে ব্যথা ও গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের রক্তে অনুচক্রিকা বা প্ল্যাটিলেট কমে যায় এবং অনেক সময় শরীর থেকে রক্তক্ষরণও ঘটে। ভয়াবহ যন্ত্রণাকর সব উপসর্গের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোগটি ‘হাড়ভাঙা জ্বর’ নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে প্রতিবছরই প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও বিশ্ব এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর কোনো স্বীকৃত টিকা নেই। দু’টি টিকা অবশ্য আছে, কিন্তু সেগুলো বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত নয়।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে মার্নিক্স ভ্যান লুক জানান, দু’বছর গবেষণার পর জেএনজি-১৮০২ নামের একটি টিকা প্রস্তুত করেছে জ্যানসেন। নতুন এই টিকাটির মূল কাজ হলো, মানুষ বা প্রাণীদেহে প্রবেশ করা ডেঙ্গুভাইরাসের বংশবিস্তার থামিয়ে দেওয়া।
ইঁদুর ও রেসাস জাতের বানরের ওপর সেই টিকার প্রয়োগ করা হয়েছে এবং তাতে সাফল্য পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেছেন মার্নিক্স ভ্যান লুক।
‘বিশ্বে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। আমরা বেশ কয়েকটি বানর এবং ইদুঁরের দেহে প্রথমে ভাইরাসটি এবং পরে আমাদের টিকা প্রয়োগ করেছি। আমাদের সেই পরীক্ষা সফল হয়েছে।’
ডেঙ্গুর সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাপারটি হলো— এই রোগের চারটি ভাইরাসের কোনো একটিতে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে সেই অবস্থাতেই অন্য কোনো একটি ধরনে তিনি ফের আক্রান্ত হতে পারেন। সাধারণত উষ্ণ ও আদ্র আবহাওয়ায় এ রোগটির প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।
এ পর্যন্ত দুটি টিকা আবিষ্কার হয়েছে ডেঙ্গুর চিকিৎসার জন্য। তার একটি হলো ডেংভাক্সিয়া। অল্প কয়েকটি দেশে এই টিকা পাওয়া যায় এবং ডেঙ্গুর মাত্র একটি ধরনের ওপর কার্যকর এই টিকাটি।
দ্বিতীয়টির নাম কোডেঙ্গা। গত বছর ডিসেম্বরে ইউরোপীয় দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অনুমোদন পেয়েছে এই টিকাটি। শিগগিরই ব্রিটেন ও ইন্দোনেশিয়াও এই টিকার অনুমোদন দেবে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
মার্নিক্স ভ্যান লুক জানান, বানর এবং ইঁদুরের দেহে প্রয়োগের পর এবার মানবদেহে এই টিকাটির ট্রায়াল পরিচালনা করতে চান তারা। তবে সেজন্য আগে এই টিকার প্রয়োগের পর মানবদেহে কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা— খতিয়ে দেখছে জ্যানসেন।
মন্তব্য করুন
রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং হাসপাতালে রেডিয়াল এক্সেস (হাতের ধমনী) এর মাধ্যমে হৃদরোগের সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি (এনজিওগ্রাম ও এনজিওপ্লাস্টি)- এর উপর সিমুলেটরের মাধ্যমে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) হাসপাতালটির কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও চীফ কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা. ফজিলা-তুন-নেসা মালিক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কোম্পানী Terumo Singapore Pte. Ltd এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর যৌথ উদ্যোগে গত ১৬ ও ১৭ মার্চ দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মশালায় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশবিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, ঢাকা সি এম এইচ, সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশন ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে মোট ৩৬ জন তরুণ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ হাতে-কলমে এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদান করেন সিঙ্গাপুর থেকে আগত প্রশিক্ষকগণ এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞগণ। এই কর্মশালা বাংলাদেশের হৃদরোগ চিকিৎসা ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সহায়ক হবে এবং এতে রোগীরা উপকৃত হবেন।
সিমুলেটর হৃদরোগ চিকিৎসা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দেশের প্রতিটি জেলায় ৩০-৫০ বেডের আলাদা করে মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রোববার (১৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর মহাখালীর জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) অডিটরিয়াম হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি।
ভাইরাসজনিত এই রোগটির প্রধান উপসর্গগুলো হলো তীব্র জ্বর, মাথাব্যাথা, পেশি ও হাড়ের গ্রন্থীতে ব্যথা ও গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের রক্তে অনুচক্রিকা বা প্ল্যাটিলেট কমে যায় এবং অনেক সময় শরীর থেকে রক্তক্ষরণও ঘটে। ভয়াবহ যন্ত্রণাকর সব উপসর্গের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোগটি ‘হাড়ভাঙা জ্বর’ নামেও পরিচিত।