ইনসাইড হেলথ

ওমিক্রন ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি স্বাস্থ্য বিভাগের

প্রকাশ: ০৯:০৬ এএম, ৩০ নভেম্বর, ২০২১


Thumbnail ওমিক্রন ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি স্বাস্থ্য বিভাগের

দেশে ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ১৫ দফা নির্দেশনা পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওমিক্রনের বিস্তার রোধে ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা, রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা জোরদার, জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ গ্রহণ ও প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২৬ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অমিক্রনকে ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা উদ্বেগজনক ধরন বলে ঘোষণা করে। গতকাল একে বিশ্বের জন্য অতি উচ্চ ঝুঁকির বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি। এরপর থেকেই করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টকে বেশ গুরুত্বর সাথেই দেখছে সরকার। 

গতকাল সোমবার (২৯ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমে এ কথা নিশ্চিত করেছেন।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হওয়ার কথা আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ সভা ডেকেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, মহামারির সর্বশেষ পরিস্থিতি, টিকাদানের অগ্রগতি ও ওমিক্রনের কারণে উদ্ভূত সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে সভায় আলোচনা হবে।

ওমিক্রনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করছে বলে গণমাধ্যমে খবর বের হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনার নতুন এ ধরনের অস্তিত্ব সম্পর্কে কেউ কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। যদিও টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশসহ ১২টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করে উচ্চ ঝুঁকির দেশের তালিকা তৈরি করেছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। এসব দেশ থেকে ভারতে যাওয়া নাগরিকদের নয়াদিল্লীর আইজিআই বিমানবন্দরে করোনার আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হচ্ছে। তালিকায় থাকা অন্য দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বতসোয়ানা, চীন, মরিশাস, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, সিঙ্গাপুর, হংকং ও ইসরায়েল।

সভায় চারটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, ভ্রমণ বিষয়ে। ইতিমধ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, এমন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা। দেশে ঢুকছেন, এমন বাংলাদেশি কোনো নাগরিকের গত ১৪ দিনের ওই সব দেশ ভ্রমণের ইতিহাস থাকলে তাঁকে কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) রাখা।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক আহমেদুল কবির বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানে না। তবে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান কিছুটা অপরিপক্ব বলেই মনে হয়। কারণ, মহামারি নিয়ে আমরা অনেক ভালো কাজ করেছি। নতুন ধরন নিয়েও আমরা সজাগ ও সতর্ক।’

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সভা

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক তাহমিনা শিরীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গতকালের সভায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সরকার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। সভায় মূলত প্রস্তুতি জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কী কী প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, আমরা তা জানি, গত দুই বছরে আমাদের সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে।’

সভা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে। সভায় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমে বলেন, সভায় চারটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, ভ্রমণ বিষয়ে। ইতিমধ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, এমন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা। দেশে ঢুকছেন, এমন বাংলাদেশি কোনো নাগরিকের গত ১৪ দিনের ওই সব দেশ ভ্রমণের ইতিহাস থাকলে তাঁকে কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) রাখা।

দ্বিতীয়ত, যেসব আন্তর্জাতিক বন্দর দিয়ে মানুষ যাতায়াত করে, সেসব জায়গায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং ব্যবস্থা জোরদার করা। পাশাপাশি সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টিন ও রোগ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিকে আইসোলেশনের (বিচ্ছিন্নকরণ) ব্যবস্থা করা। তৃতীয়ত, জনস্বাস্থ্য উদ্যোগগুলো শক্তিশালী করা। চতুর্থত, মানুষকে সচেতন করতে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করা।

১৫ দফা নির্দেশনা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক নাজমুল ইসলাম গতকাল বলেন, দেশের ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনদের কাছে করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

ওই নির্দেশনা গণমাধ্যমকে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নির্দেশনার শুরুতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, লেসেতো এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সময়-সময় ঘোষিত অন্যান্য আক্রান্ত দেশে থেকে আসা যাত্রীদের আন্তর্জাতিক বন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।

আক্রান্ত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন করা এবং শনাক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা নিয়ে আরও দুটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সব ধরনের জনসমাবেশ নিরুৎসাহিত করার জন্য চার ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মসজিদসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তিনটি পৃথক নির্দেশনা আছে।

সেবা প্রতিষ্ঠানে সেবাগ্রহীতা, সেবাদাতাসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীকে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, অফিসে প্রবেশের সময় এবং অফিসে অবস্থানকালে সবার মুখে মাস্ক থাকা দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। মানুষকে সচেতন করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণা চালাতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কথাও ওই নির্দেশনায় আছে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, টিকার জন্য এ পর্যন্ত ৬ কোটি ৮৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৫৩ জন নিবন্ধন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে এবং পূর্ণ দুই ডোজ পেয়েছে ৫৩ শতাংশ।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

‘ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি টাকা দিয়ে ওষুধ লেখায়, এটা অপরাধ’

প্রকাশ: ০৫:১৮ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

চিকিৎসকদের রেফারেল ফি’র চিন্তা মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক প্রখ্যাত চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হক।

অনৈতিক উপার্জনের জন্য মরণের পর জবাবদিহি করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের তিনটি গুণ অর্জন করতে হবে, তাহলো: আদর্শ, সততা ও রোগীর প্রতি দায়িত্ববোধ। আমাদের মরতে হবে। এসব কথা মাথায় রাখতে হবে। মন থেকে রেফারেল ফি’র চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে।

আজ সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চক্ষুবিদ্যায় ২০ থেকে ২৩ সাল পর্যন্ত পোস্ট গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করা নবীন বিশেষজ্ঞদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এসব কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হক বলেন, ডাক্তারদের মাস শেষে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ওষুধ কোম্পানিগুলো নিজেদের ওষুধ লেখায়, এটা অপরাধ।

তিনি বলেন, ‘আমার ৪০ বছরে অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, আমি কোনো চশমার দোকান, কোনো ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে পয়সা নেইনি। এটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি।’

নিজকে গঠন করতে পারলে রেফারেল ফি’র প্রয়োজন পড়বে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, দক্ষতা অর্জন করতে পারলে রোগীরাই খুঁজে বের করবে। এজন্য অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে।

বাংলাদেশে রেফারেল পদ্ধতি কমিশন নির্ভর হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, হাসপাতালের সামনে ফার্মেসি, সেখানে হাসপাতালের বিভিন্ন স্টাফ জড়িত। ডাক্তার, আয়া ও নার্সসহ অনেকেই জড়িত। ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও ডাক্তাররাও রেফারেল ফি’র সাথে জড়িত। কিন্তু সারা জীবনেও আমি এগুলো করিনি। এটা কেন দরকার হবে? রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকের সম্পর্কটা বিশ্বাসের হলে এগুলো দরকার পড়বে না।

চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে রেফারেল ফি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখানে লেন্সের ব্যবসা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। বিদেশি লেন্সের কথা বলে সন্ধ্যায় এসব পয়সা ভাগ করা হতো।

অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নীরিক্ষা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোগীর একটু মাথা ব্যথা হলেই সিটি স্কান, এমআরই দেওয়া হয়। অপ্রয়োজনীয় অনেক সার্জারি হয়। আর এতে রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। এমনকি মৃত্যুও হয়। 

ইনস্টিটিউটের পরিচালক থাকাকালীন রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার স্বার্থে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেন বলেও জানান অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক।


ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৮০০ ছাড়াল

প্রকাশ: ০৯:২৩ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৮০০ ছাড়াল।

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে ডেঙ্গুতে ৮০৪ জনের মৃত্যু হলো। আর চলতি সেপ্টেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত এডিস মশাবাহিত এ রোগে মৃত্যু হলো ২১১ জনের।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল আটটা থেকে আজ শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে ঢাকায় পাঁচজন ও ঢাকার বাইরে নয়জন মারা গেছেন। এ সময় ডেঙ্গু নিয়ে ২ হাজার ৫৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৮১ জন এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোয় ১ হাজার ৭১৭ নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছর ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫৬২ জন। তাঁদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭২ হাজার ৩৮৪ ও ঢাকার বাইরে ৯২ হাজার ১৭৮ জন রয়েছেন।

এর আগে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল গত বছর—২৮১ জন। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে ২০১৯ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের। ২০২০ সালে ৭ জন এবং ২০২১ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের।


ডেঙ্গু   মৃত্যু   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেশের প্রথম ‘টেস্ট টিউব শিশুর’ জন্ম

প্রকাশ: ০৮:৪২ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেশের প্রথম ‘টেস্ট টিউব শিশুর’ জন্ম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘টেস্ট টিউব শিশুর’ জন্ম হয়েছে। শিশুটি সুস্থ আছে। সরকারি কোনো হাসপাতালে এটাই প্রথম টেস্ট টিউব শিশু জন্মের ঘটনা।

ঢাকা মেডিকেলের পরিচালকের কার্যালয় ও চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহ দেড়েক আগে শিশুটির জন্ম হয়েছে। শিশুটি সুস্থ আছে। তবে একটি উপযুক্ত দিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে শিশুটির কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে চায় ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্ধ্যা নারীর মা হওয়ার আধুনিকতম পন্থা হচ্ছে ‘টেস্ট টিউব শিশু’ নেওয়া। এই পন্থায় স্ত্রীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয় আর স্বামীর শরীর থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়। গবেষণাগারে সেই ডিম্বাণু ও শুক্রাণু নিষিক্ত করে কৃত্রিমভাবে ভ্রূণ সৃষ্টি করা হয়। পরে সেই ভ্রূণ স্ত্রীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। স্বাভাবিক ভ্রূণ যেভাবে গর্ভাশয়ে বেড়ে ওঠে, কৃত্রিম ভ্রূণও একইভাবে বেড়ে উঠতে থাকে। এভাবে ৯ মাস পর যে শিশুর জন্ম হয়, তাকে টেস্ট টিউব শিশু বলা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, টেস্ট টিউব শিশুর ব্যাপারে মা-বাবা এবং চিকিৎসক কেউই সামান্যতম কোনো ঝুঁকি নিতে চান না, তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশুর জন্ম হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে।

বাংলাদেশে প্রথম টেস্ট টিউব শিশুর জন্ম হয় ২০০১ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। এরপর একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের শিশুর জন্ম হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই প্রথম এ ধরনের কোনো শিশুর জন্ম হলো।

সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান না হওয়ার কারণে অনেক স্বামী-স্ত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অনেকে অনেকভাবে সন্তান জন্মদানের চেষ্টা করেন। বহু দম্পতি প্রতিবেশী দেশ ভারতে যান বন্ধ্যত্বের চিকিৎসার জন্য। দেশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বা ভারতে টেস্ট টিউব শিশুর জন্য ব্যয় অনেক বেশি। কোনো নিম্নবিত্তের পক্ষে সেই ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। ঢাকা মেডিকেলের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানে এই সুযোগ তৈরি হওয়ায় অনেক নিম্নবিত্ত দম্পতিও নতুন করে সন্তান জন্ম দেওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করবেন।


ঢাকা মেডিকেল কলেজ   হাসপাতাল   প্রথম   টেস্ট টিউব   শিশু   জন্ম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

সেপ্টেম্বরে থেমে থেমে বৃষ্টি, বাড়তে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail সেপ্টেম্বরে থেমে থেমে বৃষ্টি, বাড়তে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ।

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সরকারি পরিসংখ্যান গত ২৪ বছরের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী সেপ্টেম্বরজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হতে থাকলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।  

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এখনই মশা বিরোধী অভিযান জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি এবং আগামী বছর ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে হলে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ দ্য গণমাধ্যমকে বলেন, সেপ্টেম্বরজুড়ে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার মধ্যে থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। আগামী ১৫ অক্টোবরের পর থেকে শুষ্ক মৌসুম শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আগামী ৩ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে ৭০৬ জন মারা গেলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৮৭৬ জন। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৮৭ জন।

জুলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ও কীটতত্ত্ববিদ মঞ্জুর চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘থেমে থেমে বৃষ্টিপাত ও উচ্চ আর্দ্রতা এডিস মশার বংশবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের ফলে ফেলে দেওয়া পাত্রে পানি জমতে পারে যেখানে এডিস মশা ডিম পাড়ে। এছাড়া, উচ্চ আর্দ্রতার সঙ্গে এডিস মশার কামড়ানোর শক্তিশালী যোগসূত্র রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ফলে চলতি মাসে ডেঙ্গু সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।’

বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ জিএম সাইফুর রহমান বলেন, ‘২০০০ সাল থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে ঢাকা শহরে ডেঙ্গুর হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হতে পারে। তবে, রাজধানীর বাইরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমরা যদি এডিস মশার বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ না করি, তাহলে এই মৌসুমে এডিস মশার বিপুল সংখ্যক ডিম পাড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই ডিমগুলো পরের মৌসুমে ডিম ফুটে আরেকটি প্রাদুর্ভাব ঘটাতে পারে।’

তিনি জানান, যে সময়টাতে ডেঙ্গু কম ছড়ায় অর্থাৎ নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ডেঙ্গুর সক্রিয় ক্লাস্টারগুলো শনাক্ত করতে হবে।

এই সময়কালে এডিস মশার প্রজনন শৃঙ্খল ভেঙে না যাওয়া পর্যন্ত সোর্স রিডাকশন অর্থাৎ মশা ডিম পাড়তে পারে এমন জায়গা ধ্বংস করা, লার্ভিসাইডিং বা জলাশয়ে বা জলের পাত্রে নিয়মিত রাসায়নিক বা মাইক্রোবায়াল কীটনাশক প্রয়োগ করা এবং প্রাপ্তবয়স্ক মশা মারতে অ্যাডাল্টিসাইড অর্থাৎ কীটনাশক প্রয়োগ করাসহ ব্যাপকভাবে অভিযান চালাতে হবে।


সেপ্টেম্বর   বৃষ্টি   ডেঙ্গু   প্রকোপ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

ডেঙ্গুতে এক দিনে মৃত্যু আরও ২০ জনের

প্রকাশ: ০৭:৫৭ পিএম, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail ডেঙ্গুতে এক দিনে মৃত্যু আরও ২০ জনের।

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ডেঙ্গুতে ৯৮ জনের মৃত্যু হলো। আর এ বছর মারা গেলেন ৬৯১ জন। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল আটটা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে ঢাকায় ১১ জন ও ঢাকার বাইরে ৯ জন মারা গেছেন। এ সময় ডেঙ্গু নিয়ে ২ হাজার ৬৮৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৯৯ এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোয় ১ হাজার ৭৯০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছর ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে মোট ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৪০ হাজার ৭১১ জন। তাঁদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৪ হাজার ১৭২ এবং ঢাকার বাইরে ৭৬ হাজার ৫৩৯ জন রয়েছেন।

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল গত বছর—২৮১ জন। চলতি বছর অনেক আগেই সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে ২০১৯ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের। ২০২০ সালে ৭ জন এবং ২০২১ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের।


ডেঙ্গু   মৃত্যু   হাসপাতাল   ভর্তি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন