ইনসাইড পলিটিক্স

১০ ডিসেম্বর কি জলিলের ট্রাম্পকার্ড হতে যাচ্ছে?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৪ নভেম্বর, ২০২২


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আব্দুল জলিল। ২০০৪ সালে আকস্মিকভাবে তিনি ঘোষণা করলেন ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পতন ঘটবে। কিভাবে ঘটবে, কেন ঘটবে তার কোনো বিশদ ব্যাখ্যা তিনি দেননি। তিনি শুধু বলেছিলেন যে, তার কাছে ট্রাম্পকার্ড আছে। ৩০ এপ্রিল এই ট্রাম্পকার্ড দেখানো হবে। এর ফলে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পতন ঘটবে। সেই সময় বিএনপি-জামাত জোটের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিলো সংসদে। দেশের পুরো নিয়ন্ত্রণ, কর্তৃত্ব ছিল হাওয়া ভবন এবং বেগম খালেদা জিয়ার কাছে। তারপরও আব্দুল জলিল কেন এই ট্রাম্পকার্ড তত্ত্ব হাজির করেছিলেন, তা নিয়ে রাজনীতিতে এখনও নানা বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পকার্ড তত্ত্ব একটি কৌতুকে পরিণত হয়েছিল। ৩০ এপ্রিল বিএনপির পতন ঘটেনি। বরং বিএনপি নেতারা এ নিয়ে আওয়ামী লীগকে নানারকম বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করেছিল। এতো বছর পর আবার যেন আব্দুল জলিলের ট্রাম্পকার্ড তত্ত্ব ফিরে আসছে রাজনীতিতে। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে রাজনীতিতে মাতামাতি করছে ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। বিএনপি নেতারা বলছেন, ১০ ডিসেম্বরের পর সরকারের কর্তৃত্ব দেশে থাকবে না, খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে। এখন তারা বলছেন, ১০ ডিসেম্বরের পর দেশে এক দফার আন্দোলন শুরু হবে। আবার বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলছেন, ১০ ডিসেম্বর সরকারের পতন ঘণ্টা বাজবে। এরপর সরকারের পতন হবে সময়ের ব্যাপার মাত্র। বিএনপি নেতারা কেন, কোন যুক্তিতে এই কথা বলছেন তার কোনো ব্যাখ্যা দিচ্ছেন না।

বিএনপি দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে। ক্ষমতার বাইরে থেকে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের আন্দোলন করার চেষ্টা করেছিল। সেই চেষ্টাগুলোয় একে একে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। ২০১৩ সালে বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু সেই আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তাদের জ্বালাও-পোড়াও, হঠকারিতা মানুষ প্রত্যাখ্যান করে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির বাধা সত্বেও। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ তার পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করে। ওই সংসদের প্রথম বছর পূর্তি উপলক্ষে আবার বিএনপি সরকার পতনের ডাক দেয়। বেগম খালেদা জিয়া অবস্থান গ্রহণ করেন গুলশানে তার কার্যালয়ে। তিনি ঘোষণা দেন যে, সরকারের পতন ছাড়া তিনি ঘরে ফিরবেন না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের পতন ঘটেনি। বিএনপি যে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অবরোধের ডাক দিয়েছিল সেই অবরোধও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করার সুযোগ পায়নি। বিএনপির সেটিই ছিল শেষ আন্দোলন। এরপর আন্দোলনের মাঠে বিএনপিকে আর পাওয়া যায়নি।

তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন সময় আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন যে, ঈদের পর আন্দোলন হবে। কখনও তিনি বলেছিলেন যে, শীঘ্রই সরকার পতনের আন্দোলন করবে। এরকম বারবার ঘোষণার পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে অংশগ্রহণ করে এবং ওই নির্বাচনে শোচনীয় ভরাডুবি ঘটে বিএনপির। এখন বিএনপি নতুন করে আন্দোলনের চেষ্টা করছে এবং প্রথমবারের মতো বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। তাঁরা যে বিভাগীয় সমাবেশগুলো করছে সেখানে লোকসমাবেশ তাদেরকে চমকিত করেছে, বিস্মিত করেছে এবং অতি উৎসাহিত করেছে বটে। আর এখান থেকেই বিএনপি এখন সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছে। বিএনপি নেতারা বলছেন যে, ১০ ডিসেম্বরের পর সরকারের অস্তিত্ব থাকবে না। তবে ১০ ডিসেম্বরের আগে থেকেই বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাচ্ছে, তারা পালানোর পথ পাবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু একটি সরকারের পতনের জন্য যে ধরনের আন্দোলন দরকার সেই আন্দোলনের ধারে কাছেও বিএনপি নেই। কয়েকটি সমাবেশ করে সরকারের পতন যদি ঘটানো যেত তাহলে পৃথিবীতে কোনো দেশেই কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের টিকতো না। তাই আগামী ১০ ডিসেম্বর দেশে কি হবে, তা নিয়ে রাজনীতিতে এখন কৌতুক শুরু হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর কি আব্দুল জলিলের মত আরেকটি ট্রাম্পকার্ড দেখবে দেশের মানুষ? ১০ ডিসেম্বর কি রাজনীতিতে আরেকটি প্রহসন মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে? এটিই এখন দেখার বিষয়।

বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিভ্রান্তির অবসান: ঢাকা-৪ আসনে ড. আওলাদ হোসেনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা

প্রকাশ: ০১:০৮ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব ড. আওলাদ হোসেনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষিত হয়েছে। তিনি ঢাকা-৪ আসনের একজন মনোনয়ন প্রার্থী।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসন থেকে মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন ১৪ জন। এরমধ্যে ৪ জনের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিলকৃত প্রার্থীদের মধ্যে একজন হলেন মোঃ আওলাদ হোসেন। যিনি প্রকৃতপক্ষে একজন ব্যবসায়ী। মূলত, বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার নামের সাথেই কৃষিবিদ ড. আওলাদ হোসেনের নাম গুলিয়ে ফেলা হচ্ছিল। এ নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। যার জেরে রিটার্নিং অফিসার অফিস সূত্রে, ড. আওলাদ হোসেনের মনোনয়ন বৈধতার এই ঘোষণা এল।

এ বিষয়ে ড. আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমার মনোনয়ন বিষয়ে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ভুল তথ্য প্রচার করায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আমার মনোনয়ন পত্র বৈধ হয়েছে, এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে আর কোনো বিভ্রান্তি না ছড়ানোর অনুরোধ করছি।‘


মনোনয়ন   বৈধ   ড. আওলাদ হোসেন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিন আজ

প্রকাশ: ১১:৫৭ এএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

আজ সোমবার, তফশিল অনুযায়ী ঘোষিত প্রার্থীদের দাখিল করা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিন। যাচাই-বাছাই শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

গত তিন দিনে রিটার্নিং অফিসারদের যাচাই-বাছাইয়ে প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রায় দুই শতাধিক প্রার্থী। তৃতীয় দিনের বাছাইয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া মানিকগঞ্জের তিনটি আসনেই জাতীয় পার্টির (জাপা) তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্রই বাতিল হয়েছে।

গত ১ ডিসেম্বর থেকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম শুরু করে নির্বাচন কমিশন। বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশের পর রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি চলবে আগামী ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর।

পরদিন ১৮ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এরপর আগামী ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। সবশেষে ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।


মনোনয়নপত্র   যাচাই-বাছাই   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ফেনী -১ আসনে আলাউদ্দিন আহম্মদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা

প্রকাশ: ১১:২২ এএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

গত ২৬ নভেম্বর আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নৌকার প্রার্থীদের এ সকল নাম ঘোষণা করেন।

এই নির্বাচনে ফেনী -১ আসন থেকে মনোনয়ন নিয়েছিলেন আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী। এবার ফেনী -১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রার্থী আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ।


ফেনী -১ আসন   আলাউদ্দিন আহম্মদ   মনোনয়ন বৈধ   ঘোষণা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বাদ পড়েছেন হেভিওয়েট প্রার্থীরা

প্রকাশ: ১০:১২ এএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের তৃতীয় দিনে গতকাল অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী বাদ পড়েছেন। গত শুক্রবার শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই, আজ তা শেষ হবে।

বাছাইয়ে বাদ পড়ারা সবাই রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বরে মধ্যে। সেগুলো নির্বাচন কমিশনে নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর।

যাচাই-বাছাইয়ের তৃতীয় দিনে বাদ পড়া উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন কক্সবাজার-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ, ঝালকাঠি-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন, বিকল্প ধারার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মাহী বি চৌধুরী, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও লাঙ্গল      প্রতীকের প্রার্থী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন, পাবনার সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী, চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া, বাংলাদেশ কংগ্রেসের দলীয় প্রার্থী আলোচিত আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম, নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) আসনে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত ও বর্তমান সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরন প্রমুখ।

মনোনয়ন বাতিল সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন স্থানের খবরঃ

কক্সবাজার : কক্সবাজারের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিন কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপির মনোনয়ন পত্র ঋণ খেলাপির অভিযোগে বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ ছাড়া এ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে দাখিল করা আরও চারজন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়। অপরদিকে কক্সবাজার-২ আসনে সাতজন প্রার্থীর মধ্যে সবার মনোনয়ন পত্র বৈধ করা হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানান, কক্সবাজার-১ আসনে মোট ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়ন পত্র দাখিল করা কাগজপত্রে অসঙ্গতি ও ঋণখেলাপি থাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং অপর চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট পাঁচজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। আটজন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৈধ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় পার্টি জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য সালাহউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সভাপতি মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মহাসচিব আবদুুল আওয়াল মামুন, জাতীয় পার্টির হোসনে আরা, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, ওয়ার্কার্স পার্টির আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম, বর্তমান সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাফর আলম ও তার ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন।

রিটার্নিং অফিসার আরও জানান, কক্সবাজার-২ আসনে সাতজন প্রার্থীর মধ্যে সবার মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৈধ প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জাকের পার্টির মোহাম্মদ ইলিয়াছ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির মাহাবুবুল আলম, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. ইউনুস, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি বিএসপির মোহাম্মদ খাইরুল আমিন, বিএনএমের প্রার্থী শরীফ বাদশা।

পটুয়াখালী : পটুয়াখালী-১ (সদর, মির্জাগঞ্জ ও দুমকি) আসনে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও লাঙ্গল প্রতীকের মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের মনোনয়নপত্র স্থগিত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ২০০০-২০০৯ সাল পর্যন্ত রুহুল আমীন হাওলাদার ৮৮ লাখ ৬৯ হাজার ৮১১ টাকা কর পরিশোধ না করায় গতকাল সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালীর চারটি আসনে দাখিলকৃত মনোনয়পত্র যাচাই-বাছাইকালে কর বকেয়া থাকার অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া পটুয়াখালী-১ আসনে দাখিলকৃত মনোনয়নের মধ্যে ঋণখেলাপির দায়ে বাংলাদেশ কংগ্রেসের নাসির উদ্দীন এবং জাকের পার্টির মিজানুর রহমানের মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের কাগজপত্র সঠিক না থাকায় মহিউদ্দিন মামুনের মনোনয়ন পত্র স্থগিত করা হয়েছে।

বগুড়া : বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের দলীয় প্রার্থী হওয়ার পর চার অভিযোগে আলোচিত আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। গতকাল বগুড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন।

রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, আশরাফুল হোসেন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হয়েও মনোনয়ন পত্রে নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী লিখে জমা দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে মোট ভোটারের এক শতাংশ সমর্থন ফরমও তিনি জমা দেননি। মনোনয়ন পত্রের হলফনামায় আশরাফুল হোসেন সম্পদের বিবরণী জমা দেননি। এ ছাড়া তিনি মনোনয়নের হলফনামায় নিজে স্বাক্ষরও করেননি। এ জন্য আশরাফুল হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মনোনয়ন পত্র বাতিলের আদেশ উঠিয়ে আশরাফুল হোসেন আগামী ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বরে মধ্যে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করতে পারবেন।

আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম জানান, ‘মানুষ মাত্রই ভুল। আমারও ভুল হয়েছে। দুজন উকিল মনোনয়ন পূরণে ভুলগুলো করেছেন। সেই দায় আমারই। আমি আপিল করব। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাব। মানুষের ভালোবাসা নিয়ে নির্বাচনের মাঠে থাকতে চাই। হিরো আলম মাঠে ছিল থাকবে।’

ঝালকাঠি : ঝালকাঠির দুটি আসনের সাতজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও  জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম। বাদ পড়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংস পার্ট খ্যাত ব্যারিস্টার আবুল কাশেম ফখরুল ইসলাম, যাকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। মনোনয়ন বাতিল হওয়া আরও প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- ঝালকাঠি-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন। আরও রয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য এম মনিরুজ্জামান মনির, জাতীয় পার্টির এজাজুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন, নুরুল আলম, ব্যারিস্টার আবুল কাশেম মো. ফখরুল ইসলাম।

ঝালকাঠি-২ আসনের জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নাসির উদ্দীন ইমরানের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠানে আলোচিত প্রার্থী বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মেজর (অব.) মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর (বীরউত্তম) এসে কিছুক্ষণ থেকে প্রশাসন ও  নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করে চলে যান।

পাবনা : পাবনায় তিনজনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহা. আসাদুজ্জামান। বাতিলকৃতদের মধ্যে পাবনা-২ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)-এর প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী রয়েছেন। ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত খেলাপি ঋণের কারণে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পাবনা-২ আসনে বিএনএমের সংসদ সদস্য প্রার্থী সংগীত শিল্পী ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ সময় আরও দুজনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়। তারা হলেন- পাবনা-২ এর সতন্ত্র প্রার্থী আবদুুল আজিজ খান ও পাবনা-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রবিউল করিম।

 

এ বিষয়ে ডলি সায়ন্তনী বলেন, কার্ডের বিষয়টি আমার খেয়াল ছিল না। বিষয়টি আমি দ্রুত সমাধান করে আপিল করব। আপিলে মনোনয়ন পত্র ফিরে পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রাজশাহী : রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে আওয়ামী লীগের চার বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। তারা হলেন আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান আখতার, গোলাম রাব্বানী, শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়া ও চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর মনোনয়ন প্রথমে স্থগিত রাখা হয়। সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স বকেয়া থাকায় এ সিদ্ধান্ত দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বিকালে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখানোর পর সেটি বৈধ ঘোষণা করা হয়। এ আসনে মোট ১১ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।

রাজশাহী-২ (সদর) আসনের ছয় প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে আওয়ামী লীগ কর্মী অ্যাডভোকেট আবু রায়হান মাসুদ, সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ কর্মী রেজাউন নবী আল মামুন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা ও মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাচ্চুর মনোনয়ন। তারা সবাই স্বতন্ত প্রার্থী ছিলেন।

রাজশাহী-৩ আসনে তিন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া অপেক্ষামান আছে আরও দুজন প্রার্থীর। মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন- গণফ্রন্টের প্রার্থী মনিরুজ্জামান, স্বতন্ত্র প্রার্থী নিপু হোসেন ও শাহাবুদ্দিন বাচ্চু। সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন এনপিপির প্রার্থী সইবুর রহমান ও মুক্তিজোটের প্রার্থী এনামুল হক।

রাজশাহী-৪ আসনে একজনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। তিনি হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল হোসেন। এ ছাড়া সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন এনপিপি প্রার্থী জিন্নাতুন ইসলাম জিন্নাহ, বিএনএফের মতিউর রহমান ও জাতীয় পার্টির আবু তালেব প্রামাণিক।

রাজশাহী-৫ থেকে মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আহসানুল হক মাসুদ ও ওবায়দুর রহমানের। এ দুজনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। রাজশাহী-৬ আসনে সাত প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে দুই প্রার্থীর। তারা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী খায়রুল ইসলাম ও ইসরাফিল বিশ্বাস।

মুন্সীগঞ্জ : বর্তমান সংসদ সদস্যসহ মুন্সীগঞ্জের তিনটি আসনে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে ৮ প্রার্থীর। জেলা রিটার্নিং অফিসার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে মুন্সীগঞ্জ-১ (শ্রীনগর-সিরাজদিখান) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আলহাজ মহিউদ্দিন আহম্মেদের মনোনয়ন বৈধতা পেলেও জামিনদার হিসেবে ঋণ খেলাপির ধায়ে বিকল্প ধারার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মাহী বি চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া একই আসনে এক পারসেন সমর্থন তালিকায় গরমিলের অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির ও প্রস্তাবকারীর নির্বাচনী এলাকা মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের ভোটার না হওয়ায় মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে বিএনএফের প্রার্থী মো. ফরিদ হোসেনের। সর্মথন তালিকায় গরমিলের অভিযোগে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট সোহানা তাহমিনা, আয়কর রিটার্ন এবং নতুন ব্যাংক একাউন্টের তথ্য দাখিল না করায় বাতিল হয়েছে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) নূরে আলম সিদ্দিকীর, আয়কর রিটার্ন দাখিল না করায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বিএনএফ মো. বাচ্চু শেখ ও শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ দাখিল না করায় বাতিল হয়েছে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী কামাল খানের।

এদিকে মুন্সীগঞ্জ-৩ (সদর-গজারিয়া) আসনে আয়কর রিটার্ন দাখিল না করায় মনোয়ন বাতিল হয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট বিএনএফের প্রার্থী মমতাজ সুলতানা আহমেদের।

কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের একজন প্রার্থীসহ ১০ জনের মনোনয়ন বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর এ তথ্য জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন- কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর-হোসেনপুর) আসনে মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), শরীফ আহাম্মদ সাদী (স্বতন্ত্র) ও আবুল কাসেম (বাংলাদেশ কংগ্রেস)। কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন (স্বতন্ত্র), আশরাফ আলী (গণতন্ত্রী পার্টি) ও আহসান উল্লাহ (তৃণমূল বিএনপি)। কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ (আওয়ামী লীগ), শামীম আহমেদ (স্বতন্ত্র), রুবেল মিয়া (স্বতন্ত্র) ও ব্যারিস্টার গোলাম কবীর ভূঞা (স্বতন্ত্র)।

বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান হলফনামায় মামলা ও ঋণের তথ্য গোপন করা এবং কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ মামলার তথ্য গোপন করায় প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।

বরিশাল : বরিশাল-১ আসনে জাকের পার্টির প্রার্থী মো. রিয়াজ মোর্শেদ জামান খান, বরিশাল-২ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. মিরাজ খান ও জাতীয় পার্টি-জেপির ব্যারিস্টার আলবার্ট বাড়ৈ এবং বরিশাল-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাকির খান সাগর, মো. শাহবাজ মিঞা ও নুর-এ আলম সিকদাররের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া ৭ জনের মনোনয়নপত্র অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়েছে। তারা হলেন- বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাম্মী আহমেদ, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী পঙ্কজ নাথ, মুক্তিজোটের মো. আসাদুজ্জামান ও হৃদয় ইসলাম চুন্নু, বরিশাল-৬ আসনে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী শামসুল আলম চুন্নু ওবাংলাদেশ কংগ্রেসের মাইনুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবির।

কুমিল্লা : কুমিল্লার ১১টি আসনের মধ্যে গতকাল ৫টি আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এ পাঁচটি আসনে মোট ৬৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। বাছাইয়ে বৈধতা পেয়েছে ২৮ জন। বিভিন্ন কারণে ২৬  জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। স্থগিত রাখা হয়েছে ৯ জনের মনোনয়নপত্র। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ১০ জন হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।  রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্র জানা গেছে, কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র নাইম হাসানসহ ৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। কুমিল্লা-২ (মেঘনা-হোমনা) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র আবদুল মজিদ, শাহ আলম খন্দকার ও জাতীয় পার্টির এ টি এম মঞ্জুরুল ইসলামসহ ৬ জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র শফিকুল আলমের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে। কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম সরকার, রফিকুল ইসলাম ও রুহুল আমিনসহ ৮ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। স্থগিত করা হয়েছে ৩ জনের মনোনয়নপত্র। কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. ফেরদৌস খন্দকারের মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদসহ ৫ জন মনোনয়নপ্রত্যাশীর মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাইয়ের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহের, আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীসহ ৫ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে।

 

চট্টগ্রাম : বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় চট্টগ্রাম-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহিবুর রহমান বুলবুলসহ ৫ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়। এই পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে একজন ছাড়া বাকিরা ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের তালিকায় গরমিল করেছেন। চট্টগ্রাম-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, মোহম্মদ ইমরান, দিদারুল আলম ও বিএনএফের আখতার হোসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়। চট্টগ্রাম-৫ আসনে নাছির হায়দার চৌধুরী, মোহাম্মদ শাহজাহানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। তাদের বিরুদ্ধেও ভোটারের স্বাক্ষরের তালিকায় অনিয়ম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাছাই প্রক্রিয়ায় চট্টগ্রাম-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রাম-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম নওশের আলী, মোহাম্মদ শাহজাহান, রিয়াজ উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৩ আসনের জাকের পার্টির নিজাম উদ্দিন নাছির ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আমিন রসূল, চট্টগ্রাম-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজমের মনোনয়নও একই অভিযোগে বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

নড়াইল : নড়াইলে যাচাই-বাছাইয়ের দ্বিতীয় দিনে নড়াইল-১ আসনের ৭ প্রার্থীর মধ্যে একজন ও নড়াইল-২ আসনে ৯ প্রার্থীর মধ্যে দুজনের মনোনয়ন বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

সিলেট : সিলেট জেলার ৬ সংসদীয় আসনের ৪৭ প্রার্থীর মধ্যে ১৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। স্থগিত রাখা হয়েছে দুজনের মনোনয়ন। আর যাচাই-বাছাই শেষে ৩১ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর চারটি আসনে মোট ২৮ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। যাছাই-বাছাইয়ে এদের মধ্যে ঋণখেলাপি থাকায় ৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল এবং কর প্রদান সার্টিফিকেটসহ প্রার্থীদের দাখিলকৃত মনোনয়ন পত্রে নানা ধরনের কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ ৮ জনের মনোনয়ন পত্র স্থগিত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত চারটি আসনে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ জন।

নোয়াখালী : ঋণ খেলাপির দায়ে নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) আসনে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও ঋণখেলাপির দায়ে নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত ও বর্তমান সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনসহ মোট ১৮ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।

মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের তিনটি আসনেই জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার। মানিকগঞ্জ-১ আসনে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাসান সাঈদ, মানিকগঞ্জ-২ আসনে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য এস এম মান্নান এবং মানিকগঞ্জ-৩ আসনে প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল আলম রুবেলের মননোয়ন পত্র বাতিল হয়।

লালমনিরহাট : লালমনিরহাটের তিনটি আসনে ১৯ জনের মনোনয়ন বৈধ, স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৮ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

 

লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরের দুটি আসনে ৭ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন (স্বতন্ত্র)-এর মনোনয়ন পত্রও বাতিল করা হয়।

বগুড়া : বগুড়ার মনোনয়ন যাচাইয়ের প্রথম দিনে ৪৮ জনের মধ্যে বাদ পড়েছেন ১১ জন প্রার্থী। বাতিলদের মধ্যে শুধু এক আসনেই আছেন সাতজন। বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে বাদ পড়েন আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল আলম হোসেন ওরফে হিরো আলম। মনোনয়ন পত্র যথাযথভাবে পূরণ না করার চারটি কারণ উল্লেখ করে তার প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া এই আসনের এনপিপির প্রার্থী মনোয়ার জাহিদের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এই প্রার্থী তার মনোনয়ন পত্রে প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীর স্থানে নিজেই স্বাক্ষর করেছেন।

বাগেরহাট : বাগেরহাট- ১ ও ২ সংসদীয় আসনে ঋণখেলাপি ও স্বাক্ষর জালের অভিযোগে জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ কংগ্রেস ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহম্মদ খালিদ হোসেন। ঋণখেলাপির দায়ে মনোনয়ন পত্র বাতিল হওয়া তিন প্রার্থীর মধ্যে রায়েছেন- বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী কাজী রবিউল, বাগেরহাট-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক হাজরা শহিদুই ইসলাম বাবলু, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মরিয়ম সুলতানা।

ভোটারদের এক শতাংশ স্বাক্ষর জালের দায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম আজমল হেসেনের মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই শেষে বালিত ঘোষণা করা হয়।

পিরোজপুর : পিরোজপুরের তিনটি সংসদীয় আসনে মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাইয়ে ৩৩টির মধ্যে বাদ পড়েছেন ১০ জন।

রংপুর : রংপুরে তিনটি সংসদীয় আসনে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে ৪ জনের এবং স্থগিত করা হয়েছে ৩ জন প্রার্থীর।

রংপুর-৪ আসনে কাগজপত্রে ত্রুটি থাকার কারণে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আবদুল ওয়াদুদ মিয়া এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন সরকারের মনোনয়ন পত্র স্থগিত করা হয়েছে।

যশোর :  যশোরের ছয়টি আসনে যাদের মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে তারা হলেন- যশোর-১ (শার্শা) আসনে জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামান, স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহরাব হোসেন ও নাজমুল হাসান। যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম হাবিবুর রহমান ও বিএনএফের শামসুল হক। যশোর-৩ (সদর) আসনে খেলাফত মজলিসের মোহাম্মাদ তৌহিদুজ্জামান, তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান, জাকের পার্টির মোহাম্মাদ মহিবুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী শহিদুল ইসলাম মিলন, মোহিত কুমার নাথ, বিএনএম পার্টির শেখ নূরুজ্জামান। যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সন্তোষ অধিকারী। যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে জাকের পার্টির হাবিবুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী আমজাদ হোসেন লাবলু, হুমায়ন সুলতান সাদাব, কামরুল হাসান বারী এবং যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসাইন মোহাম্মাদ ইসলাম ও মো. আজিজুল ইসলাম।

ফরিদপুর : ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা, মধুখালী) আসনের মনোনয়ন যাচাই-বাছাইকালে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদা বেগম ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সহসভাপতি মো. আরিফুর রহমান দোলনের মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

 

দিনাজপুর : দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা) আবু হুসাইন বিপু, দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (জেলা যুবলীগের সভাপতি) রাশেদ পারভেজ, দিনাজপুর-৫ (পাবর্তীপুর-ফুলবাড়ী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী তোজাম্মেল হক এবং দিনাজপুর-৬ (বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনেওয়াজ ফিরোজের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে মনোনয়ন পত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন- বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আহসান হাবিব (স্বতন্ত্র), নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকেরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সহসভাপতি কাজী এ টি এম আনিছুর রহমান বুলবুল (সতন্ত্র), জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তারেক শামস খান (সতন্ত্র), বহিষ্কৃত বিএনপির নেতা খন্দকার ওয়হিদ মুরাদ (স্বতন্ত্র), আবদুল হাফেজ বিল্লাহ (স্বতন্ত্র), সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ (স্বতন্ত্র), মেহেরনিগার হোসেন (স্বতন্ত্র) এবং রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই (স্বতন্ত্র)।

নীলফামারী : নীলফামারী-১ আসনে মোট ১০ প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনের মনোনয়ন বৈধ, দুজনের বাতিল এবং তিনজনের মনোনয়ন অপেক্ষমান রাখা হয়েছে।

নেত্রকোনা : নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনে ৬ জনের মধ্যে দুজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

খুলনা : খুলনা-৪, ৫ ও ৬ আসনে ১৮ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। গতকাল দুপুরে যাচাই-বাছাই শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনটি আসনে ৩৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জনের বাতিল ও ১৫ জনের মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়িতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  ২৯৮ নম্বর  আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সমীর দত্ত চাকমার মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সহিদুজ্জামান।

জয়পুরহাট : জয়পুরহাট-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী  রানী রাবেয়া আসরী, আলেয়া বেগম, জয়পুরহাট-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতোয়ার রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এ টি এম মনিরুজ্জামান সরকার ও রোমা আক্তার, ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ বকুল হুসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

বরগুনা : বরগুনা-১  আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী খলিলুর রহমানের জমা দেওয়া তালিকায় মৃত ব্যাক্তির নাম ও স্বাক্ষর থাকায় এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নুুরুল ইসলামের ৩ জন স্বাক্ষরকারী স্বাক্ষর অস্বীকার করায় তাদের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়। বরগুনা-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমানকে খেলাফি ঋণের দায়ে তার মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়। এ ছাড়া একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির দুজন প্রার্থী থাকায় একজনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়।

গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ-২ নির্বাচনী এলাকার প্রার্থীদের যাচাই-বাছাইয়ে ৮ জন প্রার্থীর মধ্যে দুজন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল এবং একজন প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের ছয়টি আসনের মধ্যে প্রথম দিনে তিনটি আসনের ১০ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে।

শরীয়তপুর : শরীয়তপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফা,  শরীয়তপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলীর মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

রংপুর : রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার পদত্যাগ করে দ্বাদশ  নির্বাচনে এমপি হতে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই শে?ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকারের মনোনয়ন স্থগিত ক?রেন জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটা?র্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। মামলা সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ না করায় তার মনোনয়ন স্থগিত করা হয়।  মিঠাপুকুর আস?নে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকারে মনোনয়ন পত্রও বাতিল হয়েছে।

মেহেরপুর : মেহেরপুরের দুটি আসনে জাতীয় পার্টি (জেপি) মওলাদ আলীসহ ৭ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছেন জেলা রিটার্নিং অফিসার।

মানিকগঞ্জ : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনবার প্রার্থী হয়ে জামানত হারানো আবদুল আলী বেপারীর মননোয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। আবদুল আলী এবার মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন।

জামালপুর :  জামালপুরের ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে জামালপুর-১, জামালপুর-২ ও জামালপুর-৩ আসনে ১৮ জন প্রার্থীর দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে ৮ জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করেছে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

গাজীপুর : গাজীপুরে ঋণখেলাপির অভিযোগে জাতীয় পার্টির নেতা এম এম নিয়াজ উদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে এবং কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় একই আসনের অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলামের মনোয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দ্বিধাবিভক্ত মাঠপর্যায়ের আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৯:৫৮ এএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের একাধিক নেতার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘটনায় সমস্যায় পড়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

নির্বাচনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। একদিকে দল মনোনীত প্রার্থী আছে, অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতারাই দাঁড়িয়েছেন। কাকে ছেড়ে কার কাছে যাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না তারা। এই অবস্থায় তৃণমূলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী দ্বিধাবিভক্তিতে ভুগছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের ১২টি জেলার ৩২টি সংসদীয় আসনের ২০টিতে বর্তমান সংসদ সদস্যরাই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। ১০টি আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যরা মনোনয়ন পাননি। তাদের মধ্যে ৭ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। বাকি দুটি আসনের একটিতে বর্তমানে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও আরেকটিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সংসদ সদস্য রয়েছেন।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই ৩২ আসনে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বর্তমান সংসদ সদস্য ছাড়াও সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দলের মাঠপর্যায়ের শীর্ষ নেতারা প্রার্থী হয়েছেন।

পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগে দুটি পক্ষ। এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। রেজাউল করিম এবার পিরোজপুর-১ (সদর-নাজিরপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে এম এ আউয়াল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য দলের ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় কুমিল্লার ১১টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনে আওয়ামী লীগ নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে দুজন সংসদ সদস্যও রয়েছেন। কুমিল্লা-২ (হোমনা ও মেঘনা) আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল মজিদ।

নওগাঁর ছয়টি আসনের প্রতিটিতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিপক্ষে দলটির এক বা একাধিক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তবে নওগাঁ-৩ ও নওগাঁ-৪ আসনে এবার বর্তমান সংসদ সদস্যরা মনোনয়ন পাননি। তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে অপেক্ষাকৃত নতুন দুই প্রার্থী বিপাকে পড়েছেন।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিনের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মোতালেব। চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) নৌকার প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বরিশালের দুটি আসনে আকস্মিক প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয় ১৪–দলীয় জোটের রাজনীতিতে বেশ টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। রাশেদ খান মেননের পৈতৃক বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় হলেও তিনি জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়। এবার তিনি বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে পুলিশ ও প্রশাসনের গুরুত্ব বেশি ছিল। এবার দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ঘোষণায় দলীয় নেতা-কর্মীদের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে। তবে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের লোকজনই প্রার্থী হবেন—এমন কৌশলের জন্য তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত ছিলেন না।


আওয়ামী লীগ   বিএনপি   রাজনীতি   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন