বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়ে আওয়ামী লীগ অনেকগুলো বার্তা দিয়েছে। আর এই মনোনয়নের মধ্য দিয়ে বরিশালে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর রাজত্যের অবসান ঘটেছে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে একাধিক হেভিওয়েট নেতা আছে যারা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ঝালকাঠির আমির হোসেন আমু, ভোলার তোফায়েল আহমেদ এবং বরিশালের আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ।
একসময় পুরো বরিশালের নেতৃত্ব নিয়ে এই তিনজনের মধ্যে নানা রকম দ্বন্দ্ব হত। একসময় আমির হোসেন আমু ও তোফায়েলের দ্বন্দ্ব বরিশালের গণ্ডি পেরিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত ছড়িয়ে পরেছিল। সারা দেশের কর্মীরা আমু-তোফায়েলে বিভক্ত হয়ে পরেছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে আমু ও তোফায়েলের দ্বন্দ্ব কমে যায়। বিশেষ করে এক-এগারোর পর দুইজনই বরিশালের রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পরেন। এরপর বরিশালের রাজনীতিতে একক উত্থান ঘটে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর। যদিও বরিশাল শহর এবং বরিশাল জেলায় আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ৭৫-এর পর থেকে আস্তে আস্তে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন। এক-এগারোর পর তার কর্তৃত্ব ও প্রভাব দুটিই অনেক বেড়ে যায়। পুরো বরিশালের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে উঠেন। আর একারণেই বরিশালভিত্তিক রাজনীতি করে এমন অনেক কেন্দ্রীয় নেতা বরিশালে যেতেন না এবং ঢাকায় রাজনীতি করতেন।
বরিশাল থেকেই রাজনীতিতে বেড়ে ওঠা জাহাঙ্গীর কবির নানক বরিশাল থেকে এসে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন, যুবলীগের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। কিন্তু বরিশালের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন ভূমিকাহীন। ২০০৮ এর নির্বাচনে জাহাঙ্গীর কবির নানককে ঢাকার মোহাম্মদপুর আসন থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। ২০১৪ সালেও তিনি মোহাম্মদপুর আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। বরিশালে তার বাড়ি এবং সেখানে তিনি গেলেও কোন স্থানীয় নেতারা তার সাথে ভয়ে দেখা সাক্ষাৎ করতে পারত না। একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানিয়েছেন যে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের একটি পারিবারিক মিলাদ মাহফিলে তিনি যোগদান করেছিলেন, এ জন্য তৎকালীন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ তাকে তীব্র ভৎসনা করেছিলেন এবং তাকে জনসম্মুখে অপমান করেছিলেন। আর এ কারণেই জাহাঙ্গীর কবির নানকও পারিবারিক কোন অনুষ্ঠানে বরিশালে খুব একটা যেতেন না।
কিন্তু গতকাল বরিশালে খোকন সেরনিয়াবাতকে নিয়ে সদলবলে গিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। তার এই বরিশাল সফর যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী। জাহাঙ্গীর কবির নানক ছাড়াও আবদুর রহমানসহ একঝাক কেন্দ্রীয় নেতা বরিশাল সফর করেন নতুন মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের সাথে। জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে এই কেন্দ্রীয় নেতাদের দল যাওয়ার প্রেক্ষিতে অনেকেই মনে করছেন যে, তাহলে কি বরিশালের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হচ্ছে? বরিশালে কি তাহলে হাসনাত যুগের অবসান ঘটছে এবং নানক যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে?
সূত্রগুলো বলছে, মনোনয়ন বোর্ডের সভাতেই আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ উত্তেজিত হয়েছিলেন এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। পরে তিনি সেই সভা থেকে চলেও গিয়েছিলেন। কাজেই তার ছেলে সাদিক আবদুল্লাহকে মনোনয়ন না দেয়ায় বিষয়টি যে তিনি সহজভাবে নেবেন এটা ভাবার কোন সুযোগ নেই। রাজনীতিতে তিনি একদিকে যেমন উৎসাহ হারাবেন, তেমনি তার বিকল্পও আওয়ামী লীগ খুঁজে বের করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেহেতু জাহাঙ্গীর কবির নানক গতবার নির্বাচনে ঢাকা থেকে মনোনয়ন পাননি, সেজন্য বরিশালের মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জাহাঙ্গীর কবির নানককে কি লাইম লাইটে আনা হচ্ছে? এই প্রশ্নটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।