অবশেষে বিএনপি'র
সঙ্গে লড়াইয়ে জয়ী হলেন বেগম খালেদা জিয়া। হাসপাতাল থেকে বাড়ি যাওয়ার জন্য এভারকেয়ার
হাসপাতালে রীতিমতো আন্দোলন করতে হয়েছে তাকে। এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গতকাল
তাকে বলেছিল যে, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই শেষ মুহূর্তে বিএনপিপন্থী চিকিৎসক
ডাক্তার জাহিদ, যিনি বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত তিনি বাগড়া
দেন এবং তিনি চিকিৎসকদেরকে বুঝাতে সক্ষম হন যে বেগম খালেদা জিয়াকে আরো কিছুদিন হাসপাতাল
রাখতে হবে। এরপর তথাকথিত মেডিকেল বোর্ড বসে এবং সেই মেডিকেল বোর্ডে সিদ্ধান্ত নেওয়া
হয় যে বেগম খালেদা জিয়া এখনই বাড়ি যাবেন না। তাকে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।
এরপর থেকেই বেগম খালেদা জিয়ার রীতিমতো অনশন শুরু করেন। গতকালই তিনি হাসপাতালে চিৎকার-চেঁচামেচি
করেছিলেন। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ তিনি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন। এ সময় তার ভাই শামীম
ইস্কান্দার এবং প্রয়াত কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান হাসপাতালে আসেন এবং তারা চিকিৎসকদের
সাথে আলাপ-আলোচনা করে। আলাপ-আলোচনার প্রেক্ষিতে তাদের অনুরোধে বেগম খালেদা জিয়াকে
বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসার জন্য ছেড়ে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য যে,
বেগম খালেদা জিয়া সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত করা শুরু করেছিলেন।
গত রোজার সময় তিনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফিরোজায় ডেকে নিয়ে
যান। সেখানে ১ ঘণ্টারও বেশি সময় তার সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। এরপর তিনি ঈদের দিন বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে থাকেন এবং সেখানে তাদের সাথে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন।
এ বৈঠকে তিনি বিএনপি’র নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করেন এবং গণতন্ত্র
রক্ষার কথাও বলেন। যদিও দুটি বৈঠকের পরই সংশ্লিষ্টরা গণমাধ্যমের কাছে কিছু বলেননি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে এড়িয়ে ফিরোজা থেকে বের হন। অন্যদিকে স্থায়ী
কমিটির সদস্যরা বেগম খালেদা জিয়ার সাথে কি কথা হয়েছে সে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এর
ফলে বিএনপির মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি এবং বিতর্ক তৈরি হয়।
বিএনপির অনেক
নেতাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার ম্যানেজ করেছে।
তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে এরকম শর্তে তিনি বিএনপিকে নির্বাচনের পথে
নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যোগী হচ্ছে। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সরকারের ইন্ধনে তিনি রাজনীতিতে
সক্রিয় হচ্ছেন বলে বিএনপির কোনো কোনো নেতা দাবি করেন। এরকম পরিস্থিতিতে লন্ডনে পলাতক
বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার নির্দেশে বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে চিকিৎসার নামে আটকে রাখা হয়।
একাধিক সূত্র
বলছে যে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল এখানে তাকে দীর্ঘদিন রাখা হবে এবং একপর্যায়ে তার কাছ
থেকে একটি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে। এর ফলে তারেক জিয়া হয়ে উঠবেন বিএনপি সর্বেসর্বা।
বেগম খালেদা জিয়ার পদত্যাগপত্র যদি গৃহীত হতো তাহলে তিনি নির্বাচনে যেতে চাইছেন কি
চাইছেন না সেটি মূল্যহীন হয়ে পড়তো। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে চান এবং
যেকোন শর্তে তিনি বিদেশে যেতে প্রস্তুত। এই কারণেই তিনি বিএনপি নেতাদের এই ফাঁদে পা
দেননি।
গত দুইদিন বেগম
খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক জিয়ার এক ধরনের যুদ্ধ হয়েছে। এই যুদ্ধে আপাতত জয়ী হলেন বেগম খালেদা জিয়া।
এখন দেখার বিষয় সামনের দিনগুলোতে বেগম খালেদা জিয়া কি সিদ্ধান্ত নেন। তিনি দলকে নির্বাচনমুখী
করেন কিনা এবং তার সেই সিদ্ধান্ত দলের উপর কি প্রভাব ফেলে।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।