আওয়ামী লীগ
সভাপতি শেখ হসিনাকে কবরে পাঠানোর হুমকি দিয়ে বক্তৃতা দিয়েছিলেন রাজশাহীর বিএনপি নেতা
চাঁদ। এটি নিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। যদিও বিএনপি’র রাজশাহী অঞ্চলের আরেক নেতা
মিজানুর রহমান মিনু এই বক্তব্যকে অনুচিত বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন যে, তার পক্ষ
থেকে তিনি দুঃখ প্রকাশ করছেন। কিন্তু বিএনপি’র হেভিওয়েট কোন নেতা কিংবা বিএনপি’র মহাসচিব
আনুষ্ঠানিকভাবে এ বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেননি এবং এই বক্তব্যকে গর্হিত বলেও মন্তব্য
করেননি। আওয়ামী লীগ এই ধরণের হুমকির প্রতিবাদে রাজপথে কর্মসুচি পালন করছে এবং বিএনপি
নেতা আবু সাইদ চাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনাটি বাংলাদেশের
রাজনীতিতে একটি নতুন মেরুকরণ তৈরি করেছে।
গতকাল ঢাকাস্ত
মার্কিন দূতাবাস এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। মার্কিন দূতাবাসের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স
প্রধান শন জে. ম্যাকিনটোশ জানিয়েছেন যে, মার্কিন দূতাবাস যকন ধরণের উত্তেজক ভাষা, ভীতি
প্রদর্শন কিংবা সহিংসতার নিন্দা জানাচ্ছে। রাজশাহীর ঐ নেতার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মার্কিন
দূতাবাসের এই নিন্দাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে এমন একটি
সময় এই বিবৃতি দেইয়া হয়েছে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে
নানা অস্বস্তি এবং টানাপোড়নের কথা শোনা যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর
নতুন করে স্যাংশন দিতে পারে এমন গুঞ্জনও বাজারে আছে। কিন্তু সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র এই
বিবৃতির মাধ্যমে প্রমাণ করল যে বাংলাদেশের ব্যপারে তাদের নিরপেক্ষ অবস্থা রয়েছে এবং
জনগণকে তারা একটি বার্তা দিল যে, তারা কোন দলেও পক্ষে নেই।
কিছুদিন ধরেই
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে রাজনীতিকে এক ধরণের অস্বস্তি তৈরি হচ্ছিল, বিশেষ
করে আওয়ামী লীগের মধ্যে এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে একটি ভুল বার্তা যাচ্ছিল। তারা মনে
করছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বোধহয় আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে চায় এবং
এ জন্যই তারা বিএনপি’কে সমর্থন করছে। কিন্তু এই বিবৃতির মাধ্যমে প্রমাণিত হল যে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যপারে নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে এবং কোন পক্ষকেই তারা সমর্থন
করতে চায় না।
এই বিবৃতির
মাধ্যমে একটি পরিষ্কার বার্তা পাওয়া গেল। সেটি হল, যুক্তরাষ্ট্র বা মার্কিন দূতাবাস
বাংলাদেশে যে সহিংস রাজনীতি, ভাংচুর, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও ইত্যাদি পছন্দ করে
না। বিএনপি এখন নতুন করে যে সহিংস রাজনীতির প্রস্তুতি নিচ্ছে সেই প্রস্তুতি হোঁচট খাবে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নিন্দা বিবৃতিতে। ফলে এটি বিএনপি’র জন্য একটি বড় হোচট বলে
ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, দুদিন আগে মার্কিন দূতাবাস থেকে বাংলাদেশে মার্কিন নাগরিকদের
জন্য একটি ভ্রমণ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। এই ভ্রমণ সতর্কতার পর অনেকে ধরেই নিয়েছিল
যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনার জন্য উস্কানি দিচ্ছে।
কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্রের এই বিবৃতি প্রমাণ করল যে, বিএনপি যদি দাবী আদায়ের জন্য জ্বালাও-পোড়াও
এবং সহিংস রাজনীতি কওরে সেটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফল করবে না। অর্থাৎ, বাংলাদেশের
রাজনীতিকে সুশৃঙ্খল এবং গণতন্ত্রমুখি করার জন্য বিবৃতিটিকে একটি বার্তা বলেই মনে হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বের কোন দেশেই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার
হুমকির ঘটনার পর পরই মার্কিন দূতাবাসের এই বিবৃতির ফলে রাজনীতিতে যেমন একটি স্বস্তির
নিঃশ্বাস আসলো, তেমনি বিএনপি’র মধ্যে একটি হতাশা তৈরি হলো। তারা যেটি মনে করেছিল যে,
এই সরকারকে হটানোর ব্যপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেত আছে সেই বার্তাটি যে
ভুল ছিল এই বিবৃতির মাধ্যমে তা প্রমাণিত হল।
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
সাইবার যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কোটা আন্দোলন তথ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গ্রেপ্তার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার তারেক জিয়া নাশকতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।