বাংলাদেশে যেন আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়- এ নিয়ে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ওপর নানা রকম চাপ প্রয়োগ করছে। গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি। বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফর করেছেন এবং তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক। এটি ছাড়া তারা সেই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে না- এমন বার্তা দেয়া হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর সতর্কবার্তা দিলো না। তারা প্রকাশ্যে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে এক ধরনের হুমকি দিয়ে রাখলো। যদি সুষ্ঠু নির্বাচনকে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে অর্থাৎ তাকে ভিসা দেওয়া হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত কি কেবল সরকারের বিরুদ্ধে?- কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা এমনটি মনে করছেন না। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবার সহিংসতা ফিরে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। বিশেষ করে মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে মার্কিন নাগরিকদের চলাফেরার ওপর এক ধরনের সতর্কবার্তা জারি করেছিলো এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি দিলো।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুটির মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। এটি বিএনপির জন্য একটি বার্তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো সময় জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংসাত্মক রাজনীতিকে সমর্থন করে না। কোন দেশে এটি হোক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেটা চায়না। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, এ ধরনের পরিস্থিতির ফলে উগ্র মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটতে পারে। নানা কারণে বাংলাদেশ স্পর্শকাতর দেশ, আর তাই বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার নামে মৌলবাদের বা সন্ত্রাসবাদের উত্থান ঘটে- সেটা যুক্তরাষ্ট্র চায় না। এ কারণেই সরকারকে যেমন সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধ্য করছে, তেমনি বিরোধী দলকেও এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাপ প্রয়োগ শুরু করেছে। বিএনপি যেন জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে যায়- সে লক্ষ্যে বিএনপির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে।
একটু গভীরভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সেখানে বিরোধী দলের ওপরও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচন হলো একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যদি কেউ সহিংসতার আশ্রয় নেয়, সন্ত্রাস করে, জ্বালাও-পোড়াও করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে- এমন ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। তাহলে কি এবার বিএনপির ওপর যুক্তরাষ্ট্র চাপ দেবে? আগামী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের ব্যাপারে কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন ভিসানীতি সে সম্পর্কে একটি ইঙ্গিত দেয়।
বিএনপি মার্কিন চাপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
সাইবার যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কোটা আন্দোলন তথ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গ্রেপ্তার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার তারেক জিয়া নাশকতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।