ইনসাইড পলিটিক্স

কেউ নির্বাচন করতে না চাইলে তাকে নিয়ে আসা সরকারের দায়িত্ব নয়: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৭:০৪ পিএম, ২০ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা সবাইকে নিয়েই নির্বাচন করতে চাই। কেউ নির্বাচন করতে না চাইলে তাকে নিয়ে আসা সরকারের দায়িত্ব নয়।

সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় ১৮ যানবাহনে আগুন দিয়েছে বিএনপি। অবরোধ-হরতাল কেউ মানছেন না। জনগণ, এমনকি বিএনপি সমর্থকদের কোনো সম্পৃক্ততাও নেই। অবরোধ হরতালের নামে বিএনপি মূলত গাড়ি পোড়ানোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

 ‘একটি স্কুলে আগুন দেওয়া হয়েছে। এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নয়, এগুলো জঘন্য সন্ত্রাসী দেশবিরোধী অপতৎপরতা। এরা দেশ ও সমাজের শত্রুতে রূপান্তর হয়েছে। এরই মধ্যে যাদের ধরা হয়েছে, তারা বলেছে গাড়িতে আগুন দিলে দলের মধ্যে পদোন্নতি হয়। আগুন দেওয়ার ভিডিও ধারণ করে পাঠানো হয়। যোগাযোগ থাকলে তা লন্ডনেও পাঠানো হয়’ যোগ করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, যে দলে গাড়িতে আগুন দিলে, মানুষ পুড়িয়ে মারলে পদোন্নতি হয়, যে দলের নেতারা গাড়ি পোড়ানোর কর্মসূচি ঘোষণা করেন, তারা সবাই দুষ্কৃতকারী। আমরা এ আগুন সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।

তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশে ইনশাআল্লাহ আগামী নির্বাচনের পর যদি আমরা সরকার গঠন করতে পারি, আগুন সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হবে। এটিই হবে আমাদের প্রধান কাজ। নির্বাচনের আগেও তাদের নির্মূল করাই আমাদের প্রধান কাজ। কারণ তারা দেশ-জাতি ও সমাজের শত্রুতে পরিণত হয়েছে। নেতারাও সবাই দুষ্কৃতকারীতে রূপান্তরিত হয়েছে।’

বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানানো হবে কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসুক, সেটা আমরা চাই। একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় থাকা। নির্বাচন বর্জন যে কেউ করতে পারেন, প্রতিহত করার এখতিয়ার কারও নেই।

টেকনোক্র্যাটমন্ত্রীরা পদত্যাগ করেছেন। এরকম টেকনোক্র্যাটের বাইরে কোনো মন্ত্রীর পদত্যাগের সম্ভাবনা আছে কি না? প্রশ্নে তিনি জানান, প্রথমত নির্বাচনকালীন সরকার বলে সংবিধানে কিছু নেই। যেহেতু তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, গতবারও যারা টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ছিলেন, তারা পদত্যাগ করেছিলেন, এবারও যারা টেকনোক্র্যাটমন্ত্রী তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বাকি যারা সরকারের সংসদ সদস্য, তাদের মন্ত্রী হিসেবে থাকতে কোনো বাধা নেই।

 


নির্বাচন   তথ্যমন্ত্রী   বিএনপি   আগুন   দায়িত্ব   সরকার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

রাশেদ খান মেননের বরিশাল-২ ও ৩ আসনে প্রার্থিতা: মহাজোটে ‘জট’

প্রকাশ: ০২:১৩ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল রাশেদ খান মেননের ‘ওয়ার্কার্স পার্টি’। দলটির সভাপতি ও শীর্ষ নেতা রাশেদ খান মেনন আগে ঢাকা-৮ আসন থেকে তিন দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু এবার ওই আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে শেষ মুহূর্তে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) ও বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের দুটি আসনে রাশেদ খান মেনন প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে মনোনয়ন নিয়ে জটের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মহাজোটকেন্দ্রিক রাজনীতিতে বেশ টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।

বরিশাল-৩ আসনে ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. টিপু সুলতান। ২০১৮ সালে টিপু সুলতান মহাজোটের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিলেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপু। এবারও জাপার বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আর আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে বাবুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার খালেদ হোসেনকে।

রাশেদ খান মেননের পৈতৃক বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায়। ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালে তিনি নিজ এলাকা থেকে দুবার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। এরপর নিজ এলাকা থেকে তিনি আর নির্বাচনে অংশ নেননি। এবার আকস্মিক তিনি বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় মহাজোটের রাজনীতির হিসাব-নিকাশ একটু জটিল হলো।

রাশেদ খান মেনন এই আসনে মনোনয়নপত্র নেওয়ার খবরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস কমেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বলেছেন, ২২ বছর পর আওয়ামী লীগের কোন নেতা নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে যাওয়ায় তাঁরা খুব আনন্দিত হয়েছিলেন। এখন সেই আনন্দে ভাটা পড়েছে। মহাজোটের কারণে ২০০৮ সালে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আফজালুল করিম মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া সরদার মো. খালেদ হোসেন বলেন, ‘দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাজ করব।’

বরিশাল-২ আসনেও একইভাবে জট বেঁধেছে মহাজোটে। সেখানে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার ইউনুসকে। মহাজোটের শরিক জাপার চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ইকবাল হোসেন (তাপস) মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আছেন ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত প্রার্থীও। এমন পরিস্থিতিতে শেষ সময়ে সেখানে রাশেদ খান মেননের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার ইউনুস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আগে দলকে বাঁচাতে হবে। আমাকে এখানে মনোনয়ন দেওয়ার পর সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে, সেটা অভাবনীয়। এখন তার ব্যত্যয় হলে যে হতাশা নেমে আসবে, তার প্রতিফলন ফলাফলে প্রভাব ফেলবে।’

মুলাদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, ২০০৮ সালে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে আসন ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালে জোটকে আসন ছেড়ে দেওয়ায় সংসদ সদস্য হন ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ মোঃ টিপু সুলতান। ২০১৮ সালে আবারও ছাড় দেওয়ায় জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু সংসদ সদস্য হন। বারবার জোটের শরিকদের আসন ছেড়ে দেওয়ায় এই দুই উপজেলায় তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি, দলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়ার্কার্স পার্টির একটি সূত্র জানায়, মহাজোটের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব আসনবিন্যাসের ব্যাপারে আগেই উদ্যোগ নিলে এমন জটিলতার সৃষ্টি হতো না। এখন যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসন করা একটু কঠিন, তবে অসম্ভব নয়।

ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক শেখ টিপু সুলতান বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে এই জটিলতার সমাধান হবে। ঢাকা–৮ আসনে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখন সমস্যা সমাধানে উচ্চপর্যায়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। শিগগিরই এর সমাধান হবে।’

উল্লেখ্য, রাশেদ খান মেনন ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।


রাশেদ খান মেনন   ওয়ার্কার্স পার্টি   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মির্জা ফখরুলের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন

প্রকাশ: ০১:৩৮ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে করা মামলায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন তার আইনজীবীরা। বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ রোববার এ আবেদন জমা দেন তারা।

উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর রমনা মডেল থানায় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে।

এর আগে গত ২২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এ মামলায় বিএনপি মহাসচিবের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এ মামলায় আজ মির্জা ফখরুলের জামিন চেয়ে করা আবেদন হাইকোর্টে জমা দেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন।

পরে আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন চেয়ে করা আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে। আবেদনটি কাল (সোমবার) কার্যতালিকায় আসবে বলেছেন হাইকোর্ট।

গত ২৯ অক্টোবর এ মামলায় গ্রেপ্তার হন মির্জা ফখরুল। পরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে জামিন আবেদন করা হয়। আদালত সেদিন তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর গত ২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে মির্জা ফখরুলের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। পরে ২২ নভেম্বর ওই আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।


মির্জা ফখরুল   জামিন   হাইকোর্ট   আবেদন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ঋণ খেলাপের দায়ে মাহি বি চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল

প্রকাশ: ০১:২২ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বিকল্পধারার যুগ্ম-মহাসচিব মাহি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর (মাহি বি চৌধুরী) মনোনয়ন বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। রোববার (৩ ডিসেম্বর) যাচাই-বাছাই শেষে জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপন মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে জমা দেওয়া মনোনয়ন বাতিল করেন। ঋণ খেলাপের অভিযোগে মাহি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, মাহি বি চৌধুরী ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিকল্পধারা থেকে মুন্সীগঞ্জ-১ আসন থেকে মোয়াজ্জেম হোসেনকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০১৮ সালের নির্বাচনে তার বাবা বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপি, জাসদ (রব), নাগরিক ঐক্য, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও গণফোরামকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। পরবর্তীতে মাহি তরুণ প্রজন্মের নিকট প্ল্যান বি উপস্থাপন করেন। যুক্তফ্রন্টের মধ্যে এ সময় ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। মাহি জামায়াতের সাথে একত্রে নির্বাচনে যেতে নারাজ হলে অভ্যন্তরীণ সমস্যায় বিকল্পধারাকে ঐক্য থেকে বাদ দেওয়া হয়।


মাহি বি চৌধুরী   মনোনয়ন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কাউকে জেতানোর দায়িত্ব নেবে না আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, দলের যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে জিতে আসতে হবে নিজ যোগ্যতায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। কাউকেই জেতানোর দায়িত্ব নেবে না আওয়ামী লীগ।কেউ যদি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাতে বা অন্য কোনো উপায় অবলম্বনের চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মনোনয়ন প্রাপ্তদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি এবার বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে চান। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করতে চান যে, বিদেশিরা যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে সমস্ত আশঙ্কা এবং সন্দেহ পোষণ করেছিল তার সবই ছিল অমূলক। বরং বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রপ্রিয়। তারা গণতন্ত্রের চর্চা করতে চায়। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায়। আর এই লক্ষ্যেই তারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। 

আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য হল ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা। দ্বিতীয় লক্ষ্য হল ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং তৃতীয় লক্ষ্য হল উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ যেন সম্পন্ন হয় সেটি নিশ্চিত করা। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করতেও তারা প্রস্তুত। কিন্তু কোন কোন প্রার্থী ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়ানোতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, এর ফলে তাদের নিশ্চিত বিজয় ঝুঁকিতে পড়ল। কিন্তু আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, এর ফলে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। এটি আওয়ামী লীগের চাওয়া। কে জিতল না জিতল এটা আওয়ামী লীগের বড় লক্ষ্য নয়। এই কারণেই সব প্রার্থীদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। 

এছাড়াও প্রশাসনকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যে ব্যবস্থা নেবে সেই ব্যবস্থার সঙ্গে সহমত পোষণ করবে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, নির্বাচন কমিশন এখন সমস্ত কিছু তদারকি করছে। নির্বাচন কমিশনকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রশাসনে রদবদল শুরু করেছে। সকল থানার ওসি

যাদের চাকরির মেয়াদ একবছরের বেশি হয়েছে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে  সুনামগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককে আজ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকেও সরানোর ব্যাপারে প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের ফলে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তাদের কেউ কেউ মনে করছেন যে, এবারের নির্বাচনের সহজ বিজয় আর সম্ভব হবে না। এ কারণে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরকে হুমকি ধামকি দেওয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসিয়ে দেওয়া ইত্যাদি তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। যে খুশি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দিবে তিনি এমপি হবেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোনো রকম পছন্দ নেই। কাউকে টেনে নির্বাচনে জয়ী করা বা কোন হিসাব নিকাশ মিলিয়ে কাউকে ভোটের মাঠে বিজয়ী করার কোন অভিপ্রায় আওয়ামী লীগের নাই এবং সেটা আওয়ামী লীগ করবে না। 

আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, নির্বাচনে ন্যূনতম কারচুপি হলেও সেটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে শোরগোল পড়বে। একারণে আর যাই হোক না কেন, কোন প্রার্থীকে জয়ী করার দায়দায়িত্ব আওয়ামী লীগ নেবে না।


আওয়ামী লীগ   নির্বাচন   প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা   গণতন্ত্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদা জিয়ার মতোই আচরণ করলেন সাদেক খান

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

২০১৫ সালের কথা মনে আছে? ওইসময় বেগম খালেদা জিয়া সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ ডেকেছিলেন। অবরোধ সফল করতে তিনি গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। বলেছিলেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের পতন ঘটবে তত ক্ষণ পর্যন্ত তিনি ঘরে ফিরবেন না। সেখানে নাওয়া খাওয়া এবং রাত্রিযাপনের ব্যবস্থাও করেছেন বেগম জিয়া। এই সময় আকস্মিকভাবে ঘটে দুর্ঘটনা। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বেগম খালেদা জিয়ার ছোট পুত্র আরাফাত রহমান কোকো মৃত্যুবরণ করেন। 

আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবরণের পর শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন বেগম খালেদা জিয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একজন মা। আর তাই মায়ের হৃদয়ের বেদনা তিনি অনুভব করতে পেরেছিলেন। এজন্য তিনি ছুটে গিয়েছিলেন গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে। কোনোরকম প্রোটোকল বা নিরাপত্তার কোনো তোয়াক্কা করেননি তিনি। যদিও সেই সময় বিএনপি -জামায়াতের আন্দোলন চলছিল। বেগম খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে যাওয়াটা প্রধানমন্ত্রীর জন্য ছিল ঝুঁকিপূর্ণ এবং নিরাপত্তার হুমকি। তারপরও সবকিছুকে কিছুকে উপেক্ষা করে মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার সাঙ্গপাঙ্গরা প্রধানমন্ত্রীর আগমনের কথা শুনে গেট আটকে দেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘক্ষণ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। ভেতরে বিএনপির অনেক নেতাই উপস্থিত ছিলেন। যাদের মধ্যে প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, শিমুল বিশ্বাস অন্যতম। তারা কেউই দরজা খোলেননি। 

৪০ মিনিট বেগম খালেদা জিয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে সান্ত্বনা না দিতে পেরে ফিরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ঘটনাটি অমানবিকতার এবং শালীনতা বিবর্জিত হিসেবে রাজনৈতিক ইতিহাসে স্বীকৃত। এই ঘটনার পর সারা দেশে ধিক্কার পড়ে। একজন প্রধানমন্ত্রীকে ন্যূনতম সম্মান দেওয়ার যোগ্যতা যাদের নেই তারা কিভাবে আন্দোলন করতে চাই এবং রাজনীতি করে এই প্রশ্ন উঠেছিল দলমত নির্বিশেষে সকলের মধ্যে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, ২০২৩ সালে ঠিক একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করলেন আওয়ামী লীগের একজন এমপি। 

ঢাকা-১৩ আসনের বর্তমান এমপি সাদেক খান এবার মনোনয়ন পাননি। এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক। জাহাঙ্গীর কবির নানক ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনেও এই আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে তিনি উদারতার এক বড় নজির। ২০১৮ সালে মনোনয়ন না পেলেও তিনি সাদেক খানকে সহযোগিতা করেছিলেন। সারা দেশে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভাপতির পাশে থেকে তদারকি করেছিলেন। আর সে কারণেই তিনি পুরষ্কার পান। যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক থেকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। এবার তিনি তার ত্যাগ এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পুরস্কার পেয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ওই একই আসন থেকে। মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি প্রথম ছুটে গিয়েছিলেন সাদেক খানের বাসায়। তিনি একা নন, সঙ্গে ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতিও। দুজন সাদেক খানের বাসভবনে গেলে সাদেক খান খালেদা জিয়ার মতো এই কাণ্ড করেন। তিনি কোলাপসিবল গেট আটকে দেন। এমনকি ছোট গেটটিও বন্ধ করে দেন। 

এসময় ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন যে সাদেক খানকে বলেন, আমরা এসেছি। তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করব। এই সময় গেটের দারোয়ান জানান যে সাদেক খান বাড়িতে নেই। এসময় উত্তরের সভাপতি বজলু বলেন যে, সাদিক খান সাহেব থাকার দরকার নেই। তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আসবো। কিন্তু তখনও দারোয়ান গেইট খোলেনি। জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং ঢাকা উত্তরের সভাপতি প্রায় ৪০ মিনিট সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে চলে আসেন। আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য যখন খালেদা জিয়ার মতোই আচরণ করেন তখন তাকে কি বলবেন?

সাদেক খান   ঢাকা-১৩   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন   জাহাঙ্গীর কবির নানক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন