দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মরিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দীর্ঘকাল ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে আরও সহিংস হয়ে উঠেছে। হরতাল-অবরোধে চালিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে চাইলেও দেশজুড়ে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। কারণ, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বেশিরভাগই নানান অপরাধে জড়িত, যারা সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার পরিপন্থি।
জানা যায়, মামলা, গ্রেপ্তার এবং আদালতের সাজায় বড় নেতৃবৃন্দ রাজনীতির মাঠের বাইরে রয়েছেন। এরমধ্যে গত রোববার এবং সোমবারেই পুরোনো মামলায় ১৪০ জনের সাজা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। ২৮ অক্টোবরের সহিংসতায়ও রাজধানীতে থাকা শীর্ষ নেতাদের নামেও হয়েছে মামলা। যোগ্য প্রার্থীর সংকট এবং আইনি জটিলতার কারণেই বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, সংবিধান লঙ্ঘনে মামলা, সাজাসহ ফৌজদারি দন্ডে দণ্ডিতদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের দফা (১) এ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নিয়ে বলা হয়েছে। সেখানে অযোগ্যতারও কিছু শর্ত রয়েছে যা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ তে উল্লেখ করা হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ (আরপিও) তে ১২ এর (১) এর (ঘ) অনুযায়ী, ‘সংবিধানের ৭৩, ৭৪, ৭৮, ৭৯ ,৮০, ৮১, ৮২, ৮৩, ৮৪ ও ৮৬ অনুচ্ছেদ এর অধীন কোন অপরাধে অপরাধী হইয়া অন্যুন দুই বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত হইয়া থাকেন এবং তাহা হইতে মুক্তি লাভের তারিখের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়’ তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। ফৌজদারি অপরাধে মামলা হলেও তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।‘
গত কয়েকদিনে রাজধানীতে নাশকতার অভিযোগে হওয়া পৃথক সাত মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ সহ অঙ্গসংগঠনের ১৪০ জন নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত। বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মো. হাবিবুর রহমান হাবিব; এমনকি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও শীর্ষ নেতাদের অভাবে মনোনয়ন কিংবা সংলাপ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে দলটি। কারণে, প্রায় সকলেই মামলাজটে জর্জরিত।
গত ২৮ অক্টোবর পুলিশ সদস্য খুন, নাশকতা, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও হাসপাতালে হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায়ও বিপুল সিনিয়র নেতাকর্মী অগোচরে। এদের মধ্যে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বাইরে রয়েছেন। কিন্তু, তার নামেও রয়েছে মামলা। তিনি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অবরোধ-হরতাল ঘোষণা করে চলেছেন। তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে অগ্নিসংযোগ-ভাংচুর চালাচ্ছেন। এতে তাদের নামেও মামলা হচ্ছে। একদিকে মামলা এবং আইনি জটিলতায় বিএনপির সিনিয়র নেতারা বিচারাধীন, অন্যদিকে তৃণমূল ব্যস্ত নাশকতায়। সব মিলিয়ে দ্বাদশ নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে শীর্ষস্থানীয় দলটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
সাইবার যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কোটা আন্দোলন তথ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গ্রেপ্তার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার তারেক জিয়া নাশকতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।