ইনসাইড পলিটিক্স

ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীরা?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয় স্বজনরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তকে ভ্রুকুটি দেখিয়ে আওয়ামী লীগের শতাধিক মন্ত্রী-এমপির আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে।

 প্রথম দফা উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর দেখা গেছে, ১৫০ টি উপজেলার মধ্যে অন্তত ৩৭ টিতে সরাসরি আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয় স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন। দ্বিতীয় দফা, তৃতীয় দফাতেও বিপুল সংখ্যক আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সেটি এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। 

আওয়ামী লীগ আগামী ৩০ এপ্রিল এই বিষয়টি নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকেছে। সেই বৈঠকে এদের ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক সময়ের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে ধারণা করা যায় যে, আওয়ামী লীগের যারা সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তাদের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে পারবে না। আইনের নানা ফাঁকফোকর দিয়ে তারা বেরিয়ে যাবেন বলেও অনেকের ধারণা। কারণ আওয়ামী লীগ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই সিদ্ধান্তটির মধ্যে অনেক ফাঁকফোকর রয়েছে। বিশেষ করে স্বজনদের প্রার্থী করা যাবে না- এই ঘোষণার পর কতগুলো শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। যেমন- যারা এখন উপজেলা চেয়ারম্যান আছেন, তারা প্রার্থী হতে পারবেন। যারা আওয়ামী লীগ বা অন্য কোন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদে আছেন, তাদেরকে স্বজন হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না ইত্যাদি নানা ফাঁক আবিষ্কার হচ্ছে এবং এই ফাঁকগুলো দিয়ে শেষ পর্যন্ত যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা প্রার্থী দিয়েছেন, তারা বেরিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

যেমন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ড. আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি গতবার উপজেলা নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন এবং বিজয়ী হয়েছেন। তিনি যখন গতবার উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন, এবারও তিনি প্রার্থী হতে পারেন। এতে কোন অসুবিধা নেই বলেই আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক জানিয়েছেন। আর ড. রাজ্জাককে বাঁচানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অন্তত ১৭ জন বেঁচে যাচ্ছেন। যারা এখন মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজন কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে তারা প্রার্থী হয়েছেন। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন যে, আওয়ামী লীগের যে সমস্ত স্বজনরা নিজ যোগ্যতায় দলের বিভিন্ন পদে আছেন, তাদেরকে স্বজন হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন যে, এরা নিজের যোগ্যতায় দলের পদ নিয়েছে, নিজেরাই দলে নেতৃত্ব পেয়েছে। এখানে পরিবারের বা মন্ত্রী এমপিদের কোন ভূমিকা ছিল না। আর একারণেই হবে তারা যদি নিজ পরিচয়ে প্রার্থী হন তাহলে সেটাকে সংগঠন বিরোধী তৎপরতা হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। 

আওয়ামী লীগের নোয়াখালীর এমপি মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, সন্তান যদি সাবালক হয় তাহলে তার একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আছে। একই রকম মনোভাব ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। শাজাহান খানের ছেলে সেখানে সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আর এ কারণেই এ সমস্ত ব্যক্তিরা শেষ পর্যন্ত কোন শাস্তির কোপানলে পড়বে কিনা সেটি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আবার আওয়ামী লীগের মধ্য থেকে কেউ কেউ বলেছেন যে, স্বজনরা যখন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটিতে ছিল তখন তাদেরকে বাঁধা দেয়া হয়নি। যিনি জনপ্রিয় তিনি প্রার্থী হবেন, তিনি স্বজন না দুর্জন সেটি বিবেচনার বিষয় নয়। এ সমস্ত নানা যুক্তির মারপ্যাচে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীরা পার পেয়ে যাবে বলে অনেকে মনে করছেন।

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সৌদিতে ফখরুল-ফালুর রুদ্ধদ্বার বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে তোলপাড়

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সস্ত্রীক সৌদি আরবে গেছেন। সেখানে তিনি ওমরাহ পালন করার জন্য গেছেন বলেও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আগামী ৮ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে ওমরাহ’র ফাঁকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে এক সময়ের বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এবং বেগম জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি মোসাদ্দেক আলী ফালুর বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সৌদি আরবে অবস্থানরত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সেই বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রীও ছিলেন।

তবে সৌদি আরবের প্রবাসী বিএনপির নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন যে, যেহেতু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরব সফরে গেছেন এবং যেহেতু তিনি মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠ পূর্বপরিচিত ও রাজনৈতিক সহকর্মী, সে কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সপরিবারে নৈশভোজে দাওয়াত দিয়েছিলেন। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ফালুর বৈঠক লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া ইতিবাচকভাবে দেখছেন না। তারেক জিয়ার সঙ্গে ফালুর বিরোধের খবর বিএনপিতে অজানা নয়। বিশেষ করে তারেক জিয়ার অনাগ্রহ এবং আপত্তির কারণেই মোসাদ্দেক আলী ফালু রাজনীতি ছেড়েছেন বলেই অনেকে মনে করেন।

মোসাদ্দেক আলী ফালু ছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার দেহরক্ষী। পরে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় এবং সেই ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরেই ১৯৯১ সালে বেগম জিয়া ক্ষমতায় আসার পর তাকে একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন। একান্ত সচিব হলেও ক্ষমতাকেন্দ্রে মোসাদ্দেক আলী ফালু তখন থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন।

অনেকেরই ধারণা যে, বেগম খালেদা জিয়ার যে অবৈধ সম্পদ তার একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে মোসাদ্দেক আলী ফালু। মোসাদ্দেক আলী ফালু বাংলাদেশে এনটিভির মালিক। আইএফআইসি ব্যাংকে তার শেয়ার রয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কিছু শিল্প কলকারখানায় তার বিনিয়োগ রয়েছে। এই সমস্ত বিনিয়োগের অর্থ বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে পাওয়া বলে একাধিক সূত্র দাবি করে। যদিও এ ব্যাপারে মোসাদ্দেক আলী ফালু সবসময় অস্বীকার করে আসছিলেন।

এক এগারোর সময় দুর্নীতির অভিযোগে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং এই মামলাগুলো যখন বিচারিক আদালতে ওঠে তখন ফালু পালিয়ে সৌদি আরবে যান। এখনও তিনি সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।

এর মধ্যে বিএনপিতেও তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায়। তারেক জিয়া যখন বিএনপিতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন, তখন মোসাদ্দেক আলী ফালুকে অপাংক্তেয় করা হয়। তাকে একটি অসম্মানজনক পদ দেওয়া হয়েছিল সর্বশেষ কাউন্সিলে। এই পদ প্রাপ্তির পর মোসাদ্দেক আলী ফালু অভিমান করেন এবং তিনি বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পদত্যাগ করেন। যদিও ফালুর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এখনও খালেদা জিয়ার সমর্থকরা এবং তারেক জিয়া বিরোধীরা নিয়মিত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিভিন্ন নেতা কর্মীদের বিপদে আপদে তিনি সহযোগিতা করেন বলেও জানা গেছে।

ফালুর একটি আলাদা প্রভাব বলয় রয়েছে বিএনপিতে। সাম্প্রতিক সময়ে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যখন বিএনপির অনেকেই সোচ্চার, বিশেষ করে তার অদূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন, তখন অনেকেই নতুন করে ফালুর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ব্যয় ছাড়াও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ মোসাদ্দেক আলী ফালুই করে থাকেন বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করে।

আর এই কারণেই বিএনপিতে ফালু না থেকেও আছেন। ফালু এখনও বিএনপিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী বলেই অনেকে মনে করেন। আর এ কারণেই তারেক জিয়ার চক্ষুশূল মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠক নতুন করে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন তারেক জিয়ার উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। আর একারণেই ফালুর সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠতা তিনি ঝালাই করে নিলেন।

তবে অনেকেই মনে করেন যে, এটি একটি স্রেফ সৌজন্য সাক্ষাৎ। বিদেশে গেলে নিকটজনের সাথে সাক্ষাৎ করলে একটা অন্যরকম আমেজ পাওয়া যায়। সেজন্যই ফালুর সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হয়েছিলেন মির্জা ফখরুল।


তারেক জিয়া   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   মোসাদ্দেক আলী ফালু   বিএনপি   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে স্বজনদের নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা: নেপথ্যে নোয়াখালীর রাজনীতি?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনগুলোতে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে একটি নির্দেশনা জারি করেছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই নির্দেশনাটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাতে গোনা দু একজন ছাড়া অধিকাংশই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই নির্দেশনা শোনেননি।

এরপর গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আত্মীয় স্বজনের বিষয়টি ব্যাখ্যা দেন এবং এ ব্যাপারে তার অবস্থান তিনি জানিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যায় দেখা যায় যে, আত্মীয় স্বজন বলতে তিনি মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদের কথাই বুঝিয়েছেন এবং তারা যেন একই পরিবার থেকে সবগুলো জায়গায় প্রার্থী না হন সেরকম একটি বার্তা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। এটি একটি সতর্কবার্তার মত, কোন নিষেধাজ্ঞা নয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কেন ইস্যুটিকে জমিয়ে তুলেছিলেন এবং এ নিয়ে তিনি কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, এর পিছনে নোয়াখালীর রাজনীতি কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওবায়দুল কাদেরকে এই আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না- এ বিষয়ে অত্যন্ত সরব এবং সক্রিয় দেখা গেছে। এটির নেপথ্যের কারণ জাতীয় রাজনীতির চেয়ে নোয়াখালীর রাজনীতি বেশি বলেই বিভিন্ন মহলের ধারণা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জাতীয় নেতা এবং আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু নোয়াখালীর রাজনীতিতে তিনি অনেকটাই কোণঠাসা। নোয়াখালীর রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী একরামুল করিম চৌধুরী। একরামুল করিম চৌধুরী তার ছেলেকে এবার নির্বাচনে প্রার্থী করেছিলেন। তার ছেলে যদি উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় তাহলে একরামুল করিম চৌধুরীর পরিবারের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হবে নোয়াখালীতে। এরকম একটি শঙ্কা থেকে ওবায়দুল কাদের চাননি যে, একরামুল করিম চৌধুরীর পুত্র উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হোক। তার প্রার্থীতার ঠেকানোর জন্যই কি আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী না করার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উদ্যোগী হয়েছিলেন, অনেকেই এখন এই প্রশ্নটাই করছেন।

তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, বিষয়টি তেমন নয়। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন এবং বিভিন্ন স্থানে মাই ম্যানদেরকে প্রার্থী করছেন। আবার কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা তাদের নিজের আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী করে এলাকায় নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এর বিরোধীতার জন্যই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অবস্থান নেওয়া হয়েছে।

তবে নোয়াখালীর রাজনীতির জটিল সমীকরণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, একরামুল করিম চৌধুরী প্রার্থী হওয়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই এবং তার আরেকজন নিকটতম আত্মীয় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। যদিও তার ভাইয়ের মনোনয়ন ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে।

কিন্তু নোয়াখালীর রাজনীতিতে ওবায়দুল কাদের এবং একরামুল করিম চৌধুরীর বিরোধ নতুন নয়। এর আগেও ২০০১ সালে এ বিরোধ প্রকাশ্য ছিল এবং সেই সময় একরামুল করিমের বিরোধীতার কারণে ২০০১ এর নির্বাচনে ওবায়দুল কাদের প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আমাদের কাছে পরাজিত হন। এখনও ওবায়দুল কাদেরের জন্য একরামুল করিম একটা বড় ফ্যাক্টর।

তাহলে কি একরামুল করিমের নোয়াখালীতে আধিপত্য ঠেকানোর জন্যই আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে দাঁড়ানো যাবে না এমন একটা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছিল? অবশ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোন ব্যক্তিকে ঠেকানোর জন্য নয়, এটি আওয়ামী লীগের একটি নৈতিক এবং নীতিগত অবস্থান।


ওবায়দুল কাদের   রাজনীতি   সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী   আওয়ামী লীগ   একরামুল করিম চৌধুরী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

চেয়ারম্যান হয়ে অনেকে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

পঞ্চগড় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে পৌনে চার লাখ টাকার সম্পদের মালিক ছিলেন। সদর উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে তিনি সাত কোটি ১৭ লাখ টাকার সম্পদের অধিকারী হয়েছেন। শুধু আমিরুল ইসলাম নন, দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ থেকে নির্বাচিত অনেক চেয়ারম্যানই গত পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাঁদের সম্পদ বেড়েছে শতগুণেরও বেশি।

চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে প্রদর্শিত সম্পদের চেয়ে প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ আরো অনেক বেশি বলে অভিযোগ রয়েছে। এই চেয়ারম্যানরা আবারও এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই নির্বাচন প্রভাবিত করতে অর্থ ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।

অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যানদের অনেকে বলছেন, তাঁরা বৈধভাবে ব্যবসা করে এ সম্পদের মালিক হয়েছেন। চেয়ারম্যান থাকাকালে তাঁরা কোনো অন্যায় কাজে যুক্ত হননি।

জানতে চাইলে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, নির্বাচিত হলেই ধনী হওয়ার একটা সোপানে পা দেওয়া যায়। রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান জনপ্রতিনিধিরা।

উপজেলা চেয়ারম্যানদের বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলো এর প্রমাণ।

 আতার অর্থ বেড়েছে ১৭৬ গুণ, রয়েছে দুদকের মামলা

কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এবারও তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। গত পাঁচ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালে তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিপুল হারে বেড়েছে।

হলফনামার তথ্যানুসারে, ২০১৯ সালে আতার নগদ টাকা ছিল পাঁচ লাখ এবং ব্যবসার জামানত ছিল ৭২ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

বর্তমানে তাঁর ব্যাংকে জমা ও নগদ অর্থের পরিমাণ সাত কোটি ২৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া এফডিআর রয়েছে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকার। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে আতার অর্থ বেড়েছে ১৭৬ গুণ। এ ছাড়া পাঁচ বছর আগে তিনি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেট কারের মালিক ছিলেন। বর্তমানে তাঁর রয়েছে ৯০ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাডো গাড়ি।

আতার অস্থাবর সম্পদের পাশাপাশি স্থাবর সম্পদও বেড়েছে। ২০১৯ সালে তাঁর স্থাবর সম্পদ ছিল ৬৯ লাখ ৮২ হাজার টাকার। বর্তমানে তিনি সাত কোটি ১৪ লাখ ৬১ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক। গত ১১ মার্চ আতাউর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সাম্মিয়া পারভীনের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে মামলা করেছে দুদক। ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা ওই মামলায় তাঁরা এখন জামিনে আছেন।

এ বিষয়ে আতাউর রহমানের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

চেয়ারম্যান হয়ে কোটিপতি আমিরুল

২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো পঞ্চগড় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন আমিরুল ইসলাম। ওই সময় দাখিল করা নির্বাচনী হলফনামা অনুসারে তাঁর স্থাবর সম্পদ ছিল তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকার। এর মধ্যে ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ২.৫ একর কৃষিজমি এবং একটি হাসকিং মিল ও সংলগ্ন বাড়ির মূল্য তিন লাখ টাকা। তিনি আবারও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা অনুসারে বর্তমানে তাঁর স্থাবর সম্পদের পরিমান সাত কোটি ৭৫ লাখ টাকা। গত পাঁচ বছরে তাঁর সম্পদ বেড়েছে ১৯১.২০ গুণ।

হলফনামা অনুসারে বর্তমানে আমিরুল ইসলামের পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের পঞ্চগড় পৌরসভার তেলিপাড়া ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় বিসিক শিল্পনগরীতে পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির কারখানা, ৮৮ লাখ টাকা মূল্যের ৫৭ শতক বসতভিটা, এক কোটি ২৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি ডুপ্লেক্স ভবন, চার লাখ টাকা মূল্যের একটি টিনশেড ভবন এবং পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১.৩১ একর জমি রয়েছে।

স্থাবর সম্পদের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অস্থাবর সম্পদও বেড়েছে আমিরুল ইসলামের। ২০১৯ সালের হলফনামা অনুসারে তিনি ২০ লাখ ২০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক ছিলেন। বর্তমানে তিনি এক কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক।

হলফনামা অনুসারে, ২০১৯ সালে আমিরুল ইসলামের বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ৩৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

জানতে চাইলে আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক থেকে আমার একটি বড় ঋণ নেওয়া আছে। এ ছাড়া গরুর খামার, অটো ব্রিকস ফ্যাক্টরি, রাইস মিল ইত্যাদির মাধ্যমে আমি এসব সম্পদ গড়েছি। আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই।’

মুকুল ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান মুকুল এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৯ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে মুকুলের নিজের ও স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ। ২০১৯ সালে মুকুলের নগদ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা থাকা টাকার পরিমাণ ছিল এক লাখের কিছু বেশি। বর্তমানে তা কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

হলফনামার তথ্যানুসারে, ২০১৯ সালে জিয়াউল হাসান মুকুলের নগদ অর্থ ছিল ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ছয় হাজার ৬৮৫ টাকা। ২০১৯ সালে তাঁর স্ত্রী রেখা আক্তার বানুর হাতে নগদ কোনো টাকা না থাকলেও বর্তমানে তাঁর হাতে রয়েছে চার লাখ ২৬ হাজার ৩৪৪ টাকা। ২০১৯ সালে মুকুলের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৮৫ হাজার ৭৫৩ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। সে হিসাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১০৫ গুণ।

জানতে চাইলে জিয়াউল হাসান মুকুল বলেন, ‘আইনজীবীর ভুলে ২০১৯ সালের সঙ্গে ২০২৪ সালের হলফনামার তথ্যে গরমিল দেখা দিয়েছে। আসলে আমার এত সম্পদ নেই।

সম্পদ বেড়েছে আরো যেসব উপজেলা চেয়ারম্যানের

হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের অর্থ-সম্পদের পরিমাণ বিপুল বেড়েছে।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবু, রাঙামাটির কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামশুদ্দোহা চৌধুরী, সিরাজগঞ্জের একাধিক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ময়মনসিংহ ফুলপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউল করিম রাসেল, বগুড়া সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান, বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর এবং সিরাজগঞ্জের একাধিক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গত পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।


হলফনামা   তথ্যা   চেয়ারম্যান   সম্পদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা আজ

প্রকাশ: ১০:২৫ এএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা আজ সোমবার বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সভা ডাকা হয়েছে।

রবিবার (৫ মে) আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সৃভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।


আওয়ামী লীগ   সম্পাদকমণ্ডলী   সভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আন্দোলন ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার

প্রকাশ: ০৯:০৩ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

২৬ এপ্রিল রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। এরপর একই দিনে আওয়ামী লীগও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে পাল্টা সমাবেশের ঘোষণা দেয়। তবে প্রকৃতির বৈরি আচরণের কারণে আপাতত পিছু হঠছে বিএনপি। চলমান তাপদাহ ও হিট অ্যালার্টের কারণে এই সমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত করেছে দলটি।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। এর মধ্য দিয়ে আবার সরকার পতন আন্দোলন শুরু করার পরিকল্পনা ছিল দলটির। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পরও আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণার অংশ হিসেবেই এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। 

দলের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলমান তাপদাহ কমে এলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্থগিত হওয়া সমাবেশ কর্মসূচি করবে বিএনপি। একই সঙ্গে চলমান বিভিন্ন সংকট বিশেষ করে লোডশেডিং ইস্যুতে আন্দোলন করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। ইতোমধ্যে জাতীয় নির্বাচন বর্জনের মতো উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে লিফলেট বিতরণ শুরু করেছে বিএনপি। এভাবে ধীরে ধীরে জনসংযোগ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে দলটি। তবে অতীতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনকে স্বাগত জানানো হলেও এবার তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যখন বিভিন্ন ইস্যুতে বিশেষ করে লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুতের দাম ইত্যাদি ইস্যুতে আন্দোলনে স্বাগত জানিয়েছিল সরকার। তবে এবার সরকার হয়তো কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে এমন ধারণা কারও কারও। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে এ ধারণা করা হচ্ছে।

সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সেদিন বলেছিলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর আমি পুলিশকে ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম। অথচ ধৈর্য ধরতে গিয়ে তাদেরই মার খেতে হয়েছে। তাদের হাসপাতালে আক্রমণ করা হয়েছে, গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। তো আমার মনে হয় আমাদের পুলিশ এখন আমেরিকান স্টাইলে আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থাটা চাইলে গ্রহণ করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে দেশের বাইরে বসেও আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে, নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করে করুক, তাতে আমরা বাধা দিচ্ছি না। এখন আন্দোলন দমাতে আমেরিকান স্টাইল ফলো করা যেতে পারে। আমেরিকান পুলিশ যেভাবে আন্দোলন ও আন্দোলনকারীদের দমন করে, আমার মনে হয় আমাদের দেশের পুলিশ তা অনুসরণ করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে কিনা সেটিও একটি বড় প্রশ্ন। এখন দেখার বিষয় বিরোধী দলগুলো সেরকম আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে কিনা আর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে সেক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা কী হয়।

আন্দোলন   সরকার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন