উপজেলা নির্বাচনে যারাই প্রার্থী হবে তাদেরকেই বহিষ্কার করা হবে। তারেক জিয়ার এই নির্দেশনার বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। হেভীওয়েট নেতারা বলছেন, এধরনের সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক এবং ঢালাওভাবে এধরনের সিদ্ধান্ত দলকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে। বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী, বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদেরকে দলের সিনিয়র নেতারা আশ্বস্ত করেছেন এ বিষয়টি তারা দেখবেন। আর এই আশ্বাসের কারণেই উপজেলা নির্বাচন থেকে বিএনপির প্রার্থীরা সরে যাচ্ছেন না। তারা বুঝতে পেরেছেন এ সিদ্ধান্তটি পুনঃবিবেচনা করা হবে পুর্নমূল্যায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গীরাও তারেকের ওপর বিরক্ত
প্রথম দফায় বিএনপির ৬৩ জন
স্থানীয় পর্যায়ের নেতা উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে মাত্র
৫ জন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেন। দ্বিতীয় দফায় বিএনপি থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া
প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৭৩ জন। তাদের মধ্যে থেকে মাত্র ৩ জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।
আর তৃতীয় দফায় বিএনপির ৬৮ জন স্থানীয় পর্যায়ের নেতা উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন।
অন্যান্য নির্বাচনগুলোতে যেমন
বিএনপি নেতাদের হুমকির পর পরই প্রার্থীরা তাদের মনোন য়ন প্রত্যাহার করেন, এবার তা হচ্ছে
না। দলের নির্দেশনা অমান্য করেই উপজেলা নির্বাচনের মাঠে বিএনপির প্রার্থীরা রয়েছেন।
এর পেছনে একটি বড় কারণ হচ্ছে, আওয়ামী লীগের বিভক্তি। বিএনপির যারা প্রার্থী হয়েছেন
তারা মনে করছেন, এই নির্বাচন তাদের মধ্যে একটি সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে। নির্বাচনে
নানা প্রতিকূলতার মধ্যে প্রার্থী হিসেবে বহাল থাকতে পারলে তাদের জন্য জয় সহজ হবে বলে
অনেকেই মনে করছেন। এই কারণেই দলের নির্দেশনা অমান্য করছেন।
আবার কেউ কেউ ভিন্ন চিন্তা থেকে নির্বাচন করছেন। তারা মনে করছেন যে, একের পর এক নির্বাচন বর্জনের কারণে নেতা-কর্মীদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে, সংগঠন দূর্বল এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরকম বাস্তবতায় যদি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যায় তাহলে কর্মী সমর্থকদের কাছে যাওয়া যাবে। দল সংগঠতিত করার জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। আর এই সুযোগ সৃষ্টি করতেই তারা উপজেলা নির্বাচন করছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির সরব নেতারাও এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন
বিভিন্ন প্রার্থীরা জানিয়েছেন, যখন তাদেরকে বহিষ্কারাদেশ পাঠানো হয়েছে তখনই তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। একাধিক প্রার্থী দাবী করেছেনে, তারা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কথা বলেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদের প্রতি নমনীয় এবং সহানুভূতিশীল বলে দাবী করেছেন অন্তত ৩ জন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দাড়ানো প্রার্থী। দলের মহাসচিব তাদেরকে বলেছেন, ঠিক আছে, নির্বাচন করে জিতে আসুন তারপর দেখা যাবে।
আরও পড়ুন: খালেদার বিদেশে চিকিৎসা: পর্দার আড়ালে কী হচ্ছে?
অন্যদিকে কয়েকজন নেতা রুহুল
কবির রিজভীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তবে, রুহুল কবির রিজভী তাদেরকে মোটেও উৎসাহিত
করেননি। কয়েকজন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং মির্জা আব্বাসের সঙ্গে
যোগাযোগ করেছিলেন। তারা দুজনই তাদেরকে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশনা
দেন। যদি তারা মনে করেন, তারা নির্বাচনে জয়ী হবেন তাহলে তারা নির্বাচন করতে পারেন এমন
বার্তা দেওয়া হয়েছে অনেক নেতাকে।
আর একারনেই উপজেলা নির্বাচন
থেকে বিএনপি প্রার্থীরা সড়ে যাচ্ছেন না। তারা মনে করছেন যে, নির্বাচনে যদি ভালো ফলাফল
পাওয়া যায়, তাহলে শেষ পর্যন্ত তাদেরকে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
বিএনপি তারেক রহমান মির্জা ফখরুল মির্জা আব্বাস রুহুল কবির রিজভি
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।