ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন: ভোটার খরায় সম্পন্ন প্রথম ধাপ

প্রকাশ: ১০:০১ এএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথমধাপের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল বুধবার (৮ মে)। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও বর্জন করেছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। নির্বাচন অনেকটা আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ফলে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটের মূল বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়ায় ভোটারের খরা।

বুধবার (৮ মে) অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু সংঘাতের খবর পাওয়া গেছে। জাল ভোট দেওয়া, জবরদস্তি এবং ভোট কিনতে টাকা বিলানো, মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তার এসবের অভিযোগও ছিল।

মাদারীপুর সদর, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, সুনামগঞ্জের শাল্লা, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কিছু কেন্দ্রে সংঘর্ষ এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় বোমাবাজি, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। ভোটে অনিয়মের অভিযোগে বগুড়ায় দুই সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ওই জেলার আরেক কেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ দুজনকে আটক করা হয়।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভোটের এদিনে রাত সাড়ে ১২টায় ১২২টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী প্রার্থীদের নাম জানা গেছে। তাদের মধ্যে ১০১ জনই আওয়ামী লীগের।

দেশে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে ৪৪টি। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ মিলিয়ে জাতীয় পার্টি, জেপি, জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি—এই চারটি দলের মোট ১২ জনের মতো দলীয় প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ এবার তাদের কোনো প্রার্থীকে দলীয় প্রতীক না দিলেও প্রতিটি উপজেলায় দলটির একাধিক নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রচারে উত্তেজনা ও প্রভাব বিস্তারের যে তথ্য ভোটের আগে ছিল, এর প্রায় সবগুলোর সঙ্গেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের নাম এসেছে।

গতকাল বুধবার (৮ মে) প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। ৮ চেয়ারম্যানসহ ২৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। তাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থক। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ উপজেলা ভোটের প্রথম পর্ব নিয়ে অখুশি নয়।

দলটির নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলবিহীন ভোটে ৪০ শতাংশ ভোট পড়লেই তারা সন্তুষ্ট থাকবেন। বরং ভোটের দিন বড় সংঘাত, প্রাণহানি হয়নি এটাই বড় সাফল্য। পরের পর্বগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।

ভোট গ্রহণ শেষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটের হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে হতে পারে বলে প্রধান নির্বাচন। নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। এমন ৩৪টি ঘটনায় ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে।

এর আগে, নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রথম চার ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ভোট পড়ে থাকতে পারে। আর প্রথম দুই ঘণ্টার হিসাব জানিয়ে বলা হয়েছিল, ৭ থেকে ৮ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে।

ভোটারের কম উপস্থিতির ব্যাখ্যায় সিইসি বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছে অনেকেই ধান কাটতে থাকায় ওরা ভোট দিতে আসেননি। সকালে বেশ কিছু জায়গায় ঝড়–বৃষ্টি হয়েছে, এটা একটা কারণ হতে পারে।’ ভোটের হার নিয়ে সন্তুষ্ট কি না, এমন প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করতে চাননি সিইসি।

উপজেলা নির্বাচনের ইতিহাস বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথম চারটি নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছিল। সেগুলোতে ভোটারের উপস্থিতিও ছিল বেশি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে। সেবার ভোট পড়ে ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ। এবারও বিএনপি, জামায়াত, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ইসলামী আন্দোলনসহ গুরুত্বপূর্ণ দলগুলো ভোট বর্জন করেছে।

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি বিরোধী দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটার উপস্থিতি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে প্রথমবারের মতো দলীয় সিদ্ধান্তে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র ভোট করার সুযোগ দেয় আওয়ামী লীগ।

ইসির হিসাবে, জাতীয় নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ। এই নির্বাচনের চার মাসের মাথায় উপজেলা নির্বাচন শুরু হলো। চার ধাপে ৪৫০টির মতো উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। সর্বশেষ ধাপের ভোট হবে ৫ জুন।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনে ৩০-৪০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি সন্তোষজনক। অনেকের আশঙ্কা ছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচন খুনোখুনি–মারামারির মাধ্যমে সমাপ্ত হবে। প্রাণহানি ছাড়া একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে।

২০১৯ সালে প্রথমবার দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি ছিল ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ। সেবার পাঁচ ধাপে উপজেলা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটারদের নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত বলে তখন জাতীয় সংসদে বলেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা।

এর আগে, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬১ শতাংশের মতো। সে বছর ছয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন হয়। দেড় দশক আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি তৃতীয় উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। অর্থাৎ গত দুই নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে কমেছে।

২০১৯ সালে প্রথমবার বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে। এর আগের নির্বাচনগুলোতে দলটির নেতারা অংশ নিয়েছিল। এরপর থেকেই ভোটারের উপস্থিতি কমতে থাকে। এবার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির ৭৫ জন অংশ নিয়েছেন। তাদের দল থেকে বহিষ্কারও করেছে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের শরিকদের বেশির ভাগেরই উপজেলা ভোটে কোনো তৎপরতা দেখা যায় না। দু-একটা দলের স্থানীয় নেতারা কিছু কিছু উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৪–দলীয় জোটের একটি শরিক দলের শীর্ষ নেতা বলেন, অর্থ, প্রভাব, পেশিশক্তি ও লোকবল—এসব বিবেচনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভোটযুদ্ধে নামার মতো শক্তি তাঁদের নেই। এ ছাড়া প্রশাসন আওয়ামী লীগের নেতা ছাড়া অন্যদের খুব একটা পাত্তাও দেয় না। ফলে শুধু শুধু ভোটে নেমে লাভ কী?

এদিকে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ উপজেলা ভোটের প্রথম পর্ব নিয়ে অখুশি নয়। দলটির নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলবিহীন ভোটে ৪০ শতাংশ ভোট পড়লেই তারা সন্তুষ্ট থাকবেন। বরং ভোটের দিন বড় সংঘাত, প্রাণহানি হয়নি—এটাই বড় সাফল্য। পরের পর্বগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, এখন ৪০ শতাংশ ভোটই একটা রীতিতে পরিণত হয়েছে। ভোটে প্রাণহানি এড়ানোই বড় সাফল্য মনে করেন তারা।

বুধবার (৮ মে) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নির্বাচনে ৩০-৪০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি সন্তোষজনক। অনেকের আশঙ্কা ছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচন খুনোখুনি–মারামারির মাধ্যমে সমাপ্ত হবে। প্রাণহানি ছাড়া একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে’।

তবে নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, উপজেলার এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেও ভোট নিয়ে মানুষের মধে৵ আস্থার সংকট রয়েছে। সে কারণে স্থানীয় সরকারব্যবস্থার নির্বাচনেও ভোটারের উপস্থিতি কম।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একসময় বাংলাদেশের নারীদের দল বেঁধে ভোট দেওয়ার ঘটনা বিশ্বে খবর হতো। এখন আস্থাহীনতার কারণে ভোটার আসে না। কারণ, ভোট দিতে পারবে কি না, দিলে সঠিকভাবে গণনা হবে কি না এবং ফলাফল পাওয়া যাবে কি না, সেই আস্থাহীনতা আছে।

তিনি আরও বলেন, বিরোধী দলগুলোর নির্বাচন বর্জনও ভোটার কমিয়ে দিয়েছে। মূলত নির্বাচন কমিশন ও ভোট-ব্যবস্থার ওপর আস্থাহীনতার কারণে দলগুলোও ভোট বর্জন করছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য দুঃসংবাদ।


উপজেলা নির্বাচন   ভোটার খরা   ইসি   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছে আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।

সাম্প্রিতক সময়ে আবারও মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এবং বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। যদিও এটিই তাদের প্রথম নয়। এর আগে এই দুই নেতার মধ্যে মার্কেট, অনিয়ম-দুর্নীতি ও সিটি করপোরেশনের টাকা রাখা নিয়ে বাকযুদ্ধ হয়েছিল। এবার তারা মুখোমুখি হয়েছেন ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে। গত বুধবার মেয়র তাপস দাবি করেন, ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী কমেছে। এর পাল্টা প্রতিউত্তরে শনিবার মিট দ্য প্রেসে সাংবাদিকদের ডেকে খোকন বলেন, বর্তমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০১৯ এর তুলনায় ২০২৩ সালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪১ হাজার কম। আমি ভদ্রতার জন্য কারো নাম উল্লেখ করছি না। তবে এ ধরনের অপপ্রচার করা হলে আমি কষ্ট পাই, ব্যথিত হই। আমি এই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, আমি আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য, আমার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পাবলিকলি আমি যে কোন বক্তব্য দিতে পারি না, আমার জবাবদিহিতা রয়েছে। সাবেক এবং বর্তমান মেয়রের এই বাকযুদ্ধ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, আওয়ামী লীগ এখন ফ্রি স্টাইলে চলছে। দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙে গেছে।

তৃণমূলের কোন্দল আরও ভয়ঙ্কর। এই মুহূর্তে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না হতে নির্দেশনা দেওয়া হলেও প্রথম ধাপের মতোই এবার এই নির্দেশনা উপেক্ষিত। সামনে উপজেলা নির্বাচনের পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

বিভিন্ন স্থানে যেখানে জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন সেখানে তাদের মাইম্যানদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করছেন। আবার যারা স্বতন্ত্রদের কাছে পরাজিত হয়েছেন তারা তাদের প্রভাবপত্তি ধরে রাখার জন্য তাদের মাইম্যানদের প্রার্থী করছেন। এলাকায় নিজেদের হারানো অবস্থান পুনরুদ্ধারের জন্য উপজেলা নির্বাচনকে বেছে নিয়েছেন। এটা করতে গিয়ে লাগামহীন ভাবে একে অন্যের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো থেকে শুরু করে সহিংসতার ঘটনাও ঘটাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি লেজেগোবরে অবস্থা তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো যে, আওয়ামী লীগের যে অঙ্গ সহযোগী সংগঠন আছে তারাও এখন ক্রমশ বিভক্ত হয়ে পড়ছে। সবকিছু মিলিয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের কোন্দল। আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জন এখন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন আওয়ামী লীগেরই নেতাকর্মীদের দিয়ে। এ অবস্থা পরিত্রাণ পেতে আওয়ামী লীগ কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

আওয়ামী লীগ   মোহাম্মদ সাঈদ খোকন   ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরকে রিজভীর পাল্টা প্রশ্ন

প্রকাশ: ০৪:৩৩ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে এবার পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’— ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?

রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে রিজভী বলেন, এক মর্মান্তিক পরিস্থিতির মধ্যে দেশের মানুষ দিন অতিক্রম করছে। এখানে জীবন ও সম্পদের কোনো নিরাপত্তা নেই। জনগণের মনোভাব ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার একের পর এক পন্থা অবলম্বন করছে। মধুখালীতে শ্রমিকদের পিটিয়ে হত্যা এটি একটি পন্থা। এরা মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে না। এরা মানুষের লাশ ও রক্তপাতের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে ভালোবাসেন।

আওয়ামী লীগ গোটা জাতিকে একটি গোরস্তান বানানোর প্রক্রিয়ায় লিপ্ত উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আজ লাশ হচ্ছে জীবন্ত মানুষ। তার একটি ঘটনা মধুখালীতে। সরকার তার বহুমুখী ব্যর্থতা ঢাকতেই একের পর নাটক করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, শুধু ব্যাংক থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে। এটা আমার বক্তব্য না। এটা সিডিপির বক্তব্য। আমাদের জিডিপি ১২ শতাংশ নাই হয়ে গেছে। ৯২ হাজার কোটি টাকা শুধু ব্যাংক থেকে লোপাট হয়ে গেছে। লোপাটকারী সবাই ক্ষমতাসীন দলের লোক ও আত্মীয়-স্বজন।

রিজার্ভ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার উধাও করে দেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, এখন তলানিতে রিজার্ভ। সরকার বলছে, ১৩ বিলিয়ন ডলার আছে। অথচ যারা সচেতন মানুষ তারা বলছেন ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার আছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের ঋণ পরিশোধ করতে ৪ বিলিয়ন ডলার যাবে।

রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

আওয়ামী লীগ   সাধারণ সম্পাদক   ওবায়দুল কাদের   রুহুল কবির রিজভী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতা ইশরাক কারাগারে

প্রকাশ: ০৪:০৬ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন আদেশ দেন।

মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।


নাশকতা   মামলা   বিএনপি   ইশরাক হোসেন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘‌‌‌‍‍‍‍ব্যাংকে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?’

প্রকাশ: ০৩:৫৭ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?

রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।

রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।


‘‌‌‌ব্যাংক   মাফিয়া   মাস্তান   ঋণখেলাপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ: জিএম কাদের

প্রকাশ: ০৩:৪৬ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। 

রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।

তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।

জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।


দেশ   অর্থনৈতিক   জিএম কাদের  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন