গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বহিষ্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়ায় তিনি যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রথমে তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ এবং আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ হারান। এরপর তাকে গাজীপুরের মেয়র পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন তিনি গ্রেপ্তার হবেন এবং তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জাহাঙ্গীরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার কারণ হিসেবে দেখেছে দুর্নীতি, ভূমি দখল এবং ক্ষমতার অপব্যবহার। আর এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য জাহাঙ্গীরের ওই পদে থাকার প্রয়োজন নেই বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। আর এই সমস্ত অভিযোগগুলোর ব্যাপারেই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
তবে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা নিয়ে সরকারের মধ্যেই ভিন্নমত রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন যে, জাহাঙ্গীরকে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে সেটি যথেষ্ট এবং খুব কম আওয়ামী লীগের নেতা এরকম অপকর্মের জন্য এত বেশি শাস্তি পেয়েছেন। এরপর যদি তাকে গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে সেটি বাড়াবাড়ি হবে এবং সেক্ষেত্রে গাজীপুর আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ গাজীপুরে জাহাঙ্গীরের একটি ব্যাপক কর্মী বাহিনী রয়েছে। তবে এর ভিন্ন মতটি আওয়ামী লীগে এখন প্রবল। তারা মনে করছে জাহাঙ্গীরের মত হাইব্রিডরা আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করছে এবং আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য। আর এ কারণেই তারা মনে করছে যে, জাহাঙ্গীরকে যদি আইনের আওতায় না আনা হয় তাহলে ভবিষ্যতে আবার সে আওয়ামী লীগে ফিরে আসবে এবং নানা ছলেবলে-কৌশলে সে আবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব এবং আবার মেয়র হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করতে পারে। এজন্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনেকে আগ্রহী।
জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তিনি যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদদের সংখ্যা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ গুলো এসেছে সেই অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে কয়েকটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। তবে কখন কিভাবে এই মামলাগুলো হবে সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছেন যে, মামলার প্রক্রিয়া শুরু হলেই অনিবার্যভাবে জাহাঙ্গীর গ্রেপ্তার হবে এবং এ ব্যাপারে সরকার কোনো রকম ছাড় দিতে রাজি নয়। যদিও জাহাঙ্গীর এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলোকে অস্বীকার করেছেন এবং তিনি বারবার বলার চেষ্টা করছেন যে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। গতকাল তিনি একটি জনপ্রিয় দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো কে অস্বীকার করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে দাবি করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা বলছেন, এ ধরণের বক্তব্যগুলো আরো দায়িত্বজ্ঞানহীন, কারণ জাহাঙ্গীরকে বহিষ্কার করা হয়েছে সবকিছু জেনে যাচাই-বাছাই করে তারপর। অতএব এখানে ষড়যন্ত্রের কোন প্রশ্নই ওঠে না। জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ভূমি দখল ও আধিপত্য বিস্তার এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগগুলো আছে সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। অনেকেই নানারকম বাস্তবতার কারণে জাহাঙ্গীর ভয়ে এই অভিযোগগুলো উত্থাপন করেননি। কিন্তু এখন তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন এবং এদের পক্ষ থেকেই প্রথম মামলাগুলো হতে পারে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
সাইবার যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কোটা আন্দোলন তথ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গ্রেপ্তার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার তারেক জিয়া নাশকতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।