বেগম জিয়া ক্ষমা চাইবেন কি না এবং ক্ষমা চেয়ে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ নিবেন কিনা এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম বিতর্ক চলছে। আর এই বিতর্কের মধ্যেই বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য রাষ্ট্রপতির কাছে বেগম জিয়ার জন্য আবেদন করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি আইনজীবীর সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট অবনতি ঘটেছে। বিশেষ করে দুই দিন বন্ধ থাকার পর আবার তার রক্তপাত হচ্ছে বলেও বিভিন্ন সূত্র থেকে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এরকম পরিস্থিতিতে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার দাবিতে বিএনপির পক্ষ থেকে আন্দোলন করা হচ্ছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ, বেগম খালেদা জিয়া একজন দণ্ডিত আসামি এবং এ ধরনের দণ্ডিত আসামি বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পেতে পারে না। তবে শুক্রবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সরাসরিভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার একটি পথ খোলা আছে। সেটি হলো রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এরকম ক্ষমা প্রার্থনা করার প্রশ্নই আসে না। তবে বিএনপির আইনজীবীদের কেউ কেউ এবং তার পরিবারে কয়জন সদস্য রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা বিষয়টি ভিন্নভাবে চিন্তা ভাবনা করছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার একজন আইনজীবী বলেছেন, রাষ্ট্রপতির যে ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার সেটির জন্য কখনো দোষ স্বীকার বা ক্ষমা প্রার্থনার কথা বলা নাই। তিনি বলেন, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার দেয়া হয়েছে এবং সেই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যেকোনো দণ্ডের মার্জনা এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ স্থগিত রাখার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে। এই ক্ষমতাটা রাষ্ট্রপতির একক এখতীয়ারধীন ক্ষমতা বলে মনে করছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
তারা এই আইনটি প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো রকম ক্ষমা প্রার্থনা কিংবা দোষ স্বীকার করার বিষয়টি দেখছেন না। তারা মনে করছেন যে, এটি সরকার বলছে। যেকোনো ব্যক্তির দোষ স্বীকার না করেও ক্ষমা চাইতে পারেন বলে বিএনপিপন্থী আইনজীবীর কেউ ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তারা মনে করছেন, রাষ্ট্রপতি হলেন দেশের প্রধান ব্যক্তি। কাজেই প্রধান ব্যক্তির কাছে দেশের যেকোনো নাগরিকই যেকোনো সময় দণ্ড মওকুফের আবেদন করতে পারেন। দণ্ড মওকুফের আবেদন করলে রাষ্ট্রপতি সেই দণ্ড হ্রাস বা রহিত করার ক্ষমতা রাখে।
সম্প্রতি কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসকও রাষ্ট্রপতির কাছে দণ্ড হ্রাসের জন্য আবেদন করেছেন এবং সেই আবেদনে তিনি দোষ স্বীকার করেননি এবং নিজেকে অনুতপ্ত করেননি বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। বিএনপি নেতারা বলছেন যে, এটি রাষ্ট্রপতির একটি একক ক্ষমতা এবং রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় এই ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারেন। এই জন্য যিনি আবেদন করবেন তার ক্ষমা প্রার্থনা বা অনুতপ্ত হওয়ার কোন বিষয় জড়িত নেই। এভাবে ক্ষমা না চেয়ে এবং অনুতপ্ত না হয়ে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার একটি আবেদন করতে পারেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মন্তব্য করুন
নয়াপল্টন বিএনপি সমাবেশ ছাত্রদলের সংঘর্ষ
মন্তব্য করুন
ভিসা নিষেধাজ্ঞা আন্দোলন নির্বাচন বিএনপি
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন আওয়ামী লীগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের কয়েকজন নাগরিকদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের উল্লাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা জাতির জন্য লজ্জাজনক এবং এর জন্য শুধুমাত্র সরকার দায়ী। বিএনপির নেতাদের গতকালের কর্মসূচিতেই ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। তাদের মধ্যে একটা চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে বিএনপির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা এবং উৎকণ্ঠাও তৈরি হয়েছে।
মার্কিন ভিসানীতির পর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে নানামুখী আলাপ আলোচনা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব তাদের কাছে সুস্পষ্ট হচ্ছে। প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের নেতারা যাই বলুক না কেন তারা প্রকারান্তে এটা স্বীকার করছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনকে নিয়ে একটি আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করবে এবং নির্বাচনের আগে নানা রকম চাপ প্রয়োগ করবে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বশক্তি নিয়োগ করতে পারে বলেও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।
দেশে সংসদ সদস্যসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে রয়েছে ১০ হাজারের বেশি লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র। লাইসেন্সধারী এসব ব্যক্তিদের তিন-চতুর্থাংশই বর্তমান সরকারি দলের সঙ্গে জড়িত। আগ্নেয়াস্ত্র রাখার সংখ্যায় এর পরেই আছেন বিএনপির নেতারা। বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের হিসাব রাখা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ছাত্র-শ্রম বিভাগের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।