ইনসাইড পলিটিক্স

স্থানীয় নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সহিংস বিদ্রোহীদের লাগাম কোথায়?

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৯ নভেম্বর, ২০২১


Thumbnail স্থানীয় নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সহিংস বিদ্রোহীদের লাগাম কোথায়?

দেশে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন চলছে। বিএনপি নির্বাচনে না আসা এবং সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি মাঠে তেমন সক্রিয় না থাকার কারণে এ নির্বাচনে বৃহৎ দল হিসেবে একমাত্র আওয়ামী লীগই অংশ নিয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকপ্রাপ্ত এবং আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে হচ্ছে এ নির্বাচন। ফলে অনেকেই এই নির্বাচনকে বলছেন আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের নির্বাচন। ইউপি নির্বাচনের কারণে দুই দিন আগে যার সঙ্গে রাজপথে একসাথে আন্দোলন করেছিল, আজকে সে তার চরম শত্রু হয়ে গেছে। শত্রুতার মাত্রা এতটাই ছাড়িয়েছে যে, বিরোধী প্রার্থীসহ তার সমর্থকদের প্রাণ নিতেও দ্বিধা নেই তাদের। আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের এ নির্বাচনে বিগত দুই ধাপের ইউপি ভোটের আগে-পরে ও ভোটের দিনের সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আহত হাজার হাজার। এর মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার  চরম মাত্রার সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার মাধ্যমে শেষ হল তৃতীয় ধাপের নির্বাচন। চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপের নির্বাচন যথাক্রমে ২৩ ডিসেম্বর ও ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এ দুই ধাপেও এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সংশ্লিষ্টদের মতে, তৃণমূলের এই ভোট উৎসব অনেকাংশেই আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ উপলক্ষ্যে গত শুক্রবার সকাল থেকে নির্বাচনি মাঠে নেমেছিল পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের ৫০ হাজারের বেশি সদস্য। এছাড়াও নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরাও মাঠে ছিলেন। সহিংসতা বন্ধে মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কঠোর অবস্থান নিতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল।  এছাড়া নির্বাচন হচ্ছে এমন উপজেলাগুলোকে র‌্যাবের দুটি মোবাইল ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স, বিজিবির দুই প্লাটুন মোবাইল ও এক প্লাটুন স্ট্রাইকিং এবং উপকূলীয় জেলাগুলোয় দুই প্লাটুন মোবাইল ও এক প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে অবস্থান করেছিল। ভোট কেন্দ্রের পাহারায় ছিল পাঁচজন পুলিশ ও ১৭ জন আনসার সদস্য। এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও শুক্র ও শনিবার টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও ভোলার দৌলতখানে সহিংসতায় দুজনের মৃত্যু হয়। ভোটের প্রাক্কালে সহিংসতায় মেহেরপুরে একজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। দেশের অন্যান্য এলাকায়ও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া লক্ষ্মীপুর, পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, প্রার্থীর বাড়িতে গুলিবর্ষণসহ বেশকিছু সহিংস ঘটনা ঘটেছে। ভোটকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সহিংসতার আশঙ্কার কথা নির্বাচন কমিশনকে আগেই জানিয়েছিল একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তবুও সহিংসতা রোধে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। আর অধিকাংশ সহিংসতাগুলো হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যেই। বিদ্রোহ দমনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বারবার করে বলেও কোনোভাবেই থামাতে পারছে না। বিদ্রোহ দমনে আওয়ামী লীগ যে ব্যর্থ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না বলেই মনে করছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা।

আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে হওয়া এসব সহিংসতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, আমি আগেও বলেছি এটা হলো রোগের উপসর্গ, রোগ নয়। রোগটি হলো অযোগ্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া, পদ-পদবি ব্যবহার করে বা অন্যায় করে সুযোগ সুবিধা নিয়ে পয়সা কামানো, প্রশাসনের উপর বিভিন্ন রকমের প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটানো, অন্যায় করে পার পেয়ে যাওয়া। যতদিন এইগুলো চলবে ততদিন পর্যন্ত তাদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা চলবে, হানাহানি চলবে। একজন আরেক জনকে টেনে নিচে নামানোতে ব্যস্ত থাকবে। যেসব জায়গায় এ সমস্ত সহিংসতা হচ্ছে আর যারা করছে, তারা সবাই এসব স্থানে আসার যোগ্য ছিল না। অযোগ্য ব্যক্তিকে যদি আপনি উপরে নিয়ে আসেন, এমনটা হতে বাধ্য বলেই মনে করছেন তিনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি নির্বাচনে সহিংসতা বন্ধে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশন, এ দুই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, এ দুই প্রতিষ্ঠানই চলমান ইউপি নির্বাচনে তাদের স্ব স্ব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। ফলে দেখা দিচ্ছে সংঘাত-সহিংসতা। ভোটারদের দায়িত্বও কম নয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এ নিয়ে বসতে হবে এবং কঠোর অবস্থান নিতে হবে। শুধু বহিষ্কার করেই এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে না। সহিংসতায় যারা অংশ নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকেও ভূমিকা রাখতে হবে। ভালো লোককে যেন কোনো ভাবে ফাঁসাতে না পারে এ দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। রাজনৈতিক দল ও নির্বাচকমণ্ডলী তথা ভোটার শ্রেণি উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিচয় দিয়ে আগামী দিনগুলোয় নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর রাখার ক্ষেত্রে সচেষ্ট হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নিজেই ইমামতি করলেন জিএম কাদের

প্রকাশ: ০৯:১৩ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেলে জাতীয় পার্টির এক সংগঠনের ওয়েবসাইট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। পরে সেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ইফতারও করেন। আর ইফতার শেষে ওই হোটেলে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন তারা। আর সেই নামাজের ইমামতি করেন জিএম কাদের নিজেই।

সোমবার(২৭ মার্চ) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারির খন্দকার দেলোয়ার জালালী।

তিনি জানান, আজ ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় ইফতার ও ডিনার আয়োজন ছিল। সেখানে ইফতার শেষে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। আর নামাজের ইমামতি করেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

হোটেলে দুইটি স্থানে নামাজ পড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জিএম কাদেরের ইমামতির ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে পোস্ট করে খন্দকার দেলোয়ার জালালী লিখেন, নেতা অর্থ ইমাম। তিনিই প্রকৃত নেতা যিনি রাজনীতির মাঠে নেতৃত্ব দিবেন আবার নামাজের জামায়াতেও ইমামতি করবেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এসএম ফয়সল চিশতী, মো. রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, সংসদ সদস্য নাজমা আকতার, জহির উদ্দিন জহির, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরিফা কাদের, সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান, মো. খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান, এইচএম শাহরিয়ার আসিফ, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি মো. আল মামুন ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান খান প্রমুখ।

জিএম কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে রমজানে মানুষ স্বস্তিতে নেই: ফখরুল

প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ স্বস্তি নিয়ে রমজানে ইবাদত করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবীদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশে চরম অশান্তি বিরাজ করছে, মানুষ নিরাপদবোধ করছে না। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো এই ফ্যাসবাদী সরকার কেড়ে নিয়েছে। দেশের মানুষ ভালোভাবে ইবাদত পর্যন্ত করতে পারছে না, মানুষ নিরাপদবোধ করছে না। জিনিসের দাম বাড়ছে, সব জিনিসের দাম বেড়েছে।

ফখরুল বলেন, আজ চতুর্দিকে সরকার ফের হত্যা-গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু করেছে। সাংবাদিকদের লেখালেখিতে সেন্সরশিপ চালু করেছে, তারা প্রকৃত ঘটনা লিখতে পারছেন না।

তিনি বলেন, নওগাঁয় এক নারীকে র‌্যাব তুলে নিয়ে গেছে। তুলে নেওয়ার ৩৬ ঘণ্টার পর মারা গেছে। ডাক্তারি রিপোর্টে এসেছে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে এবং মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে যে এফআইআর করা হয়নি, সেটা পরে করা হয়েছে। অর্থাৎ আবার র‌্যাবের হাতে সাধারণ একজন মানুষ যিনি চাকরি করেন তার মৃত্যু হলো।

ফখরুল বলেন, এ সরকার শুধু নিজেদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য হত্যা, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা দিয়ে একটি ভয়ের সংস্কৃতি চালু করেছে, একটি ত্রাসের সংস্কৃতি চালু করেছে। এভাবেই তারা আজ দেশ শাসন করতে চায়। সবাইকে এ সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হওয়ায় আহ্বান জানাই।

দ্রব্যমূল্য   রমজান   মির্জা ফখরুল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন, সরে দাঁড়াচ্ছে গণতন্ত্র মঞ্চ?

প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন, সরে দাঁড়াচ্ছে গণতন্ত্র মঞ্চ?

নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই রাজপথে আন্দোলন করছে বিএনপি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে বিএনপির সমমনা দলগুলোও। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ভেঙে ওই জোটের দলগুলো নতুন নতুন প্লাটফর্ম দাঁড় করিয়ে নাম দিয়েছে ১২ দলীয় জোট, ১১ দলীয় জোট। এছাড়াও সমমনা দল হিসেবে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে পাশে রয়েছে গণঅধিকার পরিষদ, গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিভিন্ন নামের একাধিক রাজনৈতিক জোটবদ্ধ সংগঠন। কিন্তু বিএনপির সমমনা দল হিসেবে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলো থেকে এবার সরে দাঁড়াচ্ছে গণতন্ত্র মঞ্চ বলে জানিয়েছে সূত্র। 

সূত্রটি বলছে, ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ওই নৈশভোজে যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁদের অনেকের ব্যাপারে বিএনপি নেতৃত্বের এক ধরনের সন্দেহ রয়েছে। ফলে নাগরিক ঐক্যের সাথে বিএনপির একটা সন্দেহের ব্যাপার থেকেই যায়। মূলত ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজকে কেন্দ্র করেই বিএনপির সাথে গণতন্ত্র মঞ্চের বনিবনা হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে সূত্র।   

একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে  ‘যৌথ ঘোষণাপত্র’ খসড়া বিএনপিকে দিয়েছিলেন। লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যরাও একমত হয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা চূড়ান্ত করারও কথা ছিল। কিন্তু  বিএনপি বিষয়টিকে খুব একটা বেশি আমলে নিচ্ছে না। ফেব্রুয়ারি পেরিয়ে মার্চ অতিবাহিত হতে চলেছে, কিন্তু বিএনপি ফলপ্রসু কোনো উত্তর দেয়নি। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এ বিষয়ে একাধিকবার সভা করলেও যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে এখনো ‘যৌথ ঘোষণাপত্র’ চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি ও সাতদলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে ঘোষণাপত্রের খসড়া দেওয়া হলেও বিষয়টি এখনও ঝুলিয়ে রেখেছে বিএনপি। দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করে নিজেদের মতামত জানাতে সময় নিচ্ছে বিএনপি। কিন্তু সময়ের পর সময় গেলেও বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তাই বিএনপির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় না থেকে ভিন্ন পথে হাটছে গণতন্ত্র মঞ্চ। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণতন্ত্র মঞ্চের দুজন নেতা জানান, গণতন্ত্র মঞ্চের দেওয়া খসড়া ঘোষণাপত্রের অধিকাংশ বিষয়ের সঙ্গেই বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যরা একমত হয়েছেন। দু-তিনটি বিষয় নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়। গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে আপত্তির বিষয়গুলো বাদ রেখেই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি।

তারা আরও জানান, গত ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলের কর্মসূচি দিয়ে বিএনপিসহ সরকার বিরোধী সব দল ও জোট যুগপৎ কর্মসূচি পালন শুরু করে। প্রথম কর্মসূচির আগেই বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তি চূড়ান্ত করতে চেয়েছিল গণতন্ত্র মঞ্চ। সেটি না হওয়ায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা করতে চেয়েও পারা যায়নি। মূলত বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্ত না জানানোয় দীর্ঘ সময় চলে গেছে। 

সূত্র বলছে, যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির দাবি ১০ দফা এবং রাষ্ট্রমেরামত বা সংস্কারের ব্যাপারে ২৭ দফা প্রস্তাব করেছে দলটি। আর গণতন্ত্র মঞ্চের সংস্কারের রাজনৈতিক কর্মসূচিসহ ১৪ দফা দাবি দিয়েছে। সরকার বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের দাবি এবং রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপারে রাজনৈতিক কর্মসূচি যা দেওয়া হয়েছে, তাতে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের প্রস্তাবে কিছু পার্থক্য আছে। সেই পার্থক্য দূর করে সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচিভিত্তিক ঘোষণাপত্র তৈরি করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু এতে বিএনপি শুধু কালক্ষেপনই করেছে, কিন্তু কোনো উত্তর দেয়নি। 

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজকে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব সন্দেহের চোখে দেখছে। সেখানে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ছাড়াও যুগপৎ আন্দোলনে যোগ দেওয়া গণঅধিকার পরিষদসহ অনেক দলের নেতা-কর্মীদেরই দেখা গেছে। ফলে এ ঘটনায় বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ। যেখানে দীর্ঘদিন দলে থাকা নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সেখানে অন্যান্য দলগুলোকে অবিশ্বাস করা কঠিন কোনো বিষয় নয়। 

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, গণতন্ত্র মঞ্চের উচিৎ হবে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন থেকে সরে আসা। কেননা সেখানে ইতিমধ্যেই সন্দেহের ডালাপালা ছড়িয়েছে। সন্দেহ আর অবিশ্বাস নিয়ে কোনো আন্দোলন এগিয়ে যেতে পারে না। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজকে কেন্দ্র করে আর কোন কোন দল বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ায়।  


বিএনপি   যুগপৎ আন্দোলন   গণতন্ত্র মঞ্চ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে বিদেশিদের: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৬:৫১ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,‘দ্রুত বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বিদেশিদের আগ্রহ বাড়ছে।’ 

সোমবার (২৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর কাওরানবাজারে একটি হোটেলে ‘ইনোভেটিভ বিজনেস অপরচুনিটিজ ফ্রম বেলজিয়াম’- শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। বেলজিয়ামের রপ্তানি উন্নয়ন সংগঠন ওলোনিয়া এক্সপোর্ট-ইনভেস্টমেন্ট এজেন্সি এবং ফ্ল্যান্ডার্স ইনভেস্টমেন্ট এন্ড ট্রেড যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে। 

মন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যে কোনো বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত। আমাদের দেশের অর্থনীতির আকার যেভাবে বিস্তৃত হচ্ছে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে ও বাড়ছে, এ সব কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এখনই উপযুক্ত সময়।’ 

বাংলাদেশে বিনিয়োগে বেলজিয়ামের স্বত:প্রণোদিত এই সেমিনারের বিশেষত্ব চিহ্নিত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিনিয়োগে বিদেশিদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য সাধারণত আমরাই বিদেশে গিয়ে সভা-সেমিনার করি, আর আজ বেলজিয়ামের কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারীদের নিয়ে এসে এখানে সেমিনার করছে। কিন্তু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যদি বিনষ্ট হয়, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না এবং কোনো দেশ এভাবে এসে সেমিনার করবে না।’ 

সম্প্রচারমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একশত ইকনোমিক জোন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ইকনোমিক জোন উৎপাদনে গেছে। দেশি, বিদেশি বিনিয়োগ এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা ভাবনায় রেখেই এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো তৈরি হচ্ছে। সে জন্য বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ আমাদের জন্য ভালো। 

বেলজিয়ামের লিম্বুর্গ ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাম  থেকে পরিবেশ রসায়ন পিএইচডি অর্জনকারী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বেলজিয়াম একটি উন্নত দেশ। বেলজিয়াম ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তর, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্ট সেখানে বসে। সেই দেশ থেকে যদি আমাদের দেশে বিনিয়োগ আসে, বিশেষ করে হাইটেক শিল্প, যে খাতে আমরা এখনো সেভাবে পৌঁছায়নি, সে সব খাতে বিনিয়োগ  আমাদেরকেও সে সব ক্ষেত্রে পারদর্শী করে তুলতে পারবে। এই উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক সেমিনারে সে ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এতে করে নি:সন্দেহে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।’ 

এর আগে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী দেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে  বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বে ৬০তম থেকে ৩৫তম অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। করোনা মহামারিতে যখন সারা বিশ্ব থমকে গিয়েছিল, তখন বিশ্বের যে মাত্র ২০টি দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধ্বনাত্বক হয়েছে, আমাদের দেশ তার মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। জাপানের নিক্কি গবেষণা সমীক্ষায় করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম ও এশিয়ায় শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল সমীক্ষায় ২০২১ সালে মাথাপিছু আয়ে আমরা ভারতকে ছাড়িয়ে গেছি।’ 

ঢাকায় নিযুক্ত বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত দিদিয়ের ভ্যান্ডারহ্যাসেল্ট (Didier Vanderhasselt), ঢাকা চেম্বার অভ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট সামির সাত্তার এবং বাংলাদেশে বেলজিয়ামের কনসাল ড. আরিফ দৌলা সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। 

বেলজিয়ান সংস্থা ফ্ল্যান্ডার্সের ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশনার বাবেটে ডেসফোসেজ (Babette Desfossez) এবং বেলজিয়ামের কৃষি, চিকিৎসা, নিত্যপণ্য, যানবাহন এবং নির্মাণ প্রযুক্তি বিষয়ক বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা সেমিনারে বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগের বিষয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরেন। 

উল্লেখ্য, সেমিনার আয়োজক বেলজিয়ান বাণিজ্য প্রতিনিধি দল ২৭ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। 


তথ্যমন্ত্রী   আওয়ামী লীগ   যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক   ড. হাছান মাহমুদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

১৪ দলের অসন্তোষ ঠেকাতে ব্যর্থ আমু!

প্রকাশ: ০৬:০২ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন দলই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারার কারণে ক্ষমতার পালাবদলে এবং সরকার গঠনের ক্ষেত্রে শরিক দলগুলোর উপর নির্ভরশীলতা দেখা দেয়। তারই ফলশ্রুতিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ১৪ দলীয় জোট এবং বিএনপি সমর্থিত ১৮ দলীয় মহাজোট গঠন করা হয়েছিল। কার্যত বিএনপি মহাজোট ভেঙ্গে দিলেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত ১৪ দল এখনও বলবৎ রয়েছে। এই ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র হিসেবে রয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলে জানিয়েছে একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র। 

তবে সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে এখন কেবলই অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। শরিক দলগুলোর অসন্তোষ থেকেই ১৪ দল থেকে শরিক দলগুলো সরে যাচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আসন বণ্টনের দাবিতে সোচ্চার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকরা। প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ নির্বাচনের আগেই বিষয়টি ‘ফয়সালা’র আশ্বাস দিলেও অন্য শরিকরা তাতে আস্থা পাচ্ছে না। বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) মধ্যেও ছড়িয়েছিল অসন্তোষের ডালপালা। তবে সম্প্রতি বিএনপির রুমিন ফারহানার পদত্যাগে শূন্য হওয়া জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে ইনু স্ত্রী আফরোজা হক রীনাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করায় এই অসন্তোষ নিবারন হয়েছে।  

তবে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর একটি সংবাদ সম্মেলন করে ১৪ দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন জাসদ (একাংশ) সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া। তিনি বলেন, ‘১৪ দলের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। ১৪ দলীয় জোট এখন ভাইরাস প্ল্যাটফর্ম। ওখানে সব দল এখন আওয়ামী লীগের কাজ করে। ১৪ দলের শরিক অন্য দলকেও ওখান থেকে সরে এসে গণতন্ত্রের পথে ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’ ১৭ বছর পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যায় জাসদের এই অংশটি। 

সূত্রগুলো বলছে, যদিও ১৪ দলের মুখপাত্র এবং সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলছেন, ‘১৪ দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছে। ১৪ দলের ঐক্য ছিল, আছে, থাকবে।’ তবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য ১৪ দলের অসন্তোষ ঠেকাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত মুহাম্মদ নাসিম যখন ১৪ দলের সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন, তখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন এই জোটে কখনও অসন্তোষ দেখা যায়নি। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্তও ১৪ দলীয় জোটে খুব একটা অসন্তোষ চোখে পড়েনি। 

এদিকে ক্ষমতাসীন জোটের শরিক হলেও সেই জোট এবং সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করে আবারও আলোচনায় এসেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তিনি। পাঁচবারের সংসদ সদস্য। ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীসভার সদস্য। জোট রাজনীতি, আগামী নির্বাচন, বর্তমান সরকার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে সরকার বিরোধী বক্তব্যে সরব ভূমিকায় দেখা গেছে।  

চলতি বছরের শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। দলটির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছেন,  আপনারা (আওয়ামী লীগ) আমাদের বলেছিলেন, ‘এক সঙ্গে আন্দোলন, একসঙ্গে নির্বাচন, একসঙ্গে সরকার। আমাদের কোনও দাবি ছিল না। আপনারাই বলেছিলেন, একসঙ্গে আন্দোলন করেছি, নির্বাচনও করেছি। কিন্তু যখন সরকার গঠনের প্রশ্ন এলো, আমরা হোঁচট খেলাম। তারপরও আমরা পিছিয়ে থাকিনি। সেই ঐক্যকে চোখের মনির মতো রক্ষা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। ২০১৪ সালে যেসব সিট হাতুড়ি নিয়ে নির্বাচন করেছিলাম। ২০১৮ সালে ওই সিট আমাদের ভাগে এসেছিল। কিন্তু আমাদের বলা হলো, নৌকা নিয়ে নির্বাচন করুন। কিন্তু নির্বাচন করতে গিয়ে দেখলাম নৌকার মাঝিরাই নৌকার বিরুদ্ধে ভোট দিচ্ছে। যেখানে জাতীয় পার্টিকে জিতিয়েছে। সাম্প্রদায়িক বিভক্তি করেছে। এই নগ্ন খেলা আর যাই হোক জোটের রাজনীতি হতে পারে না।’

সূত্রমতে, ১৪ দলীয় জোটে রয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ- হাসানুল হক ইনু), ওয়ার্কাস পার্টি (রাসেদ খান মেনন), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এম, এল- দীলিপ বড়ুয়া),  বাংলাদেশ গনতন্ত্রী পার্টি (নুরুর রহমান সেলিম),  গন আজাদী লীগ (হাজি আবদুস সামাদ),  বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বিএসডি- রেজাউল রশিদ খান), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি ও কমিউনিস্ট কেন্দ্র (জাকির হোসেন),  কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ (সিপিবি), গণফোরাম (ড.কামাল হোসেন), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ),  শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ- মোজাফফর আহমেদ)। কিন্তু গত একাদশ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম ১৪ দল ছেড়ে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলেন। অর্থাৎ ১৪ দলে তার গণফোরাম এখন আর নেই।    

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন বাস্তবতা হচ্ছে, রাজনীতি বলেন আর নির্বাচন বলেন- কোনো ক্ষেত্রেই জোটের বাইরে গিয়ে এগিয়ে যাওয়া কঠিন। বিএনপি অনেকগুলো দল নিয়ে জোট করেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এবং পশ্চিমবঙ্গেও জোট রাজনীতি ও জোটভিত্তিক নির্বাচন হচ্ছে। আসলে এ অঞ্চলের রাজনীতিতে জোট একটা সাধারণ ‘বৈশিষ্ট্যে’ পরিণত হয়েছে। ফলে জোট ছেড়ে দেওয়া বা ভিন্ন কিছু ভাবা মুশকিল। নির্বাচন এগিয়ে আসায় এই অনাস্থা জোটের ঐক্যে কিছুটা হলেও সংকট তৈরি করেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

তারা আরও বলছেন, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনা, যা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে লালন করা হয়েছে, সেটার জন্যই ১৪ দলীয় জোট গঠন করা হয়েছিল। এখন জোট যদি সব সময়, সব পর্যায়ে কার্যকর না থাকে, তাহলে তো কিছু করার নেই। মূলত গত দুই নির্বাচনের অভিজ্ঞতা শরিক দলগুলোর মধ্যে অনাস্থা তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। এখন দেখার বিষয় ১৪ দলীয় জোটের এই সঙ্কট মোকাবেলায় কি ব্যবস্থা নেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

১০ দল   আমির হোসেন আমু   রাশেদ খান মেনন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন