বেগম
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে যে ধরনের কথাবার্তা
বলা হয়েছে, বাস্তবতার সঙ্গে তার মিল সামান্যই বলে জানা গেছে। সরকার তার নিজস্ব উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছে। এভারকেয়ার হাসপাতালের সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে এবং বেগম খালেদা জিয়ার বিভিন্ন সর্বশেষ রিপোর্ট, তার শারীরিক অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করছে। সরকার এই বিষয়টি নিয়ে
ওয়াকিবহাল রয়েছে বলেই সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে যেন কেউ জলঘোলা করতে না পারে সেজন্য
সরকার সজাগ এবং সচেতন। আর একারণেই বেগম
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যগুলো সরকার গ্রহণ করছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়া এখন স্থিতিশীল রয়েছেন। তিনি কথা বলতে পারছেন, চোখ মেলে তাকাতে পারছেন এবং খাবার গ্রহণ করতে পারছেন। তার যে উচ্চরক্তচাপ ছিল
সেটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তার ডায়াবেটিস এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং তিনি কোন ধরনের লাইফ সাপোর্টে নেই। অর্থাৎ একজন সাধারন রোগীর মতোই তিনি অবস্থান করছেন। আর বিভিন্ন লোকজনের
সঙ্গে তিনি টুকটাক কথাবার্তা বলছেন। তার লিভার সিরোসিস হয়েছে। এই লিভার সিরোসিসের
বেগম খালেদা জিয়ার দুদিন পায়খানার সঙ্গে রক্ত হয়েছিল, একদিন তিনি বমি করেছিলেন। এটি লিভার সিরোসিসের একটি লক্ষণ। আর এজন্য চিকিৎসকরা
তাকে যথাযথ চিকিৎসা দিচ্ছেন। বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে যেভাবে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বিএনপির নেতৃবৃন্দ এবং বিএনপিপন্থী চিকিৎসকরা তথ্য দিচ্ছেন তার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই বলেই জানা গেছে।
সরকার
ধারণা করছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার ইস্যুকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়ে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক
চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে, যেন সরকার শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে বাধ্য হয়। এমনকি এক ধরনের হুমকি
দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে, বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুপথযাত্রী। কিন্তু বাস্তবতায় এরকম কোন পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত হয়নি বলেই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যে সরকারের বিভিন্ন সূত্রগুলো নিশ্চিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর জন্য একটি চাপ সৃষ্টি করার জন্যই অসুস্থতার বিষয়টি রং চড়িয়ে বলা
হচ্ছে। আসলে বেগম খালেদা জিয়া যতটুকু অসুস্থ, তার চেয়ে বহুগুণ বাড়িয়ে বলা হচ্ছে বলেও বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। সরকার বিষয়গুলোর উপর নজর রাখছে।
সরকারের
একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আইনগতভাবে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর বেগম খালেদা
জিয়া যদি বিদেশে যেতে চান তার জন্য তাকে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বেগম জিয়া বা তার পরিবারের
সদস্যরা রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেননি। তাছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোন বিবৃতি দেয়নি। আর এভারকেয়ার হাসপাতাল
বলছে যে, আর দশ জন
রোগীকে যেভাবে তারা চিকিৎসা দেয়, তেমনি চিকিৎসা দিচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও। হাসপাতাল সূত্র বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়া যে রোগে আক্রান্ত
এরকম রোগের চিকিৎসা তারা নিয়মিত দিয়ে থাকেন। সরকার পুরো বিষয়টির দিকেই নজর রাখছে, কারণ সরকারের বিভিন্ন মহল মনে করছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে নিয়ে একটি উশৃঙ্খলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আর এ কারণেই
সরকার এইসব বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখছে।
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের
বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র
সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি
পদে খোকন দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলটির
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপি
চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের
উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন নেতা বলেন, একটি
সুষ্ঠু সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এ ইস্যুতে এখন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের
কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বৈঠকে ব্যারিস্টার মাহবুব
উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব) নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন। বৈঠকের
শেষ পর্যায়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আপাতত কোন্দ্বল নিরসন হয়েছে
বলে মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের
সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন আইনজীবী নেতা আরও বলেন, এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এবং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব
পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেবেন।
এদিন বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু
মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুল মঈন খান এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই
রায় চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আযম খান উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন ইস্যুতে বিএনপির
উচ্চপর্যায়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটিতেও দুই ধরনের ভাষ্য
পাওয়া গেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সিনিয়র আইনজীবীদের একাংশ খোকনকে জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিব্রত।
তারা মনে করেন, খোকনের মতো জনপ্রিয়
আইনজীবী নেতা এখন আর দলে নেই। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে যাদের উৎসাহিত করা হয়েছে
তাদের আইন অঙ্গণে গ্রহণযোগ্যতা কম। আবার কারো কারো মত ছিল, দলের কেউ দলীয় স্বার্থের
ঊর্ধ্বে নয়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ যেকোনো বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত যারা
অমান্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খোকনের বিরুদ্ধে কেনো
ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে জনমত গঠনে আদালত পাড়ায় কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু কথা বলেন। আইনজীবী নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে
বৃহস্পতিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিব সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক
করেন। এ বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি এতোদিন ছিল জাতীয়তাবাদী
আইনজীবী ফোরামের, এখন তা বিএনপি টেকওভার করেছে। এই ইস্যুতে এখন সিদ্ধান্ত দেবেন দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার
মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে (কায়সার কামাল) কীভাবে বহিষ্কার
করে? তার ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার? যে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে, সে পর্যন্ত কাউকে
বহিষ্কার করা যাবে না। যত বহিষ্কার করা হয়েছে, তা আইনত কার্যকর নয়।’
এ সময় তিনি কায়সার কামালের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি দলের সার্বিক বিষয়ে দলীয় প্রধানকে অবগত করেছেন।
বৃহস্পতিবার
(২৫ এপ্রিল) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা
২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপির মহাসচিব। রাত সোয়া ৯টার দিকে
তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতেই মির্জা ফখরুল ফিরোজায় গিয়েছিলেন। তবে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি। উদ্ভূদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট জটিলতা আপাতত নিষ্পত্তি করেছে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।