বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নয় বরং তাকে বিদেশে পাঠাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি। বিএনপি এখন পুরো বিষয়টিকে এমনভাবে এনেছে যে, বিদেশে পাঠানোই যেন বেগম খালেদা জিয়ার একমাত্র চিকিৎসা। বেগম জিয়া যেন বিদেশে গেলেই সুস্থ হয়ে যাবে, যা কোনোভাবেই বিজ্ঞানসম্মত নয় এবং চিকিৎসার রীতিনীতির সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যেকোনো মানুষ সুচিকিৎসার জন্য অবশ্যই বিদেশ যেতে পারেন এবং বিদেশ যাওয়াটা নির্ভর করে সুযোগ-সুবিধা এবং নানারকম সঙ্গতির উপর। কিন্তু বিএনপি নেতারা এমনভাবে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার দাবিটিকে সামনে আনছেন যেন মনে হচ্ছে যে, বিদেশে না গেলেই বোধহয় বেগম খালেদা জিয়ার অন্যকিছু হয়ে যাবে। অর্থাৎ একটি চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে অসুস্থ দেখিয়ে তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়াটাই যেন বিএনপি প্রধান লক্ষ। এর প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাটি একটি রাজনৈতিক অসুখ? বেগম খালেদা জিয়া যে অসুস্থ এই নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। ৭৬ বৎসরের প্রবীণ একজন নারী এই বয়সে নানারকম রোগশোকে অসুস্থ থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। এই বয়সে একজন মানুষ সবদিক থেকে সুস্থ থাকেন না। তাছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার নানা রকম জটিলতা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। এসবের কারণে বেগম খালেদা জিয়া এই বয়সেও সুস্থ স্বাভাবিক থাকবেন এই রকম ভাবনা কোনদিনও চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্মত ভাবনা নয়।
কিন্তু প্রশ্ন হলো যে, বেগম খালেদা জিয়াকে কেন বিদেশে পাঠাতে মরিয়া হয়ে উঠল বিএনপি? এটা কি তার সুচিকিৎসার জন্য নাকি এর পেছনে অন্যকোনো মতলব রয়েছে। একটু অনুসন্ধান করলে দেখা যায় যে, বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর পিছনে রয়েছে একটি সুগভীর রাজনৈতিক পরিকল্পনা। বিএনপি গত দু'বছর ধরে রাজনৈতিক আন্দোলনের বদলে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আর এই উৎখাতের ষড়যন্ত্রের প্রধান বাহন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সাইবার জগতকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপি-জামায়াত প্রতিনিয়ত নানা রকম গুজব এবং অপপ্রচার সৃষ্টির মাধ্যমে এক ধরনের আবহ তৈরি করার চেষ্টা করছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকার সম্বন্ধে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করছে। বিএনপি নেতারা মনে করছেন যে, সরকারের বিরুদ্ধে সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে গেলে প্রথমে বেগম খালেদা জিয়াকে সরাতে হবে। কারণ, বেগম খালেদা জিয়া যখন দেশে আছেন তখন তার চিকিৎসা, তার জেলের বাইরে থাকা ইত্যাদি ইস্যুকে বিএনপির আমলে নিতে হচ্ছে। বিশেষ করে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া মনে করেন যে, খালেদা জিয়া থাকার কারণেই তিনি সবগুলো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে পারছেন না, অনেক সীমাবদ্ধতা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়াকে যদি বিদেশে নেয়া যায় তাহলে তারেক জিয়া যা খুশি তাই করতে পারবেন।
বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, বাংলাদেশে এখন আন্দোলন দরকার নেই। দরকার যে কোন ষড়যন্ত্রের নিবিড় বাস্তবায়ন এবং সেটি করার মতো সক্ষমতা তারেকের আছে বলেও বিএনপির অনেক নেতারা মনে করেন। আর এ কারণেই তারা চাইছেন যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে। সেখানে নেয়ার পর বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে একটা বিবৃতি ও তৈরি হয়ে আছে, যে বিবৃতিতে বেগম খালেদা জিয়া সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন। এরপর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ছড়ানো হবে নানা রকম অপপ্রচার,মিথ্যাচার ইত্যাদি। এইভাবে একটি অন্য রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি আসলে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর মূল লক্ষ্য বলে মনে করছেন। কারণ বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা যদি এতটাই খারাপ হতো যে তাকে তার কোন চিকিৎসাই দেশে দেয়া সম্ভব নয় তাহলে তিনি কেন এখনো এভারকেয়ার হাসপাতাল রয়েছেন, এই প্রশ্নের উত্তর বিএনপি কারো কাছে নেই। বিএনপির মূল লক্ষ্য হলো এখন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে একটি পরিবেশ তৈরি করা, সেটি কি বিএনপি পারবে?
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
সাইবার যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কোটা আন্দোলন তথ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গ্রেপ্তার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার তারেক জিয়া নাশকতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।