তৃতীয়
ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত রোববার। সহিংসতা, ব্যালট পেপার
ছিনতাই, ভোটকেন্দ্র দখলের অপচেষ্টাসহ নানা অনিয়ম ও বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় নির্বাচনের
ভোটগ্রহণ। স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী ও জেলা-উপজেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের অভ্যন্তরীণ
কোন্দল, দ্বন্দ্ব ও বলয়-ভিত্তিক রাজনীতির কারণে অনেক জেলায় প্রথম দুই ধাপের মতো তৃতীয়
ধাপেও নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের প্রায় ৪৭ শতাংশ হেরে গেছে। নির্বাচন
কমিশনের বেসরকারি ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে। এসব ইউপিতে জয়লাভ করেছেন দলটির বিদ্রোহী
ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আর দলীয় বিদ্রোহী হওয়ার নেপথ্যে কাজ করেছেন স্থানীয় সাংসদ
ও প্রভাবশালী নেতারা। তাদের সমর্থনের কারণে নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকরা প্রচারণা ও ভোটের
মাঠে কোণঠাসা ছিলেন বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
নির্বাচনের
সব ধাপেই সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে রাজাকার পরিবারের সদস্য,
হত্যা-ধর্ষণ মামলার আসামিসহ চিহ্নিত-বিতর্কিতদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের
দপ্তরে এ বিষয়ক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পাঠানো অভিযোগের স্তূপের কথা জানিয়েছিলেন
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। কেন্দ্র সব সময় বলে আসছে যে, এমপি, জেলা-উপজেলা
নেতাদেরকে। কিন্তু তৃণমূলের নেতারা দুষছেন কেন্দ্রকে। টাকা-পয়সা দিয়ে ঢাকা থেকে নৌকার
নমিনেশন বাগানোর অভিযোগ তাদের। পাল্টাপাল্টি এ অভিযোগের মাঝে হুমকি-ধামকি দেয়ার পাশাপাশি
সহ্য না করার হুঁশিয়ারিও দেয়া হচ্ছে। সমানে
চলছে খুনাখুনি। নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ। নৌকায়-নৌকায় রক্তারক্তি। প্রাণহানির
শিকারদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। তবে নির্বাচন কমিশন সচিব বলেছেন, নির্বাচন
ভালো হচ্ছে। সামনে আরো ভালো হবে। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, ইউপি নির্বাচনে এমন ঝগড়াঝাটি
হয়েই থাকে।
নৌকার
ভরাডুবির কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম
কামাল হোসেন বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংঘাতে রাজনীতি ও দলীয়
প্রার্থীদের পরাজিত হওয়ার কারণ হচ্ছে ইউনিয়ন নির্বাচনে বংশগত, পারিবারিক, পাড়া, মহল্লায়
কার কতটুকু প্রভাব এর উপর ভিত্তি করে ভোট হয়। আমরা জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের বর্ধিত
সভা করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী তাদেরকে বুঝিয়ে দলের জন্য কাজ করার জন্য আমরা এই প্রক্রিয়া
শুরু করেছি। তারপরও যদি না শুনে তাহলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে
জানান তিনি।
গণমাধ্যমে
প্রকাশিত তথ্যমতে, গত রবিবার ভোট হওয়া এক হাজার ইউপির মধ্যে ইসি ৯৯২টির ফলাফল ঘোষণা
করেছে। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জিতেছেন ৫২৫টি ইউপিতে। শতকরা হিসাবে যা ৫২.৯২
শতাংশ ইউপিতে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী জিতেছেন ২৪৯টি ইউপিতে।
এটি মোট ইউপির ২৫.৩৮ শতাংশ। বিএনপির স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র হিসেবে জয়ী হয়েছেন ১০৮টি
ইউপিতে, যা মোট ইউপির প্রায় ১১ শতাংশ। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শুধু চেয়ারম্যান পদে
দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়। এর মধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও চরভদ্রাসন উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন
পরিষদ নির্বাচনে ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৪টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। মাত্র
১টিতে বিজয়ী হয়েছে নৌকা। একই অবস্থা নাটোরেও। নাটোরের লালপুর এবং বাগাতিপাড়া দু’টি
উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ৫টি ইউপিতে নৌকা মার্কা জয় লাভ করেছে। দিনাজপুরের
তিন উপজেলার ২৩ ইউনিয়নের মধ্যে ১৬টিতে ভরাডুবি হয়েছে নৌকার। এর মধ্যে নবাবগঞ্জ উপজেলার
৯টির মধ্যে ৮টিতে, বিরামপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৪টি ও ফুলবাড়ী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের
৪টিতে নৌকার প্রার্থীরা হেরেছেন। এদিকে নেত্রকোনার তিন উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান
পদে ২৪টির ফলাফলে বেসরকারিভাবে নির্বাচিতদের মাত্র ৮টিতে নৌকা প্রতীক প্রার্থী জয় লাভ
করেছে। বিপরীতে ১৬ টিতেই স্বতন্ত্র জিতেছে এবং একটি ভোট গণনা স্থগিত রয়েছে। মুন্সীগঞ্জ
সদর উপজেলা ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলার মোট ২১ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে
মাত্র ১০টিতে। বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় পেয়েছেন ১১ ইউপিতে। এছাড়াও কুষ্টিয়া,
কুমিল্লা, রাজবাড়ী, সাতক্ষীরাতেও নৌকা খুব একটা ভালো করতে পারেনি।
আওয়ামী
লীগের দুর্গখ্যাত এলাকাগুলোতে নৌকা প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ ও বিদ্রোহী প্রার্থী প্রসঙ্গে
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে
বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা মার্কা নিয়ে ইলেকশন করবে। সেখানে বিরোধী দলের
প্রার্থী না থাকার কারণে কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে দলের যারা মনোনয়ন পায়নি বা দল যাদের
মনোনয়ন দেয়নি, আওয়ামী লীগে তো অনেক যোগ্য প্রার্থী, জনপ্রিয় প্রার্থী আছে। কিন্তু মনোনয়ন
তো নির্বাচনের ক্ষেত্রে একজনকে দিতে হয়। যেহেতু আওয়ামী লীগ চায় প্রতিযোগিতামূলক, অংশগ্রহণমূলক
নির্বাচন এবং জনগণের রায়ের মধ্য দিয়ে ভোটে নির্বাচনের ফলাফল প্রতিফলিত হোক, এটা আমরা
চাই। সে কারণে নির্বাচনে যেহেতু প্রতিপক্ষ নাই, কোন কোন জায়গায় আমরা দেখেছি বিএনপি
সরাসরি নির্বাচন না করেও কিন্তু তারা দলীয় পরিচয়ের আড়ালে নির্বাচন করেছে।
বিদ্রোহীদের
বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা প্রশ্নে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিদ্রোহীদের
বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে শোকজ করা হচ্ছে। দলের ভিত্তিতে সংঘাত কোথাও হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ-আওয়ামী
লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, হত্যাকাণ্ড, মারামারি , খুনাখুনি করছে এগুলো সঠিক না। এ রকম
কোন ঘটনা নাই। সংঘাত হয়েছে, হচ্ছে। এটা ভিন্ন কায়দায়, ভিন্ন মাত্রায়, ভিন্ন আঙ্গিকে
যার সাথে দলীয় পরিচয়ের কোনো ভিত্তি নেই। তবে কোন কোন জায়গায় কোন কোনো মানুষ যদি জড়িয়ে
যায়, তার যদি রাজনৈতিক পরিচয় থাকে অথবা সাংগঠনিক পরিচয় থাকে তার মানে এই নয় যে সাংগঠনিক
ভাবে অংশ নিয়েছে। ঐটা ব্যক্তি পর্যায়ে, ব্যাপারটাকে ওভাবেই দেখতে হবে। সংঘাত কমে আসুক,
সম্প্রীতি সৃষ্টি হোক, শান্তির ভিত্তিতে জনমত প্রতিফলিত হোক, এইটা আওয়ামী লীগ চায় বলেও
মন্তব্য করেন তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নেতাদের পৌর নির্বাচনে প্রার্থী না করে বাণিজ্যের মাধ্যমে গণবিচ্ছিন্নদের মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে অনেক জায়গায় নৌকা প্রতীক পেয়েও প্রার্থী জামানত হারাচ্ছে। যোগ্যদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের নাম পাঠানো হচ্ছে তৃণমূল থেকে। বিভিন্ন পক্ষ বিভিন্ন কায়দায় কেন্দ্রে প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের প্রার্থীর মনোনয়ন ও বিজয় আদায় করছেন। দলের প্রার্থীকে জেতাতে জেলা নেতৃত্বের ঠিক যতখানি উদাসীনতা আছে, তেমনি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরাও সমান পরিমাণ উদাসীন। বিদ্রোহীদের সরাতে সাংগঠনিক উদ্যোগ না থাকায় বিদ্রোহীর ছড়াছড়ি হচ্ছে। আর এ কারণে দলের প্রার্থীদের ভরাডুবি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ
মন্তব্য করুন
রাজশাহী প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপি’র প্রধান শত্রু এদেশের সাধারণ জনগণ। যারা একাত্তরে হাতিয়ার তুলে নিয়েছিল এ দেশকে স্বাধীন করার জন্য, একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আপনারা বার বার তাদেরকেই আক্রমন করেন। আওয়ামী লীগ আপনাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে আসে বলেই আওয়ামী লীগের সাথে আপনাদের বিরোধ ঘটে। সব সময় এ দেশের সাধারণ মানুষকে আপনাদের ষড়যন্ত্রের শিকার বানান, হত্যার শিকার বানান এবং আপনাদের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের শিকার বানান।’
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আয়োজিত ‘শান্তি সমাবেশ’-এ সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ বছরটা নির্বাচনের বছর। আমাদের রাজপথে থাকতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। শুধু নেতা-কর্মী দ্বারা আবর্ত থাকলে চলবে না, আমাদের চলে যেতে হবে সাধারণ মানুষের কাছে। গত ১৪ বছরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার যে অর্জন সেই অর্জনের কথা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। যদি সাধারণ মানুষ উন্নয়নের সুফল না পায় তাহলে সেই উন্নয়নের কোন মূল্য থাকে না। যখন আমাদের সকল উন্নয়নের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারবো তখনই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে বলে আমি মনে করি।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না, মানবাধিকারের কথা মানায় না। আপনাদের হিংসাত্মক রাজনীতি আর সন্ত্রাসের কারণে নতুন প্রজন্ম রাজনীতি করতে চায় না। যারা একুশে আগস্ট ঘটিয়েছে, নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে, কৃষকের বুকে গুলি চালিয়েছে, জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছে, তাদের সকল অপকর্মের মেডেল আছে।’
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যুবলীগের ভাই ও বোনেরা আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন, আপনারা ধৈর্যশীল থাকবেন। ওদের কৌশল আমাদের সন্ত্রাস হিসাবে উপস্থাপন করা। ওরা পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চাবে। আপনারা ওদের ফাঁদে পা দিবেন না। কিন্তু রাজপথ আমরা ছেড়ে দেব না। ভুলে যাবেন না, ওরা কিন্তু দিন কে রাত এবং রাতকে দিন বানাতে বড় পারদর্শী। মিথ্যার উপরই এই দলটার সৃষ্টি ওরা জাতির পিতার নাম মুছে ফেলেছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছিল। সুতরাং মিথ্যা চর্চার ক্ষেত্রে এই দলকে দুর্বল ভাবার কোন সুযোগ নাই।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লে. কর্নেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, যখন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যখন বাংলাদেশের জিডিপি সিংগাপুর, মালয়েশিয়ার উপরে, যখন বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ঠিক সেই মুহূর্তে বিএনপি-জামাত বাংলাদেশকে পিছনের দিকে নেওয়ার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এশিয়ার ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক তারা সবাই ভবিষ্যৎ বাণী করেছেন, বাংলাদেশ যেভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যদি এভাবে এগিয়ে যায় তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৭তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। আর এটা সম্ভব শুধুমাত্র রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে।
তিনি যুবলীগের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি-জামাত আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা নানা ধরণের মিথ্যা প্রচারণা ও গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিটি জেলায়, উপজেলায়, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং ইউনিটে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। বলতে হবে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয় নাই, বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আপনারা শেখ হাসিনার পাশে থাকুন, নৌকার পাশে থাকুন, নৌকায় ভোট দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাড. তারানা হালিম বলেন, যারা স্যাংশন নিয়ে কথা বলেন তাদের দলের প্রধান খালেদা জিয়া তৎকালীন আমেরিকার পরারাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে স্যাংশন চেয়েছেন। যাতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে, দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়, খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়, বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পায়, মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে এটাই হলো বিএনপির আসল চেহেরা। তারা কখনই এদেশের মানুষের ভালো চায়না। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অভিজ্ঞতা আছে কিভাবে অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে তোলা যায়। সামনের যে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কথা বলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শি নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ তা কাটিয়ে উঠতে পারবে। আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিলে বঙ্গবন্ধুকন্যা তার দূরদর্শী নেতৃত্বে একটি উন্নত সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবে।
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, এই ঢাকার রাজপথে আপনারা পোস্টার হয়েছেন, নুর হোসেন, ফাত্তাহ বাবুল হয়েছেন। তারপরেও দেশের স্বার্থে সংগঠনের স্বার্থে, বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রশ্নে যুবলীগ আপোস করে নাই, যুবলীগ আপোস করতে জানে না। তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেমনি করে বিগত দিনে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথ আগলে রেখে প্রিয়নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে মানুষের কল্যাণে, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আপনারা সব সময় কাজ করেছেন। আগামী নির্বাচনেও সেই সাহসীকতা আর বীরত্বের সাথে রাজপথে থাকবেন। বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আবারও রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে ঘরে ফিরবেন।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাড. তারানা হালিম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম মিল্টন, ত্রাণ ও সমাজকল্যান সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মোস্তাফিজ প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী যুবলীগ শান্তি সমাবেশ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষ অংশ নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেন, ‘জনসভার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষ এই জনসভায় অংশ নেবেন বলে আমরা আশা করছি।’
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) জনসভার আগের দিন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের কাছে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘বিভিন্ন রংয়ের পোশাক আর টুপিতে রঙিন হয়ে উঠবে পুরো মাঠ। রাজশাহীর জন্য তিনি যা করেছেন তার জন্য জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, ধন্যবাদ জানাতে চাই আমরা।’
রোববার রাজশাহী সফরে গিয়ে নগরীর মাদ্রাসা মাঠে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যেই রাজশাহীতে পৌঁছেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগে শনিবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মেয়র লিটন। এ সময় সেখানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে সেটা চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ বিএনপির সঙ্গে খেলেই জিততে চায়। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়া যেকোনো রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্ত। তবে, নির্বাচন বানচালে ২০১৩-১৪ সালের মতো করার চেষ্টা করলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’
পৃথিবীর কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় না মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শুধু পাকিস্তানে হয়। বিএনপি তো পাকিস্তানকে অনুকরণ করে; তাই তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। কিন্তু বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইভিএমে ভোট হয়। সে কারণে এটা আমাদের দাবি ছিল। কিন্তু বিশ্ব প্রেক্ষাপটে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প পাস করে ইভিএম কেনা এখন ঠিক হবে না। ফলে বাস্তবতার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সব আসনে ইভিএম দিতে পারছে না। নির্বাচন কমিশন যত আসনে ইভিএম দেবে আমরা মেনে নেব।’
খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী মেয়র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসভা
মন্তব্য করুন
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে নানা মেরুকরণ চলছে। একদিকে যেমন বিএনপি জোট বদ্ধ আন্দোলন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করতে চাইছে। অন্যদিকে সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের মাঠে নামাতে চাইছে। নির্বাচনের আগে আরও নতুন নতুন অনেক চমক আসবে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে একটি চমকের মেরুকরণ ঘটছে নীরবে-নিভৃতে এবং এটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপি’র প্রধান শত্রু এদেশের সাধারণ জনগণ। যারা একাত্তরে হাতিয়ার তুলে নিয়েছিল এ দেশকে স্বাধীন করার জন্য, একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আপনারা বার বার তাদেরকেই আক্রমন করেন। আওয়ামী লীগ আপনাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে আসে বলেই আওয়ামী লীগের সাথে আপনাদের বিরোধ ঘটে। সব সময় এ দেশের সাধারণ মানুষকে আপনাদের ষড়যন্ত্রের শিকার বানান, হত্যার শিকার বানান এবং আপনাদের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের শিকার বানান।’
২০০৮ এর নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ নির্বাচন করে আসছে। মহাজোট এবং ১৪ দলীয় জোট, দু’টোকে একসঙ্গে করে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাঠে বিএনপি জামায়াতকে মোকাবেলা করছে। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে এবং নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যদি আরও কিছু বিরোধী দল অংশগ্রহণ না করে; সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে একক নির্বাচন করতে পারে। মহাজোট এবং জোটের অন্যান্য দলগুলোকে আলাদাভাবে নির্বাচন করার পরামর্শ দিতে পারে। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।