স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ (স্বাচিপ) এর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে গত এক সপ্তাহ যাবত পত্র-পত্রিকায়, টকশোতে বা রাজপথে বিএনপি বেশ সরব এবং তাদের মতাদর্শের বুদ্ধিজীবীরা খুব তোলপাড় করতেছে। বাংলাদেশের সব নাগরিকই তার অবস্থান থেকে চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে তা সে জেলখানায় থাকুক বা স্বাভাবিক অবস্থায় থাকুক। সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে কিন্তু কোন অবহেলাও করছে না কিংবা তাকে বিদেশ যেতে দিবে না, সেরকম কোন কথাও সরকার বলেছে না। এখানে প্রধানমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীর অবস্থানটা একদম স্পষ্ট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেইদিনও বলেছেন মানবিক দিক বিবেচনায় সাজা স্থগিত রেখে বাসায় থাকা এবং বাসায় থেকে খালেদা জিয়া তার নিজের মত চিকিৎসকদের মাধ্যমে দেশের যেকোনো যায়গায় চিকিৎসা করার সুযোগ প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে।পৃথিবীতে এটা একটা নজিরবিহীন ইতিহাস যে, একজন মুক্ত স্বাধীন মহিলা ফাতেমা, তাকে খালেদা জিয়ার সাথে রেখেছে। এমন কোন ইতিহাস কিন্তু নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, উনার যতটুকু এক্সিকিউটিভ ক্ষমতা ছিলো সম্পূর্ণ ক্ষমতা উনি ব্যবহার করে এই সুযোগ উনি দিয়েছেন এবং বাকীটা বলেছেন যে, আইনের মাধ্যমে করতে হবে। সেখানে আইনমন্ত্রীও কিন্তু স্পষ্ট করেছেন সংসদে, প্রেসে বিভিন্ন যায়গায়। তাদের যে আগের আবেদন ছিল সেটা কিন্তু নিষ্পত্তিকৃত বিষয়, নতুনভাবে একটা দরখাস্ত করে আইনের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেবে -এটা আইনমন্ত্রী বলেছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।
অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার পরিবার বা রাজনৈতিক কেউ কিন্তু এখন পর্যন্ত আবেদন করেনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, কারাগারের ডিজি -কারও কাছে আমরা আবেদন করতে দেখিনাই। কিন্তু তারা রাজপথে আন্দোলন, সংগ্রাম, প্রেস-ব্রিফিং করছে, দেশ অচল করার হুমকি দিচ্ছে বিভিন্ন কথাবার্তা বলছে এবং কর্মসূচী দিয়েছে শনিবারের। এখন ব্যাপার হলো যে, খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা এই চিকিৎসা হচ্ছে নামীদামী মাল্টিডিসিপ্লিনারি এভারকেয়ার হাসপাতালে। সেখানে কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসা যারা দিচ্ছেন তারা কিন্তু খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে কিছু বলতেছে না। সেখানে খালেদা জিয়ার দলীয় চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছে, তারা প্রেস-ব্রিফ করছে আর বিএনপি নেতারা প্রেস-ব্রিফ করছে। ওখানে কিন্তু বোর্ডও করেনি। এই ব্যাপারটা কিন্তু ঝাপসা। খালেদা জিয়ার যে প্রকৃত অবস্থা, চিকিৎসা কি হচ্ছে এটাও কিন্তু জানা যাচ্ছে না, এটা কিন্তু তারা গোপন রাখছে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমরা যেটা জানি খালেদা জিয়ার রক্তশূন্যতা হয়েছিল, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, তিন ব্যাগ রক্ত দেয়ার পর ঠিক হয়েছে, এখন সে স্বাভাবিক অবস্থায় আছে, বেডে আছে এবং নিজে হেঁটে টয়লেটে যান এরকম অবস্থায় আছেন বলে শুনেছি। একজন বয়স্ক মহিলা যার অনেকগুলো রোগ আছে, এটা কিউরেবল না কিন্তু চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়, এটা আমরা জানি। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় যে, বিএনপি চিকিৎসা ব্যবস্থার স্বচ্ছ অবস্থা পরিষ্কার না করে তারা আন্দোলন সংগ্রাম করতে চায়, এইটা আমার মনে হয় তারা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য বলতেছে। প্রকৃত চিকিৎসা আড়াল করে রাখছে। তারা ইস্যুটিকে রাজপথে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। এই জন্য আমার মনে হয় সরকার এই যায়গায় স্পষ্ট হওয়া উচিৎ এবং আইনের যে ৪০১ ধারার কথা বলা হয় এটার সব সুযোগ কিন্তু সরকার দিয়েছে খালেদা জিয়াকে। এই মূহুর্তে তারা বলে অন্যদের কথা বলে যে তারা চিকিৎসার জন্য বাহিরে গিয়েছিল আসামি হিসেবে কিন্তু তারা বিচারাধীন ছিলো। খালেদা জিয়া জিয়া কিন্তু বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তার অন্যদের সাথে মিল নাই। খালেদা জিয়া নিজেও কিন্তু বিচারাধীন অবস্থায় লন্ডন তার ছেলের কাছে গিয়েছিল, চিকিৎসার জন্য গিয়েছিল। যদিও কেউ বলে ছেলের সঙ্গে বোঝাপড়া, কেউ বলে ষড়যন্ত্র। ২০১৫ সালে সম্ভবত গিয়েছিল। সুতরাং আমার মনে হয় এই যায়গায় খালেদা জিয়ার পরিবার নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে পারছে না, তারা আসলে কি চায়। চিকিৎসা চায়, না রাজনীতি চায়, না বিদেশ নিতে চায় -এই যায়গাটা পরিষ্কার না।
অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, আরেকটা ওরা বলে যে প্রতিহিংসার কথা বলে। জননেত্রী শেখ হাসিনার ওইদিন সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে টুইস্টেড করে কথা বলে। এই যে মামলা, এটা কিন্তু ওয়ান-ইলেভেন সরকারের মামলা, এটা কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের মামলা নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই যে ১৫ আগস্টের কথা বলেন, ২১ আগস্টে উনি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন, উনি ভ্যানিটি ব্যাগে বোমে নিয়ে গিয়েছিলেন বলেছিল, কোকোর মৃত্যুতে বাসায় গিয়েছিল কিন্তু ঢুকতে দেয়নি, বলেছিল শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দুরের কথা বিরোধী দলের নেত্রীও হতে পারবে না, ২১ বার হত্যাচেষ্টা করলো, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরোধী দলের নেতার আসনে বসালো । এই যে তিক্ত অমানবিক ইতিহাস যেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি করা হয়েছে। তারপরও খালেদা জিয়ার প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবিক আচরণ করেছেন এ পর্যন্ত। উনি এটাও বলছে যে রাখে আল্লাহ মারে কে। এটা টুইস্টেড করতেছে। এটা তো উনি উনার কথা বলছে যে, আল্লাহ উনারে রাখছে, মারে কে। এটাও টুইস্টেড করে বলে। সুতরাং এই সব মিলিয়ে তারা আসলে এই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে একটা রাজনীতি করতেছে। আমি মনে করি যে, সরকারের উচিৎ যে, এই মুহূর্তে তারা রাজনীতি শুরু করেছে, ভুল ম্যাসেজ দিচ্ছে, কর্মসূচী দিচ্ছে, সরকার যে মানবিক স্টেপ নিয়েছিল যে, সাজা স্থগিত রেখে বাসায় থেকে চিকিৎসার তা বাতিল করে সরকার আবার খালেদা জিয়াকে দেশের সর্বোচ্চ মাল্টিডিসিপ্লিনারি হাসপাতাল বঙ্গবন্ধুতে এনে এখানে স্পেশাল বিশেষজ্ঞ বোর্ডের মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিৎ। এটি নিয়ে তারা রাজনীতি করছেন, প্রকৃত অবস্থাও জানা যাচ্ছে না। সরকারের এখন দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে যে, খোঁজ নেয়া যে আসলে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কি হচ্ছে, হচ্ছে না এবং সরকার নিজেই উদ্যোগ নিয়ে চিকিৎসা করা উচিৎ। আমি মনে করি, তারা এখন কিন্তু এভারকেয়ারের বাহিরে বিভিন্ন নামীদামী তাদের দলীয় স্পেশালিষ্ট চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তারা কিন্তু বিদেশ থেকে ডাক্তার এনেও চিকিৎসা করাতে পারে। কিন্তু সেইদিকে যাচ্ছে না। সেটা কিন্তু বলে না। তাই এইসব বিবেচনায় আমার মনে হয় সরকার এখন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দায়িত্ব বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মাল্টিডিসিপ্লিনারি হাসপাতাল বঙ্গবন্ধুতে রেখে করা উচিৎ। জনগণের কাছে খালেদা জিয়ার প্রকৃত অবস্থান পরিষ্কার করা উচিৎ, যেন এটা নিয়ে রাজনীতি না করতে পারে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।