ইনসাইড টক

‘পাকিস্তানের জারজ, বেজন্মাগুলো পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে লাফালাফি করতেছে’


Thumbnail

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা: মো: মুরাদ হাসান বলেন, পাকিস্তানের প্রতি প্রেম জাগ্রত হয়েছে এটা তো নতুন জাগ্রত হয়নি, এটা যুগ যুগ ধরে চলছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বাংলাদেশে স্বাধীনতা যদি এনে না দিত তাহলে পাকিস্তানের প্রেম কি পরিমাণ বাড়তো সেটা তো আপনি বুঝেন। পাকিস্তানি দালাল, রাজাকার, একাত্তরে যারা ছিল ওদের বংশে তো বেঁচে আছে। সবাই তো আর এখান থেকে পাকিস্তানে চলে যায়নি, এগুলা বাংলাদেশে আছে। পাকিস্তানের যে দালালের বাচ্চাগুলা আছে, জারজ সন্তান যেগুলো, বেজন্মা, ওরা পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে লাফালাফি করতেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর নিশ্চয়ই হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, তাদের যদি এটা ভালো লাগে দেখতে তো আমার কি করার আছে।

বাংলাদেশিদের পাকিস্তান প্রীতি, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের হকি খেলা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন ডা: মো: মুরাদ হাসান।

আপনি এবং দুই একজন ছাড়া আর কেউ এই ব্যাপারে সোচ্চার নয়, এর কারণ হিসেবে আপনি কি মনে করেন জানতে চাইলে ডা: মো: মুরাদ হাসান বলেন, যারা দেয়না তাদের জিজ্ঞেস করেন যে কেন আপনারা এই বিষয়ে কথা বলেন না। মুরাদ ভাই যদি ভুল বলে থাকে তাহলে বলেন ভুল বলছে, আর যদি সঠিক বলে থাকে তাহলে বলেন সঠিক বলছে। 

আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে পাকিস্তানের সংস্কৃতি লক্ষ করা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক জাগরণের দরকার বলে আপনি মনে করেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিশ্চয়ই দরকার। জাগরণের জন্য আপনি ভূমিকা নেন, লেখেন। আমরাও আমাদের যায়গা থেকে কাজ করি, সবাই মিলে কাজ করতে হবে।

১৬ তারিখ, আমাদের বিজয়ের ৫০ বছর। সেদিন মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের খেলা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একজন নাগরিক হিসেবে এই বিষয়ে আপনার অনুভূতি কি জানতে চাইলে ডা: মো: মুরাদ হাসান বলেন, এটা একটা জাস্ট ফালতুমি করা হইছে আরকি। এটা এবসুলেটলি ভুল সিদ্ধান্ত। আমি এটার পক্ষে অবশ্যই না, সমর্থনও করি না। আর আমি যদি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বা ওইরকম কিছু থাকতাম, তো প্রশ্নেই উঠে না। ১৬ ডিসেম্বর তো দুরেরে কথা ডিসেম্বর মাসেই দিতাম না। কিসের পাকিস্তান বাংলাদেশে? ফালতু।

একটি মহল আপনার সমালোচনা করে। এই ব্যাপারে আপনার মত কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাইম নাই, বেইল নাই। এগুলোর কোন টাইমই নাই আমার কাছে, বেইলই নাই। কারা আমার বিরুদ্ধে বলে না বলে এইটা নিয়ে সময় নষ্ট করার মতো যথেষ্ট সময় আমার নাই, সরি।

বাংলাদেশে যে অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনীতি সে রাজনীতি শেষ পর্যন্ত জয়যুক্ত হবে? ধর্মান্ধ মৌলবাদদেরকে কি আমরা পরাজিত করতে পারবো চূড়ান্তভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ, অবশ্যই পারবো। 

কীভাবে বা পথ-পরিক্রমা কি হবে জানতে চাইলে ডা: মো: মুরাদ হাসান বলেন, পথ-পরিক্রমা বলতে পারবো না। আমার কার্যক্রম ফলো করেন। দেখেন আমি কি করি এবং সবাই কি করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি করে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা ছাড়া আর কাউকে বিশ্বাস করিনা, করার দরকারও আমার নাই। আমি বঙ্গবন্ধুর রক্তকে বিশ্বাস করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘বিদ্যুতের এতো সুন্দর ব্যবস্থা কোনো সরকারের আমলে কখনোই হয় নাই’


Thumbnail

‘এ ঘটনাটি মিথ্যা। একটা গ্রুপ প্রচার করতেছে, গুজব করতেছে- এটা গুজবেরই একটা অংশ। বিদ্যুৎ নিয়ে একটা গুজব ছড়ানো হচ্ছে- আমার নাম নিয়ে যে- উনার বাড়ি ঘেরাও করা হয়েছে- এগুলো আসলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এটি একটি মিথ্যা। আমার একটি বক্তব্য ছিল সংসদে অনেক আগে, বক্তব্যটা নিয়ে তারা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে প্রতিদিনই ফেসবুকে আলোচনা, সমালোচনা করে। প্রকৃতপক্ষে আমার যে বক্তব্যটা ছিল, সে বক্তব্যটা ছিল আমার এলাকাভিত্তিক কিছু আলোচনা। কারণ আমরা যে কাজগুলো করি, সে কাজগুলো সংসদে আলোচনা করি এবং আবার যে কাজগুলো দরকার, সেটাও আমরা সংসদে বিভিন্ন মন্ত্রী মহোদ্বয়ের কাছে চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করি। ওইভাবেই একটা বক্তব্য দেওয়া ছিল, আমার অঞ্চল- মানিকগঞ্জ-২ আসন, সিঙ্গাইর, হরিরামপুর এবং সদরের তিনটি ইউনিয়নসহ ২৭টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় আমরা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছি।’ - বলছিলেন লোকগানের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী এবং সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম। 

সম্প্রতি ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্যুতের দাবিতে লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী এবং সংসদ সদস্য ‘মমতাজের বাড়ি ঘেরাও করা হয়েছে’ - বলে একটি অপপ্রচার এবং প্রপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে। এ খবর পৌঁছায় স্বয়ং মমতাজের কান পর্যন্তও। পরে তিনি এই নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে জানিয়েছেন তার বক্তব্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এই বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে, ট্রলও হয়েছে। এসব বিষয় নিয়েই কথা হয় লোকগানের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী এবং সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম- এর সাথে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন প্রকৃত সত্য ঘটনা। পাঠকদের জন্য লোকগানের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী এবং সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন। 

সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম বলেন, ‘আগে আমি যখন এখানে দায়িত্বে ছিলাম না, তখন এখানে ৩০ শতাংশ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ ছিল। আর আমি এখানে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমরা এই কাজগুলো করতে করতে আল্লাহর রহমতে শতভাগ আমাদের বিদ্যুতায়ন হয়েছে। ওইটাই আমার বক্তব্য ছিল যে- শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। এক সময় যখন এলাকায় থাকতাম, মানুষজন শুধু বলতো, মা-বোনেরা এসে বলতো, আপা কিছু চাই না, আমাদের শুধু একটা মিটারের ব্যবস্থা করে দিন। এই মিটার এক সময় এ অঞ্চলে রত্নের মতো ছিল মানুষের কাছে। আমার আগে যারা এখানে দায়িত্বে ছিলেন, তারা অনেকেই একটি মিটারের জন্য ২০ থেকে ৩০/৪০ হাজার টাকাও নাকি মানুষের কাছ থেকে নিতো। এ ধরনের অভিযোগ ছিল।’

মমতাজ বলেন, ‘কিন্তু আসলে এই মিটার তারা কোনোদিন দিতে পারে নাই। পরে যখন আমি দায়িত্ব নিয়ে আমাদের বিদ্যুৎ মন্ত্রীকে ফোন করে বললাম, আমার এখানে মিটার লাগবে, ফোন লাউড স্পিকারে ছিল। আমার এখানে ইউনিয়নের অনেক চেয়ারম্যান ছিল, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ছিল। উনি সবার সামনেই বললেন, কতগুলো লাগবে? আমি আমার নেতৃবৃন্দদের বললাম, কতগুলো লাগবে। তারা বললেন, দুই/তিন হাজার চান। তখন আমি বললাম, ২/৩ হাজার  লাগবে। সাথে সাথে মন্ত্রী আমাকে বললেন, দুই/তিন হাজার না, কালকে আমি আপনার ওইখানে পাঁচ হাজার মিটার পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। এর পরে একটার পর একটা দিয়েছেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদে মাইকিং করে করেও আমরা মিটার দিয়েছি, বলেছি আপনারা আবেদন করেন, আমাদের পর্যাপ্ত মিটার আছে। সে জন্য আমার অঞ্চলটায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে।’                      

সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম বলেন, ‘এই কথাটাই আমি সংসদে বলছিলাম যে- এখন ফেরিওয়ালাদের মতো- ‘মিটার লাগবে কি মিটার? বিদ্যুৎ লাগবে কি বিদ্যুৎ?’- এরকম আমরা বলে বেড়াচ্ছি। তার মানে মাইকিং করে আমরা বলতেছি, মিটার লাগবে কি মিটার। এমন একটা ভালো অবস্থা। বিদ্যুতের যে আসলেও এতো উন্নয়ন হয়েছে, সেই প্রশংসা আমি কেন সবাই করেছে। এই ধরনের বিদ্যুতের এতো সুন্দর ব্যবস্থা কোনো সরকারের আমলে কখনোই হয় নাই।’

তিনি বলেন, ‘এখন যে লোডশেডিংটা হচ্ছে- এটা সাময়িক একটা সঙ্কট। এটাতো আর দুই/এক দিনে হয় নাই। করোনার মহামারি গেছে, তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের দাম বাড়া- আমাদের ছোট্ট একটা দেশ। সবকিছুইতো আমরা চাইলে সমাধান করতে পারি না। আমাদের বাইরে থেকেও-তো কিছু সহযোগিতা বা বিভিন্ন ধরনের আমদানি করতে হয়। সেগুলো যখন আমাদের ব্যাঘাত ঘটেছে- তখনই এই বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে আমাদের এই সঙ্কটটা দেখা দিয়েছে। এটাকে আমাদের ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করতে হবে।’

‘সোশ্যাল মিডিয়াতে যে প্রপাগান্ডা এবং অপপ্রচার চালাচ্ছে, এটা কারা চালাচ্ছে? এইটা নিয়ন্ত্রণে কি করণীয় বলে আপনি মনে করেন?’ -এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা সরকারের আসলে যারা ভালো চায় না, কোনো ভালো কথাও তারা শুনতে চায় না- এটাতো একটা গ্রুপ আছেই, যারা সরকার বিরোধী। দেশে এবং দেশের বাইরে বসে যারা এই ভিডিওগুলো বানায়, বিশেষ করে ভিডিওগুলোর তল্লাশি করতে গেলে দেখা যায়, বেশিরভাগ আইডি ভুয়া, তাছাড়া তারা দেশে বসে এগুলো করে না। তারা দেশের বাইরে বসে ভিডিও বানিয়ে বানিয়ে এই প্রপাগান্ডা এবং সরকার বিরোধী অপপ্রচারগুলো চালায়। এখন এটার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেতন আছে। সরকারও সচেতন আছে। কিন্ত আসলে মানুষের মন মানসিকতারও পরিবর্তন দরকার।’            


বিদ্যুৎ   মমতাজ   অপপ্রচার   প্রপাগান্ডা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘ঢাকায় প্রতিদিন আড়াই কোটি পলিথিন একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হচ্ছে’


Thumbnail

‘যে প্রতিপাদ্য দিল ইউনাইটেড নেশন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম ‘সলিউশন্স অব প্লাস্টিক পলিউশন’ এবং বাংলাদেশে এটার বঙ্গানুবাদ করেছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে সামিল হই সকলে’। এটাতো প্রতিপাদ্য এবং স্লোগান ছিল কি ‘বিট প্লাস্টিক পলিউশন’। বাংলাদেশে করা হয়েছে কি-‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’। এই যে বঙ্গানুবাদটি করেছে পরিবেশ এবং বন মন্ত্রণালয়। আমি একটি প্রশ্ন রাখতে চাই পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থেকে সচিব এবং কর্তা ব্যক্তিদের- ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’- তারা কি এই পণের অন্তর্ভুক্ত? তারা কি এই পণ করেন?’ - বলছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান

আজ সোমবার ( ৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এই দিবসে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য - ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’। ম‍‍‍ূলত প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার রোধ বা নিয়ন্ত্রণ করতেই এই প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্লাস্টিক পণ্য ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে গেছে, প্লাস্টিক পণ্য বর্জন এবং এর ব্যবহার রোধ করতে কি কি করণীয় হতে পারে?- এসব বিষয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান। পাঠকদের জন্য প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে পলিথিন নিষিদ্ধের যে আইন আছে, সে আইনটা ২০০২ সালের আইন। এই আইনটি দেখার দায়িত্ব হচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তরের। আবার পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় হচ্ছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। তার মানে হচ্ছে, তাদের ওপর এ দায় বর্তায়। ২০০২ সালে পলিথিন যখন বিলুপ্ত হলো, শপিং ব্যাগ, তখন কিন্তু বিকল্প চলে আসলো। তখন কিন্তু আমরা পলিথিন থেকে সরে আসছিলাম। কাগজের ঠোঙ্গা, কাগজের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, পাটের ব্যাগ- আগে গ্রাম বাংলায় যেরকম পাটের ব্যাগ, শিকে ব্যবহার করতাম আমরা- সেগুলো কিন্তু অনেকটাই ফিরে আসছিল। - এই জায়গা কেন আমরা আবার আগের জায়গাতেই আসলাম?

প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, ঢাকা শহরে আমাদের হিসেব মতে আড়াই কোটি পলিথিন একবার ব্যবহার করে প্রতিদিন ফেলে দেওয়া হচ্ছে। যে আইটেমই আপনি কিনেন না কেন, দেখবেন আপনাকে পলিথিন ব্যাগ দিচ্ছে। সুতরাং আইন আছে, এর প্রয়োগ নেই। এই আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব হচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তরের এবং তার প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় হচ্ছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। কিন্তু তারা তো সে দায়িত্ব পালন করছেন না। তারা একটা অজুহাত তোলেন, সচেতনতার অভাব। আমি আইন ভঙ্গ করলে আমাকে আইনের আওতায় আনতে হবে, সে দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের, কিন্তু সেটা আমরা দেখছি না। 

তিনি বলেন, ২০০২-২০০৩ সালের দিকে এটা কিভাবে সম্ভব হয়েছিল? সে সময়ে কিন্তু আমরা পলিথিন বন্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে আমরা কেন আবার এ অবস্থায় এলাম। পরিবেশ অধিদপ্তর একটা রুটিন ওয়ার্ক করে মোবাইল কোর্ট করে। মেবাইল কোর্ট তারা ভোক্তা পর্যায়ে করে থাকেন, কিন্তু উৎপাদন পর্যায়ে করছেন না। যারা পলিথিন উৎপাদন করেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা তারা নিচ্ছেন না। তার মানে হচ্ছে 'সর্ষের ভেতরে ভূত'। 

প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, প্লাস্টিক বিষয়ে আসি। প্লাস্টিক দূষণ যে কতটা ভয়াবহ, এটা আমরা কেউ কিন্তু অনুধাবন করতে পারছি না। ২০১৮ সালে ইউনাইটেড নেশন এনভায়রনমেন্ট প্র্রোগ্রাম যে প্রতিপাদ্য দিয়েছিল- সেটাও ছিল এই প্লাস্টিক নিয়ে এবং ওই বছরই ধরিত্রী দিবসের প্রতিপাদ্যও ছিল এই প্লাস্টিক। দুটোই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিবস ছিল। পাচঁ বছর পরে আবার প্লাস্টিককেই প্রতিপাদ্য করা হয়েছে। তার মানে এর ভয়াবহতা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন গবেষণায় বলা হচ্ছে , এই পলিথিন, প্লাস্টিক এক হাজার বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। 

তিনি বলেন, এখন এটার সমাধান কি? এখানে দুটো বিষয়। একটি হচ্ছে পলিথিন এবং আরেকটি হচ্ছে প্লাস্টিক। আমরা যেসব পলিথিন বা প্লাস্টিক একবার ব্যবহার করি, সেগুলোর ব্যবহার সীমিত করা। যারা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি আছে, যারা প্লাস্টিক ব্যবহার করে- তাদের দায়িত্ব হওয়া উচিত- এগুলো ভোক্তা পর্যায় থেকে সংগ্রহ করে নেওয়া। যদি এগুলো আমরা সংগ্রহ করি এবং এটি যদি রিসাইক্লিং করার ব্যবস্থা থাকে- তাহলে এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এখনও কিন্তু প্লাস্টিক কেজি প্রতি ২০/২২ টাকা বিক্রি হয়। এটা যদি কোম্পানিগুলো সংগ্রহ করে তাহলে পরিবেশের ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ হয়। এসব প্লাস্টিক পণ্য যেখানে সেখানে ফেলে রাখা হবে না। এটা পরিবেশ অধিদপ্তর বা পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় দায়িত্ব নিতে পারে। প্রয়োজনে আইনের প্রয়োগ করতে পারে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে প্রচারের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি। পরিবেশ অধিদপ্তর এ ধরনের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। চ্যানেল আইতে ৫০/৫২ টি টকশো করেছিল। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি- এর কোনো ভ্যাুলু নাই। ক’জন টকশো দেখেন। আমি মনে করি গ্রামে-গঞ্জে আগে যেরকম মোবাইল ভ্যান নিয়ে প্রচারণা চালানো হতো- এরকম প্রচারণা করা উচিৎ।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস   প্লাস্টিক   পলিথিন   পরিবেশ দূষণ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘সম্পদ, আয়, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন বৈষম্য নিরসনের বাজেট হওয়া উচিৎ’


Thumbnail অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত।

‘আমাদের যে মূল্যস্ফীতি, গত বছরের যে বাজেট ছিল- তা ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, এই চলমান অর্থ বছরে। ওইটা ছিল প্রস্তাবিত বাজেট। এখন এবার যখন বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী, তখন সেটা সংশোধীত বাজেট বলবেন। আগে যেটা বলা হয়েছিল, তার থেকে সংশোধীত বাজেটটা আসলে কত হলো? আমার ধারণা, যেটা সংশোধীত বাজেট হবে, যেটা প্রস্তাব করা হয়েছিল চলমান বছরে (২০২২-২৩)। সেখানে সংশোধীত বাজেটটা কম হবে, কত কম হবে-সেটা আমি জানি না। সেটার তুলনায় এখনকার বাজেটটা কত হবে সেটা এখনও আমি জানি না। তবে প্রকৃত মুল্যস্ফীতি যা আছে, সরকার যা বলছেন, সেটা প্রকৃত মূল্যস্ফীতি না-ও হতে পারে। প্রকৃত মূল্যস্ফীতি যা আছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য করে নূন্যতম বাজেটটা সেরকম হওয়ার কথা। সেই ক্ষেত্রে নূন্যতম বাজেটটা ৭ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা হওয়া উচিৎ। কিন্তু বাজেটটা হওয়া উচিৎ সম্প্রসারণশীল। তার মানে এর চাইতে অনেক বেশি। তবে কত বেশি হহওয়া উচিৎ সেটাও আমি জানি না।’ - বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত।                   

আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পেশ করেছেন। গতকাল বুধবার (৩১ মে)  বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হচ্ছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এবারের বাজেটের আকার কেমন হওয়া উচিৎ, অর্থনৈতিক মন্দা নিরসন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং সাধারণ জনগোষ্ঠীর সম্পদ, আয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, আবাসন, কর্মসংস্থানসহ সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণে এবারের বাজেটের আকার কেমন হওয়া প্রয়োজন- এসব বিষয় নিয়েই কথা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত- এর সঙ্গে। বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি বলেছেন এবারের বাজেট সম্পর্কে। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য থেকে শুরু করে বৈষম্য। বৈষম্যের মধ্যে সম্পদ বৈষম্য, আয় বৈষম্য, পুষ্টি বৈষম্য। পুষ্টি বৈষম্য বলতে আমি বলছি, মানুষ সম্ভবত গত এক বছরে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম- এগুলো ভোগ কমিয়েছেন। এগুলো যেন মানুষ আগের মতোই ভোগ করতে পারেন। তাহলে পুষ্টি বৈষম্য আগের মতোই হবে। সেগুলো যদি ঠিক রাখি- তার সঙ্গে, স্বাস্থ্য বৈষম্য, শিক্ষা বৈষম্য, আবাসন বৈষম্য- এগুলো যদি বিচার করা হয়, তাহলে আদর্শগতভাবে বাজেটটা হওয়া উচিত- এখন যে বাজেটটা আছে- ৬ লক্ষ্য ৭৮ হাজার কোটি টাকা, এটা অনেক বেশি হওয়া উচিৎ। এটা কত বেশি হবে সেটা আমি এখনও জানি না।’ 

তিনি বলেন, ‘তবে নীতিগতভাবে বৈষম্য যদি প্রধান বিষয় হয়ে থাকে, দ্রব্যমূল্য যদি বড় বিষয় হয়ে থাকে, তবে বাজেটটা অনেক বড় হওয়া দরকার- এটা হলো এক নম্বর বিষয়। দ্বিতয়ত হলো, এই বাজেটে বৈষম্য হ্রাস করার পথ এবং পদ্ধতিগুলো। বাজেট-তো একটি রাজনৈতিক অর্থনৈতিক দলিল, এখানে বৈষম্যগুলো হ্রাস করার জন্য পদ্ধতিগুলো বাজেটের মধ্যে প্রতিফলিত হতে হবে। এই প্রতিপ্রফলনটা হওয়া উচিৎ বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ রেখে। এই মোট কথা।’ 

‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি থেকে আপনারা একটি বিকল্প বাজেট তুলে ধরেছিলেন, সেখানে যে ধরনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, সে প্রস্তাবনার আলোকে এই বাজেট কেমন হলে ভালো হতো?’ - এমন প্রশ্নে ড. আবুল বারাকাত বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবনার মধ্যে কতগুলো বিষয় ছিল, প্রথম ছিল- বাজেটের ব্যয় খাত কি কি হওয়া উচিৎ। বাজেটের ব্যয় খাতে আমরা পরিষ্কার করে বলেছিলাম যে, জনগণের যে জনচাহিদা- এই জনচাহিদাটা সংবিধানে যে জনচাহিদার কথা বলা আছে, তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে করা উচিৎ। সেখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন, সামাজিক নিরাপত্তা,কৃষি সংস্কার, ভূমি সংস্কার ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রাধান্য পাওয়া উচিৎ। এগুলো ব্যয়ের খাত। দ্বিতীয় হচ্ছে আয়ের খাতে কতগুলো বিষয় থাকা উচিৎ। এর মধ্যে প্রধান চারটি বিষয় হচ্ছে- প্রথমত- সম্পদ কর, দ্বিতীয় হচ্ছে- অতিরিক্ত মুনাফার উপর কর, তৃতীয় হচ্ছে- কালো টাকা এবং তার থেকে প্রাপ্তি, অর্থাৎ কালো টাকা উদ্ধার করতে হবে। চতুর্থ হচ্ছে- অর্থ পাচার রোধ। এগুলো যদি করা হয়, এগুলো হচ্ছে আয়ের খাত। এই আয়ের খাতগুলো বাজেটে চিহ্নিত করা উচিৎ। এবারে এগুলো হচ্ছে কি হচ্ছে না আমি জানি না। যদি এগুলো চিহ্নিত করা হয়, তাহলে বাজেট একটা বৈষম্য নিরসনমুখী, জনগণের কল্যাণের জন্য একটা বাজেট হতে পারে।’ 

তিনি বলেন, ‘সম্পদ, আয়, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা,আবাসন বৈষম্য নিরসনের জন্য এবারের বাজেট হওয়া উচিৎ। কতটুকু কি হচ্ছে তা আমি জানি না। এগুলো বাজেট পেশ করার পর বোঝা যাবে।’


অর্থনীতিবিদ   অধ্যাপক   ড. আবুল বারাকাত   বাজেট   অর্থমন্ত্রী   সংসদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘গাজীপুরে ব্যর্থতার কারণ মূল্যায়ন করা হবে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ৩১ মে, ২০২৩


Thumbnail আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।

‘বিষয়টায় কিছু অ্যাকশন নিতে হবে। আর ওই জায়গায় নিম্ন পর্যায়ে যে কমিটিগুলো আছে, যেখানে সম্মেলন করার সুযোগ আছে, সেগুলো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয় নাই এবং এগুলো আহবায়ক কমিটি সবগুলোই। যেসব কমিটির লোকেরা বিদ্রোহ করেছে- এরা সবাই আহবায়ক কমিটির লোক।  অতএব দ্রুত সম্মেলন করে, যেগুলো বিশ্বাসঘাতক- এগুলোকে বাদ দিয়ে নতুন করে ঢেলে সাজালেই হবে। খুব সহজ কাজ। সম্মেলনের তারিখ দিয়ে এগুলোকে বাদ দিয়ে দিলেই হবে। কোনো সমস্যা নেই।’- বলছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।      

‘গাজীপুর নির্বাচন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলটাকে প্রকাশ্য রূপ দিয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। এখন সামনে নির্বাচন, নির্বাচনের আগে একজন সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আপনি এই অভ্যন্তরীণ কোন্দলটাকে কি রকম চ্যালেঞ্জ মনে করেন এবং কোন্দলটা মোকাবেলায় কি করা উচিৎ বলে আপনি মনে করেন, আপনার পরামর্শ কি?’ -এমন প্রশ্নের উত্তরে কথাগুলো বলছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।

সম্প্রতি শেষ হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান ১৬ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলের কারণেই দলীয় প্রার্থীর নাটকীয় পরাজয় হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। সেই সঙ্গে এই পরাজয়ের মধ্য দিয়ে গাজীপুর আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল সুস্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। এসব বিষয় নিয়েই কথা হয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম -এর সঙ্গে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন এই নির্বাচনে পরাজয়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কথা এবং এই কোন্দল নিরসনে কি করণীয়-সেসব কথা। পাঠকদের জন্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম -এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার -এর নিজস্ব প্রতিনিধি।

মির্জা আজম বলেন, ‘এই নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তারা নিজেরাও, এমপি, মন্ত্রী যারা আছে, তাদের সাথে নিয়ে একটা পর্যালোচনা বৈঠক সিরিজ, আসছে ১, ২, ৩ তারিখে করবে তারা।’ 

‘এটাতো হলো গাজীপুর। কিন্তু সারা বাংলাদেশেই এই রকম আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কথা শোনা যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে এই কোন্দলতো আওয়ামী লীগের জন্য বড় ধরনের একটা মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।’- এমন প্রশ্নে মির্জা আজম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটা অনেক বড় দল। এ জায়গায় আসলে কোন্দলটা ঠিক ওইভাবে নাই। গাজীপুরের ব্যাপারটা একটু আলাদা, ভিন্ন। সে জায়গায় আমাদের একজন লোককে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে মেয়র ছিল। সবকিছু মিলিয়েই এটা হয়েছে। কিন্তু অন্য জায়গায় যে বিষয়গুলো রয়েছে, সেটা ছোটখাটো বিষয়। ওই জায়গায় বড় ধরনের কোনো কোন্দল নেই। নোমিনেশন যখন ঘোষণা হয়ে যাবে। তখন দেখা যাবে, সবাই একসাথে কাজ করছে, কোনো বিষয় হবে না, ইনশাল্লাহ।’

‘একটা বিষয়- বিএনপি এখন রাজপথে আন্দোলন করছে এবং বিএনপি এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করবে বলে তারা জানিয়েছে- এ রকম অবস্থায় আপনাদের প্রস্তুতি কি?’ -এই প্রশ্নে মির্জা আজম বলেন, ‘বিএনপি যেটা নিয়ে আন্দোলন করতেছিল, তাদের আন্দোলনতো এখন অটো ফল্ট করবে। কারণ হচ্ছে, তাদের যে প্রভু, সে প্রভু তাদের যা বলছে, সে অনুযায়ী তাদের আবার কিসের জন্য আন্দোলন। ওদের প্রভুরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে কোনো কিছু উল্লেখ করে নাই। তারা বলেছে, যারা নির্বাচনে বাধাদান করবে, তাদেরকেও তারা ভিসা দিবে না। আমরাতো- আমেরিকা যা চাচ্ছে, ওই ধাঁচেই আওয়ামী লীগ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমেরিকার পক্ষ থেকে যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, সে ভিসা নীতিতে বিএনপি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তার জন্য তারা বাধার সৃষ্টি করছে। বিএনপি এখন এক দফা বলেন, সাত দফা বলেন- কিসের জন্য আন্দোলন করবে? তত্ত্বাবধায়ক সরকার? আমেরিকা যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেইতো। তাহলে তারা কি নিয়ে আন্দোলন করবে। অতএব, তারা এখন নির্বাচনে আসবে নাকে ক্ষত দিয়ে। কাজেই এই নির্বাচনে আসার জন্য প্রস্তুতি নেওয়াটা তাদের জন্য এখন বুদ্ধিমানের কাজ।’ 

‘একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আপনি কি মনে করেন, দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে?’- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে গাজীপুরের নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে যে, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে- গাজীপুর নির্বাচনে তা প্রমাণ হয়েছে।’ 

‘বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হয়- তাহলে আওয়ামী লীগের একজন নেতা হিসেবে আপনারা জয়ের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী?’- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ২০০৮ সালে, তখনতো কোনো বাধা দেওয়া হয় নাই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, তারা ২৯ আসন পেয়েছে। এবার নির্বাচন করছে, সুন্দর। ২৯ দু’গুণে ৫৮ আসন পেতে পারে। এর বেশি আমরা আশা করি না।’                  

‘একটি কথা আওয়ামী লীগ থেকে বলা হচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের প্রচুর প্রার্থী পরিবর্তন করতে হবে। কারণ যারা গত দুইটা নির্বাচনে এমপি হয়েছেন, তারা অনেকেই এলাকায় যায় না।’- এমন প্রশ্নে মির্জা আজম বলেন, ‘এটা নেত্রী প্রকাশ্যে মিটিংয়ের মধ্যে বলেছেন যে, এবারের মনোনয়নের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত সজাগ থাকবেন এবং যারা এলাকায় জনপ্রিয়- তাদেরকে মনোনয়ন দেয়া হবে। যারা এলাকায় বিতর্কিত এবং দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করে আত্মীয়-স্বজন এবং হাইব্রিডদের নিয়ে পুণর্বাসন করেছে, দলের মধ্যে আবার দল অ্যান্টি দল বানিয়েছে, তাদেরকে  নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে না, নেত্রী বলে দিয়েছেন।’

‘গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে কি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো মূল্যায়ন করবে বা এটার ব্যাপারে কোনো আলাপ-আলোচনা হবে?’- প্রশ্নে মির্জা আজম বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে-তো মূল্যায়ন হবেই। আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সাথে কথাবার্তায়- তখনতো যার যার অভিমত ব্যক্ত করবেই। যদি সুযোগ থাকে আমরাও আমাদের অভিমত ব্যক্ত করবো। তবে ইতিমধ্যেই জেলার পক্ষ থেকে, মহানগরের পক্ষ থেকে এই নির্বাচনে পরাজয়ের বিভিন্ন মূল্যায়নটা আগামীকাল থেকে টানা তিন দিন- বিভিন্ন থানায় থানায় মিটিং করে, আমাদের এমপি, মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে আলোচনা করে, পর্যালোচনা করে মূল্যায়নটা করা হবে যে- কি কি কারণে, কি ব্যর্থতার কারণে আমরা ফেল করেছি।’


আওয়ামী লীগ   সাংগঠনিক সম্পাদক   মির্জা আজম   গাজীপুর নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘আওয়ামী লীগ যারা পছন্দ করে না, তাদেরতো একটি জায়াগায় যেতে হবে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ৩০ মে, ২০২৩


Thumbnail

যারা সরকার, আওয়ামী লীগ বা নৌকা পছন্দ করে না, তাদেরতো একটি জায়াগায় যেতে হবে। তাই আমি সবাইকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ধরেই ২১ জুনের নির্বাচনের জন্য পূর্ণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।‘– কথাগুলো বলছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। 

আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। তবে বিএনপি এই নির্বাচনে কোন প্রার্থী দেয়নি। শেষ মুহুর্তে নির্বাচন করবে না বলে জানান আরিফুল হক চৌধুরী। বিএনপি’র প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন এই নির্বাচনকে কতটা গুরুত্বের সাথে দেখছেন এবং সিলেট নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি এসব বিষয়ে বাংলা ইনসাডারের সাথে কথা হয় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর। পাঠকদের জন্য আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী-এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক আসাদুজ্জামান খান।

সিলেট সিটি নির্বাচনে যেহেতু বিএনপি’র কোন প্রার্থী নেই, এই নির্বাচনটিকে কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মনে করছেন? - এমন প্রশ্নের উত্তরে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমি মনে করি সিলেট নির্বাচনে প্রতিযোগিতা হবে। আমি প্রত্যেক প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেই কাজ করছি। আমি কখনোই মনে করছি না যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। বিষয়টি হচ্ছে, যারা সরকার, আওয়ামী লীগ বা নৌকা পছন্দ করে না, তাদেরতো একটি জায়াগায় যেতে হবে। তাই আমি সবাইকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ধরেই ২১ জুনের নির্বাচনের জন্য পূর্ণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

যেহেতু লম্বা সময় আপনি দেশের বাইরে ছিলেন, সেহতু সিলেটের মানুষের সাথে আপনার সংযোগ নেই বলে অনেকে মনে করছে। এ বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন? – এমন প্রশ্নে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, এটা সম্পূর্ণ ভুল। সিলেটের মানুষের সাথে আমার সংযোগ আগেও ছিল, এখনও আছে। মানুষজন আমাকে উল্টো ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। যেহেতু আমি বিদেশে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং লোকাল গভর্মেন্টে ভলেন্টিয়ার হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছি এটিকে সবাই ইতিবাচকভাবেই নিচ্ছে। আর আমি কিন্তু রাজনীতি থেকে কখনোই অনুপস্থিত ছিলাম না। আমি একজন তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মী। আমার জন্ম সিলেটে, আমার স্কুল কলেজও সিলেটেই। আমি রাজনীতি শুরু করেছি সিলেটে। সেই হিসেবে বিগত প্রত্যেকটি নির্বাচনে আমি কাজ করেছি। ড. এ কে মোমেন সাহেবের নির্বাচনে আমি কাজ করেছি। সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান সাহেবের পক্ষেও আমি কাজ করেছি। 

সিলেট শহরকে আপনি কিভাবে দেখতে চান, আপনার পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিলেটের প্রধান সমস্যা হল নালা-নর্দমার ময়লা-আবর্জনা। সিলেট নগরটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। সিলেটে জলাবদ্ধতাও একটি বড় সমস্যা, একটু বৃষ্টি হলেই শহর ডুবে যায়। আমরা চাই এই জলাবদ্ধতা থেকে সিলেটবাসীকে মুক্ত করতে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা, সুরমা নদি খনন, শহর রক্ষা বাধ ইত্যাদি ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব। 

তিনি বলেন, নগরবাসীর নিরপত্তা নিশ্চিত করতে পুরো শহরকে সিসিটিভি’র আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা আছে আমাদের। আমাদের ১ হাজারের মত লোক এখন আউটসোর্সিং করছে, আমাদের টার্গেট এই সংখ্যাকে ৫০ হাজারে নিয়ে যাওয়া। সিটিতে আমরা একটি হাব খুলে দিব এবং আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলে পে-পালকে নিয়ে আসার একটি পরিকল্পনা আমাদের আছে। এতে করে টাকা নিয়ে আসতে তাদের সুবিধা হবে। আমাদের সিলেটে যেহেতু কোন ইন্ডাস্ট্রি নেই, সে হিসেবে আমরা পর্যটন খাতকে আরও প্রাধান্য দিব। যাতে পর্যটন নগরী হিসেবে সিলেট আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠে।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন