ইনসাইড থট

“অনুগ্রহ করে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করবেন না”

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২৮ নভেম্বর, ২০২১


Thumbnail “অনুগ্রহ করে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করবেন না”

বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনায় আক্রান্তের (COVID-19) নিম্ন সংখ্যা এবং কম মৃত্যুর সাফল্যের জন্য, দেখছি বিভিন্ন ধরনের সুবিধাবাদী লোক শক্তিশালী লোকদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য একে অপরের সাথে লড়াই করে, উচ্চকণ্ঠে কেউ কেউ কিছু সরকারি নেতাকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন; অন্যদিকে কিছু শক্তিশালী লোক চতুরভাবে মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে এবং এই সাফল্যের কৃতিত্ব নিতে দ্বিধা করছেন না। আজকাল একে অপরের পিঠ চাপড়ানোর মহামারী হয়ে উঠছে বলে মনে হচ্ছে। এই সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি দেখে আমি কিছুটা ভয় পেয়েছি। তাদের দেখে মনে হয়, আমরা ইতোমধ্যেই যুদ্ধে জিতেছি, চিন্তার কোন দরকার নেই। আমি ভয় পাচ্ছি, আমরা কি স্বেচ্ছায় ২০২০ সালে এবং ২০২১ সালের প্রথম দিকের একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে যাচ্ছি, যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছিল, ফলস্বরূপ দুর্ভাগ্যবশত অতিরিক্ত হাজার হাজার মানুষ ভুক্তভোগী এবং মারা গেছে। সেই ভুলগুলো অকথ্য দুর্ভোগ ও অতিরিক্ত মৃত্যুর কারণ। অনুগ্রহ করে যেহেতু আমরা এখন ভালো অবস্থানে আছি, সঠিক কৌশল প্রয়োগ করুন, আপনার প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম কখনই কম করবেন না। এখনকার নিম্ন ক্ষেত্রের পরিস্থিতি আমাদের কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং জীবন ও দুর্ভোগ বাঁচানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া একটি সহজ কাজ হবে। অকালে জয় ঘোষণা করবেন না এবং আবার একই ভুল করবেন না। ধনী পশ্চিমা দেশগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিন।

ইউরোপ জুড়ে, সফল ভ্যাকসিনেশন কভারেজের কারণে, রাজনীতিবিদরা তাদের সাফল্যের কৃতিত্ব নিতে শুরু করে, সবকিছু অকালেই খুলে দেয়। আবার বুকে ধরে বা চুম্বন করে বা হ্যান্ড শেক করে একে অপরকে স্বাগত জানাচ্ছে, মুখোশ পরা একটি এলিয়েন কাজ হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে, মুখোশ ছাড়া হাজার হাজার মানুষ গাদাগাদি করে ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করতে শুরু করেছে, থিয়েটার বা সিনেমা বা রেস্তোরাঁয় আগের সামাজিক দূরত্বের সেই ব্যবস্থা উধাও হয়ে গেছে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার নামে। সেখানে লক্ষ লক্ষ মানুয এখনও টিকা নিতে অস্বীকার করছে। লক্ষ লক্ষ টিকাসহ বা টিকাবিহীন মানুষ মৃদু বা কোন উপসর্গ ছাড়াই ভুগছে, রোগ ছড়াচ্ছে। সম্পূর্ণরূপে টিকা দেওয়া, নিরাপত্তার একটি মিথ্যা অনুভূতি প্রদান করছে, যদিও আমরা জানি যতক্ষণ আমরা সবাই সুরক্ষিত নই, কেউ সুরক্ষিত নয়। বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশের লোক সংক্রমণের জন্য সংবেদনশীল, তাদের স্বতন্ত্র প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম। দ্রুত ভ্যাকসিন দেওয়ার সফলতার কারণে কোনোভাবে তাদের কোভিড থেকে রক্ষা করে, হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে শুরু করে। কিন্তু ইদানিংকালে টিকাবিহীন মানুষের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে এবং ভ্যাকসিনের সুরক্ষা হ্রাস পাওয়ার কারণে টিকা পাওয়া মানুষের মধ্যেও break through infection ঘটছে। পশ্চিমা দেশগুলিতে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছে, টিকা দেওয়ার উচ্চ কভারেজ সত্ত্বেও, সংক্রমণ কমাতে এবং অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য প্রায় সম্পূর্ণ কঠোর লকডাউন আরোপ করা ছাড়া তাদের আর কোনও উপায় থাকছে না। যেহেতু যত্ন ব্যবস্থাপনার উন্নতি হয়েছে, এমনকি সংক্রামিত মানুষের সংখ্যা বেশি হলেও কম মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, যদিও তারা খোলাখুলি বলছে না, তবে মনে হচ্ছে যুক্তরাজ্য কিছু অতিরিক্ত যন্ত্রণা এবং মৃত্যুর খরচেও আরও অনেক লোকের সংক্রামিত হতে এবং অনাক্রম্যতা অর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লকডাউন আরোপ করা এড়িয়ে চলছে, নতুন সংক্রমণের বিশাল এবং ক্রমবর্ধমান সংখ্যা সত্ত্বেও।

কোভিড-১৯ এর উচ্চ সংখ্যক মিউটেশনের নুতন রুপ যা বতসোয়ানাতে উদ্ভূত হয় এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছিল, এখন সেই নতুন (আরও মারাত্মক হতে পারে - আমরা এখনও জানি না) বৈকল্পিকটি যার নাম ওমিক্রোন (omicron), তা উদ্বেগের একটি রূপ হয়ে উঠছে। হংকং, বেলজিয়াম, ইসরায়েল, জার্মানি, চেক প্রজাতন্ত্র বৈকল্পিক রোগটির সন্ধান পাওয়া গেছে। আজ (২৭শে নভেম্বর) কেএলএম (KLM) ফ্লাইটে কেপটাউন এবং জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উড়ে আসা ৬০০জন যাত্রীর মধ্যে , ৬১ জনের পজিটিভ পরীক্ষার রেজাল্ট পাওয়া গেছে (এখনও Omicron ভেরিয়েন্টে কয়জন আক্রান্ত, তা তারা জানেন না)। হংকং-এ আক্রান্ত দুজনকেই সম্পূর্ণ টিকা দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার ৬টি দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, বেশিরভাগ ইউরোপীয় এবং কিছু এশিয়ান দেশে সংক্রমণ বাড়ছে, তার ফলে আরও মিউট্যান্ট বৈকল্পিক আবির্ভূত হবে এবং বর্তমান ভ্যাকসিন এবং টিকাকরণ কর্মসূচির উপর চাপ সৃষ্টি করবে। যদিও বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন যে omicron ভেরিয়েন্ট আমাদের COVID-19 প্রচেষ্টা পুনরায় রিবুট বা আমাদের বর্তমান প্রচেষ্টাকে দুর্বল করবে কিনা, তবে বিজয় ঘোষণা করার এবং একে অপরকে সাফল্যের পিঠ চাপড়ানোর সময় এখনো আসেনি। “শুধু টিকা” দেওয়া কৌশলের জঙ্গিবাদী জনস্বাস্থ্য নেতাদের তাদের কৌশলের বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

বাংলাদেশের জন্য সুসংবাদ, যদিও প্রাথমিক অব্যবস্থাপনা, স্বার্থপর কার্যকলাপ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অদক্ষতার কারণে আমদের টিকাদান কর্মসূচি ধীরগতিতে শুরু হয়েছিল। তারপরও, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং আন্তরিক উদ্বেগ এবং উৎসর্গের কারণে আমরা আমাদের টিকা কার্যক্রম সফলভাবে পুনরায় চালু করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী সংসদে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে বাংলাদেশের নাগরিকদের টিকা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন রয়েছে এবং থাকবে। বাংলাদেশে এখন সংক্রমণের হার কম, প্রতিদিনের আক্রান্তের সংখ্যা কম, সুস্থ হওয়ার হার বেশি এবং মৃত্যুর সংখ্যা কম। ব্যক্তি এবং পরিবার ধীরে ধীরে কিন্তু ক্রমবর্ধমানে, পরিবারের অন্যদের সাথে মেলামেশা, বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যেতে শুরু করেছে। অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবচেয়ে ভালো কথা, বাংলাদেশে সকলেই এমনকি তরুণ ও শিশুরা টিকা নিতে চায়।

কিন্তু নেতিবাচক দিক হতে পারে, আমরা আত্মতৃপ্তির কারণে আমাদের বাস্তবায়নযোগ্য পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম কমিয়ে ফেলছি, কম মানুষ মাস্ক পরেছে বা ভিড়ের জায়গা এড়িয়ে চলছে। মনে করছে সবকিছুই স্বাভাবিক, কোভিডের কোনো হুমকি নেই। উপসর্গবিহীন বা হালকা উপসর্গবিহীন রোগীর সংখ্যা বেশী, তারা অজান্তে রোগ ছড়াচ্ছে। ভ্যাকসিন এবং রোগ অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। সম্পূর্ণরূপে টিকাপ্রাপ্ত লোকেরা সংক্রামিত হচ্ছে (সম্পূর্ণরূপে টিকাপ্রাপ্ত আমার এক ভাগ্নের স্ত্রী গতকাল সংক্রামিত হয়েছে) এবং ছড়াচ্ছে। ধীরগতির ভ্যাকসিনেশন ড্রাইভ (আমি জানি না টিকাদান কর্মসূচিতে কেন ধীরগতির মনোভাব) আরেকটি চিন্তার কারণ।

আমাদের কি করতে হতে হবে এবং চালিয়ে যেতে হবে:

১। আমাদের টিকা কভারেজ দ্বিগুণ বা চারগুণ করুন, প্রতিদিন বেশি করে, আরো দ্রুত টিকা দিন। আমাদের সেই ক্ষমতা এবং অতীত অভিজ্ঞতা আছে। সঠিক নেতৃত্বে আমরা এটা করতে পারি।

২। সক্রিয় নজরদারি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করুন

৩। ঘরের বাইরে যাওয়ার সময়, প্লেন, বাসে, ট্রেনে বা লঞ্চে ভ্রমণের সময় মাস্ক ব্যবহারে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করুন এবং বাধ্যতামূলক করুন, এর কঠোর বাস্তবায়ন কার্যকর করুন।

৪। জনাকীর্ণ স্থান এড়াতে জনগণকে অনুপ্রাণিত করুন (মাস্ক ব্যবহার করুন)। স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন

৫। অফিস, কারখানা, ব্যবসার জায়গা (রেস্তোরাঁসহ), স্কুল, বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ব্যবস্থা আছে এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে তা নিশ্চিত করুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করুন। সে সমস্ত জায়গায় মাস্ক এবং স্যানিটাইজার রাখুন এবং তাদের ব্যবহার নিশ্চিত করুন।

৬। স্বল্প সংখ্যার কারণে (আমাদের কাছে অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষিত পোলিও নজরদারি অফিসার রয়েছে), অনুগ্রহ করে সমস্ত সংক্রামিত ব্যক্তিকে কঠোরভাবে বিচ্ছিন্ন করুন এবং যারা তাদের সংস্পর্শে এসেছে তাদের চিহ্নিত করুন এবং তাদের পরীক্ষা করুন।

৭। মানুষকে রোগ পরীক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করুন।

৮। বিদেশ থেকে উড়ে আসা ব্যক্তিদের বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য হয় সম্পূর্ণ টিকা দিতে হবে, অথবা অতিতে সংক্রমিত হওয়ার প্রমাণের কাগজ অথবা নেতিবাচক পরীক্ষার ফলাফল থাকতে হবে। এটা কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের জন্য পরীক্ষার সুবিধা প্রতিষ্ঠিত করুন। কিছুদিন আগে সরকারের আমন্ত্রণে আমি সিরিয়ার সংঘাত-পরবর্তী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের কৌশল বিকাশের জন্য তিন সপ্তাহের জন্য বৈরুত হয়ে দামেস্কে গিয়েছিলাম। বৈরুত বিমানবন্দরে অভিবাসনের (immigration) আগে, আমাকে COVID-19 PCR পরিক্ষা করতে হয়েছিল, যদিও আগমনের সময় আমার সম্পূর্ণ ফাইজার টিকা ছিল এবং আমার কাছে করোনা নেগেটিভ পরীক্ষার ফল ছিল। আজ আমস্টারডাম বিমান বন্দরে আশা ৬০০ জনকে বন্দরের ভেতরে PCR পরিক্ষা করে, ফলাফল পাওয়ার পর শুধু নেগেটিভ ফলাফলের যাত্রীদের বাইরে যেতে দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৬১জন যারা করেনায় ভুগছেন বলে প্রমাণিত হন, তাদের পৃথকীকরণ করা হয় এবং বিশেষ হোটেলে রাখা হয়।

৯। যারা COVID-19 দ্বারা সংক্রামিত, নিশ্চিত করুন যে তারা প্রয়োজনীয় তথ্য এবং যত্ন পাচ্ছেন হয় বাড়িতে বসে বা প্রয়োজনে হাসপাতালে।  বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে যা এখন ঘরে বসেই খাওয়া যায়।

এটা আমাকে ১৯৮০ সালের HIV/AIDS সংক্রমণের কথা মনে করিয়ে দেয়। আমি তখন (১৯৮৫) বতসোয়ানায় ছিলাম এবং HIV সংক্রমণের বৃদ্ধি এবং বিপুল সংখ্যক মৃত্যু দেখেছি। বিপুল সংখ্যক মৃত্যুর দীর্ঘশ্বাস দেখে লোকেরা তাদের আচরণ পরিবর্তন করতে শুরু করে। মানুষ স্বাস্থ্য উপদেশ মেনে চলতে শুরু করে, মৃত্যু ও দুর্ভোগ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এইচআইভি/এইডস-বিরোধী ওষুধগুলি প্রায় সর্বজনীন হয়ে উঠতে শুরু করে। ওষুধ মৃত্যু এবং দুর্ভোগ আরও কম করে। মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করে এবং এইচআইভিসহ আরও বেশি দিন বেঁচে থাকে। এইচআইভি থাকা এখন আর মৃত্যুদণ্ড না। হল্যান্ড এবং অন্যান্য অনেক দেশে সমকামী সম্প্রদায়ের মধ্যে একই রকম ঘটনা ঘটেছে, যেখানে তারা দেখতে শুরু করে যে তাদের বন্ধুরা যৌন আচরণের কারণে HIV সংক্রামিত হয়ে বেশী সংখ্যায় মারা যাচ্ছে। তারা তাদের আচরণ পরিবর্তন করতে শুরু করে এবং ওষুধের সহজলভ্যতা এইচআইভি/এইডসকে একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগে পরিণত করে এবং যার ফলে খুব কমই কেউ মারা যাচ্ছিল। কম মৃত্যুর ভয় এবং এইচআইভিতে ভোগা হ্রাসের কারণে ইদানিংকালে আমরা বিপরীত যৌন আচরণের ধরণ লক্ষ্য করছি, ফলে যৌন সংক্রামিত রোগ বাড়ছে। এইচআইভি সংক্রমণ কমছে না। COVID-19 মহামারী মানুষের মধ্যে  একই আচরণগত প্যাটার্নও দেখাচ্ছে। যেহেতু ভ্যাকসিনের কারণে, মৃত্যুর সংখ্যা এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমছে, আজকাল মানুষ স্বাস্থ্য উপদেশ মানতে অনিচ্ছুক বা ইচ্ছুক নয়। ফলে রোগের সংখ্যা ক্রমবর্ধমানভাবে আবার বাড়ছে। মনে রাখবেন COVID-19 চলে যায়নি এবং এখনও আরো আনেক কাল আমাদের সাথে থাকবে। টিকা নিন এবং স্বাস্থ্য পরামর্শ অনুসরণ করুন। এটা 'শুধু ভ্যাকসিন' নয় বরং 'ভ্যাকসিনেশন প্লাস' কৌশলটি আমাদের অবশ্যই আসন্ন সময়ের জন্য গ্রহণ করতে হবে। অনুগ্রহ করে একই ভুল করবেন না। জনগণ আপনাদের আবার ক্ষমা করবে না।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

কতিপয় সাংবাদিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর


Thumbnail

বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।

ভিন্ন চিত্র দেখলাম শনিবার সকালে বরিশাল সদর হাসপাতালে। দায়িত্বরত চিকিৎসক ওয়ার্ডে রাউন্ড দিতে যেয়ে দেখেন দুজন টিভি সাংবাদিক ওয়ার্ডে ভিডিও করছেন। ভিডিও শেষ হবার পর চিকিৎসক তাঁর রাউন্ড শুরু করলেন। রাউন্ড শুরু করতেই দুজন সাংবাদিক আবার ক্যামেরা ধরে চিকিৎসকের সাথে কথা বলা শুরু করলেন। চিকিৎসক তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। বিনয়ের সাথে নিচু স্বরে একে একে ২০ বার (গুনে নিশ্চিত হয়েই বলছি) সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করলেন, পরিচয় জানতে চাইলেন। উক্ত সাংবাদিক নাম বলেননি, পরিচয় দেননি। বরং উচ্চস্বরে উল্টা পাল্টা কথা বলেছেন, পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। অবশেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উর্ধতন কাউকে ফোন দেয়ার পর সাংবাদিক সাহেব তার নাম বলেছেন। এখানে দুটি প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।  প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক দুজন কি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, সাংবাদিক দুজনকে কেন নাম বলতে হবে ? নাম, পদবি, পরিচয় থাকবে তাদের বুকে বা কোমরে প্রদর্শিত আই ডি কার্ডে। এখন দেখার বিষয়,  প্রদর্শিত স্থানে আই ডি ছিল কিনা ? না থাকলে থাকবে না কেন?

সাংবাদিক ও চিকিৎসকবৃন্দ ঘটনার ভিডিও চিত্র সমূহ পৃথকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন। সব গুলো ভিডিও কয়েকবার দেখেছি, পর্যালোচনা করেছি। দায়িত্বরত চিকিৎসক কখনোই উচ্চস্বরে কথা বলেননি। তিনি যথেষ্ট ধৈর্য্য, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সাংবাদিক দুজন বারবার উচ্চস্বরে কথা বলেছেন। তাদের কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি মগের মুল্লুক। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়ার্ড রাউন্ড শুরু করার আগে প্রতি রোগীর সাথে একজন এটেন্ডেন্ট ব্যাতিরেকে সবাইকে বের হবার কথা বলেছেন। সবাই বেরিয়ে না গেলে তিনি চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সেটাই নিয়ম।  সারা দুনিয়ায় সেটাই হয়ে থাকে। সাংবাদিকদ্বয় সেটি শুনতে নারাজ। এখানে তারা স্পষ্টতই সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন, যা আইনত দণ্ডনীয়।  

দিন শেষে বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখলাম সাংবাদিকদের হেনস্থা করেছে ডাক্তার। অথচ ভিডিও গুলি পর্যালোচনা করলে যে কেউ বলবেন, ডাক্তারকে হেনস্থা করেছে সাংবাদিকরা। আসলেই মগের মুল্লুক। ঘটনা কি ? আর সংবাদ শিরোনাম কি? এসব মগের মুল্লুকের রাজত্ব  থেকে জাতিকে পরিত্রান দেয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিএমএ, এফডিএসএর, বিডিএফ ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দেয়া দরকার। কমিটি হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে ও তাদের দায়িত্ব নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। সে নীতিমালায় যাতে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান না করা হয়, রোগীর অনুমতি ব্যাতিরেকে তাদের ছবি, ভিডিও বা রোগ সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রচার না করা হয়, সেসব বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। তা না হলে হাসপাতাল সমূহে এ ধরণের অরাজকতা হতেই থাকবে, বাড়তেই থাকবে।  

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

প্রথম আলোর পর কী ডেইলি স্টারও বিক্রি হবে?


Thumbnail

এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন।

প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে অনেকেরই  ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী লোক।

এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।

এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।

আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম। সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায় যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।

ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।

তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।

তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।


প্রথম আলো   ডেইলি স্টার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন