নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২২ এএম, ২০ অক্টোবর, ২০২১
খুলনায় স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইতোমধ্যে দুর্নীতি চক্রের মূল দুই হোতা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের স্টেনোগ্রাফার ও সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি ওষুধ পাচারে জড়িত নার্স-ফার্মাসিস্টদের বিরুদ্ধে মামলা ও জেনারেল হাসপাতালে ল্যাব ইনচার্জ টেকনোলজিস্টের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের তদন্ত শুরু হয়েছে। দরপত্র বাণিজ্যে ও দুর্নীতির তালিকায় নাম রয়েছে সাবেক দুজন সিভিল সার্জনের।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) ১ কোটি ১১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস ও খুমেক হাসপাতালের সাবেক হিসাবরক্ষক গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মহানগর বিশেষ আদালতে পিপি ও দুদক আইনজীবী খন্দকার মজিবর রহমান জানান, দায়িত্বে থাকাকালে গোলাম কিবরিয়া বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২৭/১ ও মানি লন্ডারিং আইনে ২০১২ সালের ৪ (২) ধারায় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। শুনানি শেষে গোলাম কিবরিয়াকে গ্রেফতারের জন্য সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দুদকের আরেক মামলায় বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের স্টেনোগ্রাফার ফরিদ আহমেদ ও তার স্ত্রী পলি আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ফরিদ আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে জেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি, প্রমোশন নিয়োগ-বাণিজ্যে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মুজগুন্নি আবাসিক এলাকায় বিলাসবহুল বাড়ি, নগরীর বয়রা এলাকায় তার স্ত্রীর নামে ক্রোকারিজের দোকান ‘মেসার্স পলি এন্টারপ্রাইজ’সহ অবৈধ বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
সস্ত্রীক স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা : ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ৬ কোটি ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৭৬৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সংস্থাটির উপ-পরিচালক আশীষ কুমার কুন্ডু বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলামের স্ত্রী সৈয়দা তামান্না শাহেরীন ও সৈয়দ হাসান শিবলী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলামের নামে ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় ১৪টি এফডিআরে ৮ কোটি টাকা এবং যমুনা ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখায় ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩৭ টাকা জমার তথ্য পায় দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে তার স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ৮ কোটি ৩৮ লাখ ১৩ হাজার ৯৩৭ টাকার সম্পদের তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মধ্যে সরকারি চাকরির আগের সঞ্চয় ও চাকরিকালীন সঞ্চয়সহ অন্যান্য আয় মিলিয়ে ২ কোটি ৩৮ লাখ ১৩ হাজার ৯৩৭ টাকার গ্রহণযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে ৬ কোটি ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৭৬৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সমাজ কল্যাণ পরিষদে অভিযান : দরিদ্র ও প্রতিবন্ধীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জাতীয় সমাজ কল্যাণ কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া কভিড-১৯ টিকাদান প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কুমিল্লার একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। গতকাল এই অভিযান চালানো হয়।
দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক জানান, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ও দরিদ্রদের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ পায় দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের একটি টিম জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদ কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে।
মন্তব্য করুন
আবারও রাজধানীর
বাজারে বাড়তে শুরু করেছে কাঁচা মরিচের দাম। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের
দাম অন্তত ১০০ টাকা বেড়েছে।
শনিবার (৩০
সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের
দাম পড়ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
ঢাকার বাইরের
বাজারগুলোতে এই দাম আরও বেশি। বগুড়ার মতো উৎপাদন এলাকায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি
ও খুচরা বাজারে এই পণ্যের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
বিক্রেতারা
জানান, বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমে যাওয়ার নতুন করে আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে কাঁচা মরিচের কেজি ১০০ টাকার আশপাশে ছিল। কিন্তু এখন ২০০ টাকার কমে
কোনো মরিচ পাওয়া যাচ্ছে না।
আরেক সবজি বিক্রেতা
জানান, ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম হওয়ায় দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের
কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। যে কাঁচা মরিচের কেজি গত সপ্তাহেও ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা,
গতকাল তা বেড়ে হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা
বলছেন, দেশে এখন কাঁচা মরিচ উৎপাদনের মৌসুম নয়। স্থানীয়ভাবে এখন যে কাঁচা মরিচ উৎপাদিত
হচ্ছে, তা চাহিদা মেটাতে পারছে না।
আমদানিকারকেরা
মনে করেন, ভারতের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম এখন বেশি। যোগ হচ্ছে পরিবহন, শ্রমিক ও শুল্ক
খরচ। ফলে এই দফায় দাম কমতে সময় লাগবে। তবে আমদানি বাড়ানো গেলে হয়তো দাম কিছুটা কমে
আসবে।
মন্তব্য করুন
নির্ধারিত
দরের চেয়ে বেশি দামে
ডলার কেনা-বেচা করায়
১০ ব্যাংককে শাস্তির আওতায় আনছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকগুলোকে
এই বিষয়ক চিঠি দেওয়া হয়েছে
বলেও জানা গেছে।
বাংলাদেশ
ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল
হক এ বিষয়ে বলেন,
বেশকিছু ব্যাংকের বিরুদ্ধে বেশি দামে ডলার
কেনা-বেচার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক
ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। ফলে সেই অনুযায়ী
ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই তালিকায় দেশি-বিদেশি ও
রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংক রয়েছে। এর আগে গত
জুলাই মাসে ১৩টি ব্যাংকের
বিরুদ্ধে ডলার দর নিয়ে
কারসাজির অভিযোগ পেয়ে অধিকতর তদন্ত
করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই ১৩টি ব্যাংকের
মধ্যে ১০টির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শাস্তি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলো বাংলাদেশ
ব্যাংক।
গত জুলাই মাসে অধিকতর তদন্ত
শুরু করার সময়ে মেজবাউল
হক বলেছিলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে
তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত
শেষে বলা যাবে তারা
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ভেঙেছে কিনা। তদন্তে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তখন
বিস্তারিত বলা যাবে।
ডলারের
দর বেশি রাখা হচ্ছে
এমন অভিযোগের পরপরই তা রোধ করতে
শক্ত অবস্থানে গিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। গভর্নরের
কড়া নির্দেশ পেয়েই কর্মকর্তারা তদন্তে নামছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ
ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা।
একই
অভিযোগে গত বছরের আগস্টে
অতিরিক্ত দরে ডলার কেনা-বেচায় দেশি বিদেশি ছয়
ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসরাণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই তালিকায় ব্র্যাক
ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রাইম
ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক,
সাউথ ইস্ট ব্যাংক এবং
স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের নাম ছিল।
ডলার কেনা-বেচা বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
ডিমের
বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে ভারত থেকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। চার
প্রতিষ্ঠানকে এ অনুমতি দেওয়া হয়।
সোমবার
(১৮ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি
জানান, ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে আপাতত চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
চার প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে এক কোটি করে ডিম আমদানির
অনুমোদন দেওয়া হয়। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমদানি
করা ডিম খুচরাপর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দাম প্রতি পিস ১২ টাকায় বিক্রি হবে।
মেসার্স
মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইম্পোর্টার্স এন্ড সাপ্লাইয়ার্স, টাইগার ট্রেডিং,
অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেডকে ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর
আগে ১৪ সেপ্টেম্বর খুচরাপর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার।
তারপরও বাজারে কমেনি দাম। শেষপর্যন্ত ডিম আমদানির অনুমতি দিলো সরকার।
এদিকে
ডিম আমদানির জন্য পাঁচটি শর্ত নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এগুলো হলো, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা
বা বার্ড ফ্লু মুক্ত ডিম আমদানি করতে হবে। আমদানিকৃত ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক
দেশের সরকারের মাধ্যমে নির্ধারিত কিংবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত এভিয়েন
ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে। সরকার নির্ধারিত
শুল্ক বা কর পরিশোধ করতে হবে। নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না। সরকারের অন্য বিধিবিধান
মেনে চলতে হবে।
মন্তব্য করুন
গত বৃহস্পতিবার
প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা, আলুর কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজের কেজি ৬৫ টাকা
নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হলে এবার ভোক্তা অধিদপ্তর
কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তবে সরকারের
এই দাম নির্ধারণের এক দিন পর গতকাল বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। রাজধানীর বিভিন্ন
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোনো দোকানেই নির্ধারিত দামে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। প্রতি
পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ থেকে ১৩ টাকায়। দেশি পেঁয়াজের কেজি ৮৫ থেকে ৯০, আলুর
কেজি ৫০ টাকা। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে চলছে বাগবিতণ্ডা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন,
সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হলে নির্ধারিত দাম বাস্তবায়ন করা কঠিন।
আলুর দাম প্রসঙ্গে
ব্যবসায়ী শরীফ মাহমুদ বলেন, আলু ৪২ থেকে ৪৫ টাকা পাইকারি দরেই কিনে আনতে হয়েছে। তাহলে
সরকার নির্ধারিত ৩৫ টাকা করে বিক্রি কীভাবে করব।
আবদুল্লাহ নামে
এক বিক্রেতা বলেন, ‘আলুর যে সিন্ডিকেট, ভোক্তা পর্যায়ে আসার আগেই দামের পাঁচটি স্তর
রয়েছে। ৩০ টাকার আলু যদি এই পাঁচটি স্তরে ২ টাকা করেও লাভ করা হয়, তারপরও ১০ টাকা বেশি
দামে আমাদের বিক্রি করতে হবে।’
শনির আখড়ার
ডিম বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, খুচরা বাজারে তদারকি করার আগে পাইকারি বাজার এবং আড়তগুলোতে
কী দামে বিক্রি হচ্ছে, সেটি মনিটরিং করা প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম
: চলতি সপ্তাহে
৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি আলু। যদিও কৃষকের প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে
খরচ হয়েছে মাত্র ১০ টাকা। প্রতি কেজি ৮ টাকা লাভে কৃষক আলু সর্বোচ্চ ১৮ টাকায় বিক্রি
করেছে। কয়েক হাত ঘুরে সে আলু খুচরা বাজারে আসতে আসতে হয়ে যাচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। নিম্ন
আয়ের মানুষের জন্য এখন আলু কেনা যেন এক ধরনের বিলাসিতা।
বহদ্দারহাট-বাদুরতলা
ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে
দাম বেশি, যার কারণে খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়ছে। ২ টাকা, ৫ টাকা করে আলুর দাম বেড়ে
এখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কেনা দামের চেয়ে দুই থেকে তিন টাকা লাভে
আমরা বিক্রি করছি। পাইকারি পর্যায়ে দাম কমলে খুচরা বাজারেও দাম কমে যাবে। প্রথমে পাইকারি
বাজারে নজর দিতে হবে। তাহলে খুচরা বাজারে অটোমেটিক দাম কমে যাবে।
কনজ্যুমারস
অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন,
এখন প্রয়োজন কীভাবে সরকার নির্ধারিত দামে ভোক্তার হাতে আলু পৌঁছানো যায় সে ব্যবস্থা
করা। এজন্য প্রশাসনের তৎপরতা ও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন
সপ্তাহের ব্যবধানে ফের আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। নতুন করে দাম না বাড়লেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ডিম চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতার ৮০-৮৫ টাকা খরচ হচ্ছে।
এছাড়া বড় দানার মসুর ডাল সাত দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি আকাশছোঁয়া দামে মসলাজাতীয় সব ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ৪৫ টাকা ছিল। প্রতি হালি ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৪-৫৫ টাকা। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে একই দামে বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ১০ টাকা বেড়েছে। বড় দানার মসুর ডাল কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা, যা সাত দিন আগেও ১০০ টাকা ছিল।
এছাড়া বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি দেশি ও আমদানি করা রসুন ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি আদা ৪৫০ এবং আমদানি করা আদা ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি হলুদ ৪০০ ও আমদানি করা হলুদ ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি শুকনা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪২০ টাকা। আর আমদানি করা শুকনা মরিচ সর্বোচ্চ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. ইকরামুল হোসেন বলেন, বাজারে নির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের দাম ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়ানো হচ্ছে। এর মধ্যে আলু, পেঁয়াজ ও ডিম অন্যতম। এছাড়া সব ধরনের মসলাজাতীয় পণ্যের দাম অনেক বেশি। আর অন্যান্য পণ্য কিনতেও বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। বাজারে এমন পরিস্থিতিতে আমাদের মতো ক্রেতার হিমশিম খেতে হচ্ছে। জানতে চাইলে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, পণ্যের বাজারে অস্থিরতা চলছে। কিছু পণ্য অযথা দাম বাড়িয়ে ক্রেতাসাধারণকে নাজেহাল করে তুলছে অসাধু সিন্ডিকেট। সরকারের কাছে সব তথ্য আছে; কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাই ক্রেতাদের স্বস্তি নেই। ক্রেতার স্বার্থরক্ষায় অসাধুদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডিম, আলু, পেঁয়াজের দাম সরকারিভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) বাজার মনিটরিং করবেন। জেলা-উপজেলাসহ বড় বড় শহরে এই মনিটরিং চলবে। আজকের এই মূল্য ঘোষণার পর সর্বাত্মক শক্তি নিয়ে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করা হবে।
বেঁধে দেওয়া দাম চড়া মূল্য বিক্রি ডিম পেঁয়াজ আলু
মন্তব্য করুন