ইনসাইড পলিটিক্স

‘আওয়ামী লীগ বা বিএনপির সঙ্গে জোটের রাজনীতি করতে চাই না’

প্রকাশ: ০১:১৭ পিএম, ২৮ অক্টোবর, ২০২১


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরু ও অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বে গঠিত ‘বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদ’ নিয়ে আগামীতে ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিতে চান নুরু।

নিজের রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘নৌকা বা ধানের শীষের বাইরে কেউ কেউ বিকল্প নতুন শক্তির কথা বলছেন। সাধারণ মানুষেরও প্রত্যাশা, আওয়ামী লীগ-বিএনপির দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির বাইরে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম গড়ে উঠুক। তাই আমরা আওয়ামী লীগ বা বিএনপির সঙ্গে জোটের রাজনীতি করতে চাই না। আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে মাঠে থাকতে চাই। ২০২৩ সালের নির্বাচনে ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী দিতে চাই।’

আলাপচারিতায় নূর বলেন, ‘নতুন দলের ঘোষণার আগে ও পরে আমরা বেশ সাড়া পাচ্ছি। ঘোষণা দেওয়ার আগে থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের আগ্রহ লক্ষ্য করেছি। আমাদের চারটি অঙ্গসংগঠন। ছাত্র অধিকার, যুব অধিকার, শ্রমিক অধিকার ও প্রবাসী পেশাজীবী অধিকার পরিষদ আগেই গঠন করা হয়েছে। দল ঘোষণার আগে বিভিন্ন ব্যক্তি বলেছিলেন আত্মপ্রকাশের পর তারা নতুন দলে যোগ দেবেন। সেই সাড়াও পাচ্ছি। বিভিন্ন দল থেকেও আমাদের দলে আসার ব্যাপারে অনেকেই যোগাযোগ করছেন। সেদিক থেকে বলা যায়, এ রকম একটি প্রতিকূল পরিবেশে যখন রাজনৈতিক ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন চলছে, সেই সময় সর্বসাধারণের বিপুল সাড়া পাচ্ছি।’

কোন কোন রাজনৈতিক নেতা যোগাযোগ করছেন জানতে চাইলে ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, ‘এটা সারপ্রাইজ হিসেবেই থাক। যোগদানের পরই সবাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব। এখন বললে তো আকর্ষণ থাকবে না।’ সাংগঠনিক কাঠামো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের চার অঙ্গসংগঠন এরই মধ্যে গঠন করা হয়েছে। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন কমিটি হচ্ছে। এখন জেলা থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে সব কমিটি গঠনের কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা কমিটি করতে চাই। আমাদের টার্গেট ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে নিজেদের সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুত করা। এখন আমরা আগামী নির্বাচনের জন্য দলকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিচ্ছি। সেভাবেই দল সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

গণঅধিকার পরিষদের লক্ষ্য কী জানতে চাইলে দলটির এই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা মনে করি সব সময় সংকটেই সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়। যেহেতু জাতীয়ভাবে রাজনীতিতে একটা সংকট চলছে, দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে সে মুহূর্তে আমরা তরুণরা কিন্তু একটি পরীক্ষা দিয়ে এ পর্যন্ত এসেছি। বিশেষ করে কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজকের অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছি। এ সময়ে আমাদের আপসহীন ভূমিকা ও কথা বলা বা পাশে থাকার ব্যাপারে দৃঢ়তা মানুষের মধ্যে আশার জন্ম দিয়েছে। আজকের এ সংকট থেকে উত্তরণে তরুণদের একটি ভূমিকা আছে।’

নুরুল হক নূর বলেন, ‘সাধারণ মানুষের যে প্রত্যাশা বা আকাক্সক্ষা- সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র তা স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সম্ভব হয়নি। বিচার বিভাগ স্বাধীন এ কথা আমরা বলতে পারি না। সেদিক থেকে ন্যায়বিচার আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। গণমাধ্যম বিশেষ করে ব্যক্তির বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি। পাকিস্তানিরা যেমন আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, ঠিক তেমনি সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তার নামে কালো আইন করে আমাদের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিতে চায়। সে ক্ষেত্রে মানুষ আমাদের কাছে যে প্রত্যাশা করছে এ সংকট থেকে জাতিকে আমরা উদ্ধার করতে পারব।’

দলীয় সরকারের অধীনে ভোটে যাবেন কি না জানতে চাইলে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রতারণামূলক নির্বাচন করেছে। সে কারণে তাদের বিশ্বাস করা যায় না। আমরা দেখেছি দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। সে ক্ষেত্রে আমাদের দাবি থাকবে অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা অথবা সব দল ও সমাজের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করা। আমাদের স্পষ্ট কথা- এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না। সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজন। এজন্য যদি আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে নামতে হয় তা হলেও আমরা রাজপথে থেকেই দাবি আদায় করব।’

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ বা জোটগত আন্দোলনে যাবেন কি না জানতে চাইলে নূর বলেন, ‘মৌলিক দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে কারও আহ্বানের দরকার নেই। আমাদের প্রত্যেকেরই বর্তমানে মৌলিক দাবি একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোট। তা আমার জন্য, বিএনপির জন্য, জাতীয় পার্টি, চরমোনাই পীরের জন্য, সিপিবি বা বাসদের জন্যও প্রয়োজন। এজন্য কারও আহ্বানের প্রয়োজন নেই। যার যার জায়গা থেকে আন্দোলন শুরু করলেই হয়। এতেই সরকার চাপে পড়বে। কারও ব্যানারে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। মৌলিক ইস্যুতে যার যার ব্যানার নিয়ে মাঠে নামলেই কার্যকর আন্দোলন গড়ে উঠবে, দাবি আদায় হবে। এ ক্ষেত্রে জোট বা যুগপৎ আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। সব দলের জন্যই নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন, কারও একক প্রয়োজন নয়।’

নেতৃত্বে নবীন-প্রবীণের সমন্বয় ঘটবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৯৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে অনেক অভিজ্ঞ ও নবীন-প্রবীণের সমন্বয় ঘটেছে। তবে আমাদের নেতৃত্বের বড় একটি অংশই তরুণ। কারণ তারা এ প্রতিকূল পরিবেশে নিজের জীবন বিপন্ন করে মানুষের অধিকার আদায়ে রাজপথে অটল থাকে। হামলা-মামলাসহ নানা কারণে তাদের অদম্য শক্তি দমে যায়নি। এই কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হলে আন্দোলন সংগ্রামের বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে তরুণরাই সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তরুণদের আমরা নেতৃত্বে রেখেছি, ভবিষ্যতেও রাখব। পাশাপাশি সিনিয়ররাও আমাদের পাশে থেকে পরামর্শ দেবেন। আমাদের আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’

দেশবাসী বা নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান কী জানতে চাইলে নুরুল হক নূর বলেন, ‘দেশটা আমাদের সবার। দেশটা গড়ার জন্য যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকবেই। তাই বলে একটি মতকে প্রতিষ্ঠিত করতে আরেকটি মতকে দমিয়ে রাখব, অন্য ধর্মের ওপর আক্রমণ করব, মানুষের ওপর হামলা করব, অসহিষ্ণু আচরণ করব তা হতে পারে না। রাজনীতি যার যার জায়গা থেকে করব, কিন্তু আমরা সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখব। আগামীতে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করতে যার যার জায়গা থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়া। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও মানুষের ভোটাধিকার নেই। তা আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নইলে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ভূলুণ্ঠিত হবে।’



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিদেশে নিলেই কি বেগম জিয়ার সঠিক চিকিৎসা সম্ভব?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আবার অবনতি হয়েছে। তাকে এখন এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার লিভারে পানি জমছে এবং এই পানি বের করতে হচ্ছে। পানি বের করতে গেলে তিনি সংকটাপন্ন হয়ে পড়ছেন। তখন তাকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এছাড়াও তাঁর হিমোগ্লোবিনও কমে গেছে। লিভার সিরোসিস এর কারণে এই ধরনের রোগীদের যে চিকিৎসা দেওয়া দরকার সব চিকিৎসাই এভারকেয়ার হাসপাতালে আছে। তবে বিএনপির চিকিৎসক এবং বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন যে, তার লিভার সিরোসিস এর চিকিৎসার জন্য লিভার প্রতিস্থাপন করা দরকার। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, ৭৮ বছর বয়সী একজন প্রবীণ মানুষের জন্য লিভার প্রতিস্থাপনের মতো জটিল কাজটা কতটুকু করা সম্ভব এবং এটি কতটা নিরাপদ সেটি আলোচনার দাবি রাখে।

একাধিক প্রবীণ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে, তারা এই বয়সে এবং এরকম শারীরিক অবস্থায় লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার পক্ষপাতী নন। তাছাড়া লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার ক্ষেত্রে একজন ডোনার লাগে। সেই ডোনারের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার লিভারের ম্যাচিং করাতে হবে। সেই ম্যাচিং এর কাজটিও এখনও করানো হয়নি। তাছাড়া শুধুমাত্র লিভার সিরোসিস নয়, বেগম খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে সমস্যা রয়েছে এবং পাকস্থলীতে পানি জমার কারণে তার হৃদপিণ্ড ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এছাড়া তার কিডনির সমস্যা দেখা দিয়েছে। পুরোনো আথ্রাইটিস এখন বেড়ে গেছে। এত কিছু রোগ শোকের জন্য শুধুমাত্র লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করে তাকে সুস্থ করা যাবে—এমন ভাবনা বিজ্ঞান সম্মত নয় বলেই মনে করছেন অনেক চিকিৎসকরা। বরং চিকিৎসকরা মনে করছেন যে, তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে আস্তে আস্তে চিকিৎসা দেওয়াটাই শ্রেয়। 

৭৮ বছর বয়সী একজন মানুষকে সার্জারি বা লিভার প্রতিস্থাপনের মতো জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতিতে নিয়ে গেলে তার আরও ঝুঁকি বাড়বে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না। তার চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতাল যথেষ্ট নয়। এভারকেয়ার হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। তারা মনে করেন যে, বিশ্বের অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে যেরকম চিকিৎসা দেওয়া দরকার সেরকম চিকিৎসা এভারকেয়ার হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে।

লিভার প্রতিস্থাপনের বিষয়টি নিয়ে তারা বলছেন যে, এটি একজন পেশেন্টের অভিভাবক বা তার অ্যাটেনডেন্টদের সিদ্ধান্তের বিষয়। তারা যদি মনে করেন যে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ঝুঁকি তারা নিতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে তারা বিদেশ নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু বিদেশ নেওয়ার ক্ষেত্রে যে প্রস্তুতি গুলো দরকার সেই প্রস্তুতিও বিএনপি বা বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয়নি। তাহলে কি বেগম জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার বিষয়টি একটি রাজনৈতিক স্লোগান? সরকারের ওপর দায় চাপানোর কৌশল হিসেবেই এই চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বলা হচ্ছে?

অনেকেই মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এবং তার সম্ভাব্য অনাকাঙ্খিত পরিণতিকে ঘিরে একটি একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় বিএনপি। এবং সেই পরিস্থিতির সৃষ্টি করার প্রধান লক্ষ্য হলো সরকারকে এর দায় দেওয়া। আর সেই দায় দেওয়ার জন্যই কি তাহলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে?

বেগম খালেদা জিয়া   এভারকেয়ার হাসপাতাল   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারা এখন বিএনপির পরামর্শক

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

আবেদনিক অর্থে তারা সুশীল বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত। মুক্তবুদ্ধি চর্চা করেন, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক এবং সমাজ দর্শনকে উর্ধ্বে তুলে ধরেন, একটি সাম্য ভিত্তিক এবং সুশাসনের রাষ্ট্র চান। কিন্তু তারাই এখন আবার বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক শক্তির মদদ দাতা এবং উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীকে ইন্ধন দিচ্ছেন। তারাই এখন বিএনপির পরামর্শক হয়েছেন। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের এই দ্বৈত আচরণ আবার নতুন করে সামনে এসেছে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের একটি বড় পরিচয় ছিল তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ এবং স্বাধীনতার চেতনাকে তারা উর্ধ্বে তুলে রাখতে চায় এবং এগিয়ে নিতে চান। আর এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হোক, বাংলাদেশে ধর্মীয় উন্মাদনা যেন সৃষ্টি না হয়, সাম্প্রদায়িক শক্তির যেন বিষ বাষ্প ছড়াতে না পারে এরকম একটি পরিবেশ পরিস্থিতি চান। কিন্তু ইদানিং তারা বিএনপির সমর্থক হয়েছেন। 

প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, সুশীলরা বিএনপির সমর্থক হলে অন্যায় কোথায়? তারা কি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করতে পারেন না? উত্তর হলো যে, বিএনপির রাজনৈতিক যে আদর্শিক চর্চা এবং বিএনপির যে আদর্শগত অবস্থান তা সুশীল বুদ্ধিজীবীদের নৈতিক অবস্থানের বিপরীত। কারণ বিএনপি কখনোই অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির চেতনা বিশ্বাস করে না। বিএনপি ক্ষমতায় এসেই ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধান থেকে বাদ দিয়েছিল। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চর্চা করে বা বিএনপিতে সাম্প্রদায়িক নেতার সংখ্যা কম না। তাছাড়া বিএনপি, জামায়াত এবং অন্যান্য উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীকে প্রকাশ্যে এবং গোপনে মদদ দেয় এবং তাদেরকে সমর্থন করে। এরকম একটি পরিস্থিতিতে যে সমস্ত ব্যক্তিরা বিএনপিকে সমর্থন করছেন তারা প্রকারন্তে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনার বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন বা ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধেই অবস্থান নিচ্ছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। 

বাংলাদেশের সুশীল বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যারা আলোচিত এবং সমালোচিত তারা বিভিন্ন সময় বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কখনো তারা রাজনৈতিক দলের দূরত্ব থেকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেছেন। কিন্তু এখন তারা বিএনপি এবং প্রকারন্তে জামায়াতকেও সমর্থন দিচ্ছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে এই স্ববিরোধী অবস্থান আরও স্পষ্ট হয়েছে অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান এবং সেখানকার একজন কর্মী এলানের দণ্ডাদেশের কারণে। এই দণ্ডাদেশটি দিয়েছে আদালত এবং এটি অনস্বীকার্য যে অধিকার হেফাজতের তাণ্ডবের পর সমাবেশে যে মৃত্যুর সংখ্যা বলেছিল তা পরিকল্পিত, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং সরকার ব্যবস্থাকে বিপদে ফেলার একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। এটি কোনভাবেই একটি উন্নয়ন সংস্থা বা মানবাধিকার সংস্থার কাজ হতে পারে না। বরং তারা সাম্প্রদায়িক বিষ বাষ্প উস্কে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের সুশীল সমাজের একটি বড় অংশ যারা সেকুলার রাজনীতির কথা বলেন তারা এই অধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।

অধিকার বিতর্কিত আরও একটি কারণে। তা হলো তারা যেমন হেফাজতের তাণ্ডবকে সমর্থন করে তেমনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষেও অবস্থান নিয়েছিল। হেফাজতের তাণ্ডবের সময় যারা সেই সময় হেফাজতের তাণ্ডব, নারীর ওপর লাঞ্ছনার নিন্দা করেছিলেন তারাই এখন আবার অধিকার এবং আদিলুর রহমানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাহলে কি সুশীলরা নিজেদের স্বার্থেই সবকিছু করতে পারেন? নিজেদের স্বার্থের জন্যই তারা এখন আওয়ামী লীগ বিরোধী প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছেন।

অধিকার   আদিলুর রহমান খান   সুশীল সমাজ   বিএনপি   অসাম্প্রদায়িক চেতনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কথা পরিষ্কার, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না: ফখরুল

প্রকাশ: ০৭:০৭ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা রাস্তায় নেমেছি, পদযাত্রা করেছি, রোডমার্চ করছি। জনগণকে নিয়ে মাঠে আছি। কথা পরিষ্কার-শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।’

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে একদফা দাবিতে রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার কাউকে ভোট দিতে দেয় না। সব কিছু জোর করে কেড়ে নেয়। বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশ যখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছে, তখন সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে যাচ্ছে। কীসের সংবিধান, যেটা তোমরা কাটাছেঁড়া করে শেষ করে দিয়েছ।

তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি টিম এসেছিল যে দেশে নির্বাচনের ব্যবস্থা কেমন, তা দেখতে। তারা বসেছিল দেশের রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, পত্রিকার সম্পাদক ও জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে। তারা বলেছিল, দেশে গিয়ে বলব-এ দেশে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক টিম পাঠাবো কিনা। তারা কী বলেছে? তারা বলেছে-বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। তাই তারা পর্যবেক্ষক টিম পাঠাবে না। এ কথা বিশ্বের সবাই জানে, এমনকি জাতীয় পার্টি বলেছে, যদি সরকার পদত্যাগ না করে, তবে এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হলে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে।

তিনি বলেন, আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মা-বোনেরা জেগেছে, তারা এ সরকার আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। দয়া করে সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচন দিন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা তো বেশি কিছু চাইনি। শুধু চেয়েছি, সরকারকে পদত্যাগ করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিন।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বিএনপি   এক দফা আন্দোলন   সরকার পতন আন্দোলন   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আরও অপেক্ষা করতে চায় বিএনপি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এক দফা আন্দোলন করছে। টানা কর্মসূচির মধ্যে আজও তারা কিছু কর্মসূচি পালন করেছে। তবে এই কর্মসূচির মধ্যে বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি যাবে না এমন গুঞ্জনও রয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন নির্বাচন কেন্দ্রিক বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন। সরকার নির্বাচনের জন্য প্রশাসন সাজিয়েছে, এক তরফা ভাবে নির্বাচন করতে চায়, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য মামলা হামলা ইত্যাদি দিচ্ছে এরকম নানা অভিযোগ তিনি সামনে এনেছেন। 

ধারণা করা হচ্ছে যে, নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে বিএনপি অপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিতে চায়। বিএনপির নেতারা মনে করছেন, একটি এক্সিট পয়েন্ট লাগবে। বিএনপি যে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাবে না বলছে সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তাদের একটা পথ দিতে হবে। এরকম একটি পথ হতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলোর পরামর্শ। আগামী ৭ অক্টোবর মার্কিন প্রাক নির্বাচনী প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছেন। তারা এই সফরে বিএনপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং এই সাক্ষাতে যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বিএনপিকে আশ্বস্ত করে যে, তোমরা নির্বাচনে যাও এবং অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় কিনা সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্য দেশগুলো তদারকি করবে তাহলে বিএনপি তার অবস্থান পাল্টাতে পারে। তবে সেক্ষেত্রেও নির্বাচনকালীন সরকার, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন সহ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের অবস্থান রয়েছে। তবে বিএনপির একজন নেতা এই নিয়ে হতাশার কথা শুনিয়েছেন। 

তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না। তার মানে সরকার আবার একটি এক তরফা নির্বাচনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি নির্বাচনের পর্যবেক্ষক দল না পাঠায় তাহলে পরে এই নির্বাচন যে একটা অর্থহীন নির্বাচন হবে সেটি বলাই বাহুল্য। এবং ওই নির্বাচনের ফলাফল পূর্ব থেকে নির্ধারিত থাকবে। তাই সেই নির্বাচনে গিয়ে বিএনপি তার অবস্থান নষ্ট করতে চায় না। তবে এ নিয়েও বিএনপির মধ্যে ভিন্ন মত আছে।  

বিএনপির কোন কোন নেতা বলছেন, বিএনপির অবস্থা এখন আগের চেয়ে ভালো। বিএনপি যদি নির্বাচন না করে এবং শেষ পর্যন্ত যদি সরকার ঝুঁকি নিয়ে হলেও নির্বাচন করে ফেলতে পারে তাহলে বিএনপি একটি অস্তিত্বের সংকটে পড়বে। এর ফলে তাদেরকে রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা যাবে। কিন্তু কৌশলগত কারণের জন্য তারা যদি নির্বাচন করে এবং নির্বাচনের মধ্যেই তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখে, সরকারের পক্ষপাত এবং কারচুপির বিষয়গুলো প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে এবং আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে পারে তাহলে তাদের আন্দোলনের একটা নতুন মাত্রা যোগ হবে এবং ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমেই তারা নির্বাচন বানচাল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে জোরদার করতে পারে। তবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপির এই মনোভাব নিয়ে যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। 

তারা মনে করছে, সরকারের অনেক এজেন্ড বিএনপির মধ্যে রয়েছে। যারা বিএনপিকে বারবার বিভ্রান্ত করছে। ২০১৮ নির্বাচনে এভাবেই বিএনপিকে বিভ্রান্ত করা হয়েছিল বলে তারা মনে করেন। এরকম ফাঁদে পা দিলে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তাদের ধারণা। তবে এখন বিএনপির জন্য একটি জটিল মেরুকরণ তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো আন্তর্জাতিক চাপ। আন্তর্জাতিক মহল যদি বলে যে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দেখতে হবে যে নির্বাচন কতটুকু পক্ষপাতপূর্ণ হচ্ছে। আর দ্বিতীয়ত তৃণমূলের চাপ, তৃণমূল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে অনেক প্রার্থী নির্বাচনমুখী হতে পারে এবং সেটি বিএনপির জন্য আরেকটি বড় সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কাজেই দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

নির্বাচন   আন্দোলন   বিএনপি   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   মার্কিন প্রাক পর্যবেক্ষক দল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে বাদ দিয়ে উৎসবমুখর নির্বাচনের রোড ম্যাপ চূড়ান্ত

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে, সকল দল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা সেগুলো এখন রাজনীতিতে প্রধান আলোচনার বিষয়। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সরকার আপাতত বিএনপিকে বাদ দিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক উৎসবমুখর নির্বাচনের রোড ম্যাপ চূড়ান্ত করেছে। এই রোড ম্যাপ অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এই রোড ম্যাপের প্রধান লক্ষ্য হলো নির্বাচনে অন্তত ৬০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করা। এই জন্য আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আর এই রোড ম্যাপ বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ যে কৌশল গ্রহণ করেছে তা হলো-

১. সকল রাজনৈতিক দল স্ব স্ব অবস্থান থেকে অংশগ্রহণ করবে: এবারের নির্বাচনে যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি অংশগ্রহণ না করে তাহলে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তারা স্ব স্ব অবস্থান থেকে নির্বাচন করবে। এই নির্বাচন হবে অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ। 

২. প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে: এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রশাসনের ভূমিকা থাকবে নিরপেক্ষ এবং প্রশাসন যেন কোনোভাবেই নির্বাচনের ওপর কোনো রকম হস্তক্ষেপ না করে সেটি নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি এই নির্বাচনের ব্যাপারে যেন কোনো রকম অভিযোগ না ওঠে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। 

৩. ভালো প্রার্থী, উৎসবমুখর নির্বাচন: আওয়ামী লীগ তার প্রাক নির্বাচনী জরিপ গুলোতে দেখেছে যে, যদি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভালো প্রার্থী, আলোচিত প্রার্থী এবং পরিছন্ন ইমেজের প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে পারে তাহলে সেক্ষেত্রে ভোটাররা নির্বাচনমুখী হবে। তারা ভোট প্রদানে আগ্রহী হবেন। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের এবার প্রার্থী বাছাই চমক থাকবে। এমন সব প্রার্থী দেওয়া হবে যাদেরকে মানুষ পছন্দ করে এবং যাদের কারণে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত হবে।

৪. বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলা: যদি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে তাহলেই বিএনপি ফাঁদে পড়বে এমনটি মনে করছে আওয়ামী লীগ। কারণ সেক্ষেত্রে নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাদের ভিসা নীতির আওতায় আসা উচিত এমনটি মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। ফলে যখনই বিএনপি নির্বাচন বর্জন এবং নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিবে তখনই পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করবে বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন। এর ফলে এই নির্বাচন বর্জনের আন্দোলন খুব বেশি প্রশয় পাবে না। এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে বড় ধরনের কোন পরিস্থিতিও তৈরি হবে না বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন।

৫. আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা: সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের যে রোড ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে তাতে অন্যতম প্রধান ইস্যু হলো আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা। আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনই হবে আগামী নির্বাচনের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে এই ক্ষেত্রে সরকার এবং আওয়ামী লীগ আশাবাদী। তারা মনে করছে, এধরনের নির্বাচনকে ভারত স্বীকৃতি দেবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেকগুলো দেশ এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে। কারণ যদি ভোটার উপস্থিতি ৬০ শতাংশের বেশি বা ৬০ শতাংশের কাছাকাছিও থাকে তাহলে সেই নির্বাচনকে বৈধতা দিতে আপত্তি করার কোনো কারণ থাকবে না বলেই তারা মনে করছেন।

আর এরকম একটা পরিস্থিতি যদি তৈরি হয় তাহলে পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে কোনো আপত্তি বা হতাশা প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে এটা মেনে নেবে। কারণ আন্তর্জাতিক ভাবে এটি স্বীকৃত যে, একটি দেশের নির্বাচনে যদি ৫০ শতাংশ বা তার কাছাকাছি ভোট পড়ে তাহলে সেই নির্বাচনকে অবশ্যই গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করতে হবে। এরকম একটি রোড ম্যাপ অনুযায়ী বিএনপিকে বাদ দিয়ে আগামী নির্বাচন করতে চায় সরকার। কারণ বিএনপি নির্বাচনে এলেই নানামুখী সংকট তৈরি হতে পারে এবং এই সংকটগুলো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এমনকি নির্বাচন বানচালও করে ফেলতে পারে এই সমস্ত পদক্ষেপ।

বিএনপি   নির্বাচনের রোড ম্যাপ   আওয়ামী লীগ   ভিসা নীতি   সরকার   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন