গতরাতে আকস্মিকভাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। বেগম খালেদা জিয়ার বাসবভন ফিরোজায় তিনি ঘন্টাখানেক সময় অতিবাহিত করেন। রাত ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তিনি বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে ছিলেন। কিন্তু এই সময় তিনি
গণমাধ্যমের মুখোমুখি হননি, সাংবাদিককদের কোনো প্রশ্নের উত্তরও দেননি। এমনকি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার কি কথা হয়েছে সেটিও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে বলেননি।
তবে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে
নিশ্চিত করেছে, নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বেগম খালেদা জিয়া মির্জা
ফখরুলকে দিয়েছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তিনি নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ
দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে সেই নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনে হবে না নির্দলীয়, নিরপেক্ষ,
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে এই নিয়ে কোনোরকম মন্তব্য করেননি বেগম খালেদা জিয়া।
দীর্ঘদিন পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের এই বৈঠক রাজনীতিতে মেরুকরণের নতুন ইঙ্গিত
বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ কে এম আবদুল মোমেন দাবি করেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়
না বরং একটি অংশগ্রহণমুলক নির্বাচন চায়। তার এই বক্তব্যের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করেনি। কিন্তু এই বক্তব্যের পরপরই গতকাল দুপুরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত
পিটার ডি হাসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির তিন নেতা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক
ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব শামা ওবায়েদ পিটার হাসের সাথে বৈঠক করেন এবং
তাঁরা আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ কীভাবে হবে তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা
করেন।
বিভিন্ন সূত্রগুলো ধারণা করছে, বিএনপির
উপর এখন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দ্বি-মাত্রিক চাপ আসছে। প্রথমত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
বিএনপিকে বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং সেখানে তাঁরা
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করবে, পর্যবেক্ষকরা ক্ষমতাবান থাকবে ইত্যাদি
বিষয়গুলোতে আস্বস্ত করছে। বিএনপিকে নির্বাচনে আসার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একধরণের
প্রচ্ছন্ন অনুরোধ করছে বলেও একাধিক কূটনৈতিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছে। যদি
সে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হয় তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই নির্বাচনকে
গ্রহণ করবে না। কিন্তু নির্বাচন যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি বয়কট করে, আর আওয়ামী লীগ যদি
সুষ্ঠ নির্বাচন করে তবে সেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
জন্য সমস্যার বিষয় হইতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এই সমস্ত বিবেচনা থেকে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন না মাঝামাঝি
একটি অবস্থানে আনার জন্য কাজ করছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, সরকারের হাতেই রয়েছে ট্রাম্পকার্ড। বেগম খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচনের পর বিদেশে পাঠানোর বিনিময়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আনানোর একটি তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে ক্রমশ। বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে নির্বাহী আদেশে জামিনে রয়েছেন। তিনি এবং তার পরিবার উচ্চ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার আবেদন করেছেন। কিন্তু সরকারে পক্ষ থেকে তার বিদেশে যাবার আবেদন এখন পর্যন্ত অনুমোদন করা হয়নি। খালেদা জিয়ার পরিবার যে কোনো মূল্যে তাকে বিদেশে নেয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত আগ্রহী। আর একারণেই তাঁরা যেকোনো মূল্যে বেগম জিয়ার বিষয়ে সরকারের সাথে সমঝোতা করতে চান। এই সমঝোতার অংশ হিসেবেই বেগম খালেদা জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ডেকেছেন কি না তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছ। অনেকেই মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলামকে ডেকে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা বলেছেন। এর মানে সরকারে সঙ্গে তিনি একরকম দর কষাকষিতে যাচ্ছেন এবং সেই দর কষাকষির অংশ হিসেবে বিএনপি হয়তো শেষ পর্যন্ত বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচনে যাবে খালেদা জিয়ার নির্দেশে। এটি নিয়ে বিএনপির মধ্যে কি ধরণের প্রতিক্রিয়া হয়েছে তা এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন সরকার পতন বিটিভি বিমানবন্দর
মন্তব্য করুন
মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান দুর্নীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যুক্তরাজ্য লেবার পার্টি বিএনপি তারেক জিয়া অভিবাসী লেবার সরকার কিয়ার স্টারমার
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব তারেক জিয়া রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে আসলে সরকার পতনের একটি আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল এবং এই আন্দোলন দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে পরিকল্পিত হয়েছিল। সরকার পতনের জন্য সারা দেশে তাণ্ডব সৃষ্টি, নাশকতা এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দখল করার নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। আর এ কারণে ঢাকায় প্রায় পাঁচ লাখ ছাত্রশিবির, ছাত্রদল এবং পেশাদার সন্ত্রাসীদেরকে নিয়ে আসা হয়েছিল।
তার নাম মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাকর ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। প্রধানমন্ত্রীর ফাই-ফরমাস করছেন। বাজার হাট করে দিতেন এবং জাহাঙ্গীরের (প্রধানমন্ত্রীর আরেক চাকর) চেয়ে এক ধাপ নিচের হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হতো। সেই মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানও এখন ১০০ কোটি টাকার মালিক। আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান করছে। তবে কুমিল্লা নিবাসী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এখন দেশে নেই। তিনি বিদেশে আছেন।
যুক্তরাজ্যে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই সেই দেশের আভ্যন্তরীণ নীতি, পররাষ্ট্রনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার। স্টারমার সরকার অভিবাসী নীতির বিপক্ষে নয়। তবে অভিবাসীদের কিছু সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ থাকা উচিত বলে তারা মনে করছেন। স্টারমার সরকার মনে করছে যে, অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে যা খুশি তা করলে যেমন পররাষ্ট্রনীতির ওপর তার প্রভাব পড়ছে, অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ কারণেই লেবার সরকার তার প্রথম দিকে যে সমস্ত নীতি এবং উদ্যোগগুলো গ্রহণ করতে যাচ্ছে, তার মধ্যে একটি হল অভিবাসীদের কার্যক্রম সীমিতকরণ।