বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, ‘আমার সামাজিক অবস্থান কি আমাকে ফেরত দিতে পারবেন?’ তিনি বলেছেন, ‘আমি যা তার জন্য ঘৃণিত হতে আমার আপত্তি নেই। আমি যা নই তার জন্য শ্রদ্ধা চাই না।’ বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।
২০ সেপ্টেম্বর থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। এর মধ্যে তিনি কোন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি। বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে সাক্ষাতকারই হলো গণমাধ্যমের সঙ্গে তার প্রথম কথোপকথন।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন যে, আমি যখন আনন্দিত তখন আমার বন্ধুরা হয় উদ্বিগ্ন। আবার আমি যখন উদ্বিগ্ন তখন আমার বন্ধুরা হয় আনন্দিত। এটাই নিয়ম। এজন্য আমি যা হচ্ছে তা নিয়ে মোটেও বিচলিত নই। আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মিথ্যের ভিতরে থাকা সত্যি হলো ফিকশন। যদি সত্যিটা বলি সেটা হবে ফিকশন। এজন্য আমি বেশি কথা বলছি না।’
তিনি বলেছেন, সমালোচনা ছাড়া কেউ সফল হতে পারেন না। অকর্মণ্যদের সমালোচনা হয় না।
সম্প্রতি ক্যাসিনো বাণিজ্য এবং টেন্ডার বাণিজ্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টুইন টাওয়ারে যখন হামলা হয়েছিল তার আগে কি কেউ পূর্ভাবাস পেয়েছিল? ঢাকায় যখন হলি আর্টিজনের ঘটনা ঘটলো তার আগে কি কেউ জানতো? কাজেই এরকম যে ঘটনা ঘটছে সেটা অভিযোগ না পেলে আমার জানার বিষয় নয়।
তিনি বলেন যে, শেখ হাসিনার কাছ থেকে অন্তত আমি একটি উপহার পেয়েছি সেটা হলো ‘উৎসাহ’। জীবনে একটি স্বীকৃতির মূল্য অনেক কিছুর চেয়ে অনেক মূল্যবান।
বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চাই না। অভিযোগ করে সহানুভূতি পাওয়ার নাম করুণা। আমি কারো করুণার পাত্র হতে চাই না। তিরি আরও বলেন যে, আওয়ামী লীগের অনেক নেতারাই বলছে যে ছাত্রলীগের ৫-৬ জন ছাত্রলীগকে নষ্ট করেছে। কিন্তু পুরো ছাত্রলীগ খারাপ নয়। তাহলে যুবলীগের ৫-৬ জন যুবলীগকে নষ্ট করেছে, এই কথাটা কেউ বলছে না কেন? মানুষের অনুকম্পা আমার দরকার নেই।’
তিনি বলেন যে, ‘প্রথমে আমাকে জয় করতে হবে। আমার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। আমার ধারণা এই ব্যাংক হিসাব তলব করার পরে তারা দেখবে। দেখে হয়ত তারা দুদক, নয়তো আয়কর বিভাগকে বলবেন। এটাই হলো বিচারিক প্রক্রিয়া। কাজেই যদি এই প্রক্রিয়ায় দেখা যায় যে আমার কোনো দোষ নেই, আমার কোনো অবৈধ অর্থ নেই- তখনই আমি বিজয়ী হবো। শুধু বিজয়ী হলেই চলবে না, জয়ের সঙ্গে ক্ষমাও করতে হবে। ক্ষমার পরে ভালোবাসতে হবে। তাহলেই আমি আনন্দ করতে পারবো।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, একটা পত্রিকায় দেখলাম যে র্যাব প্রধান বলেছেন, আতঙ্ক গুজব ছড়ানোর দরকার নেই, তদন্ত চলছে। যখন তদন্ত চলছে তখন কারো চরিত্রহনন করছে, সামাজিকভাবে হেয় করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে যখন দেখা যাবে তিনি নির্দোষ তখন কি তার এই সম্মান ফেরত দিতে পারবেন? এই কথা শুনে আমি মুগ্ধ হয়েছি।
ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন যে, আমি তো জানি আমার কর্ম ভালো। সত্য একদিন বেরিয়ে আসবেই। তবে তিনি বলেন যে সবাই একসঙ্গে সব বিষয়ে পারঙ্গম হতে পারেন না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে আমি দেখেছি যে তাঁদেরকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সেই দায়িত্ব তারা পালন করতে পারেন কিনা। পলিটিক্স ইজ আর্ট অফ কম্প্রোমাইজ। কম্প্রোমাইজ মানে আপস নয়, মানে সমঝোতা। আমি দেখেছি যাকে এই কাজটা দেয়া হয়েছে সে কি কাজটা ভালোভাবে করছে, সমঝোতা করে করছে?
তাঁর বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্যের অভিযোগ সম্বন্ধে তিনি বলেন, এমপিদেরকে বলেছি কমিটি দিতে এবং প্রত্যেকটা এলাকায় নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে নির্বাচনের মাধ্যমে। সেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণে স্থানীয় এমপি, মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন এবং যারা যারা প্রার্থী ছিল তারা নিজেদেরকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আমি তাঁদেরকে সময় দিয়েছি যে তারা সমঝোতা করতে পারেন কিনা নিজেদের মধ্যে। দুই তিনজন হয়তো বসে গেছে। আমি নির্দেশ দিয়েছি যে, ভোটের পরে মিছিল করা যাবে না। অনেক মন্ত্রীদের এলাকাতেই এরকম ভোটের মাধ্যমে কমিটি হয়েছে।
একটি পত্রিকায় প্রকাশিত ‘ভাগ্যগুণে ওমর ফারুক চেয়ারম্যান’ রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, একশ এগারো বার পড়েছি, ৭/৮দিন ধরে পড়েছি। পড়ার পর অভিভূত হয়েছি। ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, আমি কিন্তু পজিটিভ চিন্তাভাবনার লোক। এই পত্রিকাটি লিখেছে আমি ৭০ সালে টেন্ডু বিড়ির ব্যবসায়ী। তারমানে আমি ৭০ সাল থেকে ব্যবসায়ী। আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম আমি বিড়ি শ্রমিক লীগ করেছিলাম। এই পত্রিকার রিপোর্ট দেখে আমার মনে হলো ইউসুফ সাহেব আমাকে বঙ্গবন্ধুর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু তখন আমাকে বিড়ি শ্রমিক করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
এই বিড়ি শ্রমিকটা এমন একটা জিনিস যেখানে ৭ বছরের শিশুরা করে কিংবা অসুস্থ দাদু সেও একজন বিড়ি শ্রমিক। এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এসএম ইউসুফ সাহেবের হাত ধরে আমি বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়েছিলাম। আমিতো নিজেকে ধন্য করছি যে, বঙ্গবন্ধু আমাকে একটা দায়িত্ব দিয়েছিল।
আবার দেখুন ওই প্রতিবেদনে আমি যে ৬৭ থেকে ছাত্রলীগ করছি ওই কথাটি বলেনি। ওই পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে যে আমি ৪৬ কোটি টাকার ঋণখেলাপি। আমি যদি ক্যাসিনোর টাকাই খেতাম তাহলে ৪৬ কোটি টাকার ঋণখেলাপি হলাম কি করে?
তিনি বলেন, খ্যাতি দুপ্রকার; সুখ্যাতি অথবা কুখ্যাতি। যারা খ্যাতির শিখরে উঠেছে তাদের পদের দরকার নেই। দরকার নেই মন্ত্রীত্বের বা চেয়ারম্যান হওয়ার।
মন্তব্য করুন
‘আমাদের বর্তমান কার্যক্রম প্রতিদিনই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। আমি মুন্সীগঞ্জে গিয়েছিলাম শনিবার, এখন আমি বগুড়ায় যাচ্ছি, তারপর যাব নীলফামারী। আমাদের আলুর যে নির্ধারিত মূল্য রয়েছে, কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে ২৭ টাকা, সেটা নিশ্চিত করা হলে, তখন ৩৫/৩৬ টাকায় আলু পাওয়া যাবে। এর জন্যতো সময়টা দিতে হবে। মন্ত্রী মহোদয় ঘোষণা করেছেন বৃহস্পতিবারে। আলুটাতো পাইপলাইনে, কোল্ডস্টোরেজে থাকে, সেখান থেকে বের হয়। আমাদের একটু কাজ করতে দিন, তারপর দেখেন।’ - বলছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা পর্যায়ে ডিম, পেঁয়াজ এবং আলুর মূল্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই নির্ধারিত মূল্য মানছেন না পাইকারী এবং খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতারা এর কারণ হিসেবে পাইকারী বিক্রেতাদের দায়ী করছেন। যে কারণে সরকার নির্ধারিত মূল্যে এসব পণ্য বিক্রয়ের উপর মনিটরিং করছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সম্প্রতি ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের আলু ব্যবসায়ী, কোল্ডস্টোরেজ মালিকসহ পাইকারী এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের জরিমানা এবং পুলিশে দেওয়ার সংবাদও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সরকার নির্ধারিত পণ্য মূল্য নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকারের নানামুখী কার্যক্রম এবং বর্তমান অবস্থা- ইত্যাদি বিষয়ে কথা হয় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান-এর সঙ্গে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন তার অধিদপ্তরের কার্যক্রম এবং বর্তমান পরিস্থিতির কথা। পাঠকদের জন্য জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।
আশা করা যাচ্ছে কি মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে? বা সরকার নির্ধারিত মূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে?- এমন প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান বলেন, ‘ডিমটাতো হয়ে যাচ্ছে। ডিমের মূল্য ইতিমধ্যে নিরয়ন্ত্রণ হয়ে গেছে। আর পেঁয়াজ, সেটা আমি আগামী সপ্তাহে ফরিদপুর, পাবনায় যাবো। দেখা যাক কি করা যায়।’
সরকার ভারত থেকে ডিম আমদানির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে কি ডিমের মূল্য নিয়ন্ত্রণ হবে বলে আপনি মনে করেন? - এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডিম আমদানির অনুমতি ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। সরকার নির্ধারিত প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা। ডিম আমদানি হলে ডিমের দাম আরও কমবে।’
খুচরা দোকানগুলোতে এখনও প্রতিটি ডিম ১৫ টাকা করে রাখা হচ্ছে? -এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আপনি যে এই কথাটা বললেন, এটা আপনি নিজেই প্রমাণ করতে পারবেন না। আপনি দেখান, কোন জায়গায় ডিম ১৫ টাকা রাখা হচ্ছে’- উল্টো প্রশ্ন রাখেন তিনি। এরপর এই প্রতিবেদকের লোকালিটি বা অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. শফিকুজ্জামান।
প্রতিবেদকের উত্তর, আমি ঢাকায়, মিরপুরের দিকে আমার বাসা। মিরপুরের অনেক দোকানে প্রতিটি ডিমের দাম এখনও ১৫ টাকা নিচ্ছে দোকানিরা।
এরপর প্রতিবেদককে আর কথা বলার সুযোগ দেননি তিনি। থামিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি পথে আছি। আমি বগুড়ায় যাচ্ছি। পরে আপনি আমার সঙ্গে কথা বলুন। আপনাকে ধন্যবাদ।’
কিন্তু প্রতিবেদকের শেষ কথাটি শুনেননি তিনি। প্রতিবেদকের শেষ কথাটি ছিল, ‘হয়তো দোকানে দোকানে গিয়ে মনিটরিং করাটা সম্ভব হয়ে উঠছে না। সেক্ষেত্রে করণীয় কি বলে মনে করছেন?’ জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের অবগতির জন্য প্রতিবেদকের অব্যক্ত শেষ কথাটি মোবাইল ফোনে গ্রহণ করা সাক্ষাৎকারটির সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো।
ডিম পেঁয়াজ আলু সরকার নির্ধারিত মূল্য ব্যবসায়ী ভোক্তা অধিকার
মন্তব্য করুন
‘মানবাধিকার পরিস্থিতির ব্যত্যয় কিছু কিছু আছে- এটাতো অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। কিন্তু তাই বলে মাস স্কেলে (সাধারণ জনগণের মধ্যে) মানবাধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে- এ ধরনের কথা বলার কোনো অবকাশ নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বলতে হবে যে, এই ক্ষেত্রে (ক্ষেত্র চিহ্নিত করে) বা এই বিষয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মানবাধিকার একেবারে চরম লঙ্ঘন হয়েছে বা একটা আশঙ্কাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে- এটা বলতে হবে। আর বাংলাদেশে এমন কোনো ঘটনা ঘটে নাই বা বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি যে, বাংলাদেশে মানবাধিকার ধ্বংস হয়ে গেছে, খারাপ হয়ে গেছে- এটা বলার কোনো অবকাশ আছে। এ ধরনের কোনো ব্যাপার নাই।’ -বলছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘আপনি অদিলুর রহমান সাহেবের কথা বললেন, তিনি মানবাধিকার কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন, তিনি কতটুকু মানবাধিকারের জন্য কাজ করেছেন, সেটাইতো প্রথমে দেখা দরকার। আর ওনার বিরুদ্ধে যদি শাস্তির কোনো ব্যবস্থা হয়ে থাকে, তাহলে শাস্তিটার জন্য তিনি যদি মনে করেন যে, এটি ঠিক হয়নি, তাহলে-তো অপিলে যেতে পারেন। আইনের সুনির্দিষ্ট ধারায় তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন, তিনি আপিল করতে পারেন। তিনি যদি মনে করেন, ঠিক হয়নি, তাহলে অপ্রমাণিত করার জন্য প্রচেষ্টা নিতে পারেন। আমি যেটা দেখি যে, উনার বিরুদ্ধে যে সমস্ত কথাগুলো বলা হয়েছে, উনিতো সেটা মিথ্যা প্রমাণ করতে পারেন নাই। কারণ তিনি-তো কিছু কিছু তথ্য দিয়েছেন, সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই এবং সেগুলো আমাদের দেশ সম্পর্কে যেমন একটা খারাপ চিত্র তুলে ধরে, একই সাথে আমাদের ধর্মীয় ক্ষেত্রে একটা উস্কানিমূলক ব্যবস্থার সৃষ্টি করে, যা কখনোই উচিত নয়। কারণ আমরা শান্তিপূর্ণ একটি ধর্মীয় ব্যবস্থায় এই দেশে আছি। এখানে যদি কেউ, সব সময় ধর্মীয় বা ইত্যাদি পার্টি করে থাকে, তাদেরকে যদি এ ধরনের কথা বলা হয় তাদের জানার জন্য, তাহলে-তো এটা অনেকটা উস্কানিমূলক হয় এবং দেশে ধর্ম ব্যবস্থায় একটা অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। এটা আমরা কখনোই কামনা করি না এবং বাইরের দেশুগুলোও সে ধরনের ইম্প্রেশন দিতে পারে- এটাও সঠিক নয়। এতে করে আমাদের সম্মানহানি হয়।’
সম্প্রতি ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ‘অধিকার’ নামক একটি মানবাধিকার বিষয়ক এনজিও সংস্থার সম্পাদক আদিলুর রহমানের বিরুদ্ধে দুই বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। ২০১৩ সালের ৫ই মে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ও তাণ্ডব নিয়ে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে পরিচিত ‘অধিকার’র সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও সংস্থাটির পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর পরই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এছাড়াও বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের দায়ের করা মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসব বিষয় নিয়েই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এসব বিষয় নিয়েই কথা হয় বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ-এর সাথে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রকৃত মানবাধিকার পরিস্থিতির কথা। পাঠকদের জন্য বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন আহমেদ- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।
ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন,‘আমরা নিজেদের মধ্যে আমদের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে বলতে পারি। কিন্তু বাইরের মানুষের কাছে এমন ধরনের কোনো ধারণা দেওয়া উচিৎ নয় যে, যেটা সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করার মতো কোনো অবস্থান নেই। সেজন্য আমি বলব, এ ধরনের কোনো কথা দাঁড়ায় না। উনার (আদিলুর রহমান) যদি কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে তিনি উচ্চ আদালতে যেতেই পারেন। উচ্চ আদালতে তার সঠিক বিচার চাইতেই পারেন।’
‘আদিলুর রহমানের বিচারের রায় এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার- এই দুই বিষয়ের উপরই কি বাংলাদেশের মানবাধিকারের সকল বিষয় নির্ভর করে?’ -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একদমই না। এগুলোর উপর কেন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নির্ভর করবে। এগুলো হলো, কতগুলোর ব্যক্তির উপর, কতগুলো ঘটনা, যেখানে তারা কেউ কেউ এমন কিছু কথা বলেছেন, যেটা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং সেগুলো মামলা হিসেবে গিয়েছে এবং সেগুলো তাদেরকে প্রমাণ করার জন্য বলা হয়েছে, তারা-তো সেটা প্রমাণ করতে পারেননি। আরেকটা কথা যেটা বললেন, যিনি বিশ্বে বিভিন্ন স্থানে পরিচিতি লাভ করেছেন, তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, সম্মানিত অবস্থানে গিয়েছেন। কিন্তু যে কোনো কেউ, তিনি যাই করুন না কেন, কেউই আইনের উপরে নয়। সুতরাং আইনের সেই সুনির্দিষ্ট অবস্থানে গিয়ে তিনি প্রমাণ করুন যে, তিনি অন্যায় করেননি। আর যদি অন্যায় না করে থাকেন, তাহলে উনার কোনো ক্ষতি হবে না, উনার অপরাধ হওয়ার কোনো কারণ নেই। সেটা প্রমাণ করার সুস্পষ্ট অবস্থান আছে, সুবিধা আছে। আর যদি প্রমাণ না করেন, তাহলে কেউই-তো বিচারিক অবস্থার বাইরে নয়। আজকে আমি যদি অন্যায় করি, আমার যেমন বিচার হবে, আমার চেয়ে উপরে যিনি আছেন, অনেক উপরে, তারও তাইই হবে। কেউ যদি অন্যায় করে থাকেন, তাহলে-তো তিনি বলতে পারেন না, আমি বিখ্যাত ভালো মানুষ, আমাকে কেন ধরা হলো?- এগুলোর উপরে আমাদের দেশের মানবাধিকার শেষ হয়ে গেছে, খারাপ হয়ে গেছে- এগুলো বলার কোনো অবকাশই নেই।’
‘আপনি কি মনে করেন, সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির অপরাধের দায়, সেটা আসলে মানবাধিকারের আওতায় পড়ে না?’- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকারটা আসলে কি? মানবাধিকার হলো মানুষের অধিকার। মানষের অধিকার হলো ন্যায়ানুগ অধিকার। ইউনিভার্সেল ডিক্লিয়ারেশন অব হিউম্যান রাইটস-এ সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আমাদের সংবিধানেও ২৭ থেকে ৪৪ নম্বর অনুচ্ছেদ পর্যন্ত স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কোনগুলো মানবাধিকার এবং এগুলো প্রত্যেকটি আপনি দেখুন। এগুলো হলো ন্যায়ানুগ প্রাপ্তির অধিকার। মানুষের যেটা চাহিদা যেটা ন্যায়ানুগ, সেটা অধিকার। কারো অন্যায় বিষয়টাতো অধিকার নয়। বিষয়টি অনেক স্পষ্ট, আপনি সংবিধানের অনুচ্ছেদের সাথে মিলিয়ে দেখুন, এগুলো সংবিধানের সাথে যাচ্ছে না। যদি না যায়, তাহলে উনারা চাইলেই সেগুলোকে অধিকার হিসেবে বলতে পারেন না। বরং একটা অন্যায় করে সেগুলো চাপিয়ে দেওয়ার মতো একটা প্রচেষ্টা, সেটাতো সঠিক নয়।’
ধর্মীয় ক্ষেত্র উস্কানিমূলক ব্যবস্থা সৃষ্টি আদিলুর রহমান ড. মুহাম্মদ ইউনূস
মন্তব্য করুন
‘প্রথমত পরিষ্কার ভাষায় বলা যায়, এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এ ধরনের ঘটনা কেন হলো, এটা খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরী। জরুরী কি কারণে? যদি আমরা প্রকৃতপক্ষে তাদের পদ অনুযায়ী, তাদের দায়িত্ব পালন করবে বিবেচনা করি, তাহলে এটা কেন ঘটছে- এটা খুঁজে বের করতে হবে এবং এগুলো বন্ধ করতে হবে। খুব সহজে বললে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে যারা এখন ক্ষমতায় আছে এবং অতীতেও ছিল, কিন্তু অতীত থেকে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় আছে, এই কারণে তারা দীর্ঘ দিন ধরে দলীয় স্বার্থে তাদেরকে ব্যবহার করেছে। এইখানে অনেক সময় যোগ্যতার থেকে ব্যক্তিগত যোগাযোগ, দলীয় যোগাযোগ, পছন্দ-অপছন্দ এগুলো গুরুত্ব পেয়েছে এবং এখনও আমরা দেখতে পাই, যদি দলীয় যোগাযোগ ভালো না থাকে, ব্যক্তি যোগাযোগ ভালো না থাকলে যোগ্যতা থাকলেও অনেকের প্রমোশন হয় না।’- বলছিলেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
‘যোগ্যতা থাকলেও, এই যে বললাম, দলীয় স্বার্থ বা গোষ্ঠী স্বার্থ বা ব্যক্তি স্বার্থ অথবা যদি যোগাযোগ রক্ষা না করে, তাহলে অনেকে তাদের চাকরি জীবনে তার যে আগ্রগতি বা উন্নতিও তারা ঘটাতে পারে না। আজকে তারা ওই কারণেও এমন হয়েছে, আবার অনেকে মনে করেন, আমি যদি আজকে এ ধরনের দলীয় তাবেদারিটা দেখাই, তাহলে আমার ভবিষ্যৎ আরও উন্নতির দিকে যাবে, আরও উজ্জল হবে। অর্থাৎ আমরা এ ধরনের আমলা, যেহেতু আমাদের কাঠামোতে আছে, তা-তো আমরা অস্বীকার করতে পারবো না। তারা সকল দল-মতের উর্ধ্বে থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে এবং তাদের প্রমোশন, ডিমোশন সবকিছুই হবে নিয়ম-নীতির উপর ভিত্তি করে। সে রকম নিয়ম-নীতি অবশ্যই আমরা তৈরি করব, রাজনৈতিক অঙ্গন এবং তারা তৈরি করবে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনাগুলো না ঘটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যা হচ্ছে, তার জন্যই আজকে তার অনীবার্য পরিণতি এটা। সমাজে যদি এটি বেড়ে যায়, তাহলে কোনো নীতি-নৈতিকতার বালাই থাকে না, আইনের শাসনতো দূরে কথা, বরঞ্চ দুঃশাসনের হাতিয়ারেই তারা পরিণত হয়। এগুলো দ্রুত বন্ধ করতে গেলে, একটা দুইটা ব্যক্তি কি করছে- সেটা চিন্তা করলেও চলবে না, পুরো সিস্টেমের পরিবর্তনের জন্যই ভূমিকা নিতে হবে। ক্ষমতাসীনদের অবশ্যই এদেরকে দলীয় কাজে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।’- যোগ করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স।
‘সরকারি আমলাদের রাজনৈতিক দলের জন্য ভোট চাওয়া কতটুকু গ্রহণযোগ্য বলে আপনি মনে করেন?’- এমন প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সরকারের বিভিন্ন আমলা, বিশেষ করে একজন সচিব, একজন ডিসি এবং একজন ওসি বিভিন্ন সভায় সরাসরি প্রকাশ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে নৌকার জন্য ভোট চেয়েছেন, এ ঘটনা বিভিন্ন গগণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই বিষয়টি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত/সমালোচিত হয়েছে। সরকারি এসব আমলাদের বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, ট্রলও হয়েছে। এসব বিষয় নিয়েই কথা হয় বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স- এর সাথে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন এ ধরনের বিষয়গুলো কেন ঘটছে, সরকারের প্রসাশনে দলীকরণ, রাজনীতিকরণ এবং এই অবস্থা থেকে উত্তরণ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়। পাঠকদের জন্য বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিনিধি আল মাসুদ নয়ন।
জনসম্মুখে সরকারি আমলাদের এ ধরনের বক্তব্যে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে বলে আপনি মনে করেন? -এমন প্রশ্নে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘অবশ্যই। এখানে আমি প্রথমত দুইটা বিষয় দেখি। একজন আমলা এটা বলা মানেই, সহজেই বোঝা যাচ্ছে আগামী নির্বাচনে তাদের কি ভূমিকা হবে। কোনো নিরপেক্ষ ভূমিকা তাদের থাকবে না। তার মানে আমরা যে লড়াই, সংগ্রাম করছি এবং যে কথাগুলো বলছি যে, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে ভালো নির্বাচন হতে পারে না, এই আমলাদের কথা দিয়ে সেটা আবারও প্রমাণিত হচ্ছে এবং একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হওয়া দরকার, আমাদের এই কথা যে সঠিক; সেটা প্রমাণ করছে। তার থেকে সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই রকম এক/দুই জন আমলা, এটা বলার মধ্য দিয়ে আরও অনেক আমলাকে যে সিগন্যালগুলো দিচ্ছে, ক্ষমতায় যে আছে তার পক্ষ তোমাদের অবলম্বন করতে হবে; যেটা আমাদের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে খুবই ক্ষতিকর হবে বলেই আমি মনে করি।’
‘এই সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কী বলে আপনি মনে করেন?’- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যারা শাসকগোষ্ঠী আছে। তারাই এটি তৈরি করেছে এবং তারা এইগুলোকে এইভাবেই তৈরি করে রাখবে। কারণ তারা জনগণের কল্যাণটাকে প্রধান দেখে না, তারা মনে করে ক্ষমতার খুঁটি যারা, এই সামরকি, বেসামরিক আমলা- তারাই হচ্ছে ক্ষমতার খুঁটি। বিদেশের আধিপত্য, শক্তি হলো ক্ষমতার খুঁটি। সতুরাং এটা তারা ভাঙবে না। ভাঙতে গেলে একটি নীতি নিষ্ঠ রাজনৈতিক শক্তির বিকল্প হতে হবে, যে বিকল্প শক্তি ক্ষমতায় এসে পুরো ব্যবস্থাটাকে বদল করবে। এ ছাড়া আমি এর থেকে পরিত্রাণের আর কোনো পথ দেখি না।’
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
‘আমাদের বর্তমান কার্যক্রম প্রতিদিনই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। আমি মুন্সীগঞ্জে গিয়েছিলাম শনিবার, এখন আমি বগুড়ায় যাচ্ছি,তারপর যাবো নীলফামারী। আমাদের আলুর যে নির্ধারিত মূল্য রয়েছে, কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে ২৭ টাকা, সেটা নিশ্চিত করা হলে, তখন ৩৫/৩৬ টাকায় আলু পাওয়া যাবে। এর জন্য-তো সময়টা দিতে হবে। মন্ত্রী মহোদয় ঘোষণা করেছেন বৃহস্পতিবারে। আলুটাতো পাইপলাইনে, কোল্ডস্টোরেজে থাকে, সেখান থেকে বের হয়। আমাদের একটু কাজ করতে দিন, তারপর দেখেন।’
‘মানবাধিকার পরিস্থিতির ব্যত্যয় কিছু কিছু আছে- এটাতো অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। কিন্তু তাই বলে মাস স্কেলে (সাধারণ জনগণের মধ্যে) মানবাধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে- এ ধরনের কথা বলার কোনো অবকাশ নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বলতে হবে যে, এই ক্ষেত্রে (ক্ষেত্র চিহ্নিত করে) বা এই বিষয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মানবাধিকার একেবারে চরম লঙ্ঘন হয়েছে বা একটা আশঙ্কাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে- এটা বলতে হবে। আর বাংলাদেশে এমন কোনো ঘটনা ঘটে নাই বা বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি যে, বাংলাদেশে মানবাধিকার ধ্বংস হয়ে গেছে, খারাপ হয়ে গেছে- এটা বলার কোনো অবকাশ আছে। এ ধরনের কোনো ব্যাপার নাই।’ -বলছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।
পরিষ্কার ভাষায় বলা যায়, এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এ ধরনের ঘটনা কেন হলো, এটা খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরী। জরুরী কি কারণে? যদি আমরা প্রকৃতপক্ষে তাদের পদ অনুযায়ী, তাদের দায়িত্ব পালন করবে বিবেচনা করি, তাহলে এটা কেন ঘটছে- এটা খুঁজে বের করতে হবে এবং এগুলো বন্ধ করতে হবে। খুব সহজে বললে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে যারা এখন ক্ষমতায় আছে এবং অতীতেও ছিল, কিন্তু অতীত থেকে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় আছে, এই কারণে তারা দীর্ঘ দিন ধরে দলীয় স্বার্থে তাদেরকে ব্যবহার করেছে।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেছেন, ‘এডিসি হারুন যেটি করেছে সেটি তার নিজের দোষ। এর সাথে পুলিশ বাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্ট নেই। পুলিশ এডিসি হারুনের বিষয়টি নিয়ে কোনো ভাবে দায়বদ্ধ নয়। সে তিনি যেটি করেছেন সেটি তার ব্যক্তির বিচ্যুতি। এটার সাথে আমি সরকারের কোনো সম্পর্ক দেখি না। পুলিশের ওপর সরকারের নির্ভরশীলতার প্রসঙ্গটি এখানে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক এবং অযৌক্তিক।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন বলেছেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া থেকে এক মাত্র যে জি-২০ শীর্ষ সন্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে। সুতরাং অবশ্যই ভূরাজনীতিতে এটি একটা আলাদা গুরুত্ব বহন করে। যদিও জি-২০ সন্মেলনে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো বেশি করে আলোচনা করা হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ তো এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করেছে। এছাড়া জি-২০ সন্মেলনে সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ছিল, অন্যান্য দেশগুলোও ছিল সেটা তো অবশ্যই আমাদের কূটনীতির জন্য একটা বড় সুযোগ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ পশ্চিমা যে দেশগুলো আছে সেখানে আমাদের একটা বড় মার্কেট রয়েছে। সুতরাং জি-২০ সন্মেলনে বাংলাদেশের উপস্থিতি একটা বড় সুযোগ। কারণ সেখানে রাষ্ট্রপ্রধান বা বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বাংলাদেশ সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আলাদা একটি গুরুত্ব পেয়েছে।