জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পেছনে পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার এক ষড়যন্ত্র যুক্ত ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গবেষণা এবং তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। খুনী মোশতাক যখন ফারুকদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছিলেন, সেই বৈঠকের ফলাফল তিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-কে অবহিত করতেন। বাংলাদেশে পাকিস্তানের আইএসআই-এর অন্তত দুজন এজেন্টের সঙ্গে খুনী মোশতাকের নিয়মিত যোগাযোগ হতো। একাধিক গবেষণায় এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনায় পাকিস্তানের একটি বড় ভূমিকা ছিল এবং এই হত্যাকাণ্ডের মূল ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করেছিল আইএসআই।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সাবেক প্রধানের এক গ্রন্থেও বলা হয়েছে যে, এই উপমহাদেশে আইএসআই-এর সবথেকে বড় সাফল্য হলো ভারতকে অন্ধকারে রেখে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করা। খুনী মোশতাক যে পাকিস্তান প্রেমী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা চান না এবং কনফেডারেশনে বিশ্বাসী এটা মুক্তিযুদ্ধের সময়ই প্রমাণিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের একাধিক দলিলপত্রে দেখা যায় যে, খন্দকার মোশতাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশনের মাধ্যমে একটি আপোসনামা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছিলেন। এক্ষেত্রে তিনি বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার অজুহাত দাঁড় করিয়েছিলেন। যদিও তাজউদ্দীন আহমেদের দৃঢ়তা, আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের স্পষ্ট অবস্থান এবং ভারতের ভূমিকার কারণে খন্দকার মোশতাকের স্বপ্ন পূরণ হয়নি এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ইন্দিরা গান্ধী খন্দকার মোশতাকের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাজউদ্দীন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময়েই তাঁকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। খন্দকার মোশতাক এই নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন এবং এই কারণেই তিনি বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে আওয়ামী লীগে তাজউদ্দীনের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। মোশতাক শেষ পর্যন্ত তাজউদ্দীন আহমেদকে দলে কোণঠাসাও করে ফেলেছিলেন। একাধিক গবেষকরা অনুসন্ধানে দেখেছেন যে, খন্দকার মোশতাকের যে কনফেডারেশন তত্ত্ব, যা তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে উত্থাপন করেছিলেন সেই তত্ত্ব মাথায় রেখেই বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এই কারণেই খুনী মোশতাক যখন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন, তখন জয় বাংলা না বলে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলেছেন। খুনী মোশতাক পাকিস্তান আমলের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, খুনী মোশতাক যদি নিজের অবস্থান সংহত করতে পারতেন এবং তাঁর মসনদকে পাকাপোক্ত করতে পারতেন তাহলে তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশনের বিষয়টি প্রকাশ্য আনতেন। কিন্তু এর আগেই সেনাবাহিনীতে অসন্তোষ এবং খালেদ মোশাররফদের অভ্যুত্থান চেষ্টা, ৭ নভেম্বরের ষড়যন্ত্র ইত্যাদি কারণে মোশতাক ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ষড়যন্ত্রের সময়ে জিয়াউর রহমানও পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন তত্ত্বে নীতিগত সম্মত ছিলেন বলে কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত অতি চতুর এই সামরিক একনায়ক সেখান থেকে সরে আসেন। বরং নিরবে বাংলাদেশে পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কর্মপন্থা গ্রহণ করেন। সেই কর্মপন্থার অংশ হিসেবেই স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-শিবিরের রাজনৈতিক পথ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, গোলাম আজমকে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয় এবং স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের জেল থেকে বের করে দেওয়া হয় ও তাঁদের বিচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশনের কথা প্রকাশ্যে বলেননি। তবে খন্দকার মোশতাকের একাধিক সাক্ষাৎকারে এটা স্পষ্ট হয় যে, তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশনের পক্ষেই ছিলেন।
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন সরকার পতন বিটিভি বিমানবন্দর
মন্তব্য করুন
মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান দুর্নীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যুক্তরাজ্য লেবার পার্টি বিএনপি তারেক জিয়া অভিবাসী লেবার সরকার কিয়ার স্টারমার
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব তারেক জিয়া রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে আসলে সরকার পতনের একটি আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল এবং এই আন্দোলন দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে পরিকল্পিত হয়েছিল। সরকার পতনের জন্য সারা দেশে তাণ্ডব সৃষ্টি, নাশকতা এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দখল করার নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। আর এ কারণে ঢাকায় প্রায় পাঁচ লাখ ছাত্রশিবির, ছাত্রদল এবং পেশাদার সন্ত্রাসীদেরকে নিয়ে আসা হয়েছিল।
তার নাম মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাকর ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। প্রধানমন্ত্রীর ফাই-ফরমাস করছেন। বাজার হাট করে দিতেন এবং জাহাঙ্গীরের (প্রধানমন্ত্রীর আরেক চাকর) চেয়ে এক ধাপ নিচের হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হতো। সেই মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানও এখন ১০০ কোটি টাকার মালিক। আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান করছে। তবে কুমিল্লা নিবাসী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এখন দেশে নেই। তিনি বিদেশে আছেন।
যুক্তরাজ্যে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই সেই দেশের আভ্যন্তরীণ নীতি, পররাষ্ট্রনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার। স্টারমার সরকার অভিবাসী নীতির বিপক্ষে নয়। তবে অভিবাসীদের কিছু সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ থাকা উচিত বলে তারা মনে করছেন। স্টারমার সরকার মনে করছে যে, অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে যা খুশি তা করলে যেমন পররাষ্ট্রনীতির ওপর তার প্রভাব পড়ছে, অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ কারণেই লেবার সরকার তার প্রথম দিকে যে সমস্ত নীতি এবং উদ্যোগগুলো গ্রহণ করতে যাচ্ছে, তার মধ্যে একটি হল অভিবাসীদের কার্যক্রম সীমিতকরণ।