বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত ছিলেন যে বেগম খালেদা জিয়ার আবেদনটি গৃহীত হবে এবং তার বিদেশযাত্রা নিশ্চিত হবে। আর এ জন্যই বেগম খালেদা জিয়ার জন্য পাসপোর্টের আবেদন করা হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট যেন দ্রুত করা হয় সেজন্য ছুটির দিন পাসপোর্ট অফিস খোলা রাখা হয়েছিল। আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছিল। শামীম ইস্কান্দার এরকম আশ্বাস সরকারের কারো কারো কাছ থেকে পেয়েছিলেন যে বেগম খালেদা জিয়াকে অবশ্যই বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। আর সেরকম আশ্বাস পেয়ে তিনি ছুটির দিনেও ব্রিটিশ হাইকমিশনের যোগাযোগ করেছিলেন এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তারেককে তিনি টেলিফোন করে জানিয়েছিলেন যে সবকিছু ঠিক আছে।
বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে পৌঁছবে। এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ঠিক করা হয়েছিল, ঠিক করা হয়েছিল লন্ডনের হাসপাতালও। কিন্তু সবকিছু পাল্টে গেল। কীভাবে পাল্টে গেল, কিভাবে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন নাকচ হয়ে গেল। এই অনুসন্ধানে বাংলা ইনসাইডার পেয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ৫ মে (বুধবার) আবেদন করলেন তখন সরকার বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে সহানুভূতিশীল ছিল বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই জন্যই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাতেই এটি পাঠিয়ে দেন আইনমন্ত্রীর কাছে। আইনমন্ত্রীও তাড়াহুড়ো করে এটিকে সহমর্মিতা এবং মানবিকভাবে দেখার জন্য আইনমন্ত্রী বলেন, এখানে আদালতের কোন প্রয়োজন নেই।
সরকারের ভিতরে সমন্বয়হীনতা এখানে স্পষ্ট হয়েছিল। যেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথম বলেছিলেন যে, এটি আদালতের এখতিয়ারাধীন বিষয়। আর সেখানে আইনমন্ত্রী যখন বললেন যে, আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। এটি নির্বাহী আদেশ। নির্বাহী আদেশেই এই বিষয়টি ফয়সালা করা যায়। দুইজনে দুই রকম বক্তব্যের পর বোঝা গেল যে সরকার ইতিবাচকভাবে বিষয়টি নিচ্ছে। যখন আইনমন্ত্রী জানালেন যে, তিনি আজ কোনো সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন না তখনই সকলের নড়েচড়ে বসল যে সিদ্ধান্ত বোধহয় সঠিক নয়।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় দুটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। একটি হলো, লন্ডনে কি হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার যাওয়া নিয়ে। দ্বিতীয়ত, বেগম খালেদা জিয়া আসলে কতটুকু অসুস্থ। প্রথমেই এভারকেয়ার হাসপাতাল যোগাযোগ করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা যে তথ্যটি দেন সরকারের কাছে তা ছিল অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য। এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরকে জানান যে, বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা রীতিমতো চাপ দিচ্ছে যে তারা যেন সার্টিফিকেট দেয় কিন্তু তারা মনে করছেন (এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা) মনে করছেন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার মধ্যে কোনো প্রয়োজন নেই। তার এরকম কোনো গুরুতর জটিল শারীরিক পরিস্থিতি নেই যে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে। বরং দুই-একদিন পর তার হাসপাতালে থাকারও প্রয়োজন নেই।
কিন্তু এভারকেয়ার হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে রীতিমত চাপ দিয়ে তারা বেগম খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে রাখেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, ৮ তারিখে বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থার উন্নতি হয়েছিল এবং তখনই তাকে সিসিইউ থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কিন্তু বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে অসুস্থ দেখাতে হবে, এ কারণেই সিসিইউতে রাখে। বেগম খালেদা জিয়ার রিপোর্ট এবং আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পান এবং একই সময়ে লন্ডন ষড়যন্ত্রের বিশদ তথ্য তার কাছে দেওয়া হয়। তখন তিনি আইনগতভাবে এটি মোকাবেলা করেন। বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে তারেক জিয়া কি কি করতে পারে সে সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ বলুন গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর এই দুইটি বিষয় পাওয়ার পরই সরকারের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ সঠিক হয়ে যায় এবং বেগম খালেদা জিয়ার আবেদনটি নাকচ হয়ে যায়।
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন সরকার পতন বিটিভি বিমানবন্দর
মন্তব্য করুন
মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান দুর্নীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যুক্তরাজ্য লেবার পার্টি বিএনপি তারেক জিয়া অভিবাসী লেবার সরকার কিয়ার স্টারমার
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব তারেক জিয়া রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে আসলে সরকার পতনের একটি আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল এবং এই আন্দোলন দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে পরিকল্পিত হয়েছিল। সরকার পতনের জন্য সারা দেশে তাণ্ডব সৃষ্টি, নাশকতা এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দখল করার নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। আর এ কারণে ঢাকায় প্রায় পাঁচ লাখ ছাত্রশিবির, ছাত্রদল এবং পেশাদার সন্ত্রাসীদেরকে নিয়ে আসা হয়েছিল।
তার নাম মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাকর ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। প্রধানমন্ত্রীর ফাই-ফরমাস করছেন। বাজার হাট করে দিতেন এবং জাহাঙ্গীরের (প্রধানমন্ত্রীর আরেক চাকর) চেয়ে এক ধাপ নিচের হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হতো। সেই মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানও এখন ১০০ কোটি টাকার মালিক। আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান করছে। তবে কুমিল্লা নিবাসী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এখন দেশে নেই। তিনি বিদেশে আছেন।
যুক্তরাজ্যে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই সেই দেশের আভ্যন্তরীণ নীতি, পররাষ্ট্রনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার। স্টারমার সরকার অভিবাসী নীতির বিপক্ষে নয়। তবে অভিবাসীদের কিছু সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ থাকা উচিত বলে তারা মনে করছেন। স্টারমার সরকার মনে করছে যে, অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে যা খুশি তা করলে যেমন পররাষ্ট্রনীতির ওপর তার প্রভাব পড়ছে, অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ কারণেই লেবার সরকার তার প্রথম দিকে যে সমস্ত নীতি এবং উদ্যোগগুলো গ্রহণ করতে যাচ্ছে, তার মধ্যে একটি হল অভিবাসীদের কার্যক্রম সীমিতকরণ।