নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০২ এএম, ১৫ মে, ২০১৮
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত বছর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নেওয়ারও অঙ্গীকার করা হয়েছে। পাঁচ মাসের মাথায় বাস্তবায়িত হলো সেই অঙ্গীকার।
বিবিসি জানায়, জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দূতাবাস উদ্বোধন করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার মেয়ে ইভাংকা ট্রাম্প এবং জামাতা জ্যারেড কুশনারকে ইসরায়েল যান।
মার্কিনীদের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে শুধু ফিলিস্তিনরাই আপত্তি করেনি। আপত্তি ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও। তাদের মতে, জেরুজালেমের সার্বভৌমত্ব-বিতর্কের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই শহরকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ঠিক নয়। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন সব দেশই এখনো দূতাবাস রেখেছে তেল আবিবেই।
ঝুঁকি কোথায়?
প্রাচীন এই শহরটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধের কেন্দ্রে। শুধু এই শহরটি নিয়ে দশকের পর দশক ধরে থেকে থেকেই সহিংসতা হয়েছে। জেরুজালেমের অবস্থার যে কোনো পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে নানাভাবে।
ধর্মীয় দিক থেকে জেরুজালেম বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর একটি শহর। ইসলাম, ইহুদি এবং খ্রিস্টান ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র ধর্মীয় স্থাপনার অনেকগুলোই এই শহরে। এর রাজনৈতিক গুরুত্ব হয়তো এখন ধর্মীয় গুরুত্বকেও ছাপিয়ে গেছে।
‘অভিন্ন জেরুজালেম নিজেদের চিরদিনের রাজধানী’ বলে মনে করে ইসরায়েল। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরপরই জেরুজালেমের পশ্চিমাংশে দেশটির সংসদ ভবন স্থাপন করা হয়। আর ১৯৬৭ সালে আরবদের সঙ্গে যুদ্ধে জিতে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেমও দখল করে নেয় এবং পুরো জেরুজালেম শহরটিকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রের অংশ হিসাবে ঘোষণা করে।
কিন্তু ফিলিস্তিনিরা কোনোদিনই পূর্ব জেরুজালেমের দখল মেনে নেয়নি। তাদের সবসময়ের দাবি, পূর্ব জেরুজালেম হবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী।
ফিলিস্তিনি নেতাদের মতে, জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণাকে কবর দিয়ে দেওয়া। তাদের কথা, জেরুজালেম তাদের না থাকলে, কোনো টেকসই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন কখনই সম্ভব হবেনা।
গত দশকগুলোতে পূর্ব জেরুজালেমের বহু স্থানে ইহুদিরা বসতি বানিয়েছে, কিন্তু তারপরও এখানকার সিংহভাগ বাসিন্দা ফিলিস্তিনি, যারা শত শত বছর ধরেই এই শহরে বসবাস করছেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও মনে করে, জেরুজালেম শহরের মর্যাদা, মালিকানা নির্ধারিত হবে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চূড়ান্ত শান্তি রফার অংশ হিসাবে। এখন পর্যন্ত কোনো দেশই জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেয়নি।
ট্রাম্প কেন ঝুঁকি নিচ্ছেন?
ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অকুণ্ঠ সমর্থন নতুন কোনো বিষয় নয়। বিশেষ করে ১৯৭৩ সালে আরব ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে এই ইহুদি রাষ্ট্রকে যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক সাহায্য দিয়ে আসছে তা অন্য কোনো দেশের সাথেই তুলনীয় নয়।
বিবিসি জানায়, নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইহুদিদের সমর্থন পেতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন - জিতলে তিনি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেবেন এবং মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর করবেন। তিনি সেই প্রতিশ্রুতি রাখছেন।
সূত্র: বিবিসি
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
গাজা নীতি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
ভারতের নির্বাচন: নরেন্দ্র মোদি কংগ্রেস বিজেপি ইন্ডিয়া জোট এনডিএ জোট লোকসভা ভোট
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা ইসরায়েল
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা ইরান
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন