ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

টেম্পল ট্রিস’কে ঘিরে কী ঘটছে শ্রীলঙ্কায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০২ এএম, ০৬ নভেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনটি বিশাল এলাকা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বিশালাকারের অনেক গাছ ছাড়াও রয়েছে মনোমুগ্ধকর কিছু স্থাপনা। লঙ্কান প্রধানমন্ত্রীর বাসস্থানটি টেম্পল ট্রিস নামে পরিচিত। সাদা রঙের এই ভবনটিকে দেশটির ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দেখা হয়। এই টেম্পল ট্রিস’ই এখন একটি লড়াইয়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

শ্রীলঙ্কায় চলমান রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহকে অনেকেই টিভি সিরিয়াল হাউস অব কার্ডস বা গেম অব থ্রোনসের সঙ্গে তুলনা করছেন। গত সপ্তাহে দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনেল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে রনেল বিক্রমাসিংহে টেম্পল ট্রিস ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ভবনটির বাইরে সমাবেশ করছেন তার সমর্থকরা। গত কয়েকদিন ধরেই তারা ভবনটির সীমানা প্রাচীরের ভেতরে এবং বাইরে অবস্থান নিয়ে রয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার সাম্প্রতিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাজধানী কলম্বোর কেন্দ্রস্থলে একটি রাজনৈতিক সমাবেশ করেছেন কয়েকশো মানুষ। গোটা দেশজুড়েই এমন অনেক সমাবেশ হচ্ছে। সমাবেশে অংশ নেয়া ব্যক্তিরা বলছেন, তারা কাউকে সমর্থন জানাতে আসেননি। তারা শুধু মনে করেন, প্রেসিডেন্ট যা করেছেন, তা অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক। এর বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারা।

সিরিসেনার বিপক্ষে যেমন বিক্ষোভ হচ্ছে, তেমনি তাঁর পক্ষেও অনেকেই অবস্থান করছেন। সম্প্রতি এমনই কয়েকজনের ওপর গুলিবর্ষনেরও ঘটনা ঘটেছে। আর একাজটি করেছে সাবেক ক্রিকেটার ও মন্ত্রী অর্জুনা রানাতুঙ্গার এক দেহরক্ষী। ওই ঘটনায় একজন নিহত হন। গ্রেপ্তার করা হয় রানাতুঙ্গাকে। তবে পরে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে মনে করছে। অন্যদিকে চীন প্রেসিডেন্টেরই পক্ষ নিচ্ছে। কারণ সিরিসেনা যাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসিয়েছেন তিনি ভারতবিরোধী ও চীনপন্থী হিসেবে পরিচিত।

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে একটি বড় ইউটার্ন হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। কারণ গত সপ্তাহে যে ব্যক্তিকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন, তার বিরুদ্ধেই তিনি সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়েছিলেন। অনেকে বলছেন, সিরিসেনা এমন একজন ব্যক্তি, যিনি একসময় তার নিজের নেতার সঙ্গেই প্রতারণা করেছিলেন। আবার তিনিই এখন সেই নেতাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন।

নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। ওই ভাষণে তিনি বলেছেন, সব নিয়োগই সংবিধানের নিয়ম মেনে এবং আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী নেয়া হয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েকজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ তার সঙ্গে একমত নন।

আইন বিশেষজ্ঞ নিহাল জয়াবিক্রমা বিবিসি’কে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিষয়টি প্রেসিডেন্টের নয়, সে বিষয়ে সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। একটা সময় ছিল, যখন তিনি সেটা করতে পারতেন। কিন্তু ২০১৫ সালে সংবিধানে কিছু নাটকীয় পরিবর্তন আনা হয়। প্রেসিডেন্টের ৯০ শতাংশ নির্বাহী ক্ষমতা তখন কেড়ে নেয়া হয়। সেইসব কেড়ে নেয়া ক্ষমতার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার এখতিয়ার।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাহিন্দা রাজাপাকসে এক দশক ধরে শ্রীলঙ্কার ক্ষমতায় ছিলেন। দেশটির রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের অবসানের পুরো কৃতিত্বই তাকে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি আর মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার পরাজয় ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত। তবে নিজের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের একটি সুযোগ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু সেজন্য পুনরায় সংসদ অধিবেশনের আগেই তার পক্ষে আরো অনেক এমপির সমর্থন দরকার হবে।

রনেল বিক্রমাসিংহে বলছেন, `সংবিধানে বলা আছে, প্রেসিডেন্ট শুধুমাত্র তাকেই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবেন, যিনি সংসদে আস্থা অর্জন করতে পারবেন। এবং আমিই সেই ব্যক্তি, যার পক্ষে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন রয়েছে। সংবিধান অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে এবং সংসদের সভা ডাকতে হবে। এখন আমরা সেরকম পদক্ষেপ নিচ্ছি যাতে সংসদের ক্ষমতা এবং জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত হয়।`

বিবিসি তাকে প্রশ্ন করেছিল, কেন আপনি আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন না? কেন আপনি আদালতে গিয়ে অভিযোগ করছেন না যে, আপনাকে সরিয়ে দেয়াটা বেআইনি? এসব প্রশ্নের জবাবে বিক্রমাসিংহে বলেন, `চূড়ান্ত বিচারে আদালত অবশ্যই বলবে, যে এ বিষয়ে সংসদ শেষ সিদ্ধান্ত নেবে। আদালত হয়তো বলতে পারে, কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, সেটাই প্রমাণ করুন।`

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কে টেম্পল ট্রিসের দখল পাবেন তা নির্ধারন করবে সংসদ। একারণে দুই পক্ষেই এখন দীর্ঘ দরকষাকষি চলছে এবং ঘুষ লেনদেন হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। একজন এমপি দাবি করেছেন, রাজাপাকসে তাকে ৫০ কোটি রুপির বিনিময়ে নিজের দলে ভিড়তে চাপ দিচ্ছেন।

টেম্পল ট্রিসের অধিকার নিয়ে শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ ক্রমাগত জটিল আকার ধারন করছে। আগামী ১৪ নভেম্বর সংসদ অধিবেশন শুরু হলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটবে বলে আশা করছেন সাধারণ লঙ্কানরা। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন ভিন্নকথা। রাজনীতিবিদরা যেভাবে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছেন, তাতে করে খুব শিগগিরই এই সংকটের সমাধান হবে না বলেই মনে করছেন তারা।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ

 



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে ভূলুন্ঠিত মানবাধিকার: সতর্ক করবে কে?

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের বড় ফেরিওয়ালা। দেশে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে, সতর্ক করে, হুমকি দেয়, বিবৃতি দেয়। কিন্তু এখন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তাতে পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত। সারা বিশ্ব হতবাক। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত কিছুদিন ধরে ছাত্র আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করছে। বিশ্বের সেরা এবং নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাঁজার গণহত্যার প্রতিবাদে ছাত্ররা রুখে দাঁড়িয়েছে, প্রতিবাদ করছে, বিক্ষোভ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর এটি বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভ। আর এই ছাত্র বিক্ষোভে যারা অংশগ্রহণ করছে তারা মুসলমান নয়, তারা বিভিন্ন ধর্মালম্বী। তারা বিভিন্ন মতে, বিভিন্ন পথে। তারা সরাসরি অনেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, রাজপথে নেমেছেন, প্রতিবাদ করছেন শুধুমাত্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গাঁজায় গণহত্যার নিন্দা জানাতে। ইসরায়েলকে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা না করে সেই আবেদন নিয়ে। 

ছাত্ররা হলো জাতির বিবেক। যে কোনো জাতি রাষ্ট্রের ছাত্রদের সচেতনতা এবং ছাত্রদের দেখানো পথেই মুক্তি আসছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ছাত্ররাই এখন তাদের রাষ্ট্রের ক্ষতগুলোকে উন্মোচন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রত্যাশিত ছিল ছাত্র আন্দোলনের প্রতি তারা সম্মান দেখাবে, ছাত্রদের ন্যায্য দাবিগুলো তারা মারার চেষ্টা করবে এবং গাঁজায় গণহত্যা এবং মানবিক বিপর্যয় রোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবে কিন্তু সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করছে না। বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশি আক্রমণ চালাচ্ছে, তাণ্ডব হচ্ছে। ছাত্রদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও যেভাবে শিক্ষার্থীদেরকে নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে সেটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। 

প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে মানবাধিকারের সবক দেয়। এখন তাদেরকে মানবাধিকার শেখাবে কে? 

মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নয়শ’র বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী মতপ্রকাশের স্বাধীনতা শর্তহীন। সেই দেশের যে কোনো নাগরিক যে কোন মত প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু গাঁজার ঘটনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরীহ শিক্ষার্থীরা যে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছে এবং তাকে যে ভাবে দমন করা হচ্ছে তার নিকৃষ্ট স্বৈরাচারী তৎপরতার একটি অংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী বলবে? অন্য দেশে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটত তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়ই এত দিনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত, নানারকম বক্তব্য বিবৃতি দিত। 

চীনের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের ঘটনার কথাই ধরা যাক। সেই সময় চীনের এই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে মানবাধিকার নিয়ে আর্তনাদ করছিল, এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নীরব কেন? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশের র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বিচার বহির্ভূত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে বিচার বহির্ভূত নিপীড়ন নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ঘটছে তাতে বিশ্ব বিবেক স্তব্ধ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী আর অধিকার রাখে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার? অন্য বিশ্বকে মানবাধিকার নিয়ে জ্ঞান দেওয়ার আগে এখন কী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজেরই লজ্জিত হওয়া উচিত না? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজের মানবাধিকার সুরক্ষা করতে না পারে, নিজ দেশের জনগণ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয় তাহলে অন্য দেশকে মানবাধিকারের উপদেশ দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কী শোভা পায়? 


যুক্তরাষ্ট্র   মানবাধিকার   ছাত্র আন্দোলন   গাঁজায় গণহত্যা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের অভিযানে শতাধিক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৭:৫০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত সাড়ে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত এক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে মার্কিন পুলিশ প্রশাসন। সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিউইয়র্কের সিটি কলেজ ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে পরিচালিত হয়েছে পুলিশি অভিযান। এ অভিযানে ক্যাম্পাস দুটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শতাধিক ফিলিস্তিন সমর্থকারীকে।

বুধবার (১ মে) মার্কিন এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সিএনএন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন হ্যামিল্টন হলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর রাতে তাদের সরাতে ভবনে প্রবেশ করে পুলিশ।

নিউইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, দুই ঘণ্টারও কম সময়ের এ অভিযানে হ্যামিল্টন হল থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় কেউ আহত হয়নি বলেও দাবি পুলিশের।

এর আগে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত নিউইয়র্ক পুলিশকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই চিঠি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে রাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুলিশের বড় একটি দল।

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে প্রথম ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে নিউইয়র্ক পুলিশ। ওই অভিযানে শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে। গত এক সপ্তাহে পুলিশ ৫৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র   কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ট্রুডোকে ‘উন্মাদ’ বলায় বিরোধী নেতাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৭:০৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

কানাডার বিরোধীদলীয় নেতাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ আখ্যা দেওয়ার পর প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে দিনের বাকি অংশের জন্য পার্লামেন্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়।

বুধবার (১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্স থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অস্বাভাবিক এই পদক্ষেপের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

রয়টার্স বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধী দলে থাকা কনজারভেটিভরা জরিপে বেশ এগিয়ে আছে এবং কার্বন ট্যাক্সের জন্য বিরোধী নেতা পিয়েরে পয়লিভের ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকারকে নিয়মিত আক্রমণ করছেন। এর ফলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে বলেও সমালোচনা করছেন তিনি।

মঙ্গলবার এই বিরোধী নেতা হাউস অব কমন্সে ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রুডোকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এই উন্মাদ প্রধানমন্ত্রীর এই উন্মাদ নীতির অবসান কবে হবে?’

এই বক্তব্যের পর স্পিকার গ্রেগ ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তার মন্তব্যটি অসংসদীয় এবং অগ্রহণযোগ্য। এরপর তাকে ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে চারবার আহ্বান জানান লিবারেল এই স্পিকার।

তবে পয়লিভের প্রতিবারই সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, এর পরিবর্তে তিনি চরমপন্থি বা মৌলবাদী শব্দটি ব্যবহার করতে চান।

এই পর্যায়ে স্পিকার ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তিনি স্পিকারের কর্তৃত্বকে উপেক্ষা করছেন। এরপর তিনি বলেন: ‘আমি আপনাকে আদেশ দিচ্ছি, আপনি হাউস থেকে চলে যান ... দিনের অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য।’

এরপর পয়লিভের এবং তার বেশিরভাগ আইনপ্রণেতা তখন চলে যান।

রয়টার্স বলছে, ট্রুডোর সঙ্গে পয়লিভেরের বেশ উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাকে তিনি (ট্রুডো) একজন চরমপন্থি এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন আন্দোলনের সমর্থক বলে অভিহিত করেছেন।

কানাডা প্রধানমন্ত্রী   জাস্টিন ট্রুডো  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সিনেমা নয় বাস্তবে যুদ্ধ করছে রোবট!

প্রকাশ: ০৪:১০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

হলিউড সিনেমাতে হরহামেশাই আমরা দেখে থাকি, অস্ত্র চালনা কিংবা হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট, যুদ্ধক্ষেত্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রোবট। কখনো মানুষের পক্ষে কখনো মানুষের বিপক্ষে বিরাট রোবট বাহিনী। এবার সিনেমাতে নয়, বাস্তবেই যুদ্ধের ময়দানে দেখা যাচ্ছে রোবট। সিনেমায় দেখানো রোবটের মতো এত উন্নত প্রযুক্তির না হলেও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে দেখা যাচ্ছে কিলার রোবটের ব্যবহার।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অধ্যাপক টোবি ওয়ালশ বলেন, কিলার রোবট শুনলে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির মুভিতে দেখা রোবটের কথা মনে হয়৷ কিন্তু সমস্যা হলো, এগুলো এখন বাস্তবে হচ্ছে৷ এগুলো টার্মিনেটর রোবট নয়৷ এগুলো একধরনের ড্রোন যার ব্যবহার আমরা ইউক্রেন যুদ্ধে দেখতে পাচ্ছি৷ এসব ড্রোনকে মানুষের চেয়ে কম্পিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রণের পরিমাণ বাড়ছে৷

ট্যাঙ্ক, পরিখায় সৈন্য- ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার শুরুতে আমরা এমনটা দেখেছিলাম৷ কিন্তু পরবর্তীতে দুই পক্ষই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার শুরু করে৷ যেমন বায়রাক্তার ড্রোন৷ একেকটির দাম ১১ মিলিয়ন ইউরোর বেশি৷

জার্মান প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. গারি শাল বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার কাছে থাকা অনেক অস্ত্রকে পরবর্তীতে এআই-সমৃদ্ধ করা হয়েছে৷ ফলে যুদ্ধে পরিবর্তন এসেছে৷ যেমন রাশিয়াকে আমরা এআই-সমৃদ্ধ গ্লাইড বোমা ব্যবহার করতে দেখেছি৷ আর ইউক্রেনের এআই-সমৃদ্ধ অস্ত্রের মধ্যে আছে ড্রোন৷ যুদ্ধের প্রথম কয়েক মাসে ইউক্রেন যে কার্যকর ও সফল ছিল, তার কারণ ছিল তারা পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিল৷

সামরিক সংঘাত মানে হলো, তথ্য সংগ্রহ ও সেগুলোর অর্থ বুঝতে পারা৷ কত দ্রুত সেটা করা যাচ্ছে তাও গুরুত্বপূর্ণ৷ এআই সেটা করতে পারে ও সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷

মিউনিখের বুন্ডেসভেয়ার ইউনিভার্সিটির আক্সেল শুলটে বলেন, এখন অনেক কিছু স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাওয়ায় মানুষ ও যন্ত্রের মধ্যে শ্রম বিভাজন করতে গিয়ে আমাদের সতর্কতার সঙ্গে ভাবতে হবে৷ মানুষের উদ্দেশ্য আছে, যন্ত্রের নেই৷ আমরা এসব যন্ত্রকে, এসব স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাকে, হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করি৷

কিন্তু ড্রোন কি হিউম্যানয়েড কিলার রোবট বা টার্মিনেটর হতে পারে? আক্সেল শুলটে বলেন, টার্মিনেটর? না সেটা সম্ভব না৷ আমরা এখনো প্রযুক্তিগতভাবে অতদূর এগোইনি৷ হ্যাঁ, ইউটিউবে আমরা বস্টন ডাইনামিক্সের দারুন সব ভিডিও দেখি বটে৷ আমরা দেখি, গতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এসব যন্ত্রের দক্ষতা বেশ ভালো৷ তারা ডিগবাজি বা সে রকম কিছু দিতে পারে৷ কিন্তু এর মানে এই নয় যে, সেগুলো বিপজ্জনক কিলার রোবট হয়ে গেছে৷

২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় দুই ট্রিলিয়ন ইউরো ছাড়িয়ে গেছে- যা একটি রেকর্ড৷ ৭৫০ বিলিয়ন ইউরো খরচ করে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে চীনও কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ ২০২২ সালে রাশিয়া তার সামরিক বাজেট নয় শতাংশ বাড়িয়েছিল৷

জার্মান প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. গারি শাল বলেন, যদি আপনার এমন বাহিনী থাকে যেটা এআই ব্যবহার করে, তাহলে, অন্য যারা এআই ব্যবহার করে না, তাদের চেয়ে আপনার কৌশল ভিন্ন হবে৷ এটা শুধু যন্ত্রের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ঢোকানোর বিষয় নয়৷ এটা পুরো ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিষয়: প্রশিক্ষণ, কৌশল, সংগঠন সবক্ষেত্রে৷

স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র তৈরিতে কাজ করছে পৃথিবীর প্রায় ৬০টি দেশ। শান্তিপূর্ণ প্রয়োজনে রোবট বানাচ্ছে তারা। তবে এসকল রোবট বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের দিকে ঝুঁকলে নিঃসন্দেহে তা হবে ভয়ংকর।


যুদ্ধ   রোবট  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্র ‘ভণ্ডামি’ করছে: রাশিয়া

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি)তদন্তের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে এ আদালতের দেওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সমর্থন করেছে। মস্কো ওয়াশিংটনের এই আচরণকে ‘কপট’ উল্লেখ করে বলেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভণ্ডামি।

আইসিসি যুদ্ধাপরাধের দায়ে ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করার পাশাপাশি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যার তদন্ত করতে পারে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ও সাত মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার তদন্ত করছে সংস্থাটি।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ–পিয়েরে গত সোমবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্ত সমর্থন করে না । এ ছাড়া এই বিষয়ে আদালতের এখতিয়ারের বিষয়টিতেও বিশ্বাস করে না তারা। তবে এর আগে গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি ছিল ন্যায়সংগত। ইউক্রেনে কথিত রুশ যুদ্ধাপরাধের বিবরণ আইসিসির কাছে তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মস্কো বলেছে, পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করা পশ্চিমাদের অর্থহীন প্রয়াস। এর মধ্য দিয়ে তারা রাশিয়ার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। তারা ইউক্রেনে কোনো যুদ্ধাপরাধ করেনি। তবে ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করেছে। রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেন যে অপরাধ করেছে, তা এড়িয়ে গেছে পশ্চিমারা। তবে কিয়েভ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রামে করা এক পোস্টে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আইসিসির দেওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা পুরোপুরি সমর্থন করে ওয়াশিংটন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের ও তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্তের বৈধতা স্বীকার করতে চাইছে না। জাখারোভা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থান কপটতার শামিল।

রাশিয়া আইসিসির সদস্যদেশ নয়। ইসরায়েলও এর সদস্য নয়। তবে ২০১৫ সালে ফিলিস্তিন আইসিসির সদস্য হয়। গত শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, আইসিসির কোনো সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের কার্যক্রমের ওপর প্রভাব ফেলবে না; কিন্তু বিপজ্জনক একটি উদাহরণ তৈরি করবে। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা অবশ্য আইসিসির আদেশ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে। তাঁদের ধারণা, আইসিসির পক্ষ থেকে গাজায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলে অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে। একই সঙ্গে হামাস নেতাদের বিরুদ্ধেও এ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।


যুক্তরাষ্ট্র   ভণ্ডামি   রাশিয়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন