নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫২ পিএম, ১৩ এপ্রিল, ২০২১
করোনা মহামারির শুরু থেকেই প্রাণীর শরীরে এই ভাইরাস কিভাবে বিস্তার ঘটায় তা নিয়ে চলছে গবেষণা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানবদেহে করোনাভাইরাস সংক্রমিত করার ক্ষেত্রে প্রাণীদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার প্রমাণ মেলেনি। তবে প্রাণীদের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণের নিশ্চিত তথ্য রয়েছে। এসব প্রাণীর মধ্যে কুকুর, বিড়াল, শিম্পাঞ্জি, এমনকি মিংকও রয়েছে সংক্রমণের তথ্য।
এ ধরনের সংক্রমণ আমলে নিয়ে বিজ্ঞানীরা শুধু প্রাণীদেহে প্রয়োগের জন্য উদ্ভাবন করেছেন কোভিড-১৯ টিকা। গেল সপ্তাহে প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিশেষ টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেয়।
তবে প্রাণীদের জন্য আদৌ টিকা জরুরি কিনা তা নিয়ে ভিন্ন মতও রয়েছে। গত বছর জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে একটি বিড়ালের শরীরের প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। ওই সময় যুক্তরাজ্যের প্রধান ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ক্রিস্টিন মিডলমিস বলেন, “এটা আসলে খুবই বিরল ঘটনা। এ পর্যন্ত যেসব প্রাণীদেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তাদের সামান্য উপসর্গ দেখা গেছে এবং সেরেও উঠেছে কয়েক দিনের মধ্যে।”
পোষা প্রাণীর বাইরে চিড়িয়াখানায় থাকা বেশ কয়েকটি প্রাণী শরীরেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
নিউ ইয়র্কের ব্রংক্স চিড়িয়াখানার একটি বাঘের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণীর শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঘটনা সেটি। এরপর সান ডিয়েগো চিড়িয়াখানাতে ৮টি গরিলার শরীরেও ধরা পড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।
দুটো ঘটনাতেই ধারণা করা হয়, চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের যিনি দেখভাল করতেন, তার সংস্পর্শে এসেই এসব প্রাণী সংক্রমিত হয়েছিল। তবে এদের উপসর্গ ছিল সামান্য, সেরেও ওঠে দ্রুত।
স্তন্যপায়ী প্রাণী মিংকের বেলায় কোভিড-১৯ গুরুতর হয়ে দেখা দেয়। কয়েকটি দেশে খামারের মিংকের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভালোই কাবু করে। অনেক মিংকের মৃত্যু হয়।
সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হয় ডেনমার্কে। সেদেশের সরকার লাখে লাখে মিংক নিধন করে এবং ২০২২ সাল পর্যন্ত এসব মিংক খামার বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
মিংক থেকে মানুষের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলেছেন গবেষকরা।
পোষা প্রাণীর জন্য তাহলে কি টিকা দরকার? এ নিয়ে দুই রকম মত রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন না যে মানবদেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এসব প্রাণীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে। গত বছর অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইকোহেলথ অ্যালায়েন্স-এর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম কারেশ বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী সায়েন্সকে বলেন, “জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় এসব প্রাণীর শরীরে টিকার প্রয়োগ জরুরি না।”
যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণিদেহে টিকা প্রয়োগের তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) একই ধরনের অবস্থান নিয়েছে।
অন্য প্রাণীদের বেলায়, বিশেষ করে মিংকের কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় বিজ্ঞানীরা অবশ্য এদের ক্ষেত্রে টিকা উদ্ভাবন নিয়ে ভেবেছেন।
মানুষের থেকে শ্বাসতন্ত্রের রোগে সংক্রমিত হতে পারে গরিলা প্রজাতি। তাই এদের নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে বিজ্ঞানীদের। গরিলার দেহে সংক্রমণ এরইমধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও ডেনমার্কে মিংক হত্যার ঘটনায় বোঝা যায়, সেখানে পরিস্থিতি কতটা বেসামাল হয়েছিল।
বিজ্ঞানীদের শঙ্কা, যদি করোনাভাইরাস ব্যাপক হারে প্রাণীর শরীরে ছড়াতে থাকে তবে এর বিবর্তন ঘটতে পারে।
মন্তব্য করুন
গাজা নীতি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
ভারতের নির্বাচন: নরেন্দ্র মোদি কংগ্রেস বিজেপি ইন্ডিয়া জোট এনডিএ জোট লোকসভা ভোট
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা ইসরায়েল
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা ইরান
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন