ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউরোপের রানি এঙ্গেলা মের্কেলের ভাঙা মুকুট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:৩৫ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১


Thumbnail

একসময় এঙ্গেলা মের্কেলের নাম দেওয়া হয়েছিল ইউরোপের রানি। কিন্তু জার্মানির এই ক্ষমতাধর চ্যান্সেলর আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের পরই বিদায় নিচ্ছেন।

অনেক আগেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি আর চ্যান্সেলর পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। তবে তার এই বিদায় কি রানির মত বিদায়ই হবে? অনেকেই এখন আর অতটা নিশ্চিত নন।

এটা সত্য যে এঙ্গেলা মের্কেল ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) বর্তমান নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে নেতৃত্বের পদে আছেন।

তিনি প্রায় ১০০টি ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন, মাঝে মাঝে তাকে বলা হতো- এঙ্গেলা মের্কেলই সম্মেলন কক্ষের একমাত্র বয়স্ক ব্যক্তি।

ইইউকে বহু সংকট পার হতে সহায়তা করেছেন তিনি। অভিবাসন সংকট, ইউরো সংকট, কোভিড-১৯, এমনকি কিছুটা ব্রেক্সিটের ক্ষেত্রেও।

কিন্তু এঙ্গেলা মের্কেলের রাজনৈতিক জীবন আসলে দু’ভাগে বিভক্ত।

ইউরোপের নেতা হিসেবে যেমন, তেমনি জার্মানির নেতা হিসেবেও তার উত্তরাধিকার আসলে ভালো-মন্দ মিলিয়ে।

জার্মানিতে এঙ্গেলা মের্কেলের সমালোচনা হয় এই জন্যে যে, গত ১৬ বছরের শাসনকালে তিনি ছিলেন একজন ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ - সংকট সামাল দেওয়ার জন্য তিনি অপেক্ষা করতে করতে একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন। বলা হয়, তিনি একজন বাস্তববাদী, কিন্তু দ্রষ্টা নন।

এই সমালোচকরা বলেন, ইউরোপের নেত্রী হিসেবেও তিনি একইভাবে কাজ করেছেন।

বলা যায়, এঙ্গেলা মের্কেল যা করেছেন তার অভিঘাত - তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার পরও বহুদিন অনুভূত হবে।

ইইউ’র ক্রাইসিস ম্যানেজার

এঙ্গেলা মের্কেলের বাস্তববুদ্ধি অনেক সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে বহু সংকট পার হয়ে আসতে সহায়তা করেছে - যা কখনও কখনও ইইউ’র অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে পারতো।

কিন্তু অনেকে পাল্টা যুক্তি দেন, তার দূরদর্শিতার অভাব এই ইউনিয়নকে আগের চাইতে দুর্বলতর এবং দিকনির্দেশনাহীন করে ফেলেছে।

এটা হতো না- যদি ইইউ’র সবচেয়ে ধনী এবং প্রভাবশালী দেশের নেতা হিসেবে এঙ্গেলা মের্কেল তার অবস্থানকে আরও জোরের সাথে কাজে লাগাতেন।

ধরা যাক ২০১৫ সালের ইউরোজোনের সংকটের কথা।

এমনকি গ্রিসের ক্ষ্যাপা অর্থমন্ত্রী ইয়ানিম ভারুফাকিসও স্বীকার করেন, তার দেশের আর্থিক দুরাবস্থা সত্ত্বেও গ্রিসকে ইউরোজোনের ভেতরে রেখে এঙ্গেলা মের্কেল আসলে ইউরো মুদ্রাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “এটা সত্যি যে শেষ পর্যন্ত এঙ্গেলা মের্কেলের জন্যই ইউরোজোন টিকে গেছে- কারণ গ্রিস যদি এখান থেকে বেরিয়ে যেতো তাহলে ইউরোজোনকে একসাথে রাখা সম্ভব হতো বলে আমি বিশ্বাস করি না।”

“কিন্তু যে নীতি তিনি অনুসরণ করেছেন তা নিয়ে আমার গুরুতর ভিন্নমত আছে। ইউরোজোন নিয়ে, বা একে রক্ষা করার পর এটাকে নিয়ে কি করতে হবে- তার ব্যাপারে তার কোনও রূপকল্প ছিল না। তিনি যেভাবে এটাকে রক্ষা করেছেন তা জার্মানির ভেতরে এবং গ্রিসের ভেতরেও অনেক বিভক্তি সৃষ্টি করেছে।”

ভারুফাকিস এসময় গ্রিসের কৃচ্ছসাধনের কর্মসূচির উদ্ধৃতি দিলেন, যা চাপিয়ে দেওয়ার পেছনে জার্মানিরই প্রধান ভুমিকা ছিল।

২০১৫ সালে আমি অ্যাথেন্সে ছিলাম। সেসময় আমি দেখেছি সেখানকার রাস্তায় জার্মানি-বিরোধী, ইইউ-বিরোধী বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের হাতে যে প্ল্যাকার্ড ছিল- তাতে এঙ্গেলা মের্কেলের ছবিতে হিটলারের গোঁফ বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অন্য অনেকে ইইউ’র পতাকা পুড়িয়েছিলেন।

সবার আগে জার্মানি?

অর্থনৈতিক কৃচ্ছতার কর্মসূচি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল স্পেন আর ইতালির ওপরও ।

এ দেশগুলোর করদাতাদের অনেকের মতে- এ কর্মসূচি ছিল অতি কঠোর এবং তাদের বিশ্বাস ছিল এটা চাপিয়ে দেওয়ার পেছনে ছিলেন এঙ্গেলা মের্কেলই ।

এর ফলে একসময়কার ইউরো-প্রেমিক ইতালিতে ইইউ’র ব্যাপারে সন্দেহ জোরালো হয়ে ওঠে।

ক্রুদ্ধ ভোটারদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়, ইউরোজোনের নীতিমালাগুলো তৈরিই হয়েছে ক্ষমতাধর জার্মানির স্বার্থ রক্ষা করতে, তাদের রফতানি শিল্পকে আনুকুল্য দিতে।

এরা প্রশ্ন তোলেন, জার্মানির মত ক্ষমতাধর ও ধনী সদস্যরা যদি দুর্বলতর দেশগুলোকে সাহায্য না করে তাহলে ইইউতে বা কমন মার্কেটে থাকার দরকার কি?

কিছু সমালোচক আছেন যারা মনে করেন, ইউরোপে এঙ্গেলা মের্কেলের আসল নীতি হচ্ছে ‘সবার আগে জার্মানির স্বার্থ’ দেখা।

অনেকে হয়তো বলবেন, এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কারণ একজন নির্বাচিত নেতা তো তার দেশের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেবেন। তবে অন্য একটা কারণ আছে- যা জার্মানির একান্ত নিজের একটি সমস্যা। সেটা হলো জার্মানির নাৎসী অতীত।

জার্মানরা এবং জার্মান চ্যান্সেলররাও- এ কারণে প্রায়ই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চোখে পড়ার মত প্রধান নেতৃত্বের ভুমিকা নিতে অস্বস্তি বোধ করেন।

‘গেম চেঞ্জার’ এঙ্গেলা মের্কেল

তাহলে প্রশ্ন ওঠে- এঙ্গেলা মের্কেলকে যে ইউরোপের রানি বলা হয়- ব্যাপারটা কি আসলে সেরকমই?

ইউরোজোনকে রক্ষা করতে চ্যান্সেলর মের্কেল হস্তক্ষেপ করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার ফলে তিনি ইইউ’র ভেতরে একটা গভীর উত্তর-দক্ষিণ বিভক্তিও উস্কে দিয়েছিলেন।

এর পরবর্তীকালে অভিবাসন সংকটের সময় এবং কোভিড মহামারীর সময়ও এ বিভক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল।

ইউরোপের দক্ষিণের দেশগুলোর মানুষ মনে করেছিলেন - এইসব জরুরি পরিস্থিতির দুর্ভোগ তাদেরকেই বহন করতে হয়েছে, ইইউর অন্যদেশগুলো তাদের খবর নেয়নি।

কিন্তু এ অবস্থা বেশিদিন চলেনি। অনেকটা দেরিতে হলেও গঠিত হয় কোভিড-সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য একটি তহবিল- যাতে সেই এঙ্গেলা মের্কেলই এক প্রধান ভুমিকা রেখেছিলেন।

ইইউ’র কোভিড রিকভারি ফান্ডের অন্যতম প্রণেতা ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লা মেয়ার বলেন, চ্যান্সেলর মের্কেল এক্ষেত্রে সাহস দেখিয়ে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং বুঝেছিলেন- ওই তহবিলে জার্মানি যোগ না দিলে ইইউ’র ভবিষ্যৎ বিপন্ন হবে।

অনেকে আবার এটিকে এভাবেও দেখেন যে- এঙ্গেলা মের্কেল এ ক্ষেত্রেও আসলে জার্মানির স্বার্থই দেখেছিলেন। কারণ তিনি বুঝেছিলেন যে মহামারীর কারণে ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স বা অন্য দেশগুলো যদি অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়- তাহলে ইউরোপের একক বাজারই শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়বে। আর সেই বাজার ভেঙে পড়লে জার্মানির ব্যবসাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অভিবাসন সংকটের সময় অবশ্য তার পদক্ষেপগুলো অতটা প্রশংসিত হয়নি।

এঙ্গেলা মের্কেলের ‘মিশ্র’ মানবাধিকার রেকর্ড

এঙ্গেলা মের্কেল যখন ২০১৫ সালের গ্রীষ্মে জার্মানির সীমান্ত খুলে দিয়ে ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীকে সেদেশে ঢুকতে দিলেন- তখন তিনি প্রশংসিত ও নিন্দিত দুটোই হয়েছিলেন।

জার্মানির মানুষের একাংশ অন্যদের স্বাগত জানানোর সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য মের্কেলের প্রশংসা করেন।

কিন্তু অন্যরা এত অভিবাসীর আগমন দেখে ক্ষিপ্ত হন। তারা দলে দলে যোগ দেন উগ্র-দক্ষিণপন্থী এএফডি’র সাথে। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মত ফেডারেল পার্লামেন্টে কোনও উগ্র-দক্ষিণপন্থী দল আসন জিততে সক্ষম হয়। ইইউ’র ওপর এর প্রতিক্রিয়া হয় ব্যাপক ও মিশ্র।

ইইউ ২০১২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিল, কিন্তু তার মাত্র তিন বছর পরই এর সদস্য দেশগুলো সিরিয়াসহ নানা দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের ঠেকাতে তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিতে থাকে।

তবে জার্মান নেতার পদক্ষেপের ফলে মানবাধিকারের রক্ষক হিসেবে ইইউ’র যে সুনাম ছিল তা পুনরুজ্জীবিত হয়।

এতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও, বলছেন বেন রোডস - প্রেসিডেন্টের ডান হাত এবং তার ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

রোডসের মতে, ওবামা এঙ্গেলা মের্কেলকে উৎসাহিত করেন ইউরোপের পক্ষে আরও জোরালো অবস্থান নিতে- বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় আর ব্রেক্সিট ভোটের পর। তিনি আরও এক মেয়াদ চ্যান্সেলর থাকতেও তাকে চাপ দেন।

রোডস বলছিলেন, ২০১৬ সালের শেষ দিকে ওবামার মনে হয়েছিল যে এঙ্গেলা মের্কেলের জার্মানিই হতে যাচ্ছে উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভরকেন্দ্র।

জোরালো পদক্ষেপ না নেওয়া

অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন যে সিরিয়া ও লিবিয়ার ঘটনাবলীর পর ২০১৫ সালেই এঙ্গেলা মের্কেল আইনানুগ ও সুশৃংখলভাবে অভিবাসনের জন্য ইইউ নেতাদের চাপ দিতে পারতেন।

কিন্তু বেপরোয়া অভিবাসীরা যখন অবৈধ পথে ইউরোপে আসতে গিয়ে সাগরে ডুবে মারা যেতে লাগলো- ইউরোপের দেশগুলো তখন তাদের সেখানে ঢুকতে না দেওয়ার চেষ্টায় ছিল।

ইউরোপে শরণার্থীদের আসা ঠেকানোর জন্য পরে এঙ্গেলা মের্কেল যখন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সাথে একটি বিতর্কিত চুক্তি করলেন, তখন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও শরণার্থী সংস্থাগুলোও তার কড়া সমালোচনা করে।

হাঙ্গেরিতে একটি নতুন আইন করার পর এঙ্গেলা মের্কেল এবং আরও ১৬ জন ইইউ নেতা সমকামীদের সমর্থনে একটি যৌথ চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু অনেকে মনে করেন, এঙ্গেলা মের্কেলের প্রশ্রয় পেয়েই হাঙ্গেরির “অনুদার” প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান সেদেশের গণতন্ত্রকে পেছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।

এ ধারণার কারণ হলো, অরবান কিছুকাল আগে পর্যন্তও ব্রাসেলসের রাজনীতিতে এঙ্গেলা মের্কেলের মধ্য-দক্ষিণপন্থী ইপিপি গ্রুপের সদস্য ছিলেন। এই জোটের কারণে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে তাদের সদস্যসংখ্যা ও প্রভাব নিশ্চিত ছিল।

তাই ভিক্টর অরবানকে বিচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রে এঙ্গেলা মের্কেলের সমস্যা ছিল এবং তিনি অনেকবার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়েও নেননি।

হাঙ্গেরি ও তার মিত্র পোল্যান্ড এ থেকে বুঝতে পেরেছে যে- এঙ্গেলা মের্কেল এবং সামগ্রিকভাবে ইইউ- তাদের আইনের শাসন বা মানবাধিকার সম্পর্কে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চায় না বা পারে না।

অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যকে অগ্রাধিকার

সাবেক স্প্যানিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনা পালাসিও মনে করেন, যদি জার্মানি চাইতো- তাহলে উদার গণতন্ত্রী নয় এমন দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনা এবং মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হতো।

তুরস্কের সাথে চুক্তি থেকে শুরু করে চীনের সাথে একটি বিনিয়োগ চুক্তির মতো “সন্দেহজনক সিদ্ধান্তের” জন্যও এঙ্গেলা মের্কেলকে দায়ী করেন আনা পালাসিও। এ চুক্তির জন্য বাইডেন প্রশাসনও নাখোশ হয়।

২০২০ সালে চীন ছিল জার্মানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার।

এঙ্গেলা মের্কেলের বিরুদ্ধে প্রায়ই একটা সমালোচনা হয় - তা হলো, তিনি জার্মানির পররাষ্ট্রনীতিকে বাণিজ্যিক স্বার্থ দিয়ে পরিচালিত হতে দেন- যার প্রভাব পড়ে ইইউ’র ওপর।

এর একটা দৃষ্টান্ত- রাশিয়ার সাথে নর্ডস্ট্রিম-টু গ্যাস পাইপলাইন করে জার্মানি সস্তায় জ্বালানি পাবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু এতে এঙ্গেলা মের্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি ইইউ’র রাজনৈতিক ঐক্য এবং রাশিয়ার ব্যাপার কৌশলগত সংহতিকে দুর্বল করেছেন। সেই সঙ্গে ভ্লাদিমির পুতিনের হাতে ইইউকে দুর্বল করার আরও একটি হাতিয়ার তুলে দিয়েছেন।

ইউক্রেনসহ মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশই এ পাইপলাইনের বিরোধী।

তবে এঙ্গেলা মের্কেল বলছেন, রাশিয়া যদি এ পাইপলাইনের অপব্যবহার করে তাহলে ইইউ তাদের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।

অন্যদিকে ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে এঙ্গেলা মের্কেল সবসময়ই রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ছিলেন। রুশ সরকারবিরোধী নেতা আলেক্সেই নাভালনির ওপর বিষপ্রয়োগের ঘটনার পর তিনি জার্মানিতে মি. নাভালনির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, একবার তার সাথে সাক্ষাতও করেছেন যা খুবই অস্বাভাবিক ব্যাপার ছিল।

সুতরাং সব মিলিয়ে তার রেকর্ডকে মিশ্রই বলতে হবে।

মিশ্র উত্তরাধিকার

এই লেখা অবশ্যই ইইউ’র সব সমস্যার জন্য এঙ্গেলা মের্কেলকে দায়ী করার জন্য নয়।

কিন্তু ইইউ’র উত্তরাধিকারের কথা বলতে গেলে তার রাজনৈতিক গুরু সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট কোহলের দিকে তাকাতে হয়। ব্রাসেলসে তাকে মানা হয় আধুনিক ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে।

তিনি জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের জন্য কাজ করেছেন, মধ্য ও পূর্ব ইউরোপকে ইইউ’র অনেক কাছাকাছি নিয়ে এসেছিলেন- এমন এক সময় যখন তাদের ইইউর সদস্য করার কথা ওঠেনি। তিনি তখনকার জার্মানির জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে অভিন্ন মুদ্রা ইউরোর পক্ষে ছিলেন। কোহল মনে করতেন এতে ইউরোপীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে যুদ্ধ রোধ করবে।

তার সাথে তুলনা করলে বলতে হয়, এঙ্গেলা মের্কেলের মাথায় ইউরোপের রানির মুকুট যেন ঠিকমত বসতে চায় না।

তিনি কি ইউরোপের এক সংকটকালে দেশগুলোকে একসাথে রাখতে একটা আঠার মত কাজ করেছে? উত্তর হবে- হ্যাঁ।

কিন্তু তিনি কি ইইউ’র আত্মবিশ্বাসী নতুন ভবিষ্যতের স্থপতি? বোধ হয় না।

মের্কেলে-পরবর্তী ইইউ

এই খেতাব পেতে চান ফ্রান্সের ইম্মানুয়েল ম্যাক্রঁ । ইইউ’র সংস্কারের জন্য তার একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা আছে। তিনি চান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৌশলগত স্বায়ত্বশ্বাসন - অন্ততপক্ষে মার্কিন-নির্ভরতা কমাতে।

কিন্তু ইউরোপের ফ্রাংকো-জার্মান চালিকাশক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং ২১ শতকের ইইউ রূপকল্পকে বাস্তবায়নের জন্য তার দরকার জার্মানির আর্থিক সহযোগিতা- যা এতদিন এঙ্গেলা মের্কেল নানাভাবে ঠেকিয়ে রেখেছিলেন, কোভিড-সংকট কাটিয়ে ওঠার তহবিল গঠনের আগে পর্যন্ত।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের প্রশাসন থেকে ইউরোপের জন্য বহু আইডিয়া আসে। ইউরোপের নিজের প্রতিরক্ষা বাহিনী, পরিবেশসংক্রান্ত প্রস্তাব, ইইউর জন্য নতুন বাণিজ্যনীতি, এবং ইউরো মুদ্রাকে সংহত করা- নানা রকম প্রস্তাব।

এজন্য বার্লিনে ম্যাক্রঁর প্রশাসনের নাম হয়েছে স্ক্যাটারগান।

এ মাসের নির্বাচনের পর জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর কে হবেন তা এখনও বলা যাচ্ছে না- কিন্তু যিনিই হোন, তার যে ব্রাসেলসে এঙ্গেলা মের্কেলের অভিজ্ঞতা বা প্রভাব থাকবে না এটা বলাই যায়।

ম্যাক্র এঙ্গেলা মের্কেলের শূন্যস্থান পূরণ করতে চান। ফ্রান্সে যাকে এলিসে প্রাসাদের সম্রাট বলা হয়, তিনি চান ইউরোপের রাজা হতে।

তিনি তা হতে পারলে হয়তো ইইউতে কিছু বড় পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। কিন্তু তার আগে ম্যাক্রঁকে এপ্রিল মাসে ফ্রান্সের নির্বাচন জিততে হবে। সেটা মোটেও সহজ কাজ হবে না। সুত্র: বিবিসি বাংলা



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজা নীতির বিরোধিতা করে মার্কিন পররাষ্ট্র মুখপাত্রের পদত্যাগ

প্রকাশ: ১০:৪০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা নিয়ে ওয়াশিংটনের নীতির বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আরবি ভাষার মুখপাত্র পদত্যাগ করেছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। খবর রয়টার্স।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, হালা রাহারিত দুবাই আঞ্চলিক মিডিয়া হাবের ডেপুটি ডিরেক্টর ছিলেন এবং ১৮ বছর আগে একজন রাজনৈতিক ও মানবাধিকারবিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে স্টেট ডিপার্টমেন্টে যোগ দেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইন-এ তিনি লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের গাজা নীতির বিরোধিতা করে ১৮ বছর মর্যাদাপূর্ণ সেবা প্রদান করার পর আমি এপ্রিল ২০২৪ সালে পদত্যাগ করেছি’।

প্রায় এক মাস আগে, পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার ব্যুরোর অ্যানেল শেলাইন পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) কর্মকর্তা জোশ পল গত অক্টোবরে পদত্যাগ করেন।
 
দেশটির শিক্ষা বিভাগের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা, তারিক হাবাশ, যিনি ফিলিস্তিনি-আমেরিকান, চলতি বছরের জানুয়ারিতে পদত্যাগ করেছিলেন। 
  
৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তেল আবিব। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। এছাড়াও সেখানে তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। 
 
এর মধ্যে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা ও গণহত্যার প্রতি সরাসরি এবং নির্লজ্জ সমর্থনের জন্য ওয়াশিংটন আন্তর্জাতিকভাবে এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর কাছে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।

গাজা নীতি   মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতের নির্বাচন: মোদির ম্যাজিক কি ফুরিয়ে যাচ্ছে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৭ ধাপে। আজ দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১ জুন পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ৪ জুন ভোটের ফলাফল জানা যাবে। বিশ্বের বৃহত্তম এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভোটের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব। 

নির্বাচনের আগে ভারতের নির্বাচন নিয়ে যে সমস্ত জরিপ হয়েছে তার সবগুলোতেই নরেন্দ্র মোদির বিপুল বিজয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে যে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এনডিএ জোটের ভোটপ্রাপ্তি সর্বোচ্চ ৫২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ। সেখানে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের ভোট প্রাপ্তির হার সবচেয়ে বেশি হলে ৪২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন হলে ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশ। আসনের হিসেবে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অবস্থান ৪১১ থেকে ৩৭৩ এর মধ্যে এবং ইন্ডিয়া জোট ১৫৫ থেকে ১০৫ এর মধ্যে উঠানামা করবে বলে বিভিন্ন জরিপের হিসেবে বলা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের পর অনেকেই ভারতের এই জরিপ শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। 

অনেকেই মনে করছেন যে, এই নির্বাচনে কতগুলি ইস্যু বড় রকমের প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক সময়ে মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য ভারতের মুসলমান ভোটারদেরকে একাট্টা করেছে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি তা বুঝতে পেরেছে। আর এ কারণে এবার মুসলিম ভোটারদেরকে ভোট দানে বাধা দেওয়া হচ্ছে-এমন অভিযোগও উঠেছে বিভিন্ন এলাকা থেকে। দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণে ট্রেন বন্ধ রেখে মুসলিম ভোটারদেরকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। 

নরেন্দ্র মোদি ইন্ডিয়াকে যে ক্ষমতাবান এবং উন্নয়নের রোল মডেলের নীতি নিয়ে টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আছেন সেটি এখন উগ্র হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে অনেকে মনে করেন। তাছাড়া নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে কৃষকদের নাজুক পরিস্থিতি নরেন্দ্র মোদি ম্যাজিককে ফিকে করে দিয়েছে। অনেকেই এই নির্বাচনে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে সেই পূর্বাভাস শেষ পর্যন্ত সফল হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। 

অনেকে মনে করছেন যে, ২০০৪ সালে ভারতের চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ম্যাজিক দেখিয়েছিল। সে সময় বিজেপির ইন্ডিয়ার সাইনিং স্লোগানের আড়ালে সকলে জয়ের সম্ভাবনা দেখেছিল অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপি জোটের। কিন্তু সেই নির্বাচনে সকল জরিপকে মিথ্যে প্রমাণ করে কংগ্রেস বিজয়ী হয়েছিল। এবার নির্বাচনে তেমন কোন ফলাফল হবে কিনা তা নিয়ে নানা রকম জল্পনা কল্পনা চলছে। 

তবে নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা তেমন কোন সম্ভাবনা দেখছেন না। বরং তারা মনে করছেন যে, ভারতে শেষ পর্যন্ত বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ জোটই বিজয়ী হবে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি এবং তার নেতৃত্বে জোট যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ট আশা করেছিল সে সংখ্যাগরিষ্ট অনেকটাই কমে যাবে। তবে এই নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির এনডিএ জোট বিজয়ী হলেও নরেন্দ্র মোদির ম্যাজিক অনেকটাই ফিকে হয়ে যাকে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভারতের নির্বাচন: নরেন্দ্র মোদি   কংগ্রেস   বিজেপি   ইন্ডিয়া জোট   এনডিএ জোট   লোকসভা ভোট  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৮:১১ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশিসহ ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। চলছে গণগ্রেপ্তার। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শৃঙ্খলা ভঙের কারণে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা। এরই মধ্যে দেশটির কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশিসহ ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মায়মুনা ইসলাম নুহার রুমমেটসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
 
চট্টগ্রাম জেলার সদ্বীপ উপজেলা বাসিন্দা মনির হোসেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছে। এই বিক্ষোভের জেরে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৮ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে তার মেয়ে মায়মুনা ইসলাম নুহাও রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যার প্রতিবাদে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মুখ সারির প্রতিবাদী হিসেবে কাজ করছেন তার মেয়ে নুহা। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নুহার রুমমেট ও মিনেসোটার কংগ্রেসওমেন ইলহান আবদুল্লাহি ওমরের মেয়ে ইসরা হিরসিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নুহা ফুল স্কলারশিপ নিয়ে নিউরো সায়েন্সের তৃতীয় সেমিস্টারে পড়াশোনার পাশাপাশি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিও করছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে নুহা লুকিয়ে ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তার বাবা। তিনি আরও জানান, মেয়ে নুহা এবং তার সহপাঠীরা আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ইসরায়েলের ফান্ড প্রত্যাখানের দাবি জানাচ্ছেন। তারা অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধেরও দাবি জানাচ্ছেন। ইহুদি সম্প্রদায়ের অনেকেও তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

মনির হোসেন বলেন, নুহা ও তার সঙ্গীরা ক্যাম্পাসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড, এমআইটিসহ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানবতার পক্ষের আন্দোলনে ক্রমশ যুক্ত হতে শুরু করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   গাজা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতীয় তিন কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ০৭:৩৫ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতীয় তিন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকায় এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি। 

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে যেসব ড্রোন পেয়েছে তা গোপনে বিক্রিতে সহায়তা করেছে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কোম্পানিগুলো। ইরানের এ বাণিজ্যিক কাজকে সামনে থেকে সমর্থন দিয়েছে ইরানি কোম্পানি সাহারা থান্ডার। এর সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনটি ভারতীয় কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

সাহারা থান্ডারকে এই প্রচেষ্টার সমর্থনে ইরানের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের তদারকিকারী প্রধান ফ্রন্ট কোম্পানি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সাহারা থান্ডারকে সমর্থন করার জন্য ভারত-ভিত্তিক তিনটি কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তারা হল জেন শিপিং, পোর্ট ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং সি আর্ট। শিপ ম্যানেজমেন্ট (ওপিসি) প্রাইভেট লিমিটেড।

চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। ওই হামলার জবাবে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে তিনশত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। এরপর ইরানের ওপর প্রথম দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ড্রোন প্রযুক্তি ও উৎপাদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কোম্পানিকে লক্ষ্য করে ১৯ এপ্রিল এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   নিষেধাজ্ঞা   ইরান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্ক জাকারবার্গকে টপকে তৃতীয় শীর্ষ ধনীর আসনে ইলন মাস্ক

প্রকাশ: ০৬:৩৩ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মার্ক জাকারবার্গ টপকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনীর অবস্থানে উঠে এসেছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ফলে বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় ধনীর জায়গা দখল করতে চলেছেন তিনি। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেটার শেয়ার বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ১১ শতাংশ কমেছে। প্রতিষ্ঠানটি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে নিজেদের বিক্রয় প্রত্যাশার চেয়ে কমতে পারে এমন পূর্বাভাসের পর এ পতন হয়েছে।

ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার সূচক অনুসারে, মেটার শেয়ার পতনের ফলে মার্ক জাকারবার্গের সম্পত্তি কমে এখন ১৫৭ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। অন্যদিকে ইলন মাস্কের সম্পদ ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বেড়ে ১৮৪ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে এ দুই বিলিয়নিয়ার নিজেদের অবস্থান থেকে ছিটকে যান। গত তিন মাসে টেসলার গাড়ি সরবরাহ কমে যাওয়ায় ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো জাকারবার্গ মাস্ককে ছাড়িয়ে যান।

এর আগে ফোর্বস প্রকাশিত ২০২৪ সালের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় দেখা গেছে, বিশ্বের শীর্ষ ধনীর স্থান দখল করে নিয়েছেন ফ্রান্সের বিলাসবহুল পোশাক ও দ্রব্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান লুই ভুতোঁ মালিক বার্নার্ড আর্নল্ট ও তার পরিবার। তার সর্বমোট সম্পদমূল্য ২৩৩ বিলিয়ন ডলার।

এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ১৯৫ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজস। গত বছরের তুলনায় এবার তার সম্পদমূল্য বেড়েছে প্রায় ৮৫ বিলিয়ন ডলার। তার মোট সম্পদমূল্য ১৯৪ বিলিয়ন ডলার।

১৭৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। গতবার সম্পদমূল্য ছিল ৬৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।


মার্ক জাকারবার্গ   ইলন মাস্ক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন