ইনসাইড টক

‘শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের জন্যই এই রেড অ্যালার্টটা ছিলো’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০১ এএম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০


Thumbnail

করোনার সময় আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবতাটা দেখলাম। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আমাদের সামনে এসেছে। সেক্ষেত্রে আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা কতটা সুরক্ষিত? ডিজিটাল নিরাপত্তা সুরক্ষায় আমরা কতটুকু প্রস্তুত? এর উত্তরে নাটোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন,‘গত ১১ বছরে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আর্কিটেক্ট অব ডিজিটাল বাংলাদেশ জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের সুনির্দেশনা ও পরামর্শে আমাদের ডিজিটাল অবকাঠামোগুলো পূরণের যে রুপকল্প, তা তৈরী হয়ে গেছে। এখন আমরা এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীরা যেন নিরাপদ থাকে তার জন্য আমরা মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি।’

বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে জুনাইদ আহমেদ পলক এ বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা প্রায় ২২ টা ডিজিটাল ইনফরমেশন ইনফ্রাকচার আইডেন্টিফাই করেছি। সেগুলো যেমন আমাদের ব্যাংকিং সেক্টর, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আরো ৫৮ টি ব্যাংক রয়েছে। এর সঙ্গে সিভিলাইজেশন, ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ, ন্যাশনাল আইডি, পাসপোর্ট- এই ধরণের যে ডিজিটাল ইনফ্রাকচারগুলো আছে, সেগুলোর জন্য আমরা ১৫ টি জায়গায় সেন্সর বসিয়েছি। এখন আমরা আমাদের দেশের ভিতর এবং দেশের বাইরে যে কোন ধরণের সাইবার অ্যাটাক বা ম্যানুয়াল অ্যাটাক করতে আসলে তার একটা ওয়ার্নিং পাওয়ার জন্য আমরা ইন্টারন্যাশনাল যে বিভিন্ন এক্সপার্টের যে অ্যাসোসিয়েশন আছে তাদের সদস্যপদ গ্রহণ করেছি। ফলে বিশ্বের যে কোন জায়গা থেকে যে কোন আশংকা বা বিপদ বা আক্রমণের ঝুঁকি থাকলে সেগুলো আমরা আমাদের দেশের ক্রিটিকাল ইনফরমেশন ইনফ্রাকচারগুলোকে অবহিত করি যেন প্রতিরোধ ব্যবস্থা সঠিকভাবে নেওয়া সম্ভব হয়।’

গত কিছুদিন ধরেই ব্যাংকিং পাড়ায় একটা আতঙ্ক চলছে, বিভিন্ন ব্যাংক রাতে এটিএম বুথগুলো বন্ধ করে রাখছে। গণমাধ্যমে সাইবার হামলার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। আপনি এ সম্পর্কে কতটুকু জানেন? এ ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুতি কতটুকু? এমন প্রশ্নের উত্তরে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন,‘আমরা এই বিষয়টি গত মাসের ২৬ তারিখে প্রথম অবহিত হই। আমাদের আইসিটি বিভাগের যে সাইবার টিম কাজ করে তারা এই বিষয়টা অবহিত করে। যেহেতু এটা ব্যাংকিং সেক্টরে হামলার একটা আশঙ্কা ছিলো, সাথে সাথে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাই , ফাইন্যান্স ডিভিশনকে জানাই। তারা প্রত্যেকটি ব্যাংকে খুব দ্রুততার সাথে সেই খবরটি জানিয়ে দেয়। যার ফলে এখন অ্যান্টি ম্যালওয়ার বা অ্যান্টি ভাইরাস- যে সফটওয়ারগুলো ইনস্টল করার দরকার ব্যাকংগুলো তা করছে। পাশাপাশি এই ধরণের আশঙ্কা ছিলো যে, এটিএম বুথে এই হ্যাকাররা হ্যাক করার চেষ্টা করবে। এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সারাবিশ্বের জন্যই এই রেড অ্যালার্টটা ছিলো। এখন পর্যন্ত আমরা এ রকম কোন ক্ষতি বা হামলার খবর পাইনি।

পুরো বিশ্বেই এ ধরণের সাইবার ক্রিমিনালরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে থাকে উল্লেখ করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বলেন,‘ এটা কিন্তু একটা চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিনিয়ত যেমন অ্যান্টি ম্যালওয়ার সফটওয়ার তৈরী হচ্ছে, ক্রিমিনালরাও সাইবার অ্যাটাক করার জন্য নতুন নতুন ম্যালওয়ার তৈরী করছে। সেটা দিয়ে তারা আক্রমণ করছে।’

সরকার এর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন পর্যায়ে। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘দেশের ১৭ কোটি মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচী হাতে নিয়েছি। যেমন অক্টোবরে সাইবার সিকিউরিটি উইক যেটাকে বলে, এটা মাসব্যাপী হবে। আমরা চারমাস ব্যাপী সচেতনতা তৈরীর জন্য ‘সত্যকে জানুন’ একটা ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। যেখানে www.durbar.org নামে একটা ওয়েবসাইট আমরা ওপেন করেছি, যেখানে আমরা একেবারেই ঢাকা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিভাগ- জেলা- উপজেলা- ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত প্রতিনিধি নিয়োগ করছি। যার যার পাড়া মহল্লা এবং ফেসবুক গ্রুপ, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউবে তারা এই সচেতনতা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে, পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সক্ষমতার দিক থেকে আমরা ন্যাশনাল কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম গঠন করেছি, সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের নির্দেশনায় আমরা গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটা জায়গা নিয়েছি, যেখানে বিশ্বমানের সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি তৈরী করা হবে। যেখানে আমাদের একটা সাইবার টিম তৈরী হবে যারা বর্ডার গার্ড বা আমাদের সেনাবাহিনী-পুলিশবাহিনী যেমন রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র অবস্থায় সব সময় প্রস্তুত থাকে, ঠিক একইভাবে আমাদের এই সাইবার টিমও তৈরী থাকবে দেশের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।’

তিনি বলেন,‘ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইবার রেঞ্জ তৈরী করা হচ্ছে। যেমন মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি)-তে আমরা প্রায় ২০ কোটি টাকার ওপর খরচ করে একটা সাইবার রেঞ্জ তৈরী করছি। যেখানে আমাদের স্টুডেন্ট, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং আমাদের যারা সাইবার সিকোউরিটি এক্সপার্ট, তারা প্রতিনিয়ত দুটো করে দল করে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিতে পারবে। আমরা একটা সাইবার জিম করেছি যেখানে প্রতিনিয়ত সেই প্রাকটিস এবং ট্রেনিংগুলো হচ্ছে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন, বিচার ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে যে আইন অনুমোদন করেন তার উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘ সেই আইনবলে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে এই সাইবার জগতের যারা অপরাধী তাদেরকে অনুসন্ধান করছে। সাইবার অপরাধকে প্রতিরোধ করা এবং সেই তথ্য উপাত্ত উদঘাটনের জন্য ইতোমধ্যেই সিআইডিতে একটা ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে, আরেকটি ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব আমাদের আইসিটি ডিপার্টমেন্টে স্থাপন করা হয়েছে। বড় আকারের আন্তর্জাতিক মানের সাইবার ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন কালিয়াকৈরিতে করবো। যে প্রজেক্টটা এখনো ডিজাইন করছি। এরফলে আমরা ব্যক্তিগতভাবে, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সক্ষমতা এবং কঠোর আইনের প্রয়োগ এবং সাথে সাথে আন্তর্জাতিক কোলাবেরেশন, ইনফরমেশন শেয়ারি করবো- এইভাবে আমরা এই সাইবার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। এটি চলমান একটি যুদ্ধ। এই যুদ্ধে যেন আমাদের দেশের তরুণরা নিজেদের সফলভাবে গড়ে তুলতে পারে সেজন্য স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে সচেতনেতা তৈরী করছি। অপরদিকে এক্সপার্ট তৈরীর জন্য আইসিটি ডিভিশন প্রশিক্ষণ কর্মসূচীও চলমান রেখেছি।’

এখন যে আতঙ্কের কথাগুলো শোনা যাচ্ছে, আপনি কি আমাদের আশ্বস্ত করবেন আমাদের যারা ব্যাংকে টাকা রাখছে বা যাদের আমানত আছে তারা প্রতারিত হবেন না বা তারা এক সকালে জানবেন না যে, তাদের সর্বস্ব লুন্ঠন হয়ে গেছে। এরকম কি কোন আশ্বাস আমাদের দিতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তরে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন,‘সাইবার সিকিউরিটির অ্যাসুরেন্স কোন দেশ বা কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন ব্যাক্তি এখন পর্যন্ত দিতে পারেনি। তবে এটুকু আমরা আশ্বস্ত করতে পারি যে, আমাদের যথাসম্ভব প্রস্তুতি এবং যথাসম্ভব সক্ষমতা তৈরী হয়েছে। আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরে যে উপলব্ধিটা এসেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই দুর্ঘটনা ঘটার পর থেকে, তাতে আমি যথেষ্ঠ আশাবাদী যে আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরে যারা আছেন তাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আছে। তাতে তেমন ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপাতত যেই থ্রেটটা আমরা পেয়েছিলাম, সেটাতে এখন পর্যন্ত কোন ক্ষতি হয়েছে সেই দু:সংবাদ পাইনি। অবশ্যই আমাদের ব্যাংক, প্রতিষ্ঠান বা সরকারের ওপর নির্ভর করলেই হবে না। আমাদের ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনেতা দরকার। কারো কার্ড যদি হ্যাক হয় সেক্ষেত্রে কিন্তু শুধুমাত্র ব্যাংকের একার দায় থাকে না। অনেক সময় পাসওয়ার্ড বা পিন নাম্বার অসচেতনভাবে কারো কাছে দিয়ে ফেলি কিংবা সেগুলোকে গোপন রাখতে পারি না। সে কারণেও কিন্তু অনেক সময় আমরা প্রতারণার শিকার হই। সেক্ষেত্রে বলবো, আমাদের ভয়ের কোন কারণ নেই। আমাদের নিজেদেরও সচেতন হতে হবে।’



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিশ্বাসের অভাব তৈরি হয়েছে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ২৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতির পর আমরা আমাদের দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করছি। কিভাবে দলের মধ্যে আরও বেশি সমন্বয় তৈরি করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করছি। দলের ভেতর সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দলকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে দল সরকারে থাকলে ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। নিজেদের মধ্যে বিশ্বাসের অভাব তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে আস্থার জায়গাও আমাদের পুনরুদ্ধার করতে হবে। 

সাম্প্রতিক সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে ঢাকা জুড়ে যে তাণ্ডব এবং নাশকতা হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগ কেন রাজনৈতিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলো না- এনিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। পাঠকদের জন্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ। 

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রশিবির এবং তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা যেভাবে ঢাকায় নাশকতা করেছে তাতে আওয়ামী লীগ সেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি এটা সত্যি। কারণ আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমরা গণতন্ত্র চর্চা করি। দলের ভেতর কোন সন্ত্রাসী পালন করি না। সেজন্য আমাদের নেতাকর্মীরাও ভদ্র। জামায়াত, শিবির এবং তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা যেভাবে গান পাউডার দিয়ে সশস্ত্র হামলা করেছে তাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি এটা সত্য। এটা আমাদের পক্ষে সম্ভবও ছিলো না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দায়িত্ব হলো জনগণকে সাথে নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করা। কোন সশস্ত্র প্রতিরোধ নয়। আর সেজন্যই আমাদের নেতাকর্মীদের অনেকে জীবন দিয়ে করেছে। অনেক নেতাকর্মী হতাহত হয়েছে। 

তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রীয় আইন মেনে শান্তি শৃঙ্খলভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছি। এটাকে যদি কেউ দুর্বলতা ব্যাখ্যা করে বা ব্যর্থ বলে সেটা সঠিক নয়। তবে অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে এবং সেটা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি আমাদের নেতাকর্মীরা জীবন বাজি রেখে জামায়াত শিবিরের তাণ্ডব, দানবীয় সন্ত্রাস মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছে।

আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী, এমনকি দলীয় এমপিও এই সংকটময় সময়ে ‘গা ঢাকা’দিয়েছেন, অনেকে দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে দল কি ধরনে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই হেভিওয়েট নেতা বলেন, এগুলো সব গুজব। এ সময় দেশে ও দেশের বাইরে অনেক গুজব ছড়িয়েছে এবং সেটা সীমাহীন ভাবে ছড়িয়েছে। আমরা সেটাতে কান দিচ্ছি না। তবে সাংগঠনিক ভাবে কারও কোন দুর্বলতা থাকলে বা অবহেলা থাকলে দল অবশ্যই সেটা খতিয়ে দেখবে এবং সেভাবে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে সবার অব্যবস্থাপনার জন্য’

প্রকাশ: ০৫:২২ পিএম, ১৭ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রায়হান শরীফ বলেছেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সবার যে আচরণ (এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ, রাষ্ট্র সবাইকে বুঝাচ্ছি) সেখানে কোন একটা জায়গায় আমাদের ভুল হচ্ছে বলে আমার মনে হয়। শিক্ষার্থীরা একটি দাবি নিয়ে এসেছে, এর জন্য তাদের সাথে কথা বলা দরকার। তারা কি বলতে চায় সেটা শোনা দরকার। কিন্তু সেটা করা হয়নি। এর ফলে এখানে একটা গ্যাপ বা মিস কমিউনিকেশন (ভুল যোগাযোগ) তৈরি হয়ে গিয়েছে। শিক্ষার্থীরা আসলে কথাই বলতে চেয়েছে। কিন্তু কথা কে বলবে? অবশ্যই প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলা উচিত ছিল। তারা কি বলতে চায় সেটা শোনা উচিত ছিল। 

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতা নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ সব কথা বলেন অধ্যাপক রায়হান শরীফ।

অধ্যাপক রায়হান শরীফ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যেভাবে হামলা হয়েছে, তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলা কোনভাবেই কাম্য ছিল না। আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাত ২/৩টায় যখন ফোন করে বলে স্যার আমাদের বাঁচান, আমরা তখন বিচলিত হয়ে পড়ি। এগুলো কোন সুস্থ সংস্কৃতির লক্ষণ না। আন্দোলন এক পর্যায়ে যে সহিংসতায় রূপ নিল। এটিকে কারা সহিংসতার রূপ দিয়েছে সেটা একটা ভাবনার বিষয়। আমি মনে করি আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে সবার অব্যবস্থাপনার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বলতে পারতো তোমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন কর কিন্তু সেটা না হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর প্রশাসন চড়াও হল। এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এড়িয়ে যেতে পারেনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্য কোন দেশের নয়, তারা আমাদেরেই সন্তান। তাদের সাথে আমাদের আচরণটা ভালোবাসার হওয়ার উচিত, মমতার হওয়া উচিত।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘শিক্ষার্থীদের বোঝাতে হবে কেন এখন কোটা সংস্কার করা যাচ্ছেনা’

প্রকাশ: ০৫:১০ পিএম, ১৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, সব দেশেই কোটা আছে। পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই যেখানে কোটা নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতেও ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কোটা আছে। এটা একটি দেশের বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে কম বেশি করা যায় এটা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। 

সম্প্রতি কোটা বিরোধী আন্দোলনে সহিংসতায় ঘটনা নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় এ বিষয়ে কথা বলেন  অধ্যাপক আবদুল মান্নান। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, আমরা ২০১৮ সালের কোটা বিরোধী আন্দোলনে কি দেখেছি। শুরুতে এটা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল, পরে পরে সেই আন্দোলনে রাজনীতিককরণ ঘটেছে। এবারও এমন কিছুর আলামত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যারা কোটা নিয়ে আন্দোলন করছে তাদের মধ্যে সমন্বিত নেতৃত্ব নাই। তারা বলছে তাদের এ আন্দোলনে সমন্বয় রয়েছে, কিন্তু সেটা হচ্ছে ২০১৮ সালে নূরের মতো নেতৃত্ব। যারা কোন কোন রাজনৈতিক দলের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এখন সরাসরি ভাবে কোটা আন্দোলনে জড়িয়ে গেছে। তারা দেখছে যে, তারা তো এতো আন্দোলন করে কিছু করতে পারল না। কিন্তু শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি শক্তিশালী। সেজন্য তাদেরকে তারা কিভাবে ব্যবহার করতে পারে সেটার একটি দুরভিসন্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। 

শিক্ষার্থীরা হয়তো একটি ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিল কিন্তু এখন সেটা তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হয়ে গেছে। একই ঘটনা ঘটেছিল নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের বেলায়ও। এখন এই কোটা আন্দোলনেও তাই হয়েছে। কারণ বিএনপি এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠন কিংবা তাদের মিত্রদের কথাবার্তা সেই বার্তাই বহন করছে। 

তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বোঝার চেষ্টা করতে হবে কেন এখন কোটা সংস্কার করা যাচ্ছে না। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন আছে। এই মুহূর্তে আসলে কিছু করার নেই। পরিস্থিতি যেহেতু অবনতি হচ্ছে সেজন্য সরকার চাইলে হয়তো শুনানি একটু এগিয়ে আনা যায় কি না তার জন্য আদালতে আবেদন করতে পারে। এর বাইরে আসলে করার কোন কিছুই নেই। 

কোটা কিরোধী আন্দোলনে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে উল্লেখ্য করে আবদুল মান্নান বলেন, কেন সরকার এই মুহুর্তে কিছু করতে পারছে না বা কেন কোটা রাখা দরকার তার একটি বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত নিয়ে তাদের বোঝানো যেতে পারে। কোটা থাকার ফলে কি হয়েছে আর না থাকার কারণে কি হয়েছে তার একটি বাস্তব চিত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরা দরকার। এক্ষেত্রে সরকার বিভিন্ন ক্রোড়পত্রের মধ্য দিয়ে এই বাস্তব চিত্রগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে পারে। এতে করে আমার মনে হয় শিক্ষার্থীরা বাস্তব চিত্র বুঝতে সক্ষম হবে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ অনেক সময় ভুল তথ্য পেয়ে অনেক বড় ভুল করে বসে কিংবা গুজব ছড়ায়। কিন্তু বাস্তব চিত্র তাদের সামনে থাকলে সেই ভুল করা বা গুজব ছড়ানোর সুযোগটা আর থাকে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কোটা ছিলই না। কোটা বন্ধ ছিল। আর মুক্তিযুদ্ধ করার কারণে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে সেনাবাহিনীতে ‘ক্যু’ হয়েছে এই অজুহাতে ১৪৪ জন সেনা সদস্যকে বিনা বিচারে হত্যা করেছিলেন। যাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। তাদের লাশটাও ফেরত দেয়া হয়নি। সরকারের উচিত এই তথ্যগুলো জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

ট্রাম্পের ওপর হামলা যতটা রাজনৈতিক, তার চেয়ে বেশি সামাজিক অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশ

প্রকাশ: ০৪:১১ পিএম, ১৪ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেছেন, ট্রাম্পের ওপর হামলা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ক্ষোভের প্রকাশ। এটি নিন্দনীয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে এটির তীব্র নিন্দা জানাই। দেখুন, যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকটোরাল সিস্টেম বেশ জটিল। তাই চট করেই হামলাকে কেন্দ্র করে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা রাতারাতি বেড়ে যাবে এ কথা বলার সুযোগ আপাতত নেই। অনেকগুলো ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভরশীল দেশটির নির্বাচন। ফলে হামলার মাধ্যমে সস্তা জনপ্রিয়তা আসতে পারে একজন প্রার্থির পক্ষে তা বলা এখনই ঠিক নয়। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের বিষয় রয়েছে। 

শনিবার (১৩ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলার শহরে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলা হয়েছে। কেনো বা কী কারণে এমন ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে এ নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন। 

হামলাটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে সৃষ্ট কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, এটি একেবারেই অসম্ভব। কারণ বাইডেন এমনিতেই বিপর্যস্ত ও দুর্বল অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়াও এমন একটি হামলা ঘটিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার তেমন দৃষ্টান্ত দেশটিতে আগেও দেখা যায়নি। অতএব ষড়যন্ত্র তত্ত্বের দিক থেকে এমন ভাবার কোন রকমের অবকাশ নেই। একইসঙ্গে এমন বাইডেন প্রশাসন কখনই এমন বিতর্কিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে না। 

তিনি বলেন, এমন সমীকরণ থেকে এটা বলাই যায় যে একান্তই ব্যক্তিগত বিকৃত মানসিকতা থেকেই হামলাকান্ডটি হয়েছে। ট্রাম্পের ব্যক্তি ইমেজ নিয়ে পূর্বে নানা সমালচনা রয়েছে আর সে হিসেবে নির্বাচনে বাড়তি জনপ্রিয়তা লাভের  আশায় তিনি নিজে এমন হামলার নেপথ্য পরিকল্পনাকারী কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক এনাম খান সেটিকে নাকচ করে দেন। এ প্রশ্নের জবাবে বাংলা ইনসাইডারকে তিনি বলেন, দেশটির ফেডারেল সরকার ব্যবস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী এবং বিচার ব্যবস্থা এতটাই জটিল যে এমন কাজ করে ট্রাম্প নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। 

তিনি বলেন, আপনারা জানেন যুক্তরাষ্ট্র কোন রকমের বেআইনি কিছু হলে দেশটির বিচার ও আইন সংস্থাগুলো অত্যন্ত কঠোরতার সাথে সকল বিষয় জবাবদিহিতার আওতায় এনে থাকে। এমনকি সে ব্যক্তি যতই প্রভাবশালী হোক না কেন তাকেও আইনের উর্ধ্বে রাখ হয় না। তাই ট্রাম্প যদি এটি ভুলেও করিয়েও থাকতেন তবে পরে তদন্তে তা প্রমাণিত হলে ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবন যেমন আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তো অনুরূপ রিপাবলিক দলের গ্রহনযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে আসতো। 

তিনি বলেন, অতএব এত বড় অপরাধ ঘটানোর কোনো সম্ভাবনা ট্রাম্পের নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রতি বিভিন্ন বন্দুক হামলা বৃদ্ধির কারণ নিয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, দেশটির বন্দুক আইনের বিপক্ষে রিপাবলিকদের অবস্থান জোরালো। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন সেটিকে জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেও রিপাবলিকের বাধার মুখে কার্যত বাস্তবায়নে পিছিয়ে। সেক্ষেত্রে বলা যায় দেশটিতে সঠিক অস্ত্র আইনের উপস্থিতির অভাবের আরেকটা প্রতিফলনও আজকের এ হামলা। আমি মনে করি সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে এখনই সঠিক সময় কার্যকরি একটি অস্ত্র আইনের দিকে যাওয়া। 

তিনি আরো বলেন, অস্থির সামাজিক প্রেক্ষাপট ও ব্যক্তি পর্যায়েও নানা অস্থিরতা দেশটিকে ক্রমেই সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আজকের হামলা থেকে এটা বলাই যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক অবক্ষয় ও অস্থিরতার আরেক চিত্র এ হামলা। 

অন্যদিকে বিশ্বের অন্য কোন পরাশক্তি এমন হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে কিনা এমন শঙ্কার কথা নাকচ করে দিয়ে এনাম খান বলেন, এটি কোনোভাবেই সমভব নয়। কারণ, রাশিয়া, চীনসহ অন্যান্য বেশ কিছু পরাশক্তিধর রাষ্ট্র সবসময় চায় ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে বিশ্ব রাজনীতির মেরুকরণে তাদের একটা সুবিধাজনক অবস্থান থাকবে। অতএব এ হামলার সঙ্গে অন্য কোনো শক্তিধর রাষ্ট্রের কোনো রকমের সম্ভাবনা নেই   যুক্ত থাকার। 

অধ্যাপক সাহাব এনাম খান অবশেষে বলেন, ট্রাম্পের ওপর এ হামলাকে সম্পূর্ণ ‘ক্রিমিনোলজি পারসপেকটিভ’ থেকেই আমাদের দেখতে হবে। না ব্যক্তি ট্রাম্প, না রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কিংবা অন্য কোনো গোষ্ঠীর এ হামলায় জড়িত। এটি একেবারেই বিকৃত মানসিকতাবোধ থেকে বিচ্ছিন্ন একক ব্যক্তি দ্বারা সংঘটিত একটি হামলার বিষয়।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য মানুষের সচেতনতা অনেক বেশি জরুরি’

প্রকাশ: ০৪:১৩ পিএম, ১৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেল) মোঃ খায়রুল বাকের বলেছেন, ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য মানুষের সচেতনতা অনেক বেশি জরুরি। কারণ আমরা যে ড্রেনেজ সিস্টেমগুলো করেছি সেগুলোতে প্রচুর পরিমাণ প্লাস্টিক এবং পলিথিন পাই। কোন কোন ড্রেনেজ থেকে ১ থেকে ২ ট্রাক পর্যন্ত প্লাস্টিক এবং পলিথিন পাওয়া যায়। আজকে সকালে গোড়ানের একটি ড্রেনে জাজিন পাওয়া গেছে। এই বিষয়গুলোই ড্রেন দিয়ে পানি সরে যেতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

শনিবার (১৩ জুলাই) বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় মোঃ খায়রুল বাকের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আগে ড্রেনেজের দায়িত্ব ছিলো ঢাকা ওয়াসার। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেটা ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ দুই সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে আমরা স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে যে সমস্ত জায়গাগুলো জলাবদ্ধ প্রবণ সেগুলোকে প্রথমে চিহ্নিত করেছি। এ রকম আমরা ১৬১টি স্থান চিহ্নিত করেছি। এর মধ্যে ১০৯ টি স্থানে জলাবদ্ধতা ইতোমধ্যে দূর হয়েছে। যেমন আজিমপুর, নটর ডেম কলেজের সামনে। তবে ঘূর্ণিঝাড় রেমাল বা মোখার ফলে যে বৃষ্টিপাত হয় সেক্ষেত্রে একটু জটিলতা তৈরি হয়। কারণ আমাদের ড্রেনেজগুলো এই বৃষ্টিপাতের উপযোগী নয়। 

যারা ড্রেনেজ সিস্টেম নষ্ট করে তাদের বিরুদ্ধে সিটি কর্পোরেশন কেন আইন ব্যবস্থা গ্রহণ করে না জানতে চাইলে মোঃ খায়রুল বাকের বলেন, আমাদের যথেষ্ট লোকবল নেই। এছাড়া এগুলো সারাক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখার মতো আমাদের নিজস্ব কোন বাহিনী বা পুলিশ নেই। এখানে মানুষের সচেতনতাই মুখ্য। মানুষের সহযোগিতা ছাড়া শুধু সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে এর রক্ষণা বেক্ষণ করা সম্ভব নয়। 

তিনি বলেন, আগে ঢাকায় বৃষ্টি হলে সেই বৃষ্টির পানি সরতে ৪ থেকে ৫ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেত। কিন্তু এখন সেটা নেই। কোথাও কোথাও কিছুটা জলাবদ্ধতা তৈরি হলেও সেটা এখন ঘণ্টায় নেমে এসেছে। আমরা সেটাকে আরও কমিয়ে আনার জন্য কাজ করছি। গতকাল আমরা সারাদিন কাজ করেছি। আজকেও আমরা সকাল থেকে সবাই কাজ করছি।

গতকালের জলাবদ্ধতা দ্রুত কেন শেষ হলো না জানতে চাইলে মোঃ খায়রুল বাকের বলেন, ঢাকা শহরের বৃষ্টির পানি যে নদীগুলো নামবে এখন সেই সবগুলো নদী পানিতে ভরে গেছে। সেজন্য কালকের এই জলাবদ্ধা তৈরি হয়েছিল।

জলাবদ্ধতা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন