নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৬ অক্টোবর, ২০২১
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, এটাতো কোন সাম্প্রতিক ঘটনা নয়। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির তো একটা পরিচয় আছে। একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ঘটানো হয়। ২০০১ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা দেখেছি যে, তাদের লক্ষটা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক বা সন্ত্রাস সৃষ্টি করে বাংলাদেশে ভয়ভীতি সৃষ্টি করা। বাংলাদেশকে মোল্লা উমরের আফগানিস্তান বা জিয়াউল হকের পাকিস্তানের মত একটি মৌলবাদভিত্তিক মুসলিম রাষ্ট্রে পরিণত করা। সে রাজনীতি কারা করে বাংলাদেশে? সেটা তো জামায়াত-বিএনপি-হেফাজত এদেরই তো রাজনীতি হচ্ছে এইটা যে বাংলাদেশে ভিন্ন ধর্মের কেউ থাকতে পারবে না, ভিন্ন জীবনধারায় যারা বিশ্বাস করে তাদের কেউ থাকতে পারবে না। শুধু তাদের ব্যাখ্যা মতে যে, যে ইসলাম শুধু তারা থাকবে। এটা তো একটা রাজনীতি থাকবে, তো এগুলো কোন ব্যাখ্যা করতে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা না।
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, সম্প্রতি কুমিল্লার ঘটনা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় শাহরিয়ার কবির এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য শাহরিয়ার কবির এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।
শাহরিয়ার কবির বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধরাই এদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। সংখ্যালঘু তো বটেই কিন্তু তাদের ওপর যে এত অত্যাচার হয় কোথাও দেখিনাই ভারতের মত প্রতিবাদ করেছে। ভারতে মুসলমানদের একটা কিছু হলে তো সেটা নিয়ে বিরাট প্রতিবাদ হয়। মুসলমানরা রুখে দাঁড়ায়। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা কখনোই হয়না। এরা খুবই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশে কখনো কোন হিন্দু কোরআন অবমাননা করবে, ইসলাম ধর্ম অবমাননা করবে এটা কখনো ভাবা যায়না, বাস্তব পরিস্থিতি সেরকম নয়।
জামায়াত-বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কুমিল্লার ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে যে, গত বছর শান্তিপূর্ণ ভাবে দুর্গাপূজা হয়েছে এবার সেটা করা যাবে না। আফগানিস্তানে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পরে এখানে তালেবানপন্থীরা সেটাকে স্বাগত জানিয়েছিল, তারা তো নতুন উদ্দীপনা ফিরে পেয়েছিল এবং তারা তো এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। যারা ঘটনা ঘটাচ্ছে সরকার তো তাদেরকে মূল জায়গায় ধরছে না। দেখা যাবে মাঠ পর্যায়ের হয়তো কিছু সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে কিন্তু আমরা যেটা সবসময় বলে এসেছি যে এটা হলো জামায়াত-হেফাজতের রাজনীতি যতদিন বাংলাদেশে থাকবে ততদিন বাংলাদেশে থেকে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস দূর হবে না, মৌলবাদী-সন্ত্রাস কখনো যাবে না। বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িকতা মৌলবাদ মুক্ত করতে হলে জামায়াত-বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করে দিতে হবে। কোন সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বাংলাদেশে চলবে না। আদর্শগতভাবে তো এটা মোকাবেলা করা হচ্ছে না। এটা যে একটা যে একটা রাজনীতি আছে সেটা তো বুঝা যাচ্ছে। এই যে আইনশৃঙ্গলা পরিস্থিতি। বিষয়টা তো আইনশৃঙ্গলা পরিস্থিতি না। রাজনীতি হচ্ছে বাংলাদেশকে হিন্দু শূন্য করতে হবে। বাংলাদেশ হিন্দু শূন্য হলে কাদের লাভ? আওয়ামী লীগের তো কোন লাভ নাই এতে।
শাহরিয়ার কবির বলেন, আওয়ামী লীগ তো একটি সেকুলার পার্টি। যারা সেকুলারিজমের বিরুদ্ধে তারা চাইবে বাংলাদেশে এক ধর্মের মানুষ থাকবে। তাহলে তাদের লাভ। সেটাই তারা করছে। যখন তারা ক্ষমতায় থাকে, তখন একভাবে করে, যখন ক্ষমতায় থাকে না, তখন আরেকভাবে করে। তারাইতো এগুলো করছে। কিন্তু সরকার তাদের ধরছে না। তাদের মূল জায়গায় ধরছে না। হেফাজতের সঙ্গে বরং সরকার দহরম মহরম করছে। এগুলো করে তো কোনো লাভ হবে না। সন্ত্রাস বন্ধ হবে না। এগুলো চলতে থাকবে। একভাবে না একভাবে চলতেই থাকবে। আগামীতেও এটা ঘটবে। অতীতেও এটা ঘটেছে। আমাদের একটি তদন্ত কমিশনের টিম আগামীকাল রোববার (১৭ অক্টোবর) কুমিল্লা, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, এসব জায়গায় যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটি শ্বেতপত্রও বাহির করছি আগামী মাসে। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি তো এগুলো করে যাচ্ছে, বলে যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে সরকারের তো কোনো টনক নড়ছে, এরকমটা আমরা দেখি না। হ্যাঁ, তারা বলছে সাম্প্রদায়িক শক্তি, স্বাধীনতা বিরোধী এটা করেছে। কিন্তু এটা করে কি কোনো ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে? কয়জন শাস্তি পেয়েছে? এই যে তিন চার বছর হয়ে গেল ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার রসরাজের যে ঘটনা, তার কি হলো? একই তো ঘটনা। ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট দিলো রসরাজ ফেসবুক ব্যবহারই জানে না। তারপরও সেই রসরাজকে এখনো আসামি হয়ে কোর্টে ঘুরতে হচ্ছে। এবং এই হামলার যারা উষ্কানিদাতা, তারা সরকারের দলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এই তো হচ্ছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। এভাবে সাম্প্রদায়িকতা দূর হবে বলে আমরা মনে করি না।
সাম্প্রদায়িকতা থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পারি প্রশ্নে শাহরিয়ার কবির বলেন, এটাকে দূর করতে হলে বঙ্গবন্ধু যেই চেতনায় বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সংবিধানে যেটি বলা হয়েছিল, ধর্মের নামে কোনো রাজনীতি চলবে না। এখানে ধর্মের নামে রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। ৭২ এর সংবিধানে ফিরে না যাওয়া ছাড়া এটা করা যাবে না। নির্মূল কমিটি ৩০ বছর ধরে এটা নিয়েই আন্দোলন করে আসছি বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।