ইনসাইড থট

ভেজাল


Thumbnail ভেজাল

চারদিকে ভেজাল আর ভেজাল। জলে স্থলে, হাটে-বাজারে, গ্রামে-গঞ্জে কোথায় নেই ভেজাল? ভেজালে নিমজ্জিত হয়ে আছে গোটা দেশ এবং আমাদের কাল। এখন সবাই যেন ভেজালাতঙ্কিত। ভেজালের ভিড়ে আসল নির্বাসিত। ঘর হতে দু'পা বাইরে যান, কিছু কিনে আনবেন বা কিছু খাবেন তো বড়ো বড়ো চোখ করে দেখছেন; কিন্তু কন্ঠস্বরে অসহায় মৃদু আওয়াজ-- আসল হবে তো ভাই? সন্দেহ যেন থেকেই যাচ্ছে। অথচ টাকা দিচ্ছেন আসল, জিনিসটা নকল। নকল বা দেখতে হুবহু একটা জিনিস হয়তো আপনাকে সরাসরি মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে না বা বড় ক্ষতি করছে না। কিন্তু নকল বা ভেজাল খাবার কিন্তু কাউকে কখনো ছেড়ে যাচ্ছে না। ফরমালিন মিশ্রিত খাদ্যের মাধ্যমে নানা অনিরাময় ও অসংক্রামক রোগ-বালাই সন্তপর্ণে আপনার মধ্যে বাসা বাঁধছে। জানা যায়, শিল্পের প্রয়োজনের চেয়ে কয়েক'শ গুণ অতিরিক্ত ফরমালিন আমদানি হচ্ছে। মাছে-মাংসে, ফলে-জলে, চালে-ডালে,পানীয়ে সবজিতে নিত্য ভেজাল মিশ্রিত খাবার খেয়ে ক'দিন সুস্থ থাকা সম্ভব? এমন পরিস্থিতিতে এখানে বাহ্যিকভাবে সুষম খাদ্যাভ্যাস নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে কী আদৌও বাঁচা সম্ভব? এখানে দুর্ভাগ্য যে, ভেজাল খাবারের ফলে অসুস্থ হয়ে তাৎক্ষণিক উপশম পাওয়ার জন্য যে ঔষধ সেবন করবেন তাতেও যদি ভেজাল থাকে তবে কী ? আমাদের সকলেরই প্রশ্ন-এর প্রতিকার এবং শেষ কোথায়? 

২) খাদ্যে নানা বর্ণের কৃত্রিম উপাদান ব্যবহারের ফলে দেশব্যাপী হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত মরণব্যাধি রোগে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি দেশের একটি বিখ্যাত দৈনিক পত্রিকার রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে, গত দশ বছরে ক্যান্সার, হৃদরোগ ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বছরে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে এ তিন ধরনের রোগে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ভেজাল খাবারের সাথে হৃদরোগ, কিডনি ও ক্যান্সারের সম্পর্ক রয়েছে সরাসরি। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২০ সালে বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৮,৩৫০ জন। আর একই বছর হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেন ১,৮০৪০৮ জন। যা ২০১৯ এর তুলনায় ছিল ৩১ হাজার জন বেশি। দেশে বছরে ১,৫০,০০০ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যুবরণ করে প্রায় ১,১৫০০০। একইভাবে ২০২০ সালে কিডনি রোগে মারা যায় ২৮,০১৭ জন। পূর্ববর্তী বছরে ছিল ১০,৬২২ জন। শিশু খাদ্যের ৯৫ ভাগই নাকি ভেজাল। বিষাক্ত ও ভেজাল খাবারের ফলে ১০% শিশু মৃত্যুবরণ করে। গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, দেশে প্রতিবছর ৫০ লক্ষ মানুষ কেবল খাদ্যের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যায়। পুষ্ঠি বিশেষজ্ঞগন মনে করেন, মানবদেহে এ জাতীয় অসংক্রমিত রোগ সৃষ্টির সাথে দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল খাদ্য গ্রহনের বিজ্ঞানভিত্তিক কারণ রয়েছে। 

৩) ঔষধে ভেজাল। সবচেয়ে বিপদজনক এবং দুর্ভাগ্যজনকও বটে। ঔষধে আমাদের যথেষ্ট সুনাম আছে। ইউরোপ আমেরিকাসহ পৃথিবীর বড়ো বড়ো দেশে আমাদের ফার্মার তৈরি ঔষধ যাচ্ছে। মান নিয়ে (standard) কোনো বিতর্ক আসছে না। প্রায় পঞ্চাশটি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রাও আসছে। যত সমস্যা দেশে। সবাই জানে, সকল ক্ষেত্রেই উৎপাদিত কোয়ালিটি পন্য মানে বিদেশিদের জন্য। অর্থাৎ বড়দের খাবার। অপরদিকে ভেজাল ও নকল পণ্যগুলো পৃথক উপাদান দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। যা বাংলাদেশ, বাঙালি জাতি আর আমাদের স্বদেশে পড়ে থাকা সাধারণ মানুষ ক্রয়ের বিনিময়ে ভোগ করবে। জানা যায়, ভালো ঔষধ, ভালো গার্মেন্ট, ভালো লেদার এমনকি ভালো ইলিশ মাছ সবই যাবে দেশের বাইরে। তবে আমাদের সম্মানিত রপ্তানিকারকগন (exporters) এক জায়গায় এখনো অসহায়, তারা ভেজাল দ্রব্য বিদেশিদের ঘাড়ে চাপাতে পারছেন না। কারণ আধুনিক প্রযুক্তি বিদেশিদের দারুণ ভাবে সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। যা আমাদের দেশে এখনও সম্ভব হচ্ছে না। এখানে মানুষের সারল্য, অজ্ঞতা ও অনৈক্যের সুযোগে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ভোক্তার অধিকার এখানে সুপ্রতিষ্ঠিত নয়। সুযোগে অসৎ অসাধুদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে আমাদের এ মাতৃভূমি। আজই দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের সম্পাদকীয় কলামে দেখলাম, কোনো পরিচিতি নেই, প্রমাণক নেই, মান যাচাইয়ের সুযোগ নেই এমন ঔষধের উৎপাদন হচ্ছে দেশের আনাচে-কানাচে। আর এসবের বিজ্ঞাপন প্রচারে সরকারি ভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও কেউ মানছে না। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব নকল, অপ্রয়োজনীয় ও ভেজালে সয়লাব হয়ে যাওয়া ঔষধ বাজারজাতকরণের লক্ষে বছরে ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করছে কোম্পানিগুলো। তারা তাদের নিয়োজিত প্রতিনিধিদের (medical representatives) মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দরজা পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে অবলীলায়। হাজার হাজার শিক্ষিত তরুণ এ পেশায় জীবিকা করছে। তাদের দেয়া লোভনীয় উপহার-উপঢৌকন গ্রহন করতে বাধ্য হচ্ছেন স্বনামধন্য চিকিৎসকগন। বলাবাহুল্য, দেশের এসকল ভুয়া ও ভেজাল ফার্মাসিউটিক্যালের মালিকরা এদের জন্মভূমির কোটি কোটি মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে নিজের এবং পারিবারিক সদস্যদের চিকিৎসার্থে বিদেশে গিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। তারা দেশীয় ঔষধ তো দূরের কথা পানীয় জলও বিদেশ থেকে আমদানি করে থাকে।   

৪) ভেজাল এখন রাজনীতিতে, অর্থনীতিতে, সমাজে এবং তৃণমূলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, শিরায় উপশিরায় বিস্তৃত। ডান বাম নির্বিশেষে দেশের সকল রাজনৈতিক দলের ভেতরের দলীয় চিত্র এবং চরিত্র উভয়ই বদলে গেছে। রাজনীতিতে আদর্শিক মূলস্রোত বলে যা ছিল তা পুরোপুরি অস্তিত্বের সংকটে আবর্তিত হচ্ছে। অন্যায় অপরাধ ও নীতিহীনতা প্রবলভাবে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। মাঠে-ঘাটে যাঁরা নিবেদিত প্রাণ ও পরীক্ষিতজন ছিলেন তাঁরা নিরবে নিভৃতে ম্রীয়মান হয়ে আছে। সততা, আদর্শ ও আত্মসম্মানবোধ নিয়ে যাঁরা এতদিন আঁকড়ে ধরে ছিলেন দল ও জনতাকে তাঁরাও পড়েছে বিপাকে। বেঁচে আছেন অথচ কোথাও নেই। ক্রমাগত কোণঠাসা হয়ে দুর্বিষহ সময় যাপন করছেন। তৃণমূলের সমস্ত পদ-পদবী,সামাজিক রীতি-নীতি, ছোট বড়ো মর্যাদা সবকিছু রাতারাতি চলে গেছে তথাকথিত হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ন্ত্রণে। ভুল এবং ভেজাল নেতৃত্বের কবলে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে গ্রামীন রাজনীতি। অবস্থাটা এমন যে, কার কাজ কে করে? কার দলে কে নেতা ? কোথাকার জল কোথায় গড়াচ্ছে? যাঁদের হাতে গ্রামীন জনপদ নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন থাকত তাঁরা কোথায়? অদৃশ্য ছায়ায় নিভৃতেই মিলিয়ে যাচ্ছে মানুষগুলো। যেন উড়ে এসে জোরে বসে গেছে সর্বগ্রাসী ভূঁইফোড়রা। সমাজে ভেজালরাই তাড়িয়ে দিয়েছে আসলদের। কারণ ভেজালরা ঐক্যবদ্ধ আর খাঁটিরা নিঃসঙ্গ, একা। তাঁদের দল সবসময় সংখ্যালঘু। অর্থনীতির চিরায়ত সূত্রের মতন, 'বেড মানি ড্রাইভস গুড মানি আউট অব সার্কুলেশন'। মাঝে মধ্যে দলগুলোর আহাজারি ও রোদনভরা কান্না শোনা যায়, অনুপ্রবেশকারীরা সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে, এদের চিন্হিত করে দ্রুত ব্যবস্হা নেয়া হবে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না । এতে ভেজাল মানুষগুলোর একতা আরও সুদৃঢ় হয়, তারা নানা কলা-কৌশলে কেন্দ্র-প্রান্ত সংযোগ স্হাপন করে অধিকতর আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে। এতে বারবার ভেস্তে যায় শুদ্ধাচার অভিযানের ঘন্টাধ্বনি। আরও হতাশায় পড়ে সৎ, দেশপ্রেমিক ও বিবেকবানরা। ফলশ্রুতিতে অবৈধভাবে অর্জিত টাকাই হয়ে উঠেছে গ্রাম্য-রাজনীতির নিয়ামক শক্তি। এবং অন্য সবকিছু হয়ে গেছে টাকার অধীন। তাই ভেজাল মানুষগুলোর নিত্যকার অবিবেচক, অন্যায় আচরণ মুখ বুজে সহ্য করে চলেছে সাধারণ মানুষ। এদের বিপক্ষে অভিযোগ অনুযোগের অবাধ বিচরণ ও সুযোগ ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। হঠাৎ ভাবলে চমকে উঠি, এত ভেজাল ও অধঃপতিত মানুষ নিয়ে কী পঞ্চাশ বছর আগে এ দেশ স্বাধীন করা সম্ভব ছিল? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মতো বাঙালির ভূমিপুত্র ও মা-মাটি-মানুষের অবিসংবাদী নেতার পক্ষেও কী এটা সম্ভব হতো? আজকের এমন নির্লজ্জ সুবিধাবাদীদের সঙ্গে নিয়ে কোটি কোটি মানুষকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখানো কী সহজ হতো ? সর্বত্র নীতি আদর্শ বিসর্জনকারীদের দিয়ে কী প্রকৃতার্থে জনসেবা বাস্তবায়ন করা সম্ভব? 

৫) দেশে ভেজাল ডিগ্রি, ডাক্তার, উকিল, ম্যাজিস্ট্রেট, মেজর আরও কতকিছু প্রাত্যাহিক জীবনে আমাদেরকে মোকাবিলা করতে হয়। কী বিচিত্র এই দেশ! বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পি এইচ ডি ডিগ্রিতে ভেজাল, গবেষণায় অন্যের কপি পেস্ট। সরাসরি নকলের অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তোলপাড় ক্যাম্পাস, সর্বত্র মুখরোচক গল্পগাথা। ভর দুপুরের আদালত পাড়ায় কালো গাউন পরিহিত ত্রস্ত-ব্যস্ত সকলই হয়তো প্রকৃত এডভোকেট নন। চেম্বার নিয়ে দিব্যি প্রেসক্রিপসন দিচ্ছেন দেশে এমন ভুয়া ডাক্তারের সঠিক সংখ্যাও নিরূপনযোগ্য করা যাচ্ছে না। ভেজালে ভরা দেশে পুলিশ অফিসারের কৃত্রিম পরিচয় দিয়ে লুট করে নিচ্ছে মানুষের সম্ভ্রম ও অর্থ। পত্রিকার পাতা জুড়ে সচিত্র ভুয়া মেজর প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে শিল্প কারখানা গড়ে তোলার নামে দখল করে নিচ্ছে সাধারণের ভূমি। ম্যাজিস্ট্রেট সেজে প্রতারনামূলক মোবাইল কোর্ট বসিয়ে হয়রানী করছে সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতাকে। কী আশ্চর্য! কিছু দিনের জন্য সবকিছুই এখানে করা সম্ভব হয়ে উঠে। কেউ কেউ হয়তো ধরা না পড়ে অনায়াসেই জীবনের প্রান্তে উপনীত হয়ে বেঁচে যাচ্ছে । দেশে এমন ভেজাল মানুষের সংখ্যা নগণ্য হওয়ার কারণ নেই। আমরা বলি, আঠারো কোটি মানুষের দেশে মাত্র পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের কাছাকাছি সরকারি, আধাসরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বেসরকারি পর্যায়ে আরও কিছু। তথাপি দেশে  কোটি কোটি মানুষের নিজস্ব পেশার সংকট থেকেই যাচ্ছে। তবে চুড়ান্ত বিচারে এটাই সত্য যে, বেশি মানুষের দেশে বেশি অপরাধ, কম মানুষের দেশে কম। 

৬) যে দেশে মধু এবং বিষ উভয়ই ভেজালের কবলে। বাজারে যান, মধু ক্রয় করুন, দেখবেন মধুর পাত্রের চারদিকে মৌ চাকের ওপর জীবন্ত মৌমাছির ওড়াউড়ি। কী লোভনীয় চিত্তাকর্ষক দৃশ্য। সন্দেহের অবকাশ কোথায়? সাক্ষী আছে চোখের সামনে। কিন্তু না, বাড়িতে গিয়ে অন্য রকম চিত্র। রং এবং গাঢ়তায় সামান্য ভেজাল মনে হয়, তবে যাই হোক -- আর কী করার আছে। মধুময় হয়ে উঠলো না পরিবেশটা। তেলাপোকা, ছারপোকা, ইঁদুর ইত্যাদিতে জীবন বিষিয়ে গেছে তো এদের হত্যা করা অনিবার্য। বিজ্ঞাপনে চোখ রেখে বাজার থেকে নিয়ে আসুন বিষের খাবার। মনে হবে এগুলো আসলে এদের খাবারই। খাওয়ার পরে সামান্য একটু মাতাল হয়ে ঘুরবে, এ-ই যা। যেমন, 'নেশার লাটিম ঝিম ধরেছে'। তবে দুপুরের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। কাজ তো হলো না- বরঞ্চ এদের জীবনও একটু বৈচিত্র্য পেল। এদের জন্য ভেজালই আশীর্বাদ।  

৭) ভেজাল বিশ্বব্যাপী। ভালো মন্দ মিলিয়েই মানুষের এই পৃথিবী। আজকাল উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারকারী পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যেও নানা বিষয়ে বিতর্ক হচ্ছে। গণতন্ত্র ও ভোটের রাজনীতি নিয়ে অভিযোগ উঠছে। নির্বাচনে কারচুপির কথা তারাও বলছে। পুঁজিবাদী আগ্রাসন অনবরত হুমকি দিচ্ছে ছোটদের। যুদ্ধ বিগ্রহ চলমান আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। আজকের দুনিয়ার সবচেয়ে বড়ো ব্যবসার নাম নাকি অস্ত্র ব্যবসা। তবুও সান্ত্বনা খুঁজে পাই, তারা দিবানিশি যা খাচ্ছে এবং খাওয়াচ্ছে, যা পান করছে বা আপ্যায়ণ করছে এমন মুখের গ্রাসকে বিষাক্ত করে দিচ্ছে না। তারা অন্ততঃ এ জায়গাটা ভেজাল-মুক্ত করে রাখছে। মানুষের জীবনই প্রকৃতির মহামূল্যবান উপহার। সবার উপরে জীবন সত্য।

ভেজাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক ডা. কাইয়ুম তালুকদার যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ এর প্রবক্তা। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা উন্নয়ন কৌশল জাতির পিতার ভাবনা থেকেই উৎসারিত। অল্প সময়ের মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রান্তিক সুবিধা বঞ্চিত মানুষের আপন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে জনগণের বিপুল সমর্থনে আবার সরকার গঠন করেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে আর কোন অপশক্তি যেন কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করতে না পারে সেজন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করেন। বর্তমানে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবার ‘বাতিঘর’ এই প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে জনগণ জমি দিচ্ছেন, সরকার ভবন করে দিচ্ছেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রমের পুরোটাই পরিচালিত হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ মানেই স্মার্ট উদ্যোগ। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উদ্ভাবন মানেই জনবান্ধব কর্মসূচি। কমিউনিটি ক্লিনিক পাল্টে দিচ্ছে গ্রামীণ জনপদ। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে কমিউনিটি ক্লিনিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিশ্ববাসী আজ শেখ হাসিনাকে গুরুত্ব না দিয়ে পারে না


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক ফরিদা ইয়াসমিন, এমপি যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা স্মরণ করতে চাই সে দিনটি যেদিন শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এলেন। সমগ্র বাঙালীর আনন্দিত উদ্বেলিত অপেক্ষার দিন। সমস্ত কিছু উপেক্ষা করে মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যাকে স্বাগত জানিয়েছে সেদিন। সেদিন তিনি দেশে আসার পর ৩২ নম্বরে ঢুকতে পারেননি। তিনি চেয়েছিলেন একটি মিলাদ করবেন, নিজের বাড়িতে ঢুকবেন কিন্তু সেটি তিনি পারেননি। তাকে রাস্তায় বসে মিলাদ পড়াতে হয়েছে। তার ওপর এত জুলুম বাধা বিপত্তি সব কিছু পেরিয়ে আজকে তিনি বাংলাদেশের শুধু রাষ্ট্রনায়ক না, তিনি সারা বিশ্বের একজন নেতা হিসেবে পরিণত হয়েছেন। বিশ্ববাসী আজ শেখ হাসিনাকে গুরুত্ব না দিয়ে পারে না। বাংলাদেশের একজন প্রধানমন্ত্রীকে সেরকম গুরুত্ব না দিলেও পারত কিন্তু তারা শেখ হাসিনাকে উপেক্ষা করতে পারেন না। কারণ তিনি শেখ হাসিনা। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা। তাঁর যে স্বপ্ন, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন সেটি সকলের কাছে একটি বিস্ময়। আজকে পাকিস্তানিরা বলে আমাদেরকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। 

ছিয়ানব্বইয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেই শেখ হাসিনা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। কমিউনিটি ক্লিনিক এর মত একটি উদ্যোগ এটি কেউ চিন্তাও করেননি। এটা একেবারে শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত। কিন্তু সরকারের পালা বদল হবার সাথে সাথে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসেছে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিলেন। কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ হওয়ার ফলে আবার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়ে। বিভিন্ন জায়গায় কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো একেবারে ভূতড়ে বাড়ির মত হয়ে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী পরের বার ক্ষমতায় এসে সেই ক্লিনিকগুলো আবার চালু করেন। জাতিসংঘ এটিকে মডেল হিসেবে নিয়েছে এবং ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল। আজকের দিনে এসে বুঝা যায় যে এটি আসলে কতটা ইনোভেশন ছিল। শেখ হাসিনার এই উদ্যোগ আজ অন্যান্য দেশ অনুসরণ করতে চায়। 


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

১৮ কোটি মানুষের ঠিকানা জননেত্রী শেখ হাসিনা


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা লেনিন যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল। কিন্তু বাংলার নব্য মির্জাফরেরা জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার চেতনাকে ভুলুন্ঠিত করেছিল। ভাগ্যক্রমে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা বিদেশে থাকার কারণে জীবনে বেচে যান। কোন অন্যায় না করেও পিতার অসাধারণ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত স্বাধীন বাংলাদেশে আসতে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। সামরিক শাসক এবং শাসনের কারণে বরণ করতে হয়েছিল নির্বাসিত জীবন। দেশের আপামর জনগণ, আবাল-বৃদ্ধা-বণিতা শেখ হাসিনার এই অকৃত্রিম ভালোবাসাকে হৃদয়ের বেরোমিটার দিয়ে মাপতে পারে তাকে বাংলায় রুখবে কে। তাইতো ঐক্যের প্রতীক হয়ে বাঙালির ভাগ্যাকাশে জ্বলজ্বলে স্বধীনতার সূর্য হাতে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরেছিলেন শেখ হাসিনা নামের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। যার আলোর বিচ্ছরণ ঘটাচ্ছে ১৮ কোটি মানুষের প্রতিটি হৃদয়ে। বাঙালির ভাগ্য উন্নয়নের চাকা এখন সঠিক পথে সঠিক গন্তব্যের দিকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ধাবমান। 

১৯৮১ সালের ১৭ মে যেদিন তিনি বাংলার মাটিতে পা রাখেন সেদিন তার পথ ছিল অনেকটা কন্টকাকীর্ণ। নিজের বাড়ি, নিজের পিতার বাড়িতে একজন সাধারণ নাগরিকেরও প্রবেশের অধিকার থাকে। কিন্তু শেখ হাসিনার সেই অধিকার খর্ব করা হয়েছিল। ১৯৮১ সালের ১৭ মে, দেশের মাটিতে পা রাখার পর শেখ হাসিনার হৃদয়ের টেবিলে দু’টি ফাইল ছিল। দু’টি ফাইলের একটি ছিল ৭৫ এর ১৫ আগস্ট পিতা-মাতাসহ স্বজন হারানো মমগাথা ও তাঁর বিচার প্রসঙ্গ। অন্যটি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ তথা বাঙালী জাতির ভাগ্য উন্নয়ন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে যদি জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে না ফিরতেন, তবে বাঙালি জাতির ভাগ্য কখনো আলোর মুখ দেখতো না। তলিয়ে থাকতো অটল অন্ধকারে। তাইতো বাংলার মানুষ সবাই ধারণ করে একটি শ্লোগান, ‘১৮ কোটি মানুষের ঠিকানা, জননেত্রী শেখ হাসিনা।’  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বদলে যাওয়ার বাংলাদেশের কারিগরি শেখ হাসিনা


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ। 

তৎকালীন রেডিও, টেলিভিশন কোথাও বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করতে দেওয়া হত না। দেশকে টেলে দেওয়া হয়েছিল উল্টোপথে। ১৯৭১ সালে যে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল ১৯৭৫ এসে সেই বাংলাদেশ হারিয়ে গিয়েছিল। সারা দেশে শুধু তখন হতাশ আর নাভিশ্বাস অবস্থা। এর প্রায় ৬ বছর পর নির্বাসনে থাকার জননেত্রী শেখ হাসিনা জীবনের পরোয়া না করে ভয় ভীতি উপেক্ষা করে অনেক ঝুকি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের বিদেশের মাটিতে রেখে সেই ১৯৮১ সালের ১৭ মে পদাপণ করেন বাংলার মাটিতে। তিনি যখন দেশে এসেছিলেন তখন অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণ হয়। 

আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ তাকে পেয়ে আনন্দিত উদ্বেলিত ছিলেন। তিনি এসেছিলেন এক আলোক বতিতা, আলোর ফেরিয়াওলা হয়ে। তিনি হয়ে উঠেন সকলের আশা আকাঙ্ক্ষা প্রতীক। বিশ্বস্ততার ঠিকানা। শাসক গোষ্ঠীর ভিত তখন কেপে উঠেছিল। দেশে আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনার চলার পথ সহজ ছিল না। মসৃণ ছিলো না। কিন্তু তিনি সমস্ত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে তার মেধা, দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা, যোগ্যতা, প্রজ্ঞা, সৃজনশীলতা উদার গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি আর দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল আর আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। জনগণ ফিরে পায় তার সব ধরনের অধিকার। আল্লাহ অশেষ রহমত শেখ হাসিনার মতা আমরা একজন নেত্রী পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু বানিয়েছেন বাংলাদেশ আর শেখ হাসিনা বানিয়েছেন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। যত দিন থাকবে শেখ হাসিনার হাতে দেশ পথ হারাবে না বাংলাদেশ।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের বিস্ময়


Thumbnail

সাম্প্রতি ‘‘১৭ মে ১৯৮১, তোমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর সূচনা, ১৭ মে ২০২৩, কমিউনিটি ক্লিনিক: ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ দিলো নতুন মর্যাদা’’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফেরদৌসী যে আলোচনা করেছেন তাঁর চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার স্বদেশে ফেরার ওইদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। তুমুল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে একনজর দেখার জন্য বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর এলাকাজুড়ে ছিল মানুষের ঢল। শেখ হাসিনা - সেদিন বাংলার মাটিতে ফিরে এসেছেন কোটি বাঙালির আশার প্রদীপ হয়ে - বাঙালি জাতিকে আলোর ঠিকানায় পৌছে দিতে। সেদিন বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সারা দেশ থেকে আসা লাখ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধু কন্যা। জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ নেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সাহসী ভূমিকা রেখে চলেছেন। তিনি ফিরে আসার পর আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ফিরে পেয়েছি। দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ এর সূচনা হয়েছে। ছিয়ানব্বইয়ে সরকার গঠন করে তিনি ‘দায়মুক্তি অধ্যাদেশ বাতিল আইন, ১৯৯৬’ সংসদে পাশ করে জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের ঘাতকদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করান এবং পরবর্তীতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসেন। তাঁর আন্তরিক উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় মহান ‘২১ ফেব্রুয়ারি’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পায়। ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কারো মধ্যস্থতা ছাড়াই স্বাক্ষরিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি।

১৭ মে ২০২৩ দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবন “কমিউনিটি ক্লিনিক'-কে জাতিসংঘ “দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ' হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের সবার জন্য গর্বের। জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্ভাবনী চিন্তাকে জাতিসংঘের অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোকেও অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের বিস্ময়। তার গতিশীল নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে। 


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন