ফের আলাদা রাজ্যের
জিগির উঠল পাহাড়ে! দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নয়া প্রস্তাব। পশ্চিমবঙ্গের
পাহাড়ি অঞ্চল দার্জিলিংয়ের আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গোর্খাল্যান্ড টেরিটরিয়াল
অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো গতকাল সোমবার। সে বৈঠকেই গোর্খাল্যান্ড
রাজ্য গড়ার প্রস্তাব পাস হয়েছে। পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গড়ার দাবিতে আবার উত্তাল
হতে পারে পাহাড়।
গত ২৬ জুন জিটিএর
৪৫টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ২৭টি আসনে জয়ী হয় অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা
প্রজাতান্ত্রিক দল। তৃণমূল পায় ৫টি আসন, হামারো পার্টি পায় ৮টি এবং নির্দলীয় প্রার্থীরা
পান ৫টি আসন। জিটিএর চেয়ারম্যান হন অনিত থাপা।
গতকাল জিটিএর
বৈঠকে এই প্রথম পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গড়ার দাবি মেনে নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করা
হয়। জিটিএর প্রধান অনিত থাপা বলেন, পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যর প্রস্তাবসহ এ বৈঠকে ৫৫টি
প্রস্তাব পাস হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১১টি। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের ১১টি জনজাতিকে
উপজাতির স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবও পাস হয়েছে।
মাত্র ৫ দিন
আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ছত্তিশগড়, হিমাচল প্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও উত্তর
প্রদেশের ১৫টি সম্প্রদায়কে জনজাতির স্বীকৃতি দেওয়া হলেও দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের কোনো
জনজাতিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাই গতকাল জিটিএর বৈঠকে পাহাড়ের এই দুই জেলার ১১টি জনজাতিকে
উপজাতির স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
এই স্বীকৃতির
পর জিটিএর প্রধান অনিত থাপা বলেন, ‘আমরা এর আগে ১১ বার পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গড়ার
প্রস্তাব তুলেও জিটিএতে পাস করাতে পারিনি। এবার পেরেছি। এবার আমরা পৃথক গোর্খাল্যান্ড
রাজ্য নিয়ে আন্দোলন শুরু করব।’
তবে জিটিএর
তৃণমূল নেতা বিনয় তামাং বলেন, এভাবে প্রস্তাব পাস করলে সবকিছু হয়ে যায় না। তার জন্য
কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হয়।পশ্চিমবঙ্গের কোনো রাজনৈতিক দলই চায়
না দার্জিলিং বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্র থেকে। পর্যটন আর চা-শিল্পের
ওপর নির্ভরশীল এই জেলা।
এখানের বেশির
ভাগ মানুষ নেপালি ভাষাভাষী। ১৯৮০ সাল থেকে সেই একই ঘটনা ঘটছে দার্জিলিংয়ের রাজনীতিতে।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং সেদিন যেভাবে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের
(জিএনএলএফ) কাউন্সিলর হয়ে দলীয় প্রধান সুভাষ ঘিসিংয়ের সঙ্গে বিরোধিতা করে দল ছেড়ে গড়েছিলেন
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, এখন সেই তিনিই কার্যত সরে গেছেন ইতিহাসের পাতা থেকে।
১৯৮০ সালে পৃথক
গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি নিয়ে দার্জিলিংয়ে প্রথম আন্দোলন শুরু করেন জিএনএলএফের নেতা
সুভাষ ঘিসিং। পরে ১৯৮৮ সালের ২২ আগস্ট বামফ্রন্ট সরকার জিএনএলএফ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের
মধ্যস্থতায় গড়ে পৃথক স্বশাসিত সংস্থা দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ। এর চেয়ারম্যান
করা হয় সুভাষ ঘিসিংকে। অন্যদের মধ্যে কাউন্সিলর হন বিমল গুরুংও।
একসময় সুভাষ
ঘিসিংয়ের সঙ্গে বিমল গুরুংয়ের মতবিরোধ দেখা দিলে বিদ্রোহ করেন বিমল গুরুং। তারপরই ২০০৭
সালের ৭ অক্টোবর বিমল গুরুং গড়েন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এরপর জনমুক্তি মোর্চা পৃথক
গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করে অশান্ত করে তোলে দার্জিলিং। দার্জিলিং থেকে
প্রকারান্তরে তাড়িয়ে দেওয়া হয় সুভাষ ঘিসিংকে। তিনি আশ্রয় নেন জলপাইগুড়িতে। এরপর আর
তিনি ঠাঁই পাননি দার্জিলিংয়ে। মারাও যান দার্জিলিংয়ের বাইরে জলপাইগুড়িতেই।
সুভাষ ঘিসিংয়ের
বিদায়ের পর বিমল গুরুংয়ের আন্দোলন থামাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা এগিয়ে আসেন। কথা দেন, দার্জিলিংয়ে
ফিরিয়ে আনবেন শান্তি। এরপরই মমতার উদ্যোগেই ২০১১ সালের ১৮ জুলাই সেই ১৯৮৮ সালের ধাঁচে
গড়া হয় জিটিএ। এই জিটিএর চেয়ারম্যান হন বিমল গুরুং আর কাউন্সিলর হন বিনয় তামাং।
এবার ইতিহাসের
পথ ধরে সেই ধারাবাহিকতায় জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিনয় তামাং বিদ্রোহ করে বসেন বিমল গুরুংয়েরই
বিরুদ্ধে। ছাড়েন বিমল গুরুংয়ের সংস্রব। বিমল গুরুংয়ের অফিস দখল করে নামিয়ে দেন তাঁর
ছবি। ওড়ান দলের নতুন পতাকা। আর এ কাজে বিনয় তামাংয়ের পাশে এসে দাঁড়ান মমতা। তাঁকে জিটিএর
চেয়ারম্যান করেন। মুছে যেতে শুরু করে বিমল গুরুংয়ের নাম।
পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে ১০৭ দিন একটানা বন্ধের পর তা প্রত্যাহার করে নেন বিমল গুরুং। তবু পুরোপুরি শান্তি ফিরে আসেনি পাহাড়ে। এরই মধ্যে গতকাল জিটিএর প্রথম বৈঠকেই পাস হলো পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ড করার প্রস্তাব। এবার রাজ্যবাসী তাকিয়ে আছে কী ঘটতে চলেছে দার্জিলিংয়ে, সেদিকে।
বিশ্ব সংবাদ এশিয়া গোর্খাল্যান্ড উত্তরবঙ্গ ভারত
মন্তব্য করুন
স্লোভাকিয়া প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো
মন্তব্য করুন
ইরানের অস্ত্র চোরাচালান আটকে দেওয়ার দাবি করছে জর্ডান। দেশটির দাবি, এসব অস্ত্র জর্ডানের ক্ষমতাসীন রাজতন্ত্রের বিরোধীদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সহায়তার জন্য আনার চেষ্টা করছিল ইরান।
বুধবার (১৫ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিষয়টি অবগত এমন দুটি সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অস্ত্র পাচারে সন্দেহভাজন ইরানি নেতৃত্বাধীন চক্রান্তকে জর্ডান ব্যর্থ করে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্রগুলো সিরিয়ার ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়ারা জর্ডানের মুসলিম ব্রাদারহুডের একটি সেলের কাছে পাঠিয়েছিল। এ সেলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের সামরিক শাখার সম্পর্ক রয়েছে। মার্চের শেষের দিকে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত জর্ডানিয়ান সেলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর অস্ত্রের চালানও জব্দ করা হয়।
মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার মধ্যে প্রথমবারের মতো জর্ডানে অস্ত্রের চালান জব্দের খবর সামনে এসেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জর্ডানের দুটি সূত্র চলমান তদন্ত এবং গোপন অভিযানের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে অস্ত্র দিয়ে কি ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তা তারা জানাননি। এছাড়া কি ধরনের অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে তাও তারা জানাননি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জর্ডানের নিরাপত্তা পরিষেবাগুলো ইরান এবং তার মিত্রদের কয়েকটি অস্ত্র চালান আটকে দিয়েছে। এসব চালানে ক্লেমোর মাইন, সি৪ এবং সেমটেক্স বিস্ফোরক, কালাশনিকভ রাইফেল এবং ১০৭ মিমি কাতিউশা রকেট ছিল।
জর্ডানের সূত্র অনুসারে, এ সব অস্ত্রের বেশিরভাগ ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীরের জন্য নির্ধারিত ছিল। এছাড়া মার্চে জব্দ করা অস্ত্র জর্ডানে ব্যবহারের জন্য আনা হয়েছিল।
জর্ডানের মুসলিম ব্রাদারহুড জানিয়েছে, অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে তাদের কয়েকজন কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে এর সঙ্গে দলের কোনো নীতিগত সমর্থন নেই বলে জানিয়েছে তারা।
মন্তব্য করুন
ইউক্রেনের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের খারকিভে শুক্রবার ভোরে হঠাৎ করে ঢুকে পড়ে রাশিয়ার সেনারা। এরপর সেখান দিয়ে একের পর এক অঞ্চল দখল করে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে তারা।
এরমধ্যেই নিজের সব আন্তর্জাতিক সফর স্থগিত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
বুধবার (১৫ মে) তার দপ্তর থেকে একটি বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, 'আগামী কয়েকদিনে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ অন্যান্যদের যেসব আন্তর্জাতিক সফর ছিল সেগুলো স্থগিত এবং সফরগুলোর সময় পুনরায় নির্ধারিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।'
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান কায়রাইলো বুদানোভ সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানান, খারকিভের সম্মুখভাগের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে পড়েছে। এরপরই জেলেনস্কির পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রুশ সেনাদের হামলার তীব্রতায় টিকতে না পেরে খারকিভের রাশিয়ার সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে সেনাদের সরিয়ে নিয়েছে ইউক্রেন।
দেশটির সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, 'সেনারা তীব্র হামলার মুখে পড়েছে এবং তাদের আরও সুবিধাজনক স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।'
ইউক্রেন সাধারণত সেনাদের প্রত্যাহার করার সরাসরি ঘোষণা দেয় না। এর বদলে তারা প্রত্যাহারের বিষয়টিকে 'সেনাদের সুবিধাজনক স্থানে' নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে।
সেনাবাহিনীর এ মুখপাত্র আরও বলেছেন, সেখানকার পরিস্থিতি খারাপ অবস্থায় রয়েছে। তবে তিনি দাবি করেছেন রুশ সেনাদের তারা শক্ত অবস্থান নিতে দিচ্ছেন না।
এদিকে ইউক্রেনের পুলিশ প্রধান খারকিভের ভোভচানস্ক এবং লুকিয়ান্তসি থেকে সব মানুষকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তার এমন আহ্বানের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, সেদিকটায় তড়িৎ গতিতে এগিয়ে আসছে রাশিয়ার সেনারা।
রুশ বাহিনী খারকিভে কী লক্ষ্য নিয়ে প্রবেশ করছে এ বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কয়েকদিন আগে বলেছিলেন তারা রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে একটি বাফার জোন তৈরি করতে চান। যেন ইউক্রেন রাশিয়ার ভেতর কোনো ধরনের হামলা না চালাতে পারে।
মন্তব্য করুন
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং।
টানা ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তার এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রে আক্ষরিক অর্থে শেষ হতে চলেছে 'লি সেইন যুগ'।
বুধবার রাতে সব ঠিক থাকলে, উপপ্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী লরেন্স ওয়ংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরকারপ্রধানের পদ থেকে বিদায় নেবেন তিনি।
১৯৬৫ সালে মালয়েশিয়া থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র তিনজন প্রধানমন্ত্রী দেখেছে সিঙ্গাপুর। এরা সবাই দেশটির ক্ষমতাসীন দল পিপল'স অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) সদস্য। প্রথমজন লি কিউয়ান ইয়িউকে বলা হয় সিঙ্গাপুরের স্থপতি। বর্তমান বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুংয়ের পিতা লি কিউয়ান ইয়িউ টানা ২৫ বছর দেশটির সরকারপ্রধান ছিলেন। সিঙ্গাপুরের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রীর নাম গোহ চোক তং।
৭২ বছর বয়সী লি সেইন লুং অবশ্য এখনই রাজনীতি পুরোপুরি বিদায় নিচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতির পর একজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীর পদমর্যাদায় মন্ত্রিসভার সদস্য থাকবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত শনিবার সিঙ্গাপুরের সাংবাদিকদের শেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন লি সেইন। সেই সাক্ষাৎকারে এত বছর ধরে তাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য সিঙ্গাপুরের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কখনও অন্যদের চেয়ে বেশি গতিতে দৌড়ানোর চেষ্টা করিনি; বরং চেষ্টা করেছি, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একসাথে চলতে।’
‘এবং আমি মনে করি, গত ২০ বছরে জাতিগতভাবে আমরা কিছু সাফল্য অর্জন করেছি। তবে এটা আমি স্বীকার করব যে, দুই পূর্বসূরি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে আমার কাজের ধরন কিছুটা ভিন্ন ছিল।’
১৯৮৪ সালে তরুণ বয়সে সাধারণ কর্মী হিসেবে পিএপিতে যোগ দেন তিনি। সে সময় তার বাবা লি কিউয়ান ইয়িউ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে বাবা প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকলেও সে সময় দল থেকে তেমন কোনো আনুকূল্য পাননি তিনি। আর দশজন সাধারণ কর্মীর মতোই ছিলেন।
লি সেইনের উত্থান ঘটা শুরু হয় দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক তং’য়ের সময়। গোহ চোক তং’য়ের একজন বিশ্বস্ত অনুসারী হিসেবে নিজেকে দলের ভেতর প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন তিনি এবং তার ধারবাহিকতাতেই ২০০৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন।
প্রথম দিকে অবশ্য লি সেইনকে ব্যাপক সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে। এসব সমালোচনার প্রায় সবই ছিল স্বজনপ্রীতিমূলক (নেপোটিজম)। বলা হতো, সিঙ্গাপুর লি পরিবারের সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে আর সেই পরিবারের সংরক্ষক হলেন গোহ চোক তং।
তবে পরবর্তী ২০ বছরে বহুবার নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করেছেন তিনি। তার নেতৃত্ব সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি বহুমুখী এবং বিকশিত হয়েছে, একটি সাধারণ দ্বীপরাষ্ট্র থেকে দেশটি পরিণত হয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক শক্তিকেন্দ্র এবং ট্যুরিস্টদের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে; মাথাপিছু জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এছাড়া তার শাসনামলের ২০ বছরে কখনও মূল্যস্ফীতি বা অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়নি শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে। এমনকি করোনা মহামারির মধ্যেও নয়।
ভূরাজনীতিতেও সাফল্য দেখিয়েছেন লি সেইন। পরস্পরের প্রতি বৈরীভাবাপন্ন দুই শক্তিমান দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সঙ্গে সবসময় ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে গেছেন। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতিতেও নিজ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছেন তিনি।
তবে অন্য সব রাজনীতিবিদের মতো লি সেইনও সমালোচনার ঊর্ধে নন। বিভিন্ন আইনী প্রণয়নের মাধ্যমে জনগণের বাক স্বাধীনতা সীমিত রাখার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া দেশের শ্রমিক সংকট লাঘবের জন্য বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে বসবাসের অনুমতি দিয়েছেন তিনি। এ কারণেও তিনি বিরোধীদের চক্ষুশূল। মূলত তার শাসনামলেই ২০১১ এবং ২০২০ সালের ভোটে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছিল পিএপি।
সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সুশাসন বিশেষজ্ঞ ডোনাল্ড ল’ বিবিসিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কিছু সমস্যা থাকলেও লি সেইনই আসলে সিঙ্গাপুরের জনগণের প্রকৃত নেতা। তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো এই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা।’
ক্ষমতা সিঙ্গাপুর প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
ইন্দোনেশিয়ায় সপ্তাহব্যাপী চলা ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে একটি আগ্নেয়গিরির শীতল লাভা এবং আকস্মিক বন্যার কারণে এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার অভিযান এখনও চলমান। বন্যার কারণে রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর, মসজিদ প্লাবিত হয়েছে। খবর এএফপির।
স্থানীয় সময় শনিবার মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর একটি থেকে শীতল লাভা নির্গত হয়েছে। ফলে এর কাছাকাছি অবস্থিত বিভিন্ন জেলার বাড়ি-ঘর, রাস্তা এবং মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আগ্নেয়গিরির শীতল লাভা লাহার নামেও পরিচিত। আগ্নেয়গিরির প্রধান উপাদান যেমন ছাই, বালি এবং নুড়ি পাথর বৃষ্টির কারণে আগ্নেয়গিরির ঢালে নেমে আসে। তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে।
বুধবার এক বিবৃতিতে জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার প্রধান সুহরিয়ানতো বলেন, সাম্প্রতিক তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে মৃতের সংখ্যা ৫৮ জন। তিনি জানিয়েছেন, এখনো ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া আরও ৩৩ জন বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।
এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকার ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করতে ইতোমধ্যেই ভারী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে ৩ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ইরানের অস্ত্র চোরাচালান আটকে দেওয়ার দাবি করছে জর্ডান। দেশটির দাবি, এসব অস্ত্র জর্ডানের ক্ষমতাসীন রাজতন্ত্রের বিরোধীদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সহায়তার জন্য আনার চেষ্টা করছিল ইরান। বুধবার (১৫ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিষয়টি অবগত এমন দুটি সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অস্ত্র পাচারে সন্দেহভাজন ইরানি নেতৃত্বাধীন চক্রান্তকে জর্ডান ব্যর্থ করে দিয়েছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং। টানা ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তার এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রে আক্ষরিক অর্থে শেষ হতে চলেছে 'লি সেইন যুগ'। বুধবার রাতে সব ঠিক থাকলে, উপপ্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী লরেন্স ওয়ংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরকারপ্রধানের পদ থেকে বিদায় নেবেন তিনি।