ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গণতন্ত্রের দুর্গ এখন অতি-ডানপন্থীদের ?

প্রকাশ: ০৮:৫৪ এএম, ০২ অক্টোবর, ২০২২


Thumbnail গণতন্ত্রের দুর্গ এখন অতি-ডানপন্থীদের ?

ইউরোপকে বলা হত  উদারপন্থী গণতন্ত্রের দুর্গ। কিন্তু বিগত কয়েক দিন ধরেই উত্থান ঘটছে অতি-ডানপন্থী দলগুলোর। অভিবাসনবিরোধী, জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামবিদ্বেষী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে ভালো করতে দেখা যাচ্ছে বিগত দিনগুলোতে।

ইতালির নির্বাচনে অতি-ডানপন্থী দলগুলোর জোটের বিপুল বিজয় সবাইকে চমকে দিয়েছে। 

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অনেকদিন ধরেই ডানপন্থী দলগুলো মাথা তুলছিল। ফ্রান্স, জার্মানি বা সুইডেনের মতো বেশকিছু দেশে এসব দল প্রধান রাজনৈতিক দলের কাতারে উঠে আসছিল। অনেক দেশে তারা ক্ষমতার বেশ কাছাকাছি এসে গিয়েছিল।

আর ইতালিতে ব্রাদার্স অব ইতালি এবং তার মিত্ররা বিপুল জয় পাবার পর অনেকেই মনে করছেন যে ইউরোপে ডানপন্থীদের উত্থান স্পষ্টভাবে সবার চোখে ধরা পড়েছে। ইউরোপের রাজনীতিতে হয়তো এক বড় পরিবর্তন আসন্ন।

কেন অতিডানপন্থী জোট ইতালিতে জয় পেলো? রোমের লুইস বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিক অধ্যাপক ড. রবার্তো দা'লিমন্ত বলছেন ইতালিতে লোকে পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছে - তবে অভিবাসন-বিরোধিতাই একমাত্র কারণ নয়।

তিনি বলছেন, "মিজ মেলোনির পার্টি ব্রাদার্স অব ইতালি - দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই চিরকালই বিরোধীদলে ছিল। তবে এবার ইতালির অনেক ভোটার একটা পরিবর্তন আনার জন্য ভোট দিয়েছে। মিজ মেলোনি অভিবাসন ঠেকানো, ট্যাক্স কমানো এবং ইতালির আত্মপরিচয় তুলে ধরা, ব্রাসেলসে ইতালির জাতীয় স্বার্থরক্ষা - ইত্যাদি যেসব নীতির কথা বলেছেন - সেটা লোকে পছন্দ করেছে। তাছাড়া মেলোনি নতুন এবং ভিন্ন ধরনের একজন রাজনীতিক, তিনি আগে কখনো সরকারে ছিলেন না এবং তিনি তার পূর্বসূরীদের চেয়ে ভালো করবেন - এটাই লোকে ধরে নিয়েছে। তার বিজয়ের কারণ এগুলোই - কিন্তু আসল কারণ হচ্ছে লোকে একটা পরিবর্তন চেয়েছে।"

অধ্যাপক রবার্তো দা'লিমন্তর কথায় - "ব্রাদার্স অব ইতালি একটা র‍্যাডিক্যাল বা উগ্র ডানপন্থী দল। কিন্তু শুথু একারণেই যে তারা ভোট পেয়েছে তা নয়। অনেকে শুধু অভিবাসন ঠেকানোর শ্লোগানের জন্যই তাদের ভোট দিয়েছে - এটা ঠিক । কিন্তু সবাই নয়। বহুলোকেই তাদের ভোট দিয়েছে এই কারণে যে - এরা এতদিন বিরোধীদলে ছিল, এবার এদেরকে একটা সুযোগ দিয়ে দেখা যাক, এরা কি করতে পারে।"

প্রকৃতপক্ষে গোটা ইউরোপজুড়েই ডানপন্থী দলগুলো অনেক দিন ধরেই শক্তিশালী হচ্ছিল।

ফ্রান্সে ন্যাশনাল ফ্রন্ট , জার্মানিতে এএফডি, হাঙ্গেরিতে ফিডেস, সুইডেনে এসডি, স্পেনে ভক্স পার্টি, অস্ট্রিয়ায় ফ্রিডম পার্টি, ইতালিতে লিগ এবং ব্রাদার্স অব ইতালি - এ তালিকা আদৌ ছোট নয়।

একেক দেশে একেক নামের দল হলেও এদির অভিন্ন কিছু বৈশিষ্ট্য চোখে পড়বে। এরা সবাই কমবেশী জাতীয়তাবাদী, অভিবাসন বিরোধী, বিশেষ করে মুসলিম অভিবাসন বিরোধী এবং তাদের এ বিরোধিতা কোন কোন ক্ষেত্রে ইসলামবিদ্বেষী চেহারা নেয়।

প্রশ্ন হলো কেন ইউরোপজুড়ে এদের জনপ্রিয়তা এমনভাবে বাড়ছে? ফ্রান্সের এবং র‍্যালি ফর দ্য রিপাবলিক দলের সাবেক এমপি এবং রাজনীতিবিদ পিয়ের লেকিয়া বলছিলেন, এর একাধিক কারণ রয়েছে।

লেকিয়া বলেন, "নিশ্চিতভাবেই এর কোন একক কারণ নেই। আসলে অনেক মানুষই ইউরোপকে পুরোপুরি বোঝে না। এর কারণ ইউরোপের ভেতরেই রয়েছে। যেমন ফ্রান্সে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার - যা পূরণ হয়নি। সেসব সংস্কার করা হয়নি। মানুষ গরীব হচ্ছে, লোকের হাতে যথেষ্ট অর্থ নেই। জাতীয়তাবাদী দলগুলো এ পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে। তারা অভিবাসনকে এ জন্য দায়ী করছে। কিন্তু আসলে অনেক কাজের সুযোগ আছে - যা ফরাসীরা করতে চায় না, এবং সে চাকরিগুলো অভিবাসীরা নিয়ে নিচ্ছে। জাতীয়তাবাদীরা বলছে, অভিবাসন বেড়ে গেছে - তারাই ফ্রান্সে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাবে, কিন্তু এসব কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা।"

"যদি ফ্রান্সের কথা বলি, ইইউ এবং অভিবাসন প্রশ্নে মারিন লা পেন আগে যে অবস্থান নিয়েছিলেন - তাতে অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। একসময় তিনি কড়া ইইউ বিরোধী ছিলেন, কিন্তু সবশেষ নির্বাচনের সময় দেখা গেল ইইউ এবং অভিবাসনের ক্ষেত্রে তার অবস্থান অনেক নরম হয়েছে আসলে তাদের প্রভাব কখনো বাড়ে, কখনো কমে। জার্মানিতে একটা সময় চরম ডানপন্থী দলগুলো ভালো করছিল, কিন্তু এখন তাদের জনপ্রিয়তা আবার কমে যাচ্ছে," বলেন পিয়ের লেকিয়া।

এক হিসাবে দেখা যায়, ইউরোপের অন্তত ১৯টি দেশে এখন ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল সক্রিয়। তার মধ্যে অন্ততঃ ১৪টি দেশের নির্বাচনে এসব দল ১০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসে সুইডেনের নির্বাচনে অভিবাসনবরোধী অতিডানপন্থী দল এসডি দ্বিতীয় সর্বো্চ্চ ভোট পেয়ে কিংমেকারের ভুমিকায় আবির্ভূত হয়েছে।

সুইডেন এবং ইউরোপের সাম্প্রতিক রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে দুটি বই লিখেছেন লেখক ফ্রেডরিক সেগারফেল্ড।

তিনি বলছিলেন, শুধু ইউরোপ নয়, সারা বিশ্বেই ডানপন্থী রাজনীতি জোরদার হচ্ছে।

তিনি বলছিলেন, "আমার মনে হয় এটি এক বৃহত্তর প্রক্রিয়ার অংশ। মানুষ একধরনের শৃঙ্খলা, নিয়ন্ত্রণ এবং কর্তৃত্ব চাইছে। এটা শুধু ইউরোপে ঘটছে না, যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা, ব্রাজিল - এগুলো কয়েকটা উদাহরণ। এটা পৃথিবীতেই একটা প্রধান ধারা হয়ে উঠেছে। তবে দেশে দেশে এর চেহারা ভিন্ন। তবে সাধারণভাবে তারা প্রগতিশীলতার বিরোধী। এরা বলছে, শহুরে জনগোষ্ঠী আর গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে, পরিবর্তনের গতি খুব বেশি দ্রুত হয়ে গেছে , দেশের সাথে একাত্মতাবোধ কমে যাচ্ছে। যেমন, সুইডেনে এখন জনসংখ্যার ২০ শতাংশেরই জন্ম হয়েছে অন্য কোন দেশে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটা ঘটে গেছে।"

"আমি নিজে বহুসংস্কৃতিবাদের ভক্ত। কিন্তু এখানকার অন্য অনেক লোকই এতে অস্বস্তি বোধ করে। তারা তাদের চারপাশে তাদেরই মত মানুষদের দেখতে চায়। একদিকে তারা প্রগতিশীলতার বিরোধী - কিন্তু অন্যদিকে আবার তাদের চোখে 'কম প্রগতিশীল' এমন দেশ থেকে অভিবাসী আসাটাকেও তারা পছন্দ করছে না - কারণ তারা দেখছে যে এর ফলে পশ্চিমা সমাজের প্রগতিশীল আদর্শগুলোই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। একে একটা স্ববিরোধিতাই বলতে হবে," বলছিলেন ফ্রেডরিক সেগারফেল্ড।

তার কথায় - "আসলে সুইডেনের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ আগে থেকেই অ্যাসাইলামের মাধ্যমে অভিবাসনের বিরোধী ছিল। কিন্তু এটা রাজনৈতিক এজেন্ডার শীর্ষে ছিল না। এর মধ্যে অপরাধ-সহিংসতা বেড়ে গেছে, এবং লোকে এটাকে অভিবাসনের সাথে সম্পর্কিত করছে।"

বিশেষ করে ২০১৫ সালে সিরিয়া থেকে আসা প্রায় ১০ লক্ষ শরণার্থী জার্মানি এবং ইউরোপের অন্য দেশ আশ্রয় পাওয়াকে কেন্দ্র করে অভিবাসন নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র হতে থাকে। ডানপন্থী দলগুলোর চোখে এই ঘটনা অভিবাসন-বিতর্ককে ভিন্ন এক মাত্রা দেয়।

ফ্রেডরিক সেগারফেল্ড বলছেন, "এর একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামবিদ্বেষ । উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগে মুসলিমদেরই দেখা হচ্ছে ইউরোপিয়ান খ্রিস্টানদের বিপরীত বা 'ভিন্ন' হিসেবে। এবং ইউরোপের বিভিন্ন অংশেই এখন মুসলিমবিরোধী সেন্টিমেন্ট কাজ করছে। অন্যদিকে এখানে ডেনিশ-সুইডিশ একজন রাজনীতিক কোরান পোড়ানোর মত ঘটনা ঘটিয়েছেন। ফলে এ বিতর্ক এখানে চলছে যে, কীভাবে আমরা অভিবাসন-বিরোধিতা বা ইসলামবিদ্বেষের মত উস্কানির মুখে এই সমাজকে রক্ষা করতে পারি।"

ফ্রেডরিক সেগারফেল্ড বলেন, সুইডেনে কখনোই ফ্যাসিস্ট বা নাৎসীরা ক্ষমতায় ছিল না। কিন্তু ইতালিতে নিও-ফ্যাসিজম কখনোই পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি।

"এখন ইউরোপের অনেক দেশেই ডানপন্থী দলগুলোর অস্তিত্ব একরকম স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে যাচ্ছে। এরা আগে চরমপন্থী ছিল কিন্তু এখন মধ্য-ডানপন্থী অবস্থান নিচ্ছে, রাজনীতিতে তারা মূলধারায় জায়গা করে নিতে চেষ্টা করছে, এবং তারা আরো বেশি করে গ্রহণযোগ্যতাও পেয়ে যাচ্ছে। তারা গণতন্ত্রের জন্য ততটা ঝুঁকি নয় - তার চেয়ে বরং তারা উদারপন্থার জন্য চ্যালেঞ্জ। বলা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের ইতিহাসে আমরা এখন সবচেয়ে অ্যান্টি-লিবারেল সময় পার করছি। "

ইউরোপ জুড়ে ডানপন্থীদের প্রভাব বাড়তে থাকায় তা অভিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে একটা উদ্বেগ তৈরি করেছে। তবে অধ্যাপক রবার্তো দা'লিমন্ত বলছিলেন, ডানপন্থী দলগুলো অভিবাসন ঠেকানোর কথা বললেও আসলে ক্ষমতায় গিয়ে এ ব্যাপারে অন্তত স্বল্প মেয়াদে তেমন কিছুই করতে পারবে না।

"জর্জা মেলোনি অভিবাসন নিয়ে কথা বলে যাবেন, কিন্তু খুব শিগগীরই তিনি আবিষ্কার করবেন যে নৌকায় করে অভিবাসীদের আসা ঠেকানোর ব্যাপারে তিনি খুব বেশি কিছু করতে পারবেন না। এজন্য আসলে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল দরকার, স্বল্পমেয়াদি কোন কিছুতে কাজ হবে না। তাকে মেনে নিতে হবে যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে তার দরকার, ইইউর সাথে তাকে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে। কারণ অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের জন্য ইতালি ইইউর অর্থ পাচ্ছে।"

অধ্যাপক দা'লিমন্ত মনে করেন, জর্জা মেলোনিকে এক জটিল পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। কিন্তু তিনি হয়তো অভিবাসন ঠেকানোর কথা বলেই যাবেন - কারণ ভোটারদেরকে রাজনীতিবিদরা জটিল জিনিস শোনাতে চায় না, তারা সবসময় সহজ সমাধানের কথা বলে।

প্রশ্ন হচ্ছে, ইতালির পর ইউরোপের অন্য দেশেও কি একই ভাবে ডানপন্থী দলের উত্থান হতে পারে? এতদিন ইউরোপ যেমন পৃথিবীর সামনে গণতন্ত্র মানবাধিকার আর উদারপন্থার দৃষ্টান্ত হয়ে ছিল - তা কি এখন আস্তে আস্তে বদলে যাচ্ছে?

সাবেক ফরাসী রাজনীতিবিদ পিয়ের লেকিয়া বলছিলেন, তিনি তা মনে করেন না।

তিনি বলছেন, "আমি ব্যক্তিগত ভাবে তা মনে করি না। তবে তারা বিপজ্জনক, এবং আমার মনে হয় তাদের ব্যাপারে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে। অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।"

ফ্রেডরিক সেগারফেল্ড অবশ্য মনে করেন ডানপন্থার উত্থান খুব শিগগীর থেমে যাবে এমনটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।

"আমার মনে হয় এটা বেশ কিছু দিন চলবে। আমাদের উদারপন্থা, সহিষ্ণুতা এবং খোলা-দুয়ার নীতিকে রক্ষা করতে হবে। ডানপন্থী দলগুলোর উত্থানের এই ধারার অবসান ঘটার জন্য চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু আমরা এটা পারবো কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত নই। কারণ পুরো ইউরোপ মহাদেশ জুড়েই এটি একটি শক্তিশালী ধারায় পরিণত হয়েছে। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যে এর ফলে হুমকির মুখে পড়বে তা আমার মনে হয় না। "

তবে অধ্যাপক রবার্তো দা'লিমন্ত বিষয়টিকে দেখতে চান ভিন্নভাবে।

তার কথা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে এমনটা হয়েই থাকে এবং অতিডানপন্থীদের এ উত্থান হয়তো একটা সাময়িক ব্যাপার।

তিনি বলেন,"আমরা এত অবাক হচ্ছি কেন? এটা গণতন্ত্র । মানুষজন মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, অভিবাসন এসব নিয়ে বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ। তারা সরকারের কাছ থেকে সুরক্ষা চায়। বামপন্থী দলগুলো এই সব মানুষদের সাথে সংযোগ হারিয়ে ফেলেছে। সেজন্যই তারা ডানপন্থীদের দিকে মুখ ফিরিয়েছে। এখানে হতাশ হলে তারা হয়তো আবার বামপন্থীদের দিকে তাকাবে। মানুষের সমর্থন পেন্ডুলামের মতো একবার এদিকে একবার ওদিকে যাবে - গণতন্ত্রে এটা খুবই স্বাভাবিক। আমার মনে হয় আসল প্রশ্ন হচ্ছে - যারা ক্ষমতায় আসছে তাদের দেশ পরিচালনার সক্ষমতা আছে কি না। "

আসলে ইউরোপের রাজনীতিতে অতিডানপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি সবে শুরু হয়েছে এবং বলা যায় যে এটা হয়তো আরো কিছুদিন চলবে। তবে এটা স্পষ্ট যে যে তারা ১০ বছর আগে যেমন ইউরোপের রাজনীতিতে একটি ক্ষীণ ধারা ছিল - এখন তা আর নেই।

ডানপন্থী   ইতালি   রাজনৈতিক উত্থান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে ভূলুন্ঠিত মানবাধিকার: সতর্ক করবে কে?

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের বড় ফেরিওয়ালা। দেশে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে, সতর্ক করে, হুমকি দেয়, বিবৃতি দেয়। কিন্তু এখন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তাতে পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত। সারা বিশ্ব হতবাক। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত কিছুদিন ধরে ছাত্র আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করছে। বিশ্বের সেরা এবং নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাঁজার গণহত্যার প্রতিবাদে ছাত্ররা রুখে দাঁড়িয়েছে, প্রতিবাদ করছে, বিক্ষোভ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর এটি বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভ। আর এই ছাত্র বিক্ষোভে যারা অংশগ্রহণ করছে তারা মুসলমান নয়, তারা বিভিন্ন ধর্মালম্বী। তারা বিভিন্ন মতে, বিভিন্ন পথে। তারা সরাসরি অনেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, রাজপথে নেমেছেন, প্রতিবাদ করছেন শুধুমাত্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গাঁজায় গণহত্যার নিন্দা জানাতে। ইসরায়েলকে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা না করে সেই আবেদন নিয়ে। 

ছাত্ররা হলো জাতির বিবেক। যে কোনো জাতি রাষ্ট্রের ছাত্রদের সচেতনতা এবং ছাত্রদের দেখানো পথেই মুক্তি আসছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ছাত্ররাই এখন তাদের রাষ্ট্রের ক্ষতগুলোকে উন্মোচন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রত্যাশিত ছিল ছাত্র আন্দোলনের প্রতি তারা সম্মান দেখাবে, ছাত্রদের ন্যায্য দাবিগুলো তারা মারার চেষ্টা করবে এবং গাঁজায় গণহত্যা এবং মানবিক বিপর্যয় রোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবে কিন্তু সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করছে না। বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশি আক্রমণ চালাচ্ছে, তাণ্ডব হচ্ছে। ছাত্রদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও যেভাবে শিক্ষার্থীদেরকে নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে সেটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। 

প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে মানবাধিকারের সবক দেয়। এখন তাদেরকে মানবাধিকার শেখাবে কে? 

মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নয়শ’র বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী মতপ্রকাশের স্বাধীনতা শর্তহীন। সেই দেশের যে কোনো নাগরিক যে কোন মত প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু গাঁজার ঘটনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরীহ শিক্ষার্থীরা যে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছে এবং তাকে যে ভাবে দমন করা হচ্ছে তার নিকৃষ্ট স্বৈরাচারী তৎপরতার একটি অংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী বলবে? অন্য দেশে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটত তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়ই এত দিনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত, নানারকম বক্তব্য বিবৃতি দিত। 

চীনের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের ঘটনার কথাই ধরা যাক। সেই সময় চীনের এই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে মানবাধিকার নিয়ে আর্তনাদ করছিল, এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নীরব কেন? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশের র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বিচার বহির্ভূত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে বিচার বহির্ভূত নিপীড়ন নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ঘটছে তাতে বিশ্ব বিবেক স্তব্ধ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী আর অধিকার রাখে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার? অন্য বিশ্বকে মানবাধিকার নিয়ে জ্ঞান দেওয়ার আগে এখন কী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজেরই লজ্জিত হওয়া উচিত না? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজের মানবাধিকার সুরক্ষা করতে না পারে, নিজ দেশের জনগণ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয় তাহলে অন্য দেশকে মানবাধিকারের উপদেশ দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কী শোভা পায়? 


যুক্তরাষ্ট্র   মানবাধিকার   ছাত্র আন্দোলন   গাঁজায় গণহত্যা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের অভিযানে শতাধিক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৭:৫০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত সাড়ে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত এক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে মার্কিন পুলিশ প্রশাসন। সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিউইয়র্কের সিটি কলেজ ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে পরিচালিত হয়েছে পুলিশি অভিযান। এ অভিযানে ক্যাম্পাস দুটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শতাধিক ফিলিস্তিন সমর্থকারীকে।

বুধবার (১ মে) মার্কিন এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সিএনএন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন হ্যামিল্টন হলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর রাতে তাদের সরাতে ভবনে প্রবেশ করে পুলিশ।

নিউইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, দুই ঘণ্টারও কম সময়ের এ অভিযানে হ্যামিল্টন হল থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় কেউ আহত হয়নি বলেও দাবি পুলিশের।

এর আগে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত নিউইয়র্ক পুলিশকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই চিঠি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে রাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুলিশের বড় একটি দল।

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে প্রথম ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে নিউইয়র্ক পুলিশ। ওই অভিযানে শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে। গত এক সপ্তাহে পুলিশ ৫৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র   কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ট্রুডোকে ‘উন্মাদ’ বলায় বিরোধী নেতাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৭:০৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

কানাডার বিরোধীদলীয় নেতাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ আখ্যা দেওয়ার পর প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে দিনের বাকি অংশের জন্য পার্লামেন্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়।

বুধবার (১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্স থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অস্বাভাবিক এই পদক্ষেপের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

রয়টার্স বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধী দলে থাকা কনজারভেটিভরা জরিপে বেশ এগিয়ে আছে এবং কার্বন ট্যাক্সের জন্য বিরোধী নেতা পিয়েরে পয়লিভের ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকারকে নিয়মিত আক্রমণ করছেন। এর ফলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে বলেও সমালোচনা করছেন তিনি।

মঙ্গলবার এই বিরোধী নেতা হাউস অব কমন্সে ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রুডোকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এই উন্মাদ প্রধানমন্ত্রীর এই উন্মাদ নীতির অবসান কবে হবে?’

এই বক্তব্যের পর স্পিকার গ্রেগ ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তার মন্তব্যটি অসংসদীয় এবং অগ্রহণযোগ্য। এরপর তাকে ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে চারবার আহ্বান জানান লিবারেল এই স্পিকার।

তবে পয়লিভের প্রতিবারই সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, এর পরিবর্তে তিনি চরমপন্থি বা মৌলবাদী শব্দটি ব্যবহার করতে চান।

এই পর্যায়ে স্পিকার ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তিনি স্পিকারের কর্তৃত্বকে উপেক্ষা করছেন। এরপর তিনি বলেন: ‘আমি আপনাকে আদেশ দিচ্ছি, আপনি হাউস থেকে চলে যান ... দিনের অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য।’

এরপর পয়লিভের এবং তার বেশিরভাগ আইনপ্রণেতা তখন চলে যান।

রয়টার্স বলছে, ট্রুডোর সঙ্গে পয়লিভেরের বেশ উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাকে তিনি (ট্রুডো) একজন চরমপন্থি এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন আন্দোলনের সমর্থক বলে অভিহিত করেছেন।

কানাডা প্রধানমন্ত্রী   জাস্টিন ট্রুডো  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সিনেমা নয় বাস্তবে যুদ্ধ করছে রোবট!

প্রকাশ: ০৪:১০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

হলিউড সিনেমাতে হরহামেশাই আমরা দেখে থাকি, অস্ত্র চালনা কিংবা হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট, যুদ্ধক্ষেত্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রোবট। কখনো মানুষের পক্ষে কখনো মানুষের বিপক্ষে বিরাট রোবট বাহিনী। এবার সিনেমাতে নয়, বাস্তবেই যুদ্ধের ময়দানে দেখা যাচ্ছে রোবট। সিনেমায় দেখানো রোবটের মতো এত উন্নত প্রযুক্তির না হলেও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে দেখা যাচ্ছে কিলার রোবটের ব্যবহার।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অধ্যাপক টোবি ওয়ালশ বলেন, কিলার রোবট শুনলে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির মুভিতে দেখা রোবটের কথা মনে হয়৷ কিন্তু সমস্যা হলো, এগুলো এখন বাস্তবে হচ্ছে৷ এগুলো টার্মিনেটর রোবট নয়৷ এগুলো একধরনের ড্রোন যার ব্যবহার আমরা ইউক্রেন যুদ্ধে দেখতে পাচ্ছি৷ এসব ড্রোনকে মানুষের চেয়ে কম্পিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রণের পরিমাণ বাড়ছে৷

ট্যাঙ্ক, পরিখায় সৈন্য- ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার শুরুতে আমরা এমনটা দেখেছিলাম৷ কিন্তু পরবর্তীতে দুই পক্ষই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার শুরু করে৷ যেমন বায়রাক্তার ড্রোন৷ একেকটির দাম ১১ মিলিয়ন ইউরোর বেশি৷

জার্মান প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. গারি শাল বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার কাছে থাকা অনেক অস্ত্রকে পরবর্তীতে এআই-সমৃদ্ধ করা হয়েছে৷ ফলে যুদ্ধে পরিবর্তন এসেছে৷ যেমন রাশিয়াকে আমরা এআই-সমৃদ্ধ গ্লাইড বোমা ব্যবহার করতে দেখেছি৷ আর ইউক্রেনের এআই-সমৃদ্ধ অস্ত্রের মধ্যে আছে ড্রোন৷ যুদ্ধের প্রথম কয়েক মাসে ইউক্রেন যে কার্যকর ও সফল ছিল, তার কারণ ছিল তারা পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিল৷

সামরিক সংঘাত মানে হলো, তথ্য সংগ্রহ ও সেগুলোর অর্থ বুঝতে পারা৷ কত দ্রুত সেটা করা যাচ্ছে তাও গুরুত্বপূর্ণ৷ এআই সেটা করতে পারে ও সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷

মিউনিখের বুন্ডেসভেয়ার ইউনিভার্সিটির আক্সেল শুলটে বলেন, এখন অনেক কিছু স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাওয়ায় মানুষ ও যন্ত্রের মধ্যে শ্রম বিভাজন করতে গিয়ে আমাদের সতর্কতার সঙ্গে ভাবতে হবে৷ মানুষের উদ্দেশ্য আছে, যন্ত্রের নেই৷ আমরা এসব যন্ত্রকে, এসব স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাকে, হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করি৷

কিন্তু ড্রোন কি হিউম্যানয়েড কিলার রোবট বা টার্মিনেটর হতে পারে? আক্সেল শুলটে বলেন, টার্মিনেটর? না সেটা সম্ভব না৷ আমরা এখনো প্রযুক্তিগতভাবে অতদূর এগোইনি৷ হ্যাঁ, ইউটিউবে আমরা বস্টন ডাইনামিক্সের দারুন সব ভিডিও দেখি বটে৷ আমরা দেখি, গতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এসব যন্ত্রের দক্ষতা বেশ ভালো৷ তারা ডিগবাজি বা সে রকম কিছু দিতে পারে৷ কিন্তু এর মানে এই নয় যে, সেগুলো বিপজ্জনক কিলার রোবট হয়ে গেছে৷

২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় দুই ট্রিলিয়ন ইউরো ছাড়িয়ে গেছে- যা একটি রেকর্ড৷ ৭৫০ বিলিয়ন ইউরো খরচ করে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে চীনও কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ ২০২২ সালে রাশিয়া তার সামরিক বাজেট নয় শতাংশ বাড়িয়েছিল৷

জার্মান প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. গারি শাল বলেন, যদি আপনার এমন বাহিনী থাকে যেটা এআই ব্যবহার করে, তাহলে, অন্য যারা এআই ব্যবহার করে না, তাদের চেয়ে আপনার কৌশল ভিন্ন হবে৷ এটা শুধু যন্ত্রের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ঢোকানোর বিষয় নয়৷ এটা পুরো ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিষয়: প্রশিক্ষণ, কৌশল, সংগঠন সবক্ষেত্রে৷

স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র তৈরিতে কাজ করছে পৃথিবীর প্রায় ৬০টি দেশ। শান্তিপূর্ণ প্রয়োজনে রোবট বানাচ্ছে তারা। তবে এসকল রোবট বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের দিকে ঝুঁকলে নিঃসন্দেহে তা হবে ভয়ংকর।


যুদ্ধ   রোবট  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্র ‘ভণ্ডামি’ করছে: রাশিয়া

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি)তদন্তের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে এ আদালতের দেওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সমর্থন করেছে। মস্কো ওয়াশিংটনের এই আচরণকে ‘কপট’ উল্লেখ করে বলেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভণ্ডামি।

আইসিসি যুদ্ধাপরাধের দায়ে ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করার পাশাপাশি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যার তদন্ত করতে পারে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ও সাত মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার তদন্ত করছে সংস্থাটি।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ–পিয়েরে গত সোমবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্ত সমর্থন করে না । এ ছাড়া এই বিষয়ে আদালতের এখতিয়ারের বিষয়টিতেও বিশ্বাস করে না তারা। তবে এর আগে গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি ছিল ন্যায়সংগত। ইউক্রেনে কথিত রুশ যুদ্ধাপরাধের বিবরণ আইসিসির কাছে তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মস্কো বলেছে, পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করা পশ্চিমাদের অর্থহীন প্রয়াস। এর মধ্য দিয়ে তারা রাশিয়ার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। তারা ইউক্রেনে কোনো যুদ্ধাপরাধ করেনি। তবে ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করেছে। রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেন যে অপরাধ করেছে, তা এড়িয়ে গেছে পশ্চিমারা। তবে কিয়েভ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রামে করা এক পোস্টে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আইসিসির দেওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা পুরোপুরি সমর্থন করে ওয়াশিংটন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের ও তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্তের বৈধতা স্বীকার করতে চাইছে না। জাখারোভা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থান কপটতার শামিল।

রাশিয়া আইসিসির সদস্যদেশ নয়। ইসরায়েলও এর সদস্য নয়। তবে ২০১৫ সালে ফিলিস্তিন আইসিসির সদস্য হয়। গত শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, আইসিসির কোনো সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের কার্যক্রমের ওপর প্রভাব ফেলবে না; কিন্তু বিপজ্জনক একটি উদাহরণ তৈরি করবে। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা অবশ্য আইসিসির আদেশ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে। তাঁদের ধারণা, আইসিসির পক্ষ থেকে গাজায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলে অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে। একই সঙ্গে হামাস নেতাদের বিরুদ্ধেও এ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।


যুক্তরাষ্ট্র   ভণ্ডামি   রাশিয়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন