ফয়সাল আহমেদ (ছদ্মনাম)। ঠাকুরগাঁত্ত জেলা শহরের মন্দিরপাড়ার বাসিন্দার। পেশায় একজন দলিল লেখক। পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছেন তিনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অত্যন্ত স্নেহভাজন। দিনাজপুর সরকারি কলেজে অর্থনীতিতে অনার্স পড়াকালীন সরাসরি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। সেখান থেকেই মির্জা ফখরুলের সঙ্গে তার বেশ ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে উঠে। সাম্প্রতি সময়ে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। কাজের ফাঁকে দেখা করেছেন মির্জা ফখরুলের সঙ্গে। সাক্ষাতে শিক্ষক তার অর্থনীতির ছাত্রকে বলেছেন সর্তক থাকতে। কারণ আগামী ১০ ডিসেম্বর সরকার বিএনপির মহাসমাবেশে বাধা দিবে এবং বাধা দিতে গিয়ে হয়তো পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ ঘটবে এবং এতে করে অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। শিক্ষক তার ছাত্রকে এ আতঙ্কের কথা ঢাকায় বললেও তার পৌঁছে গেছে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরে। ফলে ১০ ডিসেম্বর নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আসলেই কি ১০ ডিসেম্বর এমন কিছু ঘটবে?
বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে যে, ১০ ডিসেম্বর তারা ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে, সারাদেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ এনে ঢাকায় জমায়েত করা হবে এবং এর মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো হবে। এদিকে আওয়ামী লীগও এখন বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সন্মেলন নিয়ে ঢাকার রাজপথে সক্রিয় আছে। তবে তাদের এই সক্রিয়তা বিএনপিকে মোকাবিলা করতে নয় বরং নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই করা হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, আওয়ামী লীগ বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচিতে কোনো রকম বাধা দিবে না। বিএনপির সেদিন শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি পালন করবে বলে প্রত্যাশা তাদের। ওই নেতা বাংলা ইনসাইডারকে বলেন যে, আওয়ামী লীগ যদি বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিতে চাইতো তাহলে সেদিন আমরা পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করতাম। কিন্তু আমরা সেটি করিনি। বরং বিএনপি যেন শান্তিপূর্ণভাবে এবং বাধাহীন ভাবে সমাবেশ করতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শক্রমে ছাত্রলীগের সন্মেলন দুইদিন এগিয়ে আনা হয়েছে। অন্যান্য বিভাগীয় শহরের মতো মালিক সমিতি যেন পরিবহন ধর্মঘট না ডাকেন সেজন্যও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মালিক সমিতির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নয় বরং বিএনপিই ১০ ডিসেম্বর গায়ে পড়ে সংঘাতে জড়াতে চায়। আর ১০ ডিসেম্বরের আগেই মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে বিএনপি আসলে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিএনপির পাতানো এ ধরনের ফাঁদে পা দেবে না বলে দাবি করেন তিনি। এখন দেখার বিষয় ১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশে কি করে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।